নারী নিয়া লিখতে যাইয়া বড়ই মুসিবতে পড়ছি। এমন নারী দেখেছি যে কিনা গামছা দিয়ে নিজের সন্তানকে পিঠে বেঁধে ইট ভেংগে পেট পালছেন সংসার নামক কঠিন যুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন আবার এমন নারীকে ও দেখেছি যে কি না বোরকা পড়ে দাঁড়াইয়া আছেন কখন ধরবেন খদ্দের! নানান রুপ দেখেছি দুইটা বয়ান করলাম আর কি ?
আসলে ব্যাপারটা দেখতে দেখতে গা সওয়া হয়ে গেছে। যেন উনাদের জন্ম হইছে বেশ্যা হওয়ার জন্য। অনেকটা ভন্ড নেতা দেখতে দেখতে এখন বড় নেতার ছবি দেখলেও তারে ভন্ড লাগে! এখন এসব আমাদের কাছে যাউগা ধুর বাল বলে জীবন এগিয়ে নেয়ার মতো ব্যাপার। সইত্য কি তাই ?
এখন একটু শীতের মওসুমের রাত জাগা কিছু মানুষের উক্তি দেখি, জনৈক একজন বলেছেন, " নারীগন এগিয়ে যাচ্ছে না, এরা আসলে জাহান্নামের দিকে যাচ্ছে ! " আবার এ কথা ও এক সময় মার্কেট খাইছে " নারী জাহান্নামের গাড়ী ! " সবাই কিন্তু ইহা শুনিয়া জোশের ঠেলায় চিল্লাইয়া উঠছে ঠিক ঠিক বইলা। মাহফিল কিন্তু শীতের রাতে ঘাম বের করা গরম কইরা ফেলছে সেই জন।
এই যে যারা ঠিক ঠিক বলিল, এরা সবাই পুরুষ। কারো বাপ, ভাই, স্বামী অথবা বয়ফ্রেন্ড ! দেশে এমন ঠিক ঠিক বলা লোকের সংখ্যা বেড়ে গেছে সত্যি কিন্তু ঠিক কাম করার লোকের সংখ্যা নগন্য !
আবার ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা নবী মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন, " জাহান্নামে নারীর সংখ্যা বেশী হবে ! " কি ভয়ানক সত্য। এরকম একটা ব্যাপার নিয়ে সমাজ এগিয়ে যাচ্ছে দুনিয়া ও এগুচ্ছে। আবার ইসলাম ধর্মে এ ও আছে " মায়ের পায়ের নীচে জান্নাত ! "
ধর্মের দোষ দেখি না। দোষ হইল আপনার আমার। আসলে আমরা সঠিক পরিচর্যা পাচ্ছি না। একটা বালক পুরুষ হয়ে উঠার পর দেখে চারপাশে বিশ্রী সব পুরুষ মানুষ। এদের চিন্তায় শুধু নারী। তবে সম্মানের চেয়ে নারী মানে বিছানার সংগী অথবা বাচ্চা জন্মানোর মেশিন ! এর বাইরে এ শতকেও অনেকে যেতে পারছে না কিন্তু কেন ?
এক আফগানের যে হাল দেখছি সেখানে অবশ্য ধর্মের চেয়ে গোঁড়ামি বেশী। আল্লাহ বাংলাদেশের নারীদের বাঁচায় দিছে নইলে বাইরে বোরকা ছাড়া দেখলে পায়ের নলিতে লাঠির আঘাত চলিত ! আলহামদুলিল্লাহ কইয়েন নারী মহল। এ দেশের কিছু হুজুর ও উহা সমর্থন করে। যা আরেক বিস্ময় ! এরা ও কারো বাপ, ভাই, স্বামী। মাঝেমধ্যে চিন্তা করি তাদের ঘরের নারীগন কিভাবে রাত দিন পাড় করছে ?
নারীদের মুক্তির নামে আরও বেশী বন্দী করে ফেলা হয়েছে। ঘরের লোকজন মেয়ে সন্তান হলে বলে, আবারও মেয়ে ! কালো হলে বলে, বিয়া দিতে কষ্ট অইব! এসব কষ্ট দূর করতে ফেয়ার এন্ড লাভলী সহ আরো ফর্সা ক্রিমের রমরমা ব্যবসা বাজারে চলছে। এরপর একটু মোটা হলে " কত আর খাবি? খাইতে খাইতে হাতি ! " আর এ হাতি কমাতে জিম আছে। সত্যি এখন আর কেউ মানুষ খোঁজে না খোঁজে ৩৬ ২৪ ৩৬ এর কাঁচা লংকার মতো লাল টকটকে শরীর ! আবার উল্টো হতে দেখেছি আমার এক আত্মীয়ের মেয়ের সমন্ধ এসেছে ছেলে একটু হ্যাংলা তাই মেয়ে না করে দিয়েছে এই বলে, " এই যুগে সবাই মাসল বিল্ডিং করে ? "
যতই তসলিমা নাসরিন কবিতায় প্রতিবাদ করুক নারী গন উহা পইড়া মজা পায় এরপর ফেয়ার এন্ড লাভলী মাইখা বাইরে যায়। জিমে যায়।
যাক খুব ক্লান্ত লাগছে। লেখার ইতি টানতে চাইছি। আসলে বর্তমান সমাজে নর নারীদের মগজে আরও একটা ধারণা খুব গেঁথে গেছে যেমন, একদল নারী বলে পুরুষ ছাড়াও আমরা বাঁচতে পারি আবার বহু পুরুষ ও নারী ছাড়া দিব্যি বেঁচে আছে । উনারা হচ্ছেন কওমে লুত ! আবার একটা প্রতিযোগিতাও লেগে আছে কে কার চেয়ে বেটার ! এই বেটার সুপারিওয়র হতে যেয়ে নারী এবং নর কোনটাই মানুষ হতে পারছে না। যা খুবই চিন্তার বিষয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৩:৫৭