
গতরাতে মাছের কাটা দাঁতের মাড়িতে ঘাই দিছে। হালার পুতরে বাইর করছি ঠিকই কিন্তু মাড়ির তো রফাদফা ! ফুলে গেছে। রাতভর চিনচিন ব্যাথা এ পাশ ও পাশ। অফিসে ফোন দিব ভাবছিলাম পরে করা হয়নি। কে কিভাবে নেয় ? দুই একজন জানি নিশ্চিত বলে বসবে মাছটার লিংগ কি? মানে পুরুষ? না, নারী ?
সে যাই হোক সকালে লাল চোখে দাঁত ব্রাশ করতে যেয়ে দেখি রক্ত বের হচ্ছে। এরপর ব্রেকফাস্ট করতে যেয়ে দেখি ঐ পাশ একদম অকেজো। অন্য পাশের দাঁত ব্যবহার করতে হলো। কি এক মুশকিল !
মা হাসে আর কয় " যত মুশকিল তত আশান ! " আমার তো মেজাজ চ্যাতে সপ্তমে। মা এক গ্লাস লবন মেশানো গরম জল এনে বলল কুলি কর আর প্যারাসিটামল নে। কিছুটা ব্যাথা কম লাগবে। কি আর করা ??
অফিসে যেয়ে চুপ করে নিজের রুমে বসে রইলাম। গালের উপর দিয়ে মাড়িতে চাপ দিলাম একটু আরাম লাগলো পরে আবার সেই ব্যথা! উফফ! অসহ্য !
পিয়ন কে ডাক দিয়া কইলাম পুরা এক জগ ভরে গরম পানি আর নুন দিয়া যাও। পিয়ন সামাদ মিয়া হাসি দিয়া কইল জ্বি আইচ্ছা স্যার , আরো কিছু লাগব স্যার? আমি কইলাম যা বলছি তা কর এত কথা কও ক্যা ? এ এক আজব মানুষ ধমক গালি দিলেও হাসে আবার একটু নরম সুরে কথা কইলে কাঁদে। ওর গল্প আরেক দিন বলব।
নুন মেশানো গরম জল থ্যারাপি করলাম অনেকক্ষণ। প্রথমে মাড়িতে কামড় দিয়া ধরছে পরে সহ্য হয়ে গেলো। তখন উপলব্ধি করলাম আসলে দুখ জিনিস টা একটা সময় সহ্য হয়ে যায়।
এমন সময় সিনিয়র এক বন্ধু ফোন দিল। যার নাম অরুন। আমি অরুন দা বলি। বিবাহিত ব্যাচেলর। প্রথম স্ত্রী বিদেশি ছিল। পরে ডিভোর্স ! সেই ঘরে এক মেয়ে। এখন মায়ের সাথে প্যারিস আছে। উনার দ্বিতীয় স্ত্রী ছিল দেশী। সেও চলে গেছে এডলিন আর দাদা কে ছেড়ে। বৌদির ব্রেস্ট ক্যান্সার হয়েছিল। অনেক চেষ্টা করেছেন দাদা। কাজ হয়নি হায়াত না থাকলে হয় যা।
দাদা প্রায় তিন মাস বৌদির শোকে বাচ্চার মতো আচরণ করেছেন। উনার এক দিদি আছেন। এখন উনি এডলিন এর দেখাশোনা করেন।
উত্তরাধিকার সুত্রে ঢাকা শহরে সাড়ে পাঁচ কাঠার মতো জায়গাটা পাওয়াতে আর চার তলা বাড়িটা কমপ্লিট করতে পেরেছেন বলে টিকে আছেন। নইলে গ্রামে যা ছিল আর জমানো টাকা পয়সা সবই ক্যান্সার নিয়ে নিছে।
এগুলা ভাবতে ভাবতে মাড়ির ব্যাথার কথা কিছুটা ভুলেই গেছিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




