somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভ্রমন লগঃ পূর্ব থেকে পশ্চিমে- তৃতীয় পর্ব

২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পান্তুমাই ঝরনার পাশে

ভ্রমন লগঃ পূর্ব থেকে পশ্চিমে- দ্বিতীয় পর্ব



বিছানাকান্দি জিরো পয়েন্টে

সন্ধ্যার অন্ধকারের মধ্যে টর্চের আলোতে প্রায় ১৫/২০ মিনিট হেঁটে বগাইয়া বিজিবি ক্যাম্পে এসে পৌঁছলাম। ক্যাম্পের কমান্ডারকে নিজেদের পরিচয় দিয়ে আমরা বগাইয়া থাকার কথা বলতেই সে আপত্তি জানাল, বলল তার এলাকায় থাকা যাবে না। আমাদের আরও পাঁচ কিমি ভিতরে হাদারপার যেয়ে থাকার কথা বলল। তাঁর ব্যাবহারে মেজাজটা খুব বিগড়ে গেল, তবুও রাগটা কোন রকম সামলে নিয়ে তাকে জানালাম যে আগের রাতে হাজিপুরে বিজিবির পরামর্শে আমরা হাজিপুর স্কুল মাঠে ছিলাম। হাজিপুর বিজিবির কমান্ডার বলেছিলেন যেহেতু সীমান্ত এলাকায় ঘুরাঘুরি করতেছি তাই যেখানেই বিজিবি ক্যাম্প পরে সেখানেই একটু জানাতে। তাঁর পরামর্শের কারণেই এইখানে জানানো। কিন্তু তাতে ভাল কিছু হোলই না বরং আরও ঝামেলা বাড়ল। আলাপ না বাড়িয়ে সোজা ক্যাম্পের পাশ দিয়ে স্কুলের পথে পা বাড়ালাম।

এরই মধ্যে ক্যাম্পের বিজিবির পাশেই দাড়িয়ে থাকা একজন পিছনে দৌড়ে এসে আমাদেরকে তাঁর বাসায় যেয়ে তাঁর জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বললেন এবং আমাদের থাকার ব্যাপারে সব ব্যাবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে সাথে আসা সেই শ্রমিকদেরকে তিনি তাঁর বাসায় পৌঁছে দিতে বললেন। আলাপে জানালেন তিনি এই এলাকার মেম্বার সাহাবুদ্দিন ভাই। ভেবেছিলাম বগাইয়া স্কুলের মাঠেই যেয়ে টেন্টিং করব দেখি বিজিবি কি করে, কিন্তু সাহাবুদ্দিন ভাই তা না করে তাঁর বাসায় যেয়ে তাঁর জন্য অপেক্ষা করার অনুরোধ করলেন। তিনি আরও জানালেন যে তাঁর বাসার পাশেও স্কুল আছে, বাসায় থাকতে না চাইলে প্রয়োজনে তিনি স্কুল মাঠে ব্যবস্থা করে দিবেন।


সাবুই ভাইয়ের বাসা থেকে বিদায় নেয়ার সময়

ক্যাম্পের উল্টোদিকে বগাইয়া স্কুলের অবস্থান, তার পাশেই একটা দোকান চোখে পরল। অনেকক্ষণ কারও পেটে কিছুই পরে নাই, তাই সবাই চা নাস্তার জন্য একটা ছোট্ট বিরতি নিলাম। মনোহারি দোকানের পাশাপাশি কিছুটা চা নাস্তার ব্যবস্থা করে সাথে দোকানের ভিতরে টিভি চালিয়ে বেশ জমিয়ে দোকান চালাচ্ছেন দোকান মালিক কাসেম ভাই। বেশ সুন্দর করে গুছিয়েছেন দোকানটাকে তিনি। প্রসাদনি সামগ্রী থেকে আরম্ভ করে চাল-ডাল সব কিছুই আছে এই দোকানে। শুধু তাই না মোবাইল ফোনের মেমোরি কার্ড, ব্যাটারি, চারজার, কম্পিউটার, বিভিন্ন গানের সিডি হেন কিছু নাই যা তার দোকানে নাই বলে মনে হয়। অজপাড়াগাঁয়ে এই রকম একটা দোকান সত্যিই চোখে পরার মতো। নিজেই কৌতূহলী হয়ে আমাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। বেশ মিশুক প্রকৃতির লোক কাসেম ভাই। চা নাস্তা খেতে খেতে আমাদের পরিচয় পালা শেষ করে বেশ কিছুক্ষণ আলাপ হল তাঁর সাথে। চা নাস্তা শেষ করে ও কাসেম ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আবার আমরা রওনা হলাম সাহাবুদ্দিন ভাইয়ের বাড়ির দিকে।

ক্যাম্পের পিছনে ১৫-২০ মিনিটের পথ পেরুলেই তাঁর বাড়ি। পথের অবস্থা বেশ করুণ, অন্ধকারে টর্চের আলো মেরে মেরে এগুতে হচ্ছে। ভাঙ্গাচুড়া, কোথাও কোথাও এক দেড় হাত গর্ত, তাও আবার কিছুটা বালিতে ভরা। পা পড়লেই পিছলিয়ে ডিগবাজি খাওয়ার অবস্থা। একবার পড়ে কয় হাত দূরে পিছলিয়েছি অন্ধকারে তার দূরত্ব আর বেড় করার প্রয়োজন মনে না করে বেশ সাবধানে পা টিপে টিপে চলতে আরম্ভ করলাম, আর পাথর ও বালি খেকো রাক্ষসদের এবং ট্রাক ও ট্রাক্টর চালকদেড় মনে মনে গালি দিতে লাগলাম। যাদের বদৌলতে পথের এই ভয়ঙ্কর সুন্দর অবস্থা। অবশ্য পরদিন দিনের আলোতে শুধু পথেরই না আশেপাশেরও যা চিত্র দেখলাম তা বলে আর দুঃখ বাড়াতে চাই না।


বিছানাকান্দির পথে

মেম্বার ভাইয়ের বাড়িতে পৌছাতে প্রায় পৌনে সাতটা বেজে গেল। তখনও তিনি বাড়িতে এসে পৌছাননি। বাড়িতে তাঁর ছেলে ও এক ভাইকে আমাদের পরিচয় দিয়ে জানালাম যে তিনি বাড়িতে এসে তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে বলেছেন। আমরা হাতমুখ দুয়ে ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই তিনি বাড়িতে এসে হাজির। বাড়ির পাশের স্কুলে থাকার কথা বলতেই তিনি তাঁর অতিথি হয়ে নিজ বাড়িতে থাকার অনুরোধ করলেন। তাঁর অনুরোধ উপেক্ষা না করে অবশেষে রাজী হলাম তাঁর অতিথি হতে, তবে আমাদের জন্য খাওয়া দাওয়ার বাড়তি ঝামেলা না করার জন্য অনুরোধ করে দুইটি খিচুরির প্যাকেট এগিয়ে দিলাম রান্নার জন্য। কিন্তু তিনি সেটাও নিতে নারাজ, বললেন তিনি যা খাবেন আমরাও তাই খাব। তবুও খিচুরির প্যাকেট রান্নার জন্য অনুরোধ করলাম ও বুজাতে চেষ্টা করলাম যে প্যাকেটগুলো রান্না করলে আমাদের বয়ে আনা বোজাটা কিছুটা হলেও লাগব হবে। তিনি প্যাকেটগুলো ভিতরে দিয়ে এসে জানতে চাইলেন যে খিচুড়ির মধ্যে মাংস মিশিয়ে দিলে আমাদের কোন আপত্তি আছে কিনা। হেঁসে সায় দিয়ে আবারও বাড়তি ঝামেলা না করার অনুরোধ করলাম।

এরমধ্যে অনেকক্ষণ যাবত তনময়, শিবলি ও পিয়ালের কোন খোঁজ নাই, আশেপাশে কোথাও গিয়েছে মনে হয়। সাবুই ভাই আমাকে তাঁর বাড়িটি ঘুরিয়ে দেখালেন, বাড়ির পিছনে প্রায় ৩০-৩৫ টা গরু বাঁধা। উল্লেখ্য যে তাঁর পুরো নাম সাহাবুদ্দিন হলেও এলাকাতে তিনি সাবুই ভাই নামে বেশী পরিচিত। পেশায় তিনি একজন গরু ব্যবসায়ী। ঢাকা থেকে জরুরী একটা ফোন পেলাম, কোন রকমে পাশ কাটিয়ে জানালাম যে কয়েকদিন পর ঢাকা ফিরে যোগাযোগ করব। কিছুক্ষণ পর আবার তানভীরের ফোন পেলাম। খুব উদগ্রীব হয়ে আমাদের সম্বন্ধে জানতে চাইল- আমরা এই পর্যন্ত কোন কোন এলাকা ট্রেক করে এখন কোথায় অবস্থান করছি, আমাদের আগামীকালের গন্তব্য কোথায় ইত্যাদি। জানালো যে, সে আগামীকাল অফিসের জরুরী মিটিং শেষ করে রাতের বাসে রওনা দিয়ে পরদিন সকালে আমাদের সাথে যোগ দিবে। আলাপে আলাপে বেশ কিছুটা সময় পার হয়ে গেল, এরমধ্যে তনময়, শিবলি ও পিয়াল এসে হাজির। জানালো যে চাঁদের আলোয় তাঁরা পাশের মাঠে আশেপাশের প্রকৃতি উপভোগ করছিল।


বিছানাকান্দির পথে

তাঁরা ফিরে আসার পর সাবুই ভাইকে নিয়ে সবাই একসাথে খেতে বসলাম। খিচুড়ির পাশাপাশি সাবুই ভাই তাঁর ঘরের রান্না করা ভাত, ফুলকপি দিয়ে রান্না করা ছোট মাছ, ও টকপাতা দিয়ে রান্না করা ছোট মাছের টকঝাল ঝোলও আমাদের খাওয়ার জন্য এগিয়ে দিলেন। সব মিলিয়ে চমৎকার একটি আহার আমরা বেশ তৃপ্তিতে উপভোগ করলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ সাবুই ভাইকে নিয়ে সবাই একসাথে গল্প করতে বসলাম। আমরা গভীর আগ্রহের সাথে সাবুই ভাইয়ের সংগ্রামী জীবনের নান চড়াই উথরাই পার হয়ে কিভাবে জীবনযুদ্ধে প্রতিষ্ঠা অর্জন করেছেন তা শুনলাম। আরও শুনলাম সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ে তাঁর অতীত এডভেঞ্চারের বিভিন্ন কাহিনী।

রাত প্রায় ১২টা বাজতে চলল পরদিন সকাল সকাল রওনা হতে হবে। ছুটির স্বল্পতার কারনে পরদিন সকালে তনময় ও শিবলি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিবে। আমি ও পিয়াল সামনে এগিয়ে যাব বাকি ট্রেক সম্পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে, অবশ্য দুই একদিনের মধ্যে তানভীর এসে আমাদের সাথে যোগ দিবে। সবাই ব্যাগপত্র গুছিয়ে ঘুমানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। তনময় ও পিয়াল শুয়ে বেশ তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরল। ঘুম আসছে না, আমি কিছুক্ষণ গড়াগড়ি করে আবার উঠে বসলাম, শিবলি তখনও ঘুমায়নি। শিবলি বলল, বাহিরে খুব সুন্দর চাঁদ উঠেছে চলেন কিছুক্ষণের জন্য বাহিরে ঘুরে আসি।


বিছানাকান্দির প্রকৃতিকে ধ্বংসের লীলা

শিবলিকে নিয়ে হেঁটে হেঁটে বিছানাকান্দির নদীর পারের মাঠে এসে পৌঁছলাম। হালকা কুয়াশা ও চাঁদের আলো এক হয়ে মনে হচ্ছে এক স্বর্গীয় অনুভূতি তৈরী করেছে। বিস্তীর্ণ মাঠ ও নদীর বালিগুলো সেই আলোতে কি যে দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে তা ভাষায় অবর্ণনীয়। দুরে ভারতের বিশাল বিশাল পাহাড়গুলো তাঁর সাথে কিযে আরেক মাত্রা জুড়ে দিয়েছে। নিজের চোখে না দেখলে জীবনে কখনও এই দৃশ্য স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারতাম না। চতুরদিক নিরব নিস্তব্ধ, আমাদের দুইজনের কথাবার্তা ও নিঃশ্বাসের শব্দ ছাড়া আর কিছুই কানে আসছে না। এমন সুন্দর একটা পরিবেশে কথাও বলতে ইচ্ছে করছে না, শুধু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে মাঝে মধ্যে হু হাঁ করে শিবলির কথার উত্তর দিয়ে যাচ্ছি। কতক্ষণ এভাবে দাড়িয়ে ছিলাম তা খেয়াল করিনি, এক সময় শীতের তীব্রতায় নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে আমাদের দাঁত কাপনির শব্দ কানে আসতে লাগলো, ঘড়িতে দেখলাম রাত আড়াইটা বাজে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আবার ঘরে ফিরে এসে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম পরদিন খুব সকালে উঠতে হবে বলে। শুয়ে সেই দৃশ্য স্বপ্নেরমতো কল্পনা করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পরেছি টের পায়নি।

পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সাবুই ভাইয়ের অতিথিয়তায় চা নাস্তা শেষ করে রওনা হতে প্রায় ৮টা বেজে গেল। সাবুই ভাইকে বিদায় জানিয়ে আমরা দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে দুই দিকে রওনা হলাম। তনময় ও শিবলি রওনা হলো হাদারপার হয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে, আজ রাতের মধ্যেই তাঁরা ঢাকা পৌঁছাবে। আর আমি ও পিয়াল রওনা হলাম উথমা হয়ে ভোলাগঞ্জের উদ্দেশ্যে। শুরুতে গতরাতের সেই মাঠটি পেরিয়ে বিছানাকান্দির নদীর পার ধরে এগুতে এগুতে আমাদের অর্থাৎ মানুষরুপী শকুনের প্রকৃতি ধ্বংসের লীলা দেখতে থাকলাম। শকুন যেমন করে মরা পচা ও নিথর প্রাণীকে ঠুকরিয়ে ঠুকরিয়ে খায়, ঠিক তেমন করে আমরাও এই সুন্দর প্রকৃতিকে ঠুকরিয়ে ঠুকরিয়ে ধ্বংস করে চলেছি। পার্থক্য একটাই সৃষ্টিকর্তা শকুন দিয়েছেন প্রকৃতির এই মরা পচা খেয়ে পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য, আর আমরা মানুষরুপী শকুনেরা এই জীবন্ত সুন্দর ও সতেজ প্রকৃতিকে ঠুকরিয়ে খাচ্ছি পরিবেশ ও প্রকৃতিকে ধ্বংস করার জন্য।


বিছানাকান্দির প্রকৃতিকে ধ্বংসের লীলা

গতরাতে যে মাঠে দাড়িয়ে যে স্বর্গীয় পরিবেশ পরম তৃপ্তিতে উপভোগ করেছি হয়তোবা আগামীতে আবার যেয়ে সেই মাঠটি পাব কিনা সন্দেহ, আর সেই পরিবেশ...... তা মনে হয় আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রায় মিনিট বিশেক এইভাবে হেঁটে বিজিবি ক্যাম্পের পাশ কাটিয়ে আমরা ইসমাইল ভাইয়ের দোকানে এসে পৌঁছালাম। ছোট্ট একটা চায়ের বিরতি নিয়ে আবার সামনের পথে পা বাড়ালাম। বগাইয়া থেকে ভিতরগুল পেরিয়ে একটা লম্বা বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে আমরা দমদমা পৌঁছলাম। দমদমা থেকে আরও কিছুটা এগিয়ে কাদা মাটির একটা শুকনো ঝিরি পেরিয়ে বিশাল একটা খোলা জায়গায় এসে পৌঁছলাম, দুই পাশেই দিগন্ত বিস্তৃত ধানের ক্ষেত। উত্তরে ধানের ক্ষেত পেরিয়ে দূরে ভারতের বিশাল পাহাড়গুলো মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে আর সামনের দিকে অর্থাৎ পশ্চিমে ধানের ক্ষেত পেরিয়ে দূরে নামাগ্রামটি চোখে পরে। এরমধ্যে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পার হয়ে গেল। শুরু থেকেই বেশ আয়েশ করে আস্তে ধীরে এগোচ্ছি, কোন তাড়াহুড়া নেই। আমাদের পরের গন্তব্য নামাগ্রাম পেরিয়ে কামালবস্তি হয়ে উথমা।

শীতের সকালের কোমল রোদে উত্তরের পাহাড় থেকে নেমে আসা হিম শীতল বাতাস সোনালি ধানের উপর পরশ বুলিয়ে আমাদের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। বাতাসে ধানের পাগল করা গন্ধ মনকে উদাস করে তোলে। কয়েক মিনিটের জন্য দাড়িয়ে পরলাম। পিয়াল তাঁর স্লিপিং প্যাডটি মাটিতে বিছিয়ে বলল, আসেন কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নেই এখানে। সাথে সাথে ব্যাগপেক নামক বোজাটাকে নামিয়ে স্লিপিং প্যাডে গা হেলিয়ে দিলাম, মনে হচ্ছিলো এই ধরনের কিছু শুনার জন্যই অপেক্ষায় ছিলাম। সারাদিনটা এখানেই কাটিয়ে দিতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল, পিয়ালও আফসোস করতেছিল এতো সুন্দর একটা জায়গায় রাত না কাটাতে পেরে। শুয়ে বসে গল্প করে প্রায় ঘণ্টা খানেক পার করে দিলাম এখানে। ততক্ষণে ঘড়িতে প্রায় বেলা ১১টা। উঠতে ইচ্ছে না করলেও উঠে রওনা দিতে হল, আমাদের আজ আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে। দুইটা ছোট শুকনো কাদা মাটির ঝিরি পেরিয়ে নামাগ্রাম পৌছাতে প্রায় আরও আধা ঘণ্টা পার হয়ে গেল। আরও প্রায় ঘণ্টা দেড়েক হেঁটে নামাগ্রাম পেরিয়ে কামালবস্তি পেরিয়ে উথমা পৌঁছলাম। দুই পাশে বেশ অনেকটা সাদা ধবধবে বালির চর মাঝখানে স্বচ্ছ টলটলে পানির শীর্ণধারা আপন মনে বয়ে চলেছে। দেখলেই ঝাপিয়ে পরতে ইচ্ছে করে। ভারতের পাহাড় থেকে নেমে আসা অল্প পানির এই ধারাটা ঝিরি না নদী তা আর স্থানীয় কারো কাছে জানা হয়নি, তবে পাশের ছড়ার বাজার নামটি এর পরিচয় করিয়ে দেয়। খুব অল্প প্রায় হাঁটু পানির উথমার ঝিরি বা ছড়াটি পা হেঁটে পার হয়ে আমরা ছড়ার বাজারে পৌঁছলাম।


বিছানাকান্দির প্রকৃতিকে ধ্বংসের লীলা

ছোট্ট একটি বাজার এই ছড়ার বাজার। বাজারের পাশ দিয়ে একটা পাকা রাস্তা উত্তরে অনেকটুকু চলে গেছে, সম্ভবত বর্ডারে চলে গেছে। সেই রাস্তায় সিএনজি ও দানব আকৃতির ট্রাকগুলো কয়েক মিনিট পর পরই ছুটে চলেছে। কিছুক্ষণ আগেও শান্ত ও নিরিবিলি একটা গ্রাম্য পরিবেশে কাটিয়েছিলাম, ছড়ার বাজার পৌঁছে মনে হচ্ছে ব্যাস্ত কোন উপশহরে এসে পৌঁছেছি। ঘড়িতে তখন ১টা বাজে। দিনের খাওয়া সারবার জন্য একটি ছোট খাবার হোটেলে গেলাম। ভাত, মাছ, সবজি আছে শুনে ভেবেছিলাম ভাত খাব কিন্তু খাবারের চেহারা দেখে কেন যেন অরুচি এসে গেল, ঠিক করলাম এখানে চা নাস্তা সেরে নিয়ে সামনে ভাল কোন হোটেলে যেয়ে খাব। সিঙ্গারা ও চা খেয়ে আবার সামনের পথে পা বাড়ালাম, ততোক্ষণে প্রায় ১৫ মিনিট পার হয়ে গেল।

প্রায় আধঘণ্টা হেঁটে আমরা ছড়ার বাজার থেকে বরম ছড়া হয়ে মায়ার বাজারে পৌঁছলাম। এখানে রাস্তার পাশে কয়েকটা চা নাস্তার ছোট হোটেল ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ল না। কিছুটা বিশ্রামের উদ্দেশ্যে ভাবলাম এখানেও আরেকটা চায়ের পর্ব হয়ে যাক। চা খেতে খেতে খোকন নামে এক যুবকের সাথে আলাপ পরিচয় হল। জাফলং থেকে হেঁটে এসেছি শুনে অবাক হয়ে বেশ বড় বড় চোখে কিছুক্ষণ আপাদমস্তক তাকিয়ে পর্যবেক্ষণ করল। জানতে চাইল রাতে কোথায় ছিলাম। সব শুনে বেশ কৌতূহল প্রকাশ করল। তাঁর কাছে আজ রাতে থাকবার ভাল কোন জায়গার সন্ধান চাইতে সে জানালো যে কয়েক কিমি পরে তাঁর বাড়ি, সেখানে পৌঁছালে সে সব ব্যাবস্থা করে দিবে।


দমদমার পথে

চা পর্ব শেষ করে খোকনের সাথে সেলফোন নম্বর বিনিময় হল। সে সিএনজিতে রওনা হওয়ার সময় আমাদেরও আহ্বান জানালো তাঁর সাথে সিএনজিতে যাওয়ার জন্য, কিন্তু আমরা হেঁটে যাব জানিয়ে তাঁকে বিদায় দিলাম, সেও আমাদের জন্য সামনে অপেক্ষায় থাকবে জানিয়ে বিদায় নিল। আমাদের এবারের গন্তব্য শান্তির বাজার হয়ে ভোলাগঞ্জের দয়ার বাজার। সরু পাকা রাস্তা ধরে আমরা এগিয়ে চলেছি। গ্রামের পাকা রাস্তায় হাঁটতে নারাজ পিয়াল, ধীরে ধীরে তার বিরক্তির মাত্রা বাড়তে লাগল এই রাস্তায় হাঁটতে। আমিও বেশ বিরক্ত হচ্ছিলাম যখন কিছুক্ষণ পর পর রাস্তা ছেড়ে দিতে হচ্ছিলো সিএনজি ও দানব আকৃতির ট্রাক গুলোর জন্য। পিয়ালের বিরক্তির মাত্রা চরমে পৌঁছে গেল বুজলাম যখন সে বলল যে, আগামীকাল সে আর এই পাকা রাস্তায় হাঁটবে না।

প্রয়োজনে সে সিএনজিতে সিলেট রওনা হবে তবুও সে পাঁকা রাস্তায় হাঁটবে না। পাঁকা রাস্তায় হাঁটতে চাইলে সে ঢাকাতে হাঁটতে পারে, এত দূরে সিলেটে এসে কেন। কি আর করা... আগামীকাল থেকে পাঁকা রাস্তায় না হেঁটে রিক্সা বা সিএনজিতে চড়ে এগিয়ে যাব এই বলে তাঁকে কিছুটা আশ্বস্ত করলাম। ইতিমধ্যে আমরা ভাতরাই এসে পৌঁছলাম। ছোট্ট একটা চায়ের দোকান চোখে পরল, চা খাওয়ার অজুহাতে খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে নিলাম। চা পর্ব শেষ করে আবার হাঁটা আরম্ভ করলাম। প্রায় আধ ঘণ্টা হেঁটে বালুর চর এলাকা পার হয়ে রাস্তার বাঁকে ছোট্ট একটি বাজার পরল, স্থানীয়দের সাথে আলাপে জানতে পারলাম যে এই বাজারের নাম শান্তির বাজার। বাজারে খোকনের খোঁজ করে তাঁকে না পেয়ে ফোন দিলাম। সে জানালো যে সে আমাদের জন্য এই রাস্তার উপরেই অপেক্ষা করতেছে, আমাদেরকে আরও কিছুটা সামনে এগুবার পরামর্শ দিল। পিয়ালের চোখে মুখে বেশ বিরক্তির ছাপ, অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁকে আরেকটু হাঁটার কথা বলতেই মনে হল যে, পারলে সে তখনই সিলেটের উদ্দেশ্যে দৌড় দেয়। কি আর করা, এই বিরক্তি নিয়েই আবার হাঁটা ধরলাম। প্রায় ১৫/২০ হেঁটে জিপিএস এ দেখলাম যে আমরা প্রায় ইসলামাবাদের কাছাকাছি চলে এসেছি। দয়ার বাজারও খুব একটা দূরে নয়।


নামাগ্রামের পথে

দূরে বিরাট একটা মাঠের মাঝখানে বিভিন্ন রঙের কারুকাজ করা সুন্দর এবং নুতন একটা বাড়ী চোখে পড়ল। প্রথমে ভেবেছিলাম এটা হয়ত কোন সরকারী কর্মকর্তার বাসভবন হবে, কিন্তু কাছাকাছি এগিয়ে যেতেই দেখলাম খোকন আরও কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সেই বাড়ীটির সামনে রাস্তার উপর আমাদের জন্য অপেক্ষায়রত। কাছে এগিয়ে যেতে সে তাঁর ভাই ও বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। আমাদের দিকে সবার কৌতূহলী দৃষ্টি বেশ ভাল করে বুজিয়ে দিচ্ছিল যে খোকন আমাদের উপস্থিতির আগেই তাঁদেরকে আমাদের পাগলামির (জাফলং থেকে এই পর্যন্ত অর্থাৎ ভোলাগঞ্জ পর্যন্ত হেঁটে আসার) কথা বলেছে। আলাপ পরিচয়ের পরে খোকন আমাদের সেই বিড়ীটিতেই নিয়ে গেল। হাতমুখ ধুয়ে কিছুটা ফ্রেশ হয়ে তাদের আতিথতায় চা নাস্তা করলাম। আশেপাশে কোথাও থাকার ব্যাবস্থা জানতে চাইতেই খোকন ও তাঁর ভাই দুজনেই তাঁদের বাড়ীতে থাকার কথা বললেন। শেষ কয়েক ঘণ্টা বিরক্তিকর হাঁটাহাটির পর তাঁদের এই প্রস্তাবে আপত্তি না করে বরং রাজী হয়ে গেলাম। ব্যাগপত্র গুছিয়ে রেখে খোকনের সাথে বেড় হলাম আশেপাশে ঘুরে দেখবার জন্য। কিন্তু ততোক্ষণে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। সন্ধ্যার আধো আলোতে আমরা দয়ার বাজার পেরিয়ে ভোলাগঞ্জের সেই কাঙ্ক্ষিত দলাই নদীর পাশে যেয়ে দাঁড়ালাম। সন্ধ্যার এই মৃদু আলোতে যতটুকু দৃষ্টি যায় শুধু দুধু বালির চর চোখে পরে, মাঝে মাঝে কয়েকটা পাথরের স্তূপও চোখে পরে আর নদীর উল্টোদিকে দূরে গ্রামের ঘরবাড়ির কিছু আলো চোখে পরে।

উত্তর থেকে ভেসে আসা হিম হিম বাতাসে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে গা জুড়িয়ে আমরা আবার দয়ার বাজারে ফিরে আসলাম খোকনের দুলাভাই জয়নাল ভাইয়ের সাথে পরিচিত হতে। তিনি স্থানীয় একটি হোটেলে আমাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। খুবই মিশুক, বন্ধুপরায়ণ ও আলাপী একজন মানুষ তিনি, কয়েক মিনিট আলাপে আমাদের খুব আপন করে নিলেন। মনে হচ্ছিল যেন অনেক দিনের চেনা। বেশ কয়েকপর্ব চা সিগেরেট খেতে খেতে জমিয়ে আড্ডা দেয়া হল তাঁর সাথে। আমরা ঘুরতে বেড়িয়েছি শুনে তিনি তাঁর অতীত জীবনের ঘুরাঘুরির ইতিহাস আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। দিল্লী, আগ্রা, বোম্বে, দারঝিলিং, শিলং বিভিন্ন জায়গায় ঘুরার প্রায় সব অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। ভোলাগঞ্জের উত্তরের পাহাড়ে ও পাহাড়ের গুহায় এডভেঞ্চার করার অভিজ্ঞতা শুনে পিয়ালের কৌতূহল কয়েকগুণ বেড়ে গেল, মনে হচ্ছিল পারলে সে তখনই সেই দিকে দৌড় দেয়। প্রায় দুই আড়াই ঘণ্টা জমিয়ে আড্ডা দিয়ে তিনি আমাদের বিদায় জানিয়ে বাজারে দিকে রওনা হলেন, আর আমরাও খোকন নিয়ে আবার বাসায় ফিরে আসলাম।


কামালবস্তির পথে

এরমধ্যে ঢাকা থেকে কয়েকবার ফোন পেলাম, জরুরী ফিরবার জন্য। তানভিরকে ফোন দিয়ে জানতে পারলাম যে তাঁর অফিসের জরুরী মিটিংটা না হওয়ায় তাঁর আসাটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তানভির আসবেনা শুনে পিয়ালও আরও বিগরে গেল, সেও আর এগুতে নারাজ। ট্রেইলটা সংক্ষিপ্ত করে সেও তাড়াতাড়ি ঢাকা ফিরে যেতে চায়। অনেক বুঝিয়ে তাকে রাজী করলাম যে আগামীকাল থেকে রিক্সা, সিএনজি যা পাই তাতেই চরে এগিয়ে দুই একদিনের মধ্যে ট্রেইলটা সম্পূর্ণ করে ঢাকা ফিরে যাব। বাসায় ফিরে খুব ঠাণ্ডা পানিতে গোসল সেরে রাতের খাবার পর্ব শেষ করে কিছুটা বিশ্রাম নিতে রাত প্রায় ১১টা বেজে গেল। এরই মধ্যে জয়নাল ভাই এসে হাজির, ইচ্ছে ছিল অনেক রাত পর্যন্ত তাঁর সাথে জমিয়ে আড্ডা দিব। কিন্তু পরদিন সকাল সকাল রওনা হব বলে তিনি আর বেশীক্ষণ আলাপ করতে চাইলেন না।


উথমার পথে

আমাদের পরবর্তী রুট প্ল্যান শুনে তিনি কিছুটা আঁতকে উঠলেন। সামনের এলাকাগুলো সম্বন্ধে সতর্ক করে তিনি আমাদের না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে, ভোলাগঞ্জ থেকে সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরার পরামর্শ দিলেন। কিন্তু আমি যাবই, বিপদ আপদ ইনশাল্লাহ হবে না বলে তাঁকে কয়েকবার বুজানোর চেষ্টা করলাম। প্রয়োজনে তাঁর সাথে যোগাযোগ করে আমাদের নিরাপদ অবস্থান সম্পর্কে তাঁকে জানাব। তিনিও বুজতে পারলেন যে আমাদের বলে খুব একটা লাভ নেই, তাই আলাপ দীর্ঘ না করে আমাদের ঘুমানোর জন্য বিদায় নিলেন।


চলবে……

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৪৭
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×