মনেকরি আজ ১৬ই ডিসেম্বর ২০২১, বাংলাদেশের স্বাধীনতার গোল্ডেন-জুবলি। আজ থেকে ৫০ বৎসর পুর্বে এক রঙ্গিন ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল একটি দেশ । সেই স্বপ্নের কতটুকু আজ বাস্তব???!‼
এখন আসুন কল্পনা করি এমন একটা শহরের যেখানে নেয় কোন গ্যাস, নেই কোন বিদ্যুৎ । এমন শহর ও কি সম্ভব??‼ আমাকে পাগল বলার আগে একটু ভাবুন।
কি হবে ঐ সব বড়-বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের, যার মালিকেরা আজ মনের সুখে বাস করতেছে বড়-বড় ঐসব অট্টালিকাই। তাদেরকেও বলি, আজ একটু ভাবুন।
দেশের সাত-পাঁচে আমাদের কোন হাত নেয় বলে যারা হাত গুটিয়ে বসে আছেন, আপনাদের ভবিষ্যত কোন পথে?? তাদেরকেও বলি প্লিজ আজ একটু ভাবুন।
এইবার আসি মূল আলোচনায়। আমরা মাঝে-মাঝেই ভুলে যাই যে, দেশ আর আমাদের ভবিষ্যত একই সুতায় বাঁধা। Energy Banglaর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে যে পরিমান গ্যাস রিজার্ভ আছে তা ২০১৫ সালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে! তারপর কি হবে?? যাদের আমাদের দেশের শিল্প-প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে ক্ষুদ্র পরিমাণও ধারণা আছে তারা নিশ্চয় জানেন আমাদের দেশের বেশীরভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানই গ্যাস নির্ভর। যেমন, আমাদের সার-কারখানাগুলোর কথাই চিন্তা করুন। এখনই যার অনেকগুলোতেই চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সাপ্লাই করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে উৎপাদন যাচ্ছে কমে, কৃষকরা পাচ্ছেনা তাদের চাহিদা অনুযায়ী সার। ফলে শষ্য-উৎপাদন খরচ যাচ্ছে বেড়ে, অনেকটা চেইন রি-একশনের মতো। এইরকম হাজারটা উদাহরণ দেওয়া সম্ভব। গ্যাস না থাকলে ঐসব শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কি হবে??‼ কোথায় যাবে আমাদের অর্থনীতি?? কোথায় যাবে আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থা। এখনই সময় ভাবুন ।
এইবার আসি আমাদের আম-জনতাদের প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে এই ঢাকাবাসীদের প্রসঙ্গে। কি হবে তাদের(আমাদের) যারা এই বৃষ্টির দিনে মনের সুখে হয়তো গ্যাসের-চুলায় ভেজা কাপড় শোকাচ্ছেন কিন্তু আর কিছুদিন পর যখন রান্না করার জন্য ও গ্যাস পাবেন না‼ আর এই শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের বিকল্প জ্বালানি হিসাবে কিছু কল্পনা আপনারা করতে পেরেছেন কি না জানি না তবে আমি খুঁজে পায়নি।
আর যারা গ্যাসের বিকপ্ল শক্তি হিসাবে বিদ্যুৎ নিয়ে চিল্লাপালা করতে চান তাদেরকে বলি, গ্যাসের চূলার বিকল্প হিসাবে আপনি নিশ্চয় হিটারের পরামর্শ দেবেন না‼ এখন তাহলে চিন্তা করে দেখুন শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাসের বিকল্প হিসাবে ইলেক্ট্রিসিটিকে ভাবাটা কতোটা বোকামি। আর যারা কয়লার কথা ভাবতে শুরু করেছেন তাদেরকে আমি সেই মান্ধাতার আমলের স্বপ্ন থেকে জাগিয়ে তোলার কোন ইচ্ছায় আমার নেয় ।
তবে আজ হোক আর কাল হোক জাগতে আমাদের হবেই। প্রয়োজন আমাদের তাই ভবিষ্যতের এই অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তির আন্দোলন আমাদের সবার। এই দেশ আমাদের, এই দেশেই থাকতে হবে আমাদের। সুন্দর ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা না থাক অদূর ভবিষ্যতের নিশ্চিত গাঢ় অন্ধকার থেকে মুক্তির চেষ্টা আমরা করতেই পারি। কিছু মানুষ তাদের সুইস ব্যাংকে তাদের ভবিষ্যতকে নিশ্চিত রেখে পুরা একটা দেশের ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দিবে সেইটা আমরা দেশের শিক্ষিত এবং সচেতন মানুষ হিসাবে কিছুতেই মেনে নিতে পারি না।
যে দেশে বাৎসরিক বাজেট প্রায় পৌনে দুই লক্ষ কোটি টাকা সেই দেশে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য কিছু টাকা কি বেশী বরাদ্দ দেওয়া যায়না ??‼
আর যে কখনো নিজের পায়ে দাড়ানোর চেষ্টা না করে পারবনা বলে বসে থাকে সে কখনই হাটতে পারে না! কাজেই আমরা চেষ্টা করতে পারি, উত্তোলন করতে পারা আর না পারা সেটা পরের বিষয়। তাই বলেতো আমরা গাধার মতো আমাদের নিজেদের সম্পদ অন্যদের হাতে তুলে দিতে পারি না!!
কনকো-ফিলিপসের সঙ্গে চুক্তি বিষয়ে অনেক পোষ্ট হয়েছে তাই এই বিষয়ে নতুন করে কিছু বললাম না।
তাই আসুন সমাজ-সচেতন টোকাই সম্প্রদায়ের ডাকা ৩রা জুলাই এই হরতালকে আমরা সফল করে তুলি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



