
- এই অটো দ্রুত চলো আমার বাসের সময় হয়ে গিয়েছে।
- জ্বী, উঠেন।
- হুমম, চলো।
- যদি কিছু না মনে করেতন তাহলে একটা কথা বলতাম।
- অবশ্যই বলো।
- আপনার শরীর থেকে যে সুগন্ধ বের হচ্ছে এটা কিসের সুগন্ধ?
- ওহ্ এই কথা! এটা একটা আতরের সুগন্ধ! কেন?
- না আসলে আমি এই আতরটা অনেক দিন ধরে খুজছি কিন্তু পাচ্ছি না আর তাছাড়াও নামটাও জানিনা! একটু বলা যাবে কোথা থেকে কিনেছেন এটা?
- এইতো এইচ.এস.এস রোড থেকে।
- আপনারা কি খুব ব্যস্ত? বলছিলাম আপনাদের ভাড়া দেয়া লাগবে না যদি আমার সাথে গিয়ে একটু কিনে দিতেন। আমি নামধাম অতো জানিনা তো আর তাছাড়া দেখা গেল আমি গিয়ে বললাম একটা নাম আর ওরা দিচ্ছে আরেকটা তখন আবার আমি বুঝতেও পারব না। এজন্যে আমার সাথে গিয়ে যদি একটু কিনে দিতেন তাহলে খুব ভালো হতো।
পাশের আমার সহযাত্রী বড় ভাইয়ের দিকে তাকালাম। ইশারায় হ্যাঁ সূচক সংকেত পেয়ে বললাম গাড়ী ঘুরান। দোকানের সামনে গিয়ে বললাম আপনি কিছুক্ষণ বসেন আমরা আসছি। কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে বললাম, এই যে ভাই আপনার আতর। উনি বললেন, কত টাকা ভাই? আমি বললাম, আগে বাস স্ট্যান্ডে নামিয়ে দিয়ে আসুন তারপরে টাকার হিসাব করা যাচ্ছে।
.
গাড়ী থেকে নেমে ভাড়াটা ধরিয়ে দিয়ে বললাম, এই নিন আপনার ভাড়া। বিস্ময়কর ভঙ্গিমায় তাকিয়ে বলল, ভাড়া লাগবে না আর আতরের টাকাটা নিবেন না? আমি বললাম দরকার নেই। মনে করেন কেউ একজন আপনাকে এটা ঈদের উপহার হিসেবে দিয়েছে! উনি আর চাপাচাপি করলেন না আমার বলার ধরণ দেখে বা সে সুযোগটাও পেলেন না। গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাওয়ার সময় বললেন, ভাই ভালো থাকবেন আর আতরটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। রমজানের শেষ বিকেলের ভগ্ন শরীর নিয়ে অকৃত্তিম মমতায় মুখে একটা কৃতজ্ঞতার হাঁসি ফুটিয়ে চলে গেলেন। এর থেকে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে! সেই ব্যস্ততাকে না বলা উচিত যে ব্যস্ততা মানুষের মুখে এক চিলতে হাঁসি ফোটানো থেকে বিরত রাখে! এ এক অমূল্য রতন কারো মুখে হাঁসি ফোটাতে পারা। এ এক অমূল্য শিল্প তাতে কোনো সন্দেহ নেই!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




