somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

মানুষের অদ্ভুত জীবন; জন্ম এবং মৃত্যু, অদ্যম জীবনীশক্তি

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



তিন
রবিন কেভেনডিস মাত্র আঠাশ বছর বয়সে পোলিও আক্রান্ত হয়ে প্যারালাইজেড হয়ে পরেন। ঘাড়ের নিচ থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে ছিল, ডাক্তার তাকে একটি যান্ত্রিক শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন।
সদ্য বিয়ে হয়েছে তরুন দম্পতি রবিন এবং ডায়ানার। মধুরিমা পর্ব চলছে, দুজনের ভালোবাসার এমন সময় এই দূর্ঘটনায় জীবন যেন তছনছ হয়ে গেলো। ডাক্তার, রবিনের জীবনের মাত্র তিন মাস সময় বেঁধে দেন। এবং বেঁচে থাকার জন্য জীবনের বাকি সময়টা হাসপাতালেই নানারকম যান্ত্রিক সাপোর্টে কাটাতে হবে রবিন কেভেনডিসকে।
হাসপাতালের চার দেয়ালে রবিনের মৃত্যু যেন ঘনিয়ে আসে, সময়ের আগেই। রবিন ব্যাস্ত হয়ে উঠেন বাইরের বাতাসে শ্বাস নেয়ার জন্য পৃথিবীর কত কিছু দেখা বাকি কত কিছু করা বাকি। এভাবে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর অপেক্ষা করার চেয়ে বরং বাইরে বেড়িয়ে যদি একদিনও জীবনটা উপভোগ করতে পারেন, মৃত্যু আনন্দময় হবে তাঁর কাছে। স্ত্রীর কাছে এই অনুনয় করেন। আর স্ত্রীও স্বামীকে এভাবে হাসপাতালে রেখে স্বস্থি পাচ্ছিলেন না। নিজের কাছে রেখে নিজে যত্ন করতে চান যতটুকু সময় তার শ্বাস আছে সে সময়টুকু।
সেই উনিশ আটান্ন সনে হাসপাতালের কড়া নজরদারি এড়িয়ে স্ত্রী এবং ভাই মিলে ডাক্তারের অনুমতি ছাড়াই রবিনকে বের করে আনেন হাসপাতালের বাইরে। রবিনের স্বাস্থ্যের প্রয়োজন মতন তৈরি করে নেন বাড়িতে সকল সুযোগ সুবিধা ।
তিন মাস পার করেও জীবনের আরো ছত্রিশ বছর বাঁচেন রবিন। তাদের পুত্র জনেথন কেভনডিস জন্মের পর থেকেই বাবাকে অসুস্থ বিছানায় শোয়া দেখতে পান।
অথচ এই বাবার জীবনের বৈচিত্রময় অ্যাডভেঞ্চার জীবন তাকে মুগ্ধতা দেয়। ডাক্তারের বেঁধে দেওয়া তিন মাস পেরিয়ে, ছত্রিশ বছর বেঁচে থাকেন আনন্দ এবং উপভোগ্য জীবনে রবিন কেভেনডিস। ঘুরতে যান বিভিন্ন জায়গায় অদ্ভুত সব ব্যবস্থা স্বাস্থের জন্য অবলম্বন করে। অনেক জায়গায় স্বাস্থ্য বিধির সুব্যবস্থা না থাকায় মরোমরো অবস্থায় থেকে ফিরে এসে আবারও জীবনের স্বাদ উপভোগ করেন। শ্বাস নেন পৃথিবীর বাতাসে। রবিন কেভেনডিস যেন অনেক মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার নাম হয়ে যান, তাঁর জীবন যাত্রার বাঁচার চেষ্টার কার্যক্রমের জন্য। অসম্ভব জীবনীশক্তি সম্পন্ন একজন মানুষ। নিজের জীবন নিয়ে মানুষের সামনে কথাও বলতেন যা ছিল বেশ জনপ্রিয়।
চৌষট্টি বছর বয়সে জীবনটা বেশ ভাড় মনে হয় রবিনের কাছে। স্ত্রী এবং ছেলের সাথে পরামর্শ করে নিজের জীবনের শেষ নিঃশ্বাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এবং ডাক্তারের পুস করা একটা ইনজেকশনে, শেষ শ্বাস নিয়ে ঘুমিয়ে পরেন একেবারে নিজের পছন্দ করা সময়ে।
বাবা বিছানায়, অসুস্থ অবস্থা থেকে তার বিভিন্ন কার্যকলাপ খুবই উৎসাহ উদ্দিপক এবং ব্যাতিক্রমি ছিল। এমন একটা পরিবারে বড় হয়ে উঠা জেনেথনের মনে গভীর প্রভাব পরেছিল তাদের প্রতিদিনের জীবনযাপন। নিজেদের বিশেষ করে মা বাবার সম্পর্ক, তাদের ব্যাতিক্রমি কার্যক্রম নিজেদের জীবনের গল্প নিয়ে একটি সার্থক সিনেমা তৈরি করেন তিনি।
একটা মুভি দেখতে পারেন নিটফ্লিক্সে আছে। মুভিটি তৈরি হয়েছে দুইহাজার সতের সনে। এবং মুভিটি তৈরি হয়েছে সত্যি ঘটনার উপর ভিত্তি করে। বাবা মা এবং নিজের জীবনের খুব ব্যাতিক্রমি ঘটনার গল্প নিয়ে মুভি তৈরি করেন জনেথন কেভেনডিস। মুভিটার নাম ব্রেথ। দুহাজার সতেরতে মুভিটা দেখেছিলাম তখনই লিখার ইচ্ছা ছিল। কিছুটা লিখেও রেখেছিলাম তখন। অদ্যম আগ্রহ কিভাবে মানুষকে দিয়ে সব কিছুই করাতে পারে। কখনো শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে প্রায়, আর কখনও মুখ দিয়ে রক্ত ছুটে। গলার কাছে ফুটা দিয়ে বের করে নিতে হয় ব্লাডের প্রেশার। এছাড়া ফুসফুস ভর্তি করে শ্বাস নেয়ার উপায় নাই। অনেক সময় বাইরে থেকে পাম্প করে অক্সিজেন সাপ্লাই করতে হয়। অক্সিজেন সিলিন্ডার পাওয়া সে সময়ে সহজ ছিল না। নানা উপায়ে বানিয়ে নেয়া হয় এই সব যন্তপাতি বাড়িতে রবিনকে সাপোর্ট দিয়ে রাখার জন্য।
বাচ্চা জনেথন নিজেই একদিন খেলতে খেলতে বাবার ঘরে এসে বসে পরে অক্সিজনের নলের উপর। একা রুমে ছটফট করে মরে যাওয়ার অবস্থা থেকে শেষ মূহুর্তে তাকে উদ্ধার করা হয়।
ঘুরতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন মতন ব্যবস্থা করে নেয়া হয় গাড়ির ভিতর। হুইল চেয়ার উঠানো নামানোর জন্য সিঁড়ি থেকে হুইলচেয়ারের জন্য এবং শুয়ে থাকার জন্য জায়গা। স্বাস্থ যন্ত্রপাতি ব্যবহারের উপযোগী করে কাস্টম ভাবে নিজেরাই গাড়ি তৈরি করে নেয় রবিনের পরিবার। স্ত্রী সব সময় সহযোগীতা করেন। ভাই, বন্ধু পরিবারের সবাই সহযোগীতা করেন।
মানুষের অদম্য ইচ্ছা শক্তির বিষয়ে বেশ ভালোভাবে জানতে পারি ছবিটা দেখে। এই ছবির শেষের ঘটনা আর একটি দিক নির্দেশনা করে জীবনের। একজন মানুষ তার জীবনে অনেক অসুস্থতা নিয়ে অনেক বছর বেঁচে থাকার পর সে জীবনটাকে নিজের ইচ্ছায় শেষ করেও দেন, পারিবারিক সম্মতি নিয়ে। হুট করে কাউকে না জানিয়ে একা একা একটা নোট রেখে নিজেকে শেষ করা নয়। আয়োজন করে সবার কাছে বিদায় নিয়ে জীবনের সব বিষয়ের দেনাপাওনা মিটিয়ে চলে যাওয়া অন্যলোকে।
বর্তমান সময়ে মানুষের আয়ু অনেক বেড়ে গেছে। বয়স্ক একজন মানুষ সুস্থ্য স্বাভাবিক ভাবে অনেক বছর বেঁচে থাকলেও অনেক সময় শারীরিক কিছু দূর্বলতার জন্য আর বেঁচে থাকতে চান না, যখন নিজে নিজের সব কাজ করতে পারেন না। এছাড়া অনেকে অসুস্থ হয়ে ভুগলেও নিজের জীবনের অবসান বা ইচ্ছা মুক্তি করতে চান। নিজের মুক্তির জন্য এবং পরিবারের সদস্যদের ঝামেলা মুক্ত রাখার জন্য। এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলা যায় না। সব চাওয়া পাওয়া শেষ হয়ে গেলে অনেকেই এই ভাবে মৃত্যু কামনা করেন।

ইচ্ছা মৃত্যুর পক্ষে বা সহায়তাকারী মৃত্যুর পক্ষে কিছু সভ্য সমাজ। মানুষ যখন মারা যাওয়ার জন্য প্রস্তুত, নিজের জন্য সে সময় বেছে নিয়ে মৃত্যু চাইলে তাকে চলে যেতে সাহায্য করা উচিত বলে মনে করা হয়। এজন্য আইন পাশ হয়েছে । এখন পর্যন্ত বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং কলম্বিয়া পৃথিবীর এই সাতটি দেশে ইথানেশিয়া বা নিজের পছন্দের আরামদায়ক মৃত্যু বৈধ ।
এমন মৃত্যু ছাড়া আমরা দেখি অনেক মানুষকে লাইফ সাপোর্টে বাঁচিয়ে রাখা হয়। যখন শরীরের সব অর্গানগুলো আর নিজে কাজ করতে পারে না তখন কৃত্তিম মেশিনের সহায়তায় মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা হয়। কিন্তু মানুষের এই বাঁচিয়ে রাখার প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ব্যায়বহুল ইচ্ছা থাকলেও অনেকে সেই ভাবে প্রিয় মানুষকে আরো অনেক দিন বাঁচিয়ে নিজের কাছে রাখতে পারেন না। যার আর ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই স্বাভাবিক জীবনে, আত্মিয় স্বজনের সিদ্ধান্তে এক সময় লাইফ সার্পোট খুলে দিয়ে তাঁকে অন্য ভুবনে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
মানুষের অদ্ভুত জীবন; জন্ম এবং মৃত্যু। কে কখন কি ভাবে কোথায় আসবে এবং কি ভাবে কখন যাবে তার কোন পূর্ব পরিকল্পনা নাই। তবে অনেক মানুষ নিজেদের জীবন বদলে নিতে পারে ইচ্ছা শক্তি দূর্বল হলে বা ইচ্ছা শক্তি প্রবল শক্তিমান হলে। দুই ভাবেই বদলে ফেলতে পারে মানুষ নিজের জীবন।
কত পঙ্গু, অসুস্থ, প্রতিবন্দী বা অর্থকষ্টে জর্জরিত মানুষ বেঁচে থাকার চেষ্টা করে যায় প্রতি নিয়ত। আবার সুখে থাকতে ভুতে কিলায় এমন ভাবে অনেকেই হুট করে নিজেরকে মেরে ফেলে। সুস্থ সবল দেহ জীবনটাকে শেষ করেও দেয়। প্রতিটি মানুষের চেহারার মতন ভাবনা চিন্তা অনেক আলাদা। কাজেই একই কার্যকরণে প্রত্যেক মানুষ একই রকম ব্যবহার করবে এমন আশা করা যায় না। একটি কথা একজনকে তীরের মতন বিদ্ধ করে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করাতে পারে। আবার অন্যজনের গায়ে ফুলের টোকা দেয়ার মতন লাগতে পারে একই শব্দ। মানুষের প্রকৃতিই নির্ধারন করতে পারে একই ঘটনা কে কি ভাবে নিবে। একজনকে দিয়ে অন্যজনের তুলনা না করে বরং প্রতিটি মানুষকে আলাদা ভাবে তার প্রকৃতি দিয়ে বিচার করতে পারলে অনেক ভালো হয়। মৃত্যুকে নিজে আলিঙ্গন করার চেয়ে মানুষ বরং নিজের জীবনটাকে চিনুক ভালো করে। কাটিয়ে যাক পৃথিবীতে নির্ধারিত সময় পজিটিভ চিন্তা চেতনায়, মানবিকতায়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১:১৬
২টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×