‘বৃহস্পতি তুঙ্গে’ বলে বাংলায় একটা কথা আছে। কথাটার অর্থ, সুসময়। সুসময়ের স্বরূপটা কেমন সেটা জানতে চাইলে সিদ্দিকুর রহমানের কাছে যেতে পারেন। এ বছরই প্রথম এশিয়ান ট্যুর জয়, দ্বিতীয় এশিয়ান ট্যুর জয়ের প্রান্ত থেকে ফেরার পর আরেকটা সুখবর পেলেন সিদ্দিকুর—এ বছরই পিজিএ ট্যুর স্বীকৃত টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ এসে গেছে তাঁর সামনে।
সুযোগটা এসেছে সিদ্দিকুরের পারফরম্যান্স ও পিজিএ ট্যুর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত এক লাইনে এসে মিলে যাওয়ায়। মাস্টার্স ওপেন, ইউএস ওপেন, ব্রিটিশ ওপেন, পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপের মতো ‘মেজর’ গলফ টুর্নামেন্টের আয়োজক পিজিএ ট্যুর কর্তৃপক্ষ এ বছরই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কার্যক্রম শুরু করছে। এশিয়ান ট্যুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে মালয়েশিয়ায় চলতি মাসেই আয়োজন করছে ‘সিআইএমবি এশিয়া প্যাসিফিক ক্লাসিক’ নামে এক টুর্নামেন্ট।
২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় এই টুর্নামেন্টে পিজিএ ট্যুর র্যাঙ্কিংয়ের সেরা ২৫ খেলোয়াড়ের সঙ্গে অংশ নেবেন এশিয়ার সেরা ১০ খেলোয়াড়। এশিয়ার কোটাতেই সুযোগ মিলে গেছে সিদ্দিকুরের।
গত মাসে তাইওয়ান ওপেনের আগপর্যন্তও সেরা দশে ছিলেন না সিদ্দিকুর। এই টুর্নামেন্টের রানারআপ হয়ে উঠে এসেছেন এশিয়ার ৯ নম্বরে। আর কী কাকতালীয় ব্যাপার! এর পরপরই এল পিজিএ ট্যুরের নতুন এই উদ্যোগের ঘোষণা।
মেজর টুর্নামেন্ট নয়, তার পরও টুর্নামেন্টের সঙ্গে পিজিএ জড়িত থাকায় যারপরনাই খুশি সিদ্দিকুর, ‘এটা তো একেবারেই অপ্রত্যাশিত ব্যাপার। পিজিএ এ রকম একটা উদ্যোগ নেবে, জানতাম। কিন্তু এশিয়ার সেরা দশে থাকাটা কঠিন ছিল। আমি সেরা দশে ঢুকেছি আর সেই সময়ই লাইনআপটা ঠিক হলো। ফলে সব মিলিয়ে নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’
ব্যাপারটা অবশ্য শুধু পিজিএ নামটা নিয়ে নয়, এই টুর্নামেন্টের খেলোয়াড়দের নামও বিষয়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের অনেকেই এই টুর্নামেন্টে খেলতে আসবেন। সেটাকেই বড় প্রাপ্তি মনে হচ্ছে সিদ্দিকুরের কাছে, ‘এখানে যে মানের খেলোয়াড়েরা আসবেন, তাঁদের সঙ্গে খেলাটাই বিরাট একটা অভিজ্ঞতা। এই পর্যায়ের খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেললেও অনেক কিছু শেখা যায়।’
বাকি খেলোয়াড়দের কথা যেমন-তেমন, সিদ্দিকুর মূলত উল্লসিত এক আর্নি এলসের কথা ভেবে। দক্ষিণ আফ্রিকার এই গলফারকে ‘আইডল’ বলে মানেন সিদ্দিকুর। সেই এলস এই টুর্নামেন্টে আসছেন, অনেকটাই নিশ্চিত। সিদ্দিকুর এখনই রোমাঞ্চিত, ‘আর্নি এলসকে বলতে পারেন আমার নায়ক। ও আসবে বলেই শুনেছি। ওর সঙ্গে খেলব, কথা বলতে পারব; ভাবতেই ভালো লাগছে।’
৬০ লাখ মার্কিন ডলারের এই টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন পাবেন ১০ লাখ মার্কিন ডলার। এশিয়ার কেউ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবেন, সেটা আশা করা একটু বাড়াবাড়ি। যদিও এশিয়ান ট্যুরের কর্মকর্তারা তেমনই আশা করছেন।
তবে সিদ্দিকুরের আশা নিজের সেরা পারফরম্যান্স করা, ‘পৃথিবীর সেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে লড়াই করে কতটা কী করা সম্ভব, সেটা বলা কঠিন। তবে আমি আমার সেরা খেলাটা খেলার চেষ্টা করব। এশিয়ানদের মধ্যে অন্তত ভালো অবস্থানে থাকতে চাইব।’

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



