somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

জল বন্দী

১৭ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
জল বন্দী



ঘরে ঘরে পানি বন্দি মানুষ। সারা শহর ডুবে গেছে পানির নিচে। গ্রামগুলো তো ডুবেছেই।
বিদ্যুৎ, গ্যাস নেই। পানি নেই। নেই নৌকাও মানুষদের উদ্ধার করার।
ছোটবেলায় কলাগাছের ভেলা বানিয়ে এবাড়ি ওবাড়ি যেতাম বন্যার সময়। রাস্তা উঠান যখন ডুবে যেত। এখন তো কলাগাছও নেই মানুষের বাড়িতে।
সব কিছু খুব উন্নত জীবন থাকার পরও অসহায় অবস্থা মানুষের। শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ মানুষ পানির মাঝে আটকা। ফেসবুক জুড়ে অনেক পোষ্ট। হঠাৎ নেমে আসা বন্যায় অসহায় অবস্থা মানুষের।
সুনামগঞ্জ একটি বিচ্ছিন্ন পানির মাঝে ভাসমান শহর এখন।
যারা শেষ ছবি, ভিডিও স্ট্যাটাস আপলোড দিয়েছেন, সে সময় পার হয়েছে পনের থেকে শেষ দশ ঘন্টা আগে। হয়তো সবাই এখন সব আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার বাইরে। প্রকৃতির রুদ্ররোষের মাঝে অসহায়।
বিভিন্ন খবর খোঁজে তেমন কিছু পেলাম না। দেশের অনেক অংশ বন্যায় তলিয়ে যাচ্ছে অনেক অনেক টিভি চ্যানেলের খবরে বন্যার খবর নেই।
দেখলাম বিডি নিউজ ২৪ চারদিন আগে ১৪ দিনের আবহাওয়ার খবরে বন্যা আর প্রবল বৃষ্টির খবর দিয়েছে। দুদিন আগে থেকে কিছু উদ্বিগ্ন নাগরিক নিজের মতন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ভয়াবহ বন্যা আগমন বার্তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করে ছিলেন।
বন্যা প্রায় সময় হয় কিন্তু এমন বন্যায় ভেসে যাবে ডুবে যাবে গলা বুক সমান পানিতে এক রাতের মধ্যে কেউ ধারনাও করেন নাই। অনেকেই বন্যার পানিতে নেমে আনন্দ করছিলেন। কিন্তু কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এমন ভাবে বদলে যাবে পরিস্থিতি কেউ ভাবেননি।
শহরের যে বাড়ি গুলোতে কখনো পানি উঠে না সে বাড়িতে ঘরের ভিতরও পানি নাচছে থৈ থৈ করে। শহরে এখন উঁচু উঁচু দালান । কিন্তু সব থাকার পরও মানুষ এখন খাদ্য, পানির অভাবে আছে। শুধু সাধারন মানুষের নিচু একতলা ঘর বাড়ি ডুবে যায়নি। কয়েকতলা দালানের নিচতলা পানির নিচে।
শুকনো জমিন বলতেই নেই কিছু এখন শহর জুড়ে।
আবহাওয়ার খবর বলছে পুরো সপ্তাহ বৃষ্টি হবে। বন্যা চলবে আরো তিন দিন।
পানি বন্দি মানুষের অবস্থা ভেবে খুব খারাপ লাগছে।

এবছর সিলেট বিভাগের উপর বন্যা তুমুল ভাবে বয়ে যাচ্ছে। বৈশাখে ফসল তোলার আগে অনেক অংশ বন্যায় ডুবে গিয়েছিল। আষাঢ়ের প্রথম দিনের বর্ষা বরণ কদমফুলের ছড়াছাড়িতে মশগুল মানুষের কেউ ভাবেওনি এক রাতের মধ্যে তারা এমন দূর্যোগ পূর্ণ অবস্থায় পরবে। সিলেট ছাড়াও দেশের আরো অংশও বন্যায় তলিয়ে যাচ্ছে।
প্রকৃতির হিসাব নিকাশ অনেক সহজ এখন কিন্তু জলবায়ুর খবর রাখার সময় কই মানুষের।
কিছুদিন ধরেই ভাবছিলাম পরিবেশবাদীদের কথা কেউ শোনে না।
বাংলাদেশে পরিবেশ নিয়ে কি কোন দল আছে এখন পর্যন্ত। যারা সংসদে গিয়ে প্রকৃতি নিয়ে পরিবেশের সমন্বয় রক্ষা করার কথা বলবে।
উন্নয়নের ফলে উঁচু উঁচু দালান বাড়ি, শপিং মল, কলকারখানা কত কিছু তৈরি হচ্ছে শুধু ঢাকা শহর নয় পুরো দেশ জুড়ে। ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। বাড়ির সামনের ডোবা নালা। খাল বীল। ধানী জমি যেখানে বন্যার পানি অবাধে কিছুদিন বিচরন করে আপন মনে চলে যেত।
এখন সে সব জায়গা আধুনিক নগরায়নের অপরিকল্পিত থাবার নিচে। যে যেমন পারছে নিজের মতন অট্টালিকায় সাজিয়ে নিচ্ছে নিজের জমিন। কিন্তু এমন পরিস্থির কথা কখনো মাথায় রাখছে না কেউ।
শুধু নদী জলা ডুবা, খাল ভরাট হচ্ছে না। ড্রেন নালা আর পুকুর গুলোও ভরাট হয়ে থাকে আবর্জনার স্তুপ ফেলে। প্লাস্টিক একটি সহজ লভ্য বস্তু এখন যা গ্রামবাংলার সবুজ মাঠসহ নদীর ভিতরেও অজস্র পাওয়া যায়। ব্যবহার সবাই করে কিন্তু তার অপব্যবহার সম্পর্কে খুব কম মানুষ জানে।
সাগরের নিচ থেকে টন টন প্লাস্টিক তুলে আনেন কোন কোন পরিবেশবাদী বিদেশের দেশ গুলোতে। স্কুল কলেজের শিশুরাও এক একদিন পরিস্কার অভিযানে নেমে পরে শিক্ষকের সাথে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রকৃতি পরিবেশ নিয়ে তেমন প্রচার নেই। নেই সচেতনতা। আর যাদের বা সচেতনতা আছে, জেনে বুঝে তারা নিজেদের প্রয়োজনে মুখ বন্ধ করে রাখে, পরিবেশ দুষিত করে।
কারখানার বজ্য ঢেলে দেয় নদীতে।
দুচারজন হৈ চৈ করে । দু একটা পত্রিকায় সংবাদ বের হয়। তারপর সব থেমে যায়।
স্থায়ী কোন নিয়ম, হয় না সর্বসাধারনকে সচেতন করা হয় না।
অনেকদিন থেকেই শুনে আসছি পানিতে বাংলাদেশের অনেক অংশ ডুবে যাওয়ার সম্ভাবাবনার কথা। পৃথিবীর আবহাওয়া বদলে যাচ্ছে তার নিজস্ব গতিতে। বাংলাদেশের অনেক উন্নয়নের মধ্যে এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য কেমন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মানুষকে শিক্ষিত করা হচ্ছে এখন আমার জানা নেই। কেউ জানলে জানাবেন।
শহরের গ্রামের মানুষের এখন সমুহ বিপদ, জলবন্দী হয়ে থাকায়। বিপদ শেষ হলেই সবাই সব কিছু ভুলে যাবে। আগামীতে এমন হলে যেন ঘরদোর না ডুবে যায় তার জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া হবে তেমন প্রস্তুতি আগে থেকে কেউ ভাববে না। সব খানা খন্দ ভরাট হয়ে আরো দালান কোঠা উঠবে বন্যার পানি সেই দালানকোঠার ভিতরটা দেখার জন্য ঢুকে যাবে। যেমন হাইওতে গাড়ির ভিতর জল নিয়ে যাত্রী যাচ্ছেন এখন। জলে বেষ্টিত বাড়িঘর অথচ বেরিয়ে আসার জন্য পথ নেই, নেই একটি নৌকাও।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০২২ রাত ১২:৩৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামপন্থী রাজনীতির বয়ান এবং জামাতের গাজওয়াতুল হিন্দ-এর প্রস্তুতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০


গোরা উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ নিজে ব্রাহ্ম হয়েও, ব্রাহ্ম সমাজের আদর্শের বিপরীতে "গোরা" নামে একটি চরিত্র তৈরি করেন। গোরা খুব কট্টরপন্থী হিন্দু যুবক। হিন্দু পরিচয়ে বড় হলেও, আসলে সে আইরিশ পিতা-মাতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি নেই, তাই শূন্য লাগে

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৬

তোমার চলে যাওয়ার পর
ঘরে আর আলো জ্বালাই না,
অন্ধকারে নিজের মতো করে
সবকিছু চিনে নেই।

জানো, আজ সকালে চা বানাতে গিয়ে দেখলাম
চিনি শেষ,
ভাবলাম ঠিক আছে,
মিষ্টি না থাকলেও চা হয়।

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ
তোমার মতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি

লিখেছেন মুনতাসির, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৯

অনেকেই বলেন, ৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি। এই কথাটার সূত্র ধরেই এগোনো যায়। ৫ আগস্টের পর আমাদের কোন কোন পরিবর্তন এসেছে, সেটাই আগে দেখা দরকার। হিসাব করে দেখলাম, বলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আদর্শের রাজনীতি না কোটি টাকার হাতছানি...

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৫



১. আমি অনেক আগে ব্লগে লিখেছিলাম, বাংলাদেশে ছোট দলগুলো নিষিদ্ধ করা উচিত। উন্নত দেশের মত ২/৩ টিতে থাকাই উত্তম। কারণ, ছোট দলের নেতাদের টকশো-তে গলাবাজি করা ছাড়া আর কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার দেয়াল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯



ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×