somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

HOW TO BE A SUCCESSFUL PSYCHOPATH ?

৩০ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একদিন! সব জ্বলবে !
আমার চিতার আগুনে, জ্বলবে !
আমার লাশ পোড়ার গন্ধ
তোমাদের বিরক্তি এনে দিবে !
পালিয়ে বাঁচবে ?
প্রার্থনা তোমাদের ভিতরটা
জ্বালিয়ে দিক !
পুড়ে মরে যাওয়ার ব্যথা
তোমাদের ভিতরটাও বুঝুক।

আমার রুমের বারান্দা থেকে সামনের বারান্দায় নতুন প্রতিবেশী মেয়েটা দেখা যাচ্ছে। চুল বাধা নীল টাওয়েল দিয়ে। হাত দিয়ে ভিজা কাপড় নেড়ে নেড়ে দড়িতে ঝুলিয়ে দিচ্ছে আপন মনে। অল্প এক গোছা ভেজা চুল টাওলের পরিধী পেরিয়ে চোখের সামনের দিকে পরে আছে। তার দৃষ্টিতে অল্প বিড়াব্বনা হওয়ার কথা।

আমি সাধারণত বারান্দায় সিগারেট খেতে এবং চিন্তার জগতে প্রবেশ করতে যাই। নিচে বসে পিছনের দেয়ালে হেলান দিয়ে একটু আয়েশী ভঙ্গিতে বসে "জীবন" এর ফিলোস্সপি বোঝার চেষ্টার চিন্তায় রত থাকি।

বারান্দা আমার "ভাবনার চেম্বার"। অনেকেই বাসার ওয়াশরুম "ভাবনার চেম্বার" হিসাবে বেছে নেয়। তবে কথিত আছে ওয়াশরুমে নাকি ইবলিশ থাকে। ইবলিশ সিন্ধান্তে উল্টা পাল্টা প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ছোট বেলা থেকেই ওয়াশরুম আমার ভাবনার চেম্বার হিসাবে অপছন্দ। জীবনের অনেক কঠিন কঠিন সিন্ধান্ত, আমি বাসার বারান্দায় বসে নিয়েছি। আজও আমার একটা কঠিন সিন্ধান্ত নেওয়ার দিন।

কিন্তু সামনের বারান্দার মেয়েটা চিন্তায় বাধাগ্রস্ত করছে। আমার একটু পরপর মেঘলা আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে তার দিকে তাকাতে ইচ্ছা হচ্ছে। যদিও তার প্রেমে পড়ার মত এখনও, কোন বিষয় সামনে আসে নি। এবং আমার একজন মনের মানুষ আছে। যে মানুষ সব সময় আপনার মনে থাকে। চোখের সামনে থাকুক অথবা নাই বা থাকুক। আমার মনেও সে রকম মানুষ থাকে, তবে তার মনে আমি আছি কিনা আমার জানা নেই। জানার ইচ্ছাও হয় নি কোনদিন !

এখন আমার সামনের বারান্দায় মনযোগ দিলে হবে না। মেয়ে থাকুক আর পরী থাকুক, আমার আপাতত এত ভাবার দরকার নাই। মেয়েটার সময় হলে, নিজের প্রয়োজনে বারান্দা ছেড়ে চলে যাবে। নিজের কঠিন চিন্তার জগতে প্রবেশ করার জন্য একটা সিগারেট ধরালাম। চিন্তার সময় সিগারেট মস্তিষ্কের খাবার হিসাবে কাজ করে। আজকে চিন্তার এজেন্ডা হল, কিভাবে পাগল হওয়া যায়। এবং সেটাকে কিভাবে লালন করা যায়। ইন্টারনেটে কিছু ডকুমেন্ট দেখেসি গত দুই দিন ধরে ,

"HOW TO BE A SUCCESSFUL PSYCHOPATH?"

নেটে অনেকেই কিভাবে সাইকো থেকে সুস্থ হওয়া যায় তা নিয়ে বিভিন্ন আর্টিকেল পাবলিশ করেছে। কিন্তু আমার চাই উল্টাটা। তাই নিজে নিজের কর্ম পরিকল্পনা আমাকেই ঠিক করতে হবে।

ইহা সহজ পথ নয় বাছা। ভালো শিল্পী হওয়ার তরিকা আছে , ভাল মানুষ হবার রুলস আছে। কিন্তু পাগল হবার কোন তরিকা নাই। একবার মুভিতে হুমায়ন ফরীদি সাহেবকে পাগলের ডাক্তার এর কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে সালমান শাহকে পাগল বানাতে দেখেছিলাম। মুভিটার নাম ছিল "আনন্দ অস্রু " কিন্তু কপাল দেখেন সালমান এর, দুই নায়িকার যে কি পরিমান সেবা দিল পাগলকে। বাবা রে বাবা !

একজন তো হস্পিটালে সেবা করার জন্য নার্স এর চাকরি নিয়ে নেয়। কিন্তু আমার ফরীদি সাহেব এর সাথে দেখা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। উনি পরলোক গমন করেছেন। শান্তিতে থাকুন স্যার। উনি বেচে থাকলে সেই ডাক্তার এর খোজ পাওয়া যেত।

তবে একজন সাইকাট্রিট এর সাথে দেখা করা যেতে পারে। তার চেম্বারে গিয়ে, প্রথমে একটা লম্বা সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে ,

- স্যার, জীবনে তো অনেক পাগলের রুগী সুস্থ করলেন , কিন্তু সুস্থ মানুষ পাগল বানাতে পেরেছেন কি, স্যার?

তিনি বলবেন - " তুমি কি আমাকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছ বাছা"

আমি বিনয়ের সাথে বলব , " না স্যার , এত বড় মানুষ কে আমি কিভাবে চ্যালেঞ্জ দিব, স্যার? তবে স্যার, আমার মনে হয় আপনি পারবেন না, স্যার"

আমরা বাঙ্গালী হিসাবে "স্যার" শব্দটা মনকে দূর্বল করে দেয়। পক্ষান্তরে , অনেকে স্যার বলে অন্যকে ডাকাটাও নিজেকে তার থেকে নিচু মনে করে।দুইটার কোনটাই উচিত নয়।

অতিরিক্ত সন্মান দেওয়ার জন্য, আমি দুইবার করে স্যার ডাকব।

- একশ বার পারব। আমি মোহাম্মদ উমুক বারী , কত গুলা ডিগ্রি আমার জানো?

- স্যার , শুধুই জিদ করছেন। পারবেন না, স্যার। আপনি চাইলে গিনিপিক হিসাবে আমার উপর প্রয়োগ করে দেখতে পারেন, স্যার। কারণ আমি জানি আপনি পারবেন না, স্যার।

তিনি রেগে প্রেসক্রিপশন লিখে আমার হাতে ধরিয়ে দিবেন।
রাতে খেয়ে ঘুম দিবি, সকালে দেখবি পাগল হয়ে গেছিস।

তবে এই মুহূর্তে ডাক্তার এর কাছে যাওয়া যাবে না। লকডাউন চলছে। তবে পাগলামি শুরু করা যেতে পারে। পাগলামি করার পর আপন মানুষ'রা কি করে এটা নিয়ে বিস্তর পর্যবেক্ষণ করা যাবে।

হঠাৎ করে কানে এক চিকন ভাঙা গলার স্বর ভেসে এল -হ্যালো,ভাইয়া, কেমন আছেন ?

সামনে তাকিয়ে দেখি সাম্নের বারান্দার মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে মুখে হাসি নিয়ে হাত নাড়ছে। মনে হচ্ছে, আমি মাএ প্লেন থেকে নামলাম। উনি নিতে এসেছেন।

আমি কষ্ট করে হাসি মুখ ধরে রেখেছি। কি বলতে চায় , সেটা তাকেই বলতে হবে। মিষ্টি হাসি দেখে পুরুষদের বিভ্রান্ত করা নারীদের খুবই সহজ সাধ্য কাজ।
কারণ মানব প্রজাতিকে বিধাতা সৃষ্টিগতভাবে, নারীর প্রতি দুর্বল করে সৃষ্টি করেছেন। প্রায় পৃথিবীর সকল হ্যাবিটাট এর একই অবস্থা ফিমেল প্রজাতির কাছে । প্রজাতি টিকিয়ে রাখার দায় বলে আমার ধারণা।
তিনি আমার উত্তর এর অপেক্ষা না করে আবার শুরু করলেন ……

- ভাইয়া , আপনাকে কয়েক দিন ধরে দেখি। সারাদিন বারান্দায় বসে থাকেন। বারী সিদিক্কী, সুবীর নন্দী'র গান শুনেন। মনে কি বেজায় কষ্ট আপনার? প্রেমে নতুন ছ্যাকা খেয়েছেন?

বলে খিল খিল করে হাসছে। আমি মেয়েটার কথা শুনে বিহব্বলিত। প্রথম কথায় পার্সোনাল এত প্রশ্ন? আমি কি মনে করছি, এটা তার কাছে কোন ব্যাপারই না। তার বাসায় পরিবারের লোকজন আছে। তারাও যদি শুনে তারা কি মনে করবে ?

পৃথিবীর অদ্ভুত ব্যাপার হল, হাসলে প্রতিটা মানুষকে সুন্দর দেখায়। তাকে ভেজা চুলে "ভেজাকেশী সুন্দরী রমণী" লাগছে। আহা, বুকে এমন লাগছে কেন। টালমাটাল ! চোখ বন্ধ করে আমি আমার মহামান্য প্রাক্তন এর নাম জপা শুরু করলাম, হে প্রাক্তন তুমি আমায় শাসিয়ে যাও

- প্রতিবারের মত করে তিনি ৪০-৪৫ সেকেন্ড এর ভিতর আমার "একমাত্র মহামান্য প্রাক্তন প্রেমিকা" হাজির হল। আগে এক-কি-দুই সেকেন্ডের ভিতর চলে আসত আমার চিন্তার জগতে। সম্ভবত এখন তার মন খারাপ থাকে "আমার বিভ্রান্তি মুলুক কর্মকান্ডে" . তাই একটু লেট করে আসে। আজকেও তিনি সেই সাদা লম্বা সেলোয়ার কামিজ পরে, খালি পায়ে আমার বারান্দার দরজায় দাঁড়িয়ে। বারান্দাটা ঝাড়ু দেওয়া হয় নি। সে বারান্দার ধুলার উপর দাড়িয়ে আছে।

-এই বোকা চৌধুরি! এই দিকে তাকা।
- সরি ! গুরুজি। খেয়াল করি নাই আপনি আসছেন। নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন।
- তুই আবার আমার "উপদেশ" সমূহ লঙ্ঘন করার পায়তারা করছিস !

তিনি রেগে আসেন খুব। তিনি রেগে থাকলে আমাকে "তুই তুকারি" করে কথা বলা শুরু করেন।

- ছি ছি মহামান্য ! এমন ভুল আমি কিভাবে করি ! হয়ত না বুঝে হয়ে গিয়েছে। মাফ করে দিন , গুরুজী !

- তোকে আমি অভিসম্পাত দিলাম ! তোর ক্ষমা নেই।

- পায়ে পরি গুরুজী ! ক্ষমা না করেন কিন্তু আপনার অভিসম্পাত দিয়েন না। আল্লাহর দোহায় লাগে ! আমি আপনার সল্প বুদ্ধির ছাত্র !

- ঠিক আছে ! পায়ে ধরতে হবে না। যা স্যান্ডেল নিয়ে আয়। পায়ে ময়লা লাগছে ! বারান্দা কি করে রেখেছ?
সে তুই থেকে তুমিতে ফিরে এসেছে।

আমি তার স্যান্ডেল আনার জন্য বারান্দা থেকে রুমে যাবার সময় মাথা নিচু করে কাচুমাচু অবস্থায় রুমে প্রবেশ করিলাম। তাহার জন্য রাখা স্যান্ডেলটা, নরম কাপড় দিয়ে মুছে ধুলা সরিয়ে নিয়ে এসে দেখি তিনি আমার বারান্দা প্রস্থান করিয়াছেন। তিনি সবসময় আমাকে না বলেই চলে যান। গুরু শ্রেণীর মানুষ তারা। আমাদের মত সাধারণ মানুষদের এসব ছোট খাট বিষয় আমলে নিলে তাহারা শুরু শ্রেণীতে প্রবেশ করিতে পারিতেন না। গুরু শ্রেণী মানুষদের সব সময় সন্মান করিতে হয়। তাদের কোন ব্যাপারে, অভিমান বলে কিছু থাকিতে হয় না। তাহলে তার চ্যালা পদ হারাইতে হয়। এবং অভিসম্পাত নিশ্চিত। "মনো-মৃত্যু" অবধারিত।

এত সব চিন্তার জগত থেকে বারান্দার মেয়েটা বাধাগ্রস্ত করছে আবারও
- ওই ভাইয়া, ওই ভাইয়া। কি ভাবছেন এত ?

হাত তার বারান্দার গ্রিলের বাহিরে। তার হাত একটা মাঝারী সাইজের বাঁশের সমান লম্বা হলে আমাকে ছুঁয়ে ফেলতে পাৰত। আচ্ছা "ভেজা সুন্দরী রমণী" এর হাত বাঁশের মত লম্বা হলে কেমন লাগত এটা ভেবে আমার হাসি পাচ্ছে খুব। মনে হচ্ছে তার ভঙ্গিমা নকল করে আমিও খিল খিল করে হাসি। চমকে যাবার সম্বভবনা আছে। তবে কাজটা করা উচিত হবে না। গুরুজী এর নিষেধ আছে। তিনি তার "উপদেশ সমুহ" তে উল্লেখ করেছেন ,

"নারীদের হাসির বিপরীতে , হাসি দেওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। ইহাতে উক্ত নারীরা তোমাকে তাদের আরও সন্নিকটে নেওয়ার জন্য জাল বিছানোর সুযোগ পেয়ে যায়। এবং জেনে রাখ ওখানে অবধারিত ভাবে ধংশ। মনধংশ।"



আমি মুখ গম্ভীর করে ভেজা চুলের রমণিকে বললাম ,

-আমি কি ভাবছি সেটা জানার জন্য আপনি প্রশ্ন করেন নি। তবে আমার মনে হয় আপনার কাজ হচ্ছে মানুষকে শুধু প্রশ্ন করা , উত্তর নিয়ে আপনি ভাবেন না। ভাবলে আমার দৃঢ় বিশেষ আপনি এই প্রজন্মের মহিলা আইনেস্টাইনের কাতারে পড়তেন।"


বাঁকা করে কথা বললাম , তার অভিব্যাক্তি বোঝার জন্য। তিনি যদি ব্যাপারটা বুঝতে পারেন তাহলে সে বুদ্ধিমতী। এক গবেষণায় দেখা গেছে , বুদ্ধিমতী মেয়েরা আদিম যুগে পুরুষদের সাথে শিকারে অংশ নিত। শিকার ধরার খাচা তারাই তৈরি করে দিতেন। অনেকে প্রত্যক্ষ ভাবে শিকার করতেন। তাই আমার গুরুজী বলেছেন।

"বুদ্ধিমতী মেয়েরা তোমার জন্য পরিত্যাজ্য। এরা তোমাকে সব সময় বুদ্ধির জালে পরাজিত করিবে। ইহা সত্য বলে মেনে নাও। তুমি সেখানে অপরাধী না হইয়াও , অপরাধী হয়ে বেঁচে থাকতে হবে। তুমি থাকবে মায়াবন্দী। কারণ তোমার বুদ্ধি স্বল্প, মায়া বেশী।"


কিন্তু মেয়েটা আমার বাকা কথা শুনে খিল খিল করে হেসে যাচ্ছে। এভাবে মাথা ঝাকিয়ে হাসার কারনে তার মাথার নীল টাওয়েল খুলে যাচছে। মনে হচ্ছে আমি কোন জোকার। তার সামনে পারফর্ম করছি। উনি টিকিট কিনে দেখতে এসেছেন। এখনি হাত তালি দিবে। আমার শো শেষ হবে।

কিন্তু সে হাততালি দিচ্ছে না। তার হাতে রঙিন মেহেদী লাগানো। কিছুক্ষণ আগে সম্ভবত মেহেদী ধুয়ে ফেলেছে। সাদা ধবধবে হাতে লালটা টকটক করছে। ভালো ব্রান্ডের মেহেদী হয়ত।

- ঠিক বলেছেন। আমার কথা বলতেই ভাল লাগে। কিন্তু আপনি কিভাবে বুঝলেন ? আপনি অনেক মজার মানুষ। আচ্ছা , আপনার গার্লফ্রেড আছে? আপনার গার্লফ্রেড কি আপনার কথা শুনে মজা পায়?

- প্রথম প্রশ্নের উত্তর হবে, আপনি জিজ্ঞেস করেছেন আমি কেমন আছি, কিন্তু উত্তর না নিয়ে আপনি আবারও কথা বলেছেন। এবং আমার প্রেমিকা আছে। পরের উত্তর হবে আমার প্রেমিকা আগে আমার কথা শুনে মজা পেত , তবে এখন পায় না। এই জন্য আমাকে এক তালাক দিয়েছে। বাকি তালাক গুলা ধীরে ধীরে দিবে।
সে আমাকে গতকাল আমাকে বলেছে ,
"জাস্ট………"
আগে মানুষ তিন তালাক দিত বিয়ের পর। আর এই বিংশ শতাব্দীতে , প্রেমের তালাক হয় এই তিনটা ওয়ার্ড দিয়ে , "জাস্ট ফাক অফ" .

আমার প্রেমিকা শুধু বলেছে "জাস্ট"। সেই সুত্রে, এক তালাক। বাকি দুইটা মনে মনে বলেছে হয়ত। সেই সূত্রে বলা যায় , আমার প্রেমিকা আমাকে এক তালাক দিয়েছে।

বানিয়ে বানিয়ে এত গুলা মিথ্যা কথা বলতে পেরে মনটা খুব শান্ত লাগছে। হাসি দিয়ে বিভ্রান্ত করতে এসেছ, হে নারী। আমিও যে বিভ্রান্তকারী।

কিছু মানুষ থাকে তারা সব সময় নিজের মনের ভিতর ঘুরে বেরায়। চার পাশের জগতটা নিয়ে তারা চিন্তিত থাকে না। আমিও চারপাশ নিয়ে আর ভাবতে চাচ্ছি না।

আমি উদাস ভঙ্গিতে একটা সিগারেটের টান দিয়ে , মেঝেতে কুয়াশা তৈরী করার চেস্টা করতে থাকলাম। মনে হচ্ছে, নিজেকে কুয়াশার বলয় এর ভিতর গায়েব করে দেই। অদৃশ্য হয়ে যাই। এই জন্য পৌরাণিক দেব-দেবীরা মেঘের উপর থাকতেন। তবে মেঘের উপর বৃষ্টি হয় না। শুধুমাত্র বৃষ্টির সময় তারা নিচে নেমে আসতেন বলে আমার ধারনা। আমি কালো মেঘের নিচে থাকতে চাই।

বারান্দার মেয়েটা আমার উত্তর শুনে এখনও হেসে যাচ্ছ। ইহা কে বাঁন নিক্ষেপ চলমান বলে। সে জানে না, এই বাঁনে আমি মরব না। এর থেকে বড় বড় বান আমি সামলিয়ে এসেছি বিগত জীবনে। আমার গুরুজী তার অন্যএ বিয়ের আগে আমাকে জীবনের এই সব বাঁন সামলানোর উপদেশ দিয়ে গেছে। আমি তাহার উপদেশ মানিয়া চলছি
মেয়েটা তার হাসি সামলিয়ে আবারও প্রশ্ন -

- ভাইয়া, আপনি কি বাকি দুই তালাকের জন্য অপেক্ষা করে দুঃখ পাচ্ছেন?

- হুম, কথা সতি্য। আমার ধারনা সে পরিকল্পনা করছে, কিভাবে বাকি দুই তালাক দেওয়া যায়। সে অতি বুদ্ধিমান মেয়ে। পরিকল্পনা ছাড়া কোন কাজ করে না।সে ভাবছ হয়ত, কিভাবে আমাকে বাকি দুই তালাক দেওয়া যায় ।

- ভাইয়া, আমার মনে হয়, সে আপ্নাকে তিন তালাক দিবে না। ভয় দেখাচ্ছে।

হতে পারে। তবে আমার কাছে এক তালাক, আর তিন তালাক এর বিষয়টা একই। এক যা, তিন তাই। ভয় দেখালে আমি আর সেখানে থাকতে পারি না। আমি খুব ভীতু শ্রেণীর মানুষ।

বানিয়ে বানিয়ে কথা বলতে ইচ্ছা হচ্ছে না আর। বৃষ্টি শুরু হচ্ছে। বারান্দার গ্রিলের ফাক দিয়ে পানি এসে মেঝেতে ভিজিয়ে দিচ্ছে। আমি মেঝেতে একই ভাবে বসে আছি। আচ্ছা, চিতায় আগুন দেওয়ার সময় বৃষ্টি হলে কি, চিতায় আগুন দেওয়া থেমে থাকে?

মেয়েটা বারান্দা থেকে চলে গিয়েছে। তার খিল খিল হাসির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।

কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারছি না, আমার বারান্দার সামনের খোলা আকাশে কি করে আরও একটা বারান্দা এলো?

আমার বারান্দার সম্মুখে তো শুধুমাত্র খোলা বিশাল একটা আকাশ। যে আকাশে সব সময় কালো মেঘে ঢেকে থাকে।আমি চাইলেই বৃষ্টি হয়। এখন তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০২০ রাত ১২:০০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×