somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাইয়িদ রফিকুল হক
আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

তবুও তিনি এসেছিলেন বাঙালির ছাতা হয়ে

১৭ ই মে, ২০২২ রাত ৯:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



তবুও তিনি এসেছিলেন বাঙালির ছাতা হয়ে
সাইয়িদ রফিকুল হক

সেদিন সন্ধ্যা থেকেই আকাশের বুকে জমেছিল কান্না,
আকাশজুড়ে ছিল শুধু মেঘের আনাগোনা,
আর চারিদিকে শুধু মেঘই ছিল,
যেকোনো সময় শুরু হতে পারে কালবৈশাখী!
তবুও তিনি আসবেন
তবুও তাঁকে আসতে হবে
তবুও তাঁকে আসতে হয়।
বাংলায় তখন শকুনদের কী এক ভয়াবহ উৎপাত!
সারাদেশে ছড়িয়েছিটিয়ে রাজত্ব করছিল আলবদরেরা।

রাতের আঁধারে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে এক স্বৈরাচার,
দেশটা হয়েছিল রক্তপিপাসু জল্লাদদের হাতে বন্দি!
সেদিন এই সোনার বাংলাকে কোনো দেশ মনে হয়নি,
এমনকি মনে হচ্ছিলো―এই দেশটা আস্ত এক কসাইখানা!
খুনিরা দেশজুড়ে আসর জমিয়েছিল মনের ফুর্তিতে
চারিদিকে খুনিদের বিশালবড় আর জমজমাট আড্ডা চলছিল।
দেশের পিতাকে হত্যা করে তারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে:
তাইতে তাদের মনে এত জোশ আর স্ফূর্তি!
জাতির জনকের খুনিরা বুক ফুলিয়ে প্রকাশ্যে চলছিল!
চিহ্নিত খুনিরা বিদেশে রাষ্ট্রদূত হয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছিল।
আর তিনি শুধু স্বদেশে ফিরতে চেয়েছিলেন বলে
স্বৈরাচার তার পোষা গুন্ডাদের লেলিয়ে দিয়েছে পত্রিকা অফিসে,
তারা যমদূতের মতো যেখানে-সেখানে গিয়ে ভীতি ছড়াচ্ছিলো,
ভয়ভীতি দেখাচ্ছিলো মাঠ-চষে বেড়ানো নেতাদের।
বারেবারে তাদের দেওয়া হচ্ছিলো গুম আর খুনের হুমকি,
নির্বিচারে তাঁর দলের নেতাকর্মীদের ভরা হচ্ছিলো জেলখানায়!
আর রাষ্ট্রীয় জেলখানাকে তারা বানিয়েছিল নিজেদের স্টোররুম!
স্বৈরাচারের গদি রক্ষা করতে সেদিন খুব ব্যস্ত হয়ে উঠেছিল
বাঙালি-ইতিহাসের সবচেয়ে নির্মম আর নিষ্ঠুর স্বৈরাচার।
এসবকিছুকে ঘৃণাভরে পদদলিত করে
তবুও তাঁর পদধ্বনি শোনা যেতে থাকে,
আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠতে থাকে সেদিনের দেশবিরোধী স্বৈরাচার।

তাঁর ফেরার কথা ছিল আরও আগেই
কিন্তু ভয়াবহ স্বৈরাচারের দাপটে তিনি ফিরতে পারেননি এতদিন।
এবার তিনি স্বদেশে ফিরবেন
তাঁকে ফিরতেই হবে
তাঁকে এবার আসতেই হবে।
আত্মস্বীকৃত খুনিদের প্রতিনিধি স্বৈরাচারের স্বীকৃতি মেলে না,
স্বঘোষিত সামরিকজান্তা তাঁকে দেশে ফিরতে দিবে না!
দেশে না-ফেরার জন্য তাঁকে নানারকম ভয়ভীতি
আর নিয়মিত হুমকিপ্রদর্শন করা হচ্ছিলো।
কঠিন সব হুমকিধমকি দেওয়া হচ্ছিলো কিছুদিন আগে থেকেই।
তবুও তিনি অনড়-অটল।
এবার তিনি দেশে ফিরবেনই।
জনগণের বাঁচার অধিকার প্রতিষ্ঠা করবেন,
মানুষের মাথায় ছাতা হয়ে দাঁড়াবেন তাদের পাশে,
আর মানুষের সাথে তাঁর পিতার মতো গড়ে তুলবেন প্রগাঢ় বন্ধুত্ব।

সেদিন ঝড়বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছিলো দেশ!
আকাশে বজ্রপাতের হুংকার চলছিল সমানতালে,
তবুও বৃষ্টিতে ভিজে ছুটছিল লক্ষ-লক্ষ মানুষ!
তারা জাতির জনকের কন্যাকে স্বাগত জানাতে
ছুটে গিয়েছিল ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
পুলিশ-বিডিআর আর আর্মির ব্যারিকেড
শেষমেশ কিছুক্ষণের জন্য তুলে নিয়েছিল স্বৈরাচার।
লক্ষ-লক্ষ মানুষ হঠাৎ করেই সেদিন নেমে এসেছিল রাস্তায়,
জনতার ভয়ে চরম ভীতসন্ত্রস্ত্র হয়ে উঠেছিল সেদিনের সেই স্বৈরাচার।
অবশেষে সকল বাধা সরায়ে
বাংলার ইতিহাসের নির্মম স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে,
প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টিকে কোনোরকম তোয়াক্কা না-করে
জনগণের ত্রাণকর্তারূপে তিনি ফিরে এলেন বাংলাদেশে।

সেদিনের কালরাত্রির বাধা ঠেলে ফিরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা।
লক্ষা-লক্ষ মানুষের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল সেই পবিত্র স্লোগান:
জয়-বাংলা, জয়-বঙ্গবন্ধু,
জয়-বাংলা, জয়-বঙ্গবন্ধু।
সেদিন থেকেই ভেসে যেতে থাকে গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারের মসনদ।
আজ শেখ হাসিনার নিজের বাড়িতে ফিরে আসার দিন।
আজ তাঁর প্রিয় স্বদেশের বুকে প্রচণ্ড সাহসে নিঃশ্বাস ফেলার দিন।

তাঁকে কখনো দেশে ফিরতে দিতে চায়নি
পৃথিবীর অনাকাঙ্ক্ষিত ভয়াবহ এক স্বৈরাচার।
তবুও তিনি এসেছিলেন,
মানুষকে ভালোবেসেছিলেন,
আর অসহায় জাতির মাথার উপরে চিরদিনের মতো
এক বিশ্বস্ত আর নিরাপদ ছাতা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।
আজও তিনি বাঙালির একমাত্র নিরাপদ ছাতা,
আজও তিনি বাঙালির ভালোবাসার বিশ্বস্ত এক নাম,
বাঙালির এই বিশ্বস্ত ছাতার নাম শেখ হাসিনা।
একচল্লিশ বছর ধরে বাঙালির ভাগ্যগড়ার কাজে
আজও তিনি নিবেদিতপ্রাণ এক কর্মী।

সাইয়িদ রফিকুল হক
১৭/০৫/২০২২
(আজ থেকে ৪১ বছর আগে, ১৭ই মে, ১৯৮১ সালে
শেখা হাসিনা সেদিনের প্রবল স্বৈরাচারের সকল বাধা
উপেক্ষা করে ফিরে আসেন তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশে।
আজকের বাংলাদেশ তাঁর হাতেই নিরাপদ।)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০২২ রাত ১১:৫০
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×