somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নথির গতি(আবদুশ শাকুর)

২৯ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সামনের মহলের মজিদসাহেব খবরটা পড়ে কাগজ হাতেই চলে এসেছিলেন আমার ফ্ল্যাটে--মামলাবদ্ধতায় আটকা পড়ে আছে সরকারের অজস্র অর্থ, তার মধ্যে এক রাজস্ব বোর্ডের পাওনাই হাজার-হাজার কোটি টঙ্কা। তাঁর প্রশ্ন :

এরকম হলে সরকার চলবে কী করে?

আমার প্রশ্ন :

সরকার চলতে চায় নাকি?’

মানে?

আমার ধারণা আমাদের কালের মতো একালের সরকারও চলতে চায় না। চাইলে হালের সরকারি অফিস-আদালতও সেকালের মতো স্থবির হয়ে পড়তো না। আর অগণন জনগণের জীবনও সরকারের নথির কবলে আটকা পড়ে থাকতো না।

‘আটকা পড়ার কারণ?’

‘সিদ্ধান্তহীনতা।’

‘সিদ্ধান্তহীনতা কেন?’

‘সকল উপরওয়ালাই পাখিটা শিকার করতে চায় তাঁর নিচেওয়ালার ঘাড়ে বন্দুকটা রেখে।’

‘কেন?’

‘সরকারেরই স্বভাবদোষে।’

‘দোষটা কী?’

‘যে-ব্যক্তি কাজ করে এবং সিদ্ধান্ত দেয় সরকারবাহাদুর তাকে তিরস্কার করেন। আর পুরস্কারটা দেন যে-অফিসার কাজ না-করে দলের সঙ্গে ভাব করে তাকে। এবং সরকারের কাছে এই অকেজোদের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি, বিশেষত গুরুত্বপূর্ণ পদগুলি পূরণের ক্ষেত্রে। কারণ সরকার হুঁ করতেই এরা হাঁ করে।’

‘যেমন?’

‘যেমন আমি এমন কয়েকজন নন-ওয়ার্কার অফিসারের সঙ্গে চাকরি করেছি, ধরুন তাঁদেরই একজন সংস্থাপন-সচিব নিয়োজিত হলেন। তিনি দিবাশেষে অফিস ছাড়ার মুখে উপর থেকে-আসা মেইলটি পেয়ে না-পড়েই “প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন” লিখে চট্টগ্রাম চলে গেলেন সরকারি সফরে। পরদিন বিমানবন্দর থেকে সোজা অফিসে ঢুকেই শুনলেন যে তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। শুনে তিনি বললেন :

‘আদেশটি দেখি।’

‘আদেশ তো স্যার রাত্রেই বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি।’

‘ফাইল-কপি আনুন।’

পি.এ বেরুতেই বাসায় ফোন করলে ছোটো ছেলেটি বললো :

‘খামটা আমার টেবিলেই আছে, মাকে বলতে ভুলেছি। খুলে পড়বো?’

বেহুঁশ সচিব হুট করে বলে বসলেন :

‘পড়ো।’

‘যেহেতু আপনি কর্মদক্ষতা সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেছেন...যেহেতু আপনি পুরোপুরি অকর্মণ্য হয়ে পড়েছেন...’

ফোনটা রেখে দিলেন সম্বিৎ-ফেরা সচিব।



শুনে মজিদসাহেব বললেন :

‘এর মানে এঁরা নিজে কোনো সিদ্ধান্ত তো দেনই না, অন্যের কোনো সিদ্ধান্তও খতিয়ে দেখেন না। তবে, টু গিভ দ্য ডেভিল হিজ ডিউ, বলতেই হয় যে এঁরা অন্তত নথির গতিটা বাড়ান।’

‘হাঁ, এঁরা গতি বাড়ান বেঠিক সিদ্ধান্তের নথির। সঠিক সিদ্ধান্তের নথির গতি আটকানও এঁরাই, আশঙ্কিত তিরস্কারের ভয়ে।’

‘সরকারের একজন সাবেক সচিব হিসেবে ছুটির এই সুন্দর সকালে আমাকে আপনি একটু বুঝিয়ে বলুন দেখি--নথি এঁরা আটকান কীভাবে?’

‘একটি নথির নজিরই দিচ্ছি, যেটির গতি বাড়াতে আমি হাতে করেই নিয়ে গিয়েছিলাম জনৈক উদ্যাপিত সচিবের রুমে। পরের ঘটনাটুকু শুনুন ডাইরেক্ট ন্যারেশনে।’

‘এ-ফাইলটা একটু দেখতে হবে স্যার--’

‘আরে রাখ, রাখ। তুমি দেখেছ তো? কিংবা তোমার তুমি?’

‘আমরা তো স্যার ভালো করেই দেখেছি। তবে--’

‘দেখলে আবার তবে কী? তোমার এত বড় একটা নোটের কোথাও ছোট্ট একটা প্রস্তাবের আভাস-ইঙ্গিত থাকলেই তো আমার ক্ষুদ্র ইনিশ্যালটুকু অর্থপূর্ণ হয়ে যাবে--মানে, প্রস্তাবমতে ব্যবস্থা নিন।’

‘প্রস্তাব তো স্যার একেবারে গোড়ার নোটেই আছে সেকশন-অফিসারের। সেকশন-অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকেই ইন-চার্জ হয়েছে তো--বেশ অভিজ্ঞ নোটসহই পুটাপ করেছে। আমি ভাবগুলিকে শুধু একটু সম্প্রসারণ করে দিয়েছি--তবে সেকশনের প্রস্তাবানুযায়ীই--’

‘প্রস্তাবানুযায়ী? তাহলে আর কথা কী? তোমার যথাপ্রস্তাব তো হয়েই আছে। আমার যথাপ্রস্তাবটা যোগ হলে তো একেবারে যথাযথই হয়ে যাবে। দাও দেখি, একটা গোটা সিগনেচারই করে ফেলি। কতদিন যে করা হয়নি--কত শখ করে মকশ করা ক্যালিগ্রাফি! তখন কি আর জানতাম যে সারাজীবনের লেখাপড়ার মোট গরজটা কর্মজীবনে অস্পষ্ট একটি ইনিশ্যালে এসে ঠেকবে--’

‘স্যার, কেসটা খুবই সেন্সিটিভ। সইটা একটুখানি পড়ে-দেখে না-করলে--’

‘সেন্সিটিভ! তুমি-না বললে নোটে প্রস্তাব আছে? আরে মিয়া, স্পর্শকাতর নথি কোনো প্রস্তাবের ভার সইতে পারে নাকি? না, না, না--মতামত-কণ্টকিত কোনো নাজুক নথিতে তো আমি নাক গলাবো না। ফেরত নিয়ে যাও। এটা-নয় তবে সেটাও-নয় অথবা এটাও-আবার-সেটাও--এধারার একটা পেশাদার টোকা সহকারেই পেশ করবে।’

‘তাহলে স্যার আপনিই যদি একটুখানি গাইডেন্স দিয়ে দিতেন--’

‘এই নৈমিত্তিক ব্যাপারেও গাইডেন্স? শোন। প্রথম প্যারাটায় যা খুশি একটা কিছু লিখে, দ্বিতীয় প্যারার শুরুতেই বলবে : এর অর্থ এই নয় যে আমি শুধু এ-ই বলতে চাচ্ছি। তারপর একদম উল্টা কথায় দ্বিতীয় প্যারাটি শেষ করে তৃতীয় প্যারার শুরুতেই লিখবে : তাই বলে যে এর উল্টোটা একেবারে নাকচ করতে বলছি, তাও কিন্তু নয়। অতঃপর “অন্যকথায়, আমি বলছিলাম”-বলে ওই পয়লা প্যারাটাকেই ভিন্ন ভাষায় রিপিট করে তৃতীয় প্যারাটি ভরাট করে দেবে। ব্যস, সার্কিট কমপ্লিট--মানে কেল্লা ফতে। এর পরে এভাবে প্যারায়-প্যারায় যত পাতাই ভরাট করার দরকার হয় বা ফরমাশ হয়--আর কোনো সমস্যাই হবার কথা নয়।’

‘চমৎকার একটা কায়দা তো স্যার! আমার ধারণা ছিল এটা শুধু প্রবন্ধ-নিবন্ধের বা সমালোচনা-সাহিত্যেরই হালের একটি রচনাশৈলী। এটা যে সনাতন নথিপত্রেও একই রকম প্রাণ বাঁচানোর সঙ্গিন দায়িত্ব পালন করে, তা তো জানতাম না। কিন্তু স্যার, এই নথিটা যে অতি আর্জেন্টও--’

‘আর্জেন্ট? অ্যাঁ? আমার চাকরিটাই খেতে চাও নাকি? আরে মিয়া মানুষ চলে নিজের কোমরের জোরে আর সরকার চলে মন্ত্রকের কোমরের জোরে। মানে মিডলেভেল অফিসারের জোরে, মানে তোমাদের বিদ্যার জোরে। উপসচিবও যদি অসহযোগিতা শুরু করে--। দাও নথিখানি। তোমার ওই দুষ্কৃত টোকাটাকে ছোট্ট একটা ঠোকা মেরে সংস্কৃত করে দিই--“কথা বলুন”।’

‘কিন্তু স্যার এটা-যে “অতি জরুরি”-পতাকাবাহী নথি!’

‘আহ! সেজন্যেই তো কালই আবার পুটাপ করবে। এবং এখান থেকে ফরমান যাবে “আলোচনা করুন”।’

‘তারপর স্যার?’

‘পরের দিন আবার সাবমিট করবে। এবং নির্দেশ পাবে “আলোচনানুসারে”।’

‘তারও কি পর আছে স্যার?’

‘অবশ্যই আছে। পর মানে বিলম্ব তো? বিলম্বে প্রয়োজন থাকলে নথির বিলম্বকে জীবন থেকে জীবনে, মরণ থেকে মরণে, জেনারেশন থেকে জেনারেশনে, কাল থেকে কালে--মানে একেবারে অনন্তকালের রথেই চড়িয়ে দিতে পার। তবে কয়েকটা বছরমাত্র ধরে-রেখে যদি তোমার নিজের ট্রান্সফারটা শুধু পার করে দিতে চাও, সেক্ষেত্রে কেবল একটি সিরিজই যথেষ্ট--’

‘এটাই বেশি দরকার স্যার।’

‘বেশ। প্রথমে হবে “প্রাসঙ্গিক রুল-রেগুলেশনসহ পেশ করুন”।’

‘তারপর স্যার?’

‘আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতসহ পেশ করুন।’

‘তারপর?’

‘তারপর তাসের ওই নোট্রাম্পের সিরিজ আরকি। চাইলে সবকটি অতিমন্ত্রকই ঘুরিয়ে আনতে পার--যেগুলি সুপ্রা-মিনিস্ট্রি, সার্ভিসিং-মিনিস্ট্রি ইত্যাদি নামে জনপ্রিয়। কারণ তারা অন্য মিনিস্ট্রিকেও সার্ভ করার জন্যে মোতায়েন। এই যেমন ফাইনান্স মিনিস্ট্রি, হোম মিনিস্ট্রি, সংস্থাপন মন্ত্রক, পররাষ্ট্র মন্ত্রক প্রভৃতি।’

‘কিন্তু এ-তো একনিঃশ্বাসেই শেষ হয়ে এল স্যার। এদিকে আমি যে-ডিভিশনে আছি, সেখান থেকে বদলি তো দশবছরেও হবে না। কেউ-যে আসতেই চায় না এখানে। সরকারি অফিসে বদলিটা তো কেবল পরের গরজেই হয়।’

‘ঘাবড়ানোর কিছু নাই, মিনিস্ট্রির পরে বোর্ড আছে : রাজস্ব বোর্ডের মতামতসহ পেশ করুন।’

‘সে তো শুধু স্পেশাল কেসে স্যার--’

‘আরে বাবা, তাবত কেসেই পাবে যেমন : পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতামতসহ পেশ করুন। তাছাড়া রয়েছে গভর্নমেন্ট প্লিডারের মত, পাবলিক প্রসিকিউটারের মত। তদুপরি তদ্দিনে তো নির্ঘাত একটা রঙের টেক্কাই পেয়ে যাবে, মানে বিবেচ্য বিষয়টির ওপর মামলাই হয়ে যাবে। আর তখন তো তুমি অন্তিম স্বস্তির সঙ্গেই লিখবে--বিষয়টি মহামান্য আদালতে বিচারাধীন বিধায় আপাতত আমাদের কোনো বিবেচনার অবকাশ নেই। ব্যস।’

‘মানে কেল্লা ফতে?’

‘সে তো বটেই। এই অন্তিম পঙ্-ক্তিটি রচনার পর নথিখানিতে তোমার আমলামির আয়ুষ্কালে আর কিছু লেখার দরকার হবে না। তবে প্রয়োজন হবে ফি-বছর ডিডিটি-পাউডার মাখানোর। পাছে না-বুঝেসুজে নথিটি উই-ইঁদুরে-না ডিসপোজফ্ করে ফেলে। কোর্টকাছারি-ঘটিত নথিপত্রের রেকর্ড ধ্বংস করার এক্তিয়ার যেখানে জবর অফিসারেরই নেই, সেখানে ইতর জানোয়ারের থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না।’

‘তা তো বটেই। কিন্তু স্যার, আপাতত আমার হাতে-ধরা এই পবিত্র নথিটির কী বিহিত হবে? এ যে টপ-প্রায়রিটি-চিহ্নিত?’

‘আহা, এই টপ-প্রায়রিটির উত্তাপেই তো নথিটি কোথাও একদিনের বেশি দুদিন টিকতে পারছে না--না কোনো ঘরে, না কোনো টেবিলে। কেবল এ-ঘর থেকে ও-ঘর মাকুর মতো মাথা খুঁড়ে মরছে। মানে ফাইলটি ননস্টপ মুভ করছে এবং অবিশ্রান্ত ছুটে চলেছে তার কক্ষপথে।’

‘সে পথ তো অসীমের। কিন্তু এই সসীম নথিটির কী গতি হবে স্যার?’

‘নথির গতি? সে তো অতি সদ্-গতিই হবে হে। নথিটির হ্রস্বযতিঋদ্ধ গতির ‘ছন্দে ছন্দে দুলি আনন্দে’ তোমরা আনকোরা একটা “অধরা” নোট তৈরি করে নেবে, যার মতিগতি হবে সকল-দিক অথচ না-এদিক-না-সেদিক। অর্থাৎ কিনা সমগ্র টোকাখানির শব্দাবলি এমনি ব্যালেন্স্-ড হবে যে, বিবেচ্য বিষয়টির সপক্ষে কি বিপক্ষে--মত অথবা অমত কার যে ঠিক কতটুকু তা বোঝার কোনো উপায়ই থাকবে না।’

‘এ যে মাথা-ঘোরানো ব্যালেন্সের খেলা স্যার।’

‘ব্যাল্যান্সের খেলার নাম সার্কাসে একাধিক থাকলেও, সরকারে ওটার একটাই নাম--ফাইল-ডিসপোজাল। তবে এই সরকারি খেলাটির সার্কাসি নামটি হল গিয়ে--টাইট-রোপ-ওয়াকিং।’

‘তাহলে যে অপার মুশকিলেরই ব্যাপার স্যার! রশির ওপর তো, সার্কাসে দেখেছি, নাবালিকাও হরষেই হাঁটে। কিন্তু এরকম ব্যালেন্স রেখে ফাইল পুটাপ করা তো আমার মতো সাবালকের পক্ষেও সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। প্যারায়-প্যারায় যত প্যাঁচই কষি না কেন, শেষের গিঁটটার--’

‘শেষের গিঁট আবার কিসের? নথিবন্দী কেসমাত্রই তো অশেষ। সবর্জ্ঞ কবি তাঁর অমর গানটিতে নথির গাথাও তো গেয়েছেন--“আমারে তুমি অশেষ করেছ, এমনি লীলা তব--/ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ, জীবন নব নব/”। জান তো--বিবেচ্য বিষয়ের বিহিত-বিনা ফাইলের পৃষ্ঠাসংখ্যা দুই শ পার হলেই নতুন নথি খুলতে হয় এবং তখন মূল নথিটি হয়ে যায় সংযুক্ত নথি।’



‘আমি এখন চলি শাকুরভাই--মাথাটা কেমন যেন ঘুরছে।’

মজিদসাহেবের মতো একজন সদিচ্ছুক নাগরিকের এই মাথাঘোরা কে বন্ধ করবে? এবং কবে?



রচনাকাল ২০০৯সামনের মহলের মজিদসাহেব খবরটা পড়ে কাগজ হাতেই চলে এসেছিলেন আমার ফ্ল্যাটে--মামলাবদ্ধতায় আটকা পড়ে আছে সরকারের অজস্র অর্থ, তার মধ্যে এক রাজস্ব বোর্ডের পাওনাই হাজার-হাজার কোটি টঙ্কা। তাঁর প্রশ্ন :

এরকম হলে সরকার চলবে কী করে?

আমার প্রশ্ন :

সরকার চলতে চায় নাকি?’

মানে?

আমার ধারণা আমাদের কালের মতো একালের সরকারও চলতে চায় না। চাইলে হালের সরকারি অফিস-আদালতও সেকালের মতো স্থবির হয়ে পড়তো না। আর অগণন জনগণের জীবনও সরকারের নথির কবলে আটকা পড়ে থাকতো না।

‘আটকা পড়ার কারণ?’

‘সিদ্ধান্তহীনতা।’

‘সিদ্ধান্তহীনতা কেন?’

‘সকল উপরওয়ালাই পাখিটা শিকার করতে চায় তাঁর নিচেওয়ালার ঘাড়ে বন্দুকটা রেখে।’

‘কেন?’

‘সরকারেরই স্বভাবদোষে।’

‘দোষটা কী?’

‘যে-ব্যক্তি কাজ করে এবং সিদ্ধান্ত দেয় সরকারবাহাদুর তাকে তিরস্কার করেন। আর পুরস্কারটা দেন যে-অফিসার কাজ না-করে দলের সঙ্গে ভাব করে তাকে। এবং সরকারের কাছে এই অকেজোদের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি, বিশেষত গুরুত্বপূর্ণ পদগুলি পূরণের ক্ষেত্রে। কারণ সরকার হুঁ করতেই এরা হাঁ করে।’

‘যেমন?’

‘যেমন আমি এমন কয়েকজন নন-ওয়ার্কার অফিসারের সঙ্গে চাকরি করেছি, ধরুন তাঁদেরই একজন সংস্থাপন-সচিব নিয়োজিত হলেন। তিনি দিবাশেষে অফিস ছাড়ার মুখে উপর থেকে-আসা মেইলটি পেয়ে না-পড়েই “প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন” লিখে চট্টগ্রাম চলে গেলেন সরকারি সফরে। পরদিন বিমানবন্দর থেকে সোজা অফিসে ঢুকেই শুনলেন যে তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। শুনে তিনি বললেন :

‘আদেশটি দেখি।’

‘আদেশ তো স্যার রাত্রেই বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি।’

‘ফাইল-কপি আনুন।’

পি.এ বেরুতেই বাসায় ফোন করলে ছোটো ছেলেটি বললো :

‘খামটা আমার টেবিলেই আছে, মাকে বলতে ভুলেছি। খুলে পড়বো?’

বেহুঁশ সচিব হুট করে বলে বসলেন :

‘পড়ো।’

‘যেহেতু আপনি কর্মদক্ষতা সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেছেন...যেহেতু আপনি পুরোপুরি অকর্মণ্য হয়ে পড়েছেন...’

ফোনটা রেখে দিলেন সম্বিৎ-ফেরা সচিব।



শুনে মজিদসাহেব বললেন :

‘এর মানে এঁরা নিজে কোনো সিদ্ধান্ত তো দেনই না, অন্যের কোনো সিদ্ধান্তও খতিয়ে দেখেন না। তবে, টু গিভ দ্য ডেভিল হিজ ডিউ, বলতেই হয় যে এঁরা অন্তত নথির গতিটা বাড়ান।’

‘হাঁ, এঁরা গতি বাড়ান বেঠিক সিদ্ধান্তের নথির। সঠিক সিদ্ধান্তের নথির গতি আটকানও এঁরাই, আশঙ্কিত তিরস্কারের ভয়ে।’

‘সরকারের একজন সাবেক সচিব হিসেবে ছুটির এই সুন্দর সকালে আমাকে আপনি একটু বুঝিয়ে বলুন দেখি--নথি এঁরা আটকান কীভাবে?’

‘একটি নথির নজিরই দিচ্ছি, যেটির গতি বাড়াতে আমি হাতে করেই নিয়ে গিয়েছিলাম জনৈক উদ্যাপিত সচিবের রুমে। পরের ঘটনাটুকু শুনুন ডাইরেক্ট ন্যারেশনে।’

‘এ-ফাইলটা একটু দেখতে হবে স্যার--’

‘আরে রাখ, রাখ। তুমি দেখেছ তো? কিংবা তোমার তুমি?’

‘আমরা তো স্যার ভালো করেই দেখেছি। তবে--’

‘দেখলে আবার তবে কী? তোমার এত বড় একটা নোটের কোথাও ছোট্ট একটা প্রস্তাবের আভাস-ইঙ্গিত থাকলেই তো আমার ক্ষুদ্র ইনিশ্যালটুকু অর্থপূর্ণ হয়ে যাবে--মানে, প্রস্তাবমতে ব্যবস্থা নিন।’

‘প্রস্তাব তো স্যার একেবারে গোড়ার নোটেই আছে সেকশন-অফিসারের। সেকশন-অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকেই ইন-চার্জ হয়েছে তো--বেশ অভিজ্ঞ নোটসহই পুটাপ করেছে। আমি ভাবগুলিকে শুধু একটু সম্প্রসারণ করে দিয়েছি--তবে সেকশনের প্রস্তাবানুযায়ীই--’

‘প্রস্তাবানুযায়ী? তাহলে আর কথা কী? তোমার যথাপ্রস্তাব তো হয়েই আছে। আমার যথাপ্রস্তাবটা যোগ হলে তো একেবারে যথাযথই হয়ে যাবে। দাও দেখি, একটা গোটা সিগনেচারই করে ফেলি। কতদিন যে করা হয়নি--কত শখ করে মকশ করা ক্যালিগ্রাফি! তখন কি আর জানতাম যে সারাজীবনের লেখাপড়ার মোট গরজটা কর্মজীবনে অস্পষ্ট একটি ইনিশ্যালে এসে ঠেকবে--’

‘স্যার, কেসটা খুবই সেন্সিটিভ। সইটা একটুখানি পড়ে-দেখে না-করলে--’

‘সেন্সিটিভ! তুমি-না বললে নোটে প্রস্তাব আছে? আরে মিয়া, স্পর্শকাতর নথি কোনো প্রস্তাবের ভার সইতে পারে নাকি? না, না, না--মতামত-কণ্টকিত কোনো নাজুক নথিতে তো আমি নাক গলাবো না। ফেরত নিয়ে যাও। এটা-নয় তবে সেটাও-নয় অথবা এটাও-আবার-সেটাও--এধারার একটা পেশাদার টোকা সহকারেই পেশ করবে।’

‘তাহলে স্যার আপনিই যদি একটুখানি গাইডেন্স দিয়ে দিতেন--’

‘এই নৈমিত্তিক ব্যাপারেও গাইডেন্স? শোন। প্রথম প্যারাটায় যা খুশি একটা কিছু লিখে, দ্বিতীয় প্যারার শুরুতেই বলবে : এর অর্থ এই নয় যে আমি শুধু এ-ই বলতে চাচ্ছি। তারপর একদম উল্টা কথায় দ্বিতীয় প্যারাটি শেষ করে তৃতীয় প্যারার শুরুতেই লিখবে : তাই বলে যে এর উল্টোটা একেবারে নাকচ করতে বলছি, তাও কিন্তু নয়। অতঃপর “অন্যকথায়, আমি বলছিলাম”-বলে ওই পয়লা প্যারাটাকেই ভিন্ন ভাষায় রিপিট করে তৃতীয় প্যারাটি ভরাট করে দেবে। ব্যস, সার্কিট কমপ্লিট--মানে কেল্লা ফতে। এর পরে এভাবে প্যারায়-প্যারায় যত পাতাই ভরাট করার দরকার হয় বা ফরমাশ হয়--আর কোনো সমস্যাই হবার কথা নয়।’

‘চমৎকার একটা কায়দা তো স্যার! আমার ধারণা ছিল এটা শুধু প্রবন্ধ-নিবন্ধের বা সমালোচনা-সাহিত্যেরই হালের একটি রচনাশৈলী। এটা যে সনাতন নথিপত্রেও একই রকম প্রাণ বাঁচানোর সঙ্গিন দায়িত্ব পালন করে, তা তো জানতাম না। কিন্তু স্যার, এই নথিটা যে অতি আর্জেন্টও--’

‘আর্জেন্ট? অ্যাঁ? আমার চাকরিটাই খেতে চাও নাকি? আরে মিয়া মানুষ চলে নিজের কোমরের জোরে আর সরকার চলে মন্ত্রকের কোমরের জোরে। মানে মিডলেভেল অফিসারের জোরে, মানে তোমাদের বিদ্যার জোরে। উপসচিবও যদি অসহযোগিতা শুরু করে--। দাও নথিখানি। তোমার ওই দুষ্কৃত টোকাটাকে ছোট্ট একটা ঠোকা মেরে সংস্কৃত করে দিই--“কথা বলুন”।’

‘কিন্তু স্যার এটা-যে “অতি জরুরি”-পতাকাবাহী নথি!’

‘আহ! সেজন্যেই তো কালই আবার পুটাপ করবে। এবং এখান থেকে ফরমান যাবে “আলোচনা করুন”।’

‘তারপর স্যার?’

‘পরের দিন আবার সাবমিট করবে। এবং নির্দেশ পাবে “আলোচনানুসারে”।’

‘তারও কি পর আছে স্যার?’

‘অবশ্যই আছে। পর মানে বিলম্ব তো? বিলম্বে প্রয়োজন থাকলে নথির বিলম্বকে জীবন থেকে জীবনে, মরণ থেকে মরণে, জেনারেশন থেকে জেনারেশনে, কাল থেকে কালে--মানে একেবারে অনন্তকালের রথেই চড়িয়ে দিতে পার। তবে কয়েকটা বছরমাত্র ধরে-রেখে যদি তোমার নিজের ট্রান্সফারটা শুধু পার করে দিতে চাও, সেক্ষেত্রে কেবল একটি সিরিজই যথেষ্ট--’

‘এটাই বেশি দরকার স্যার।’

‘বেশ। প্রথমে হবে “প্রাসঙ্গিক রুল-রেগুলেশনসহ পেশ করুন”।’

‘তারপর স্যার?’

‘আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতসহ পেশ করুন।’

‘তারপর?’

‘তারপর তাসের ওই নোট্রাম্পের সিরিজ আরকি। চাইলে সবকটি অতিমন্ত্রকই ঘুরিয়ে আনতে পার--যেগুলি সুপ্রা-মিনিস্ট্রি, সার্ভিসিং-মিনিস্ট্রি ইত্যাদি নামে জনপ্রিয়। কারণ তারা অন্য মিনিস্ট্রিকেও সার্ভ করার জন্যে মোতায়েন। এই যেমন ফাইনান্স মিনিস্ট্রি, হোম মিনিস্ট্রি, সংস্থাপন মন্ত্রক, পররাষ্ট্র মন্ত্রক প্রভৃতি।’

‘কিন্তু এ-তো একনিঃশ্বাসেই শেষ হয়ে এল স্যার। এদিকে আমি যে-ডিভিশনে আছি, সেখান থেকে বদলি তো দশবছরেও হবে না। কেউ-যে আসতেই চায় না এখানে। সরকারি অফিসে বদলিটা তো কেবল পরের গরজেই হয়।’

‘ঘাবড়ানোর কিছু নাই, মিনিস্ট্রির পরে বোর্ড আছে : রাজস্ব বোর্ডের মতামতসহ পেশ করুন।’

‘সে তো শুধু স্পেশাল কেসে স্যার--’

‘আরে বাবা, তাবত কেসেই পাবে যেমন : পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতামতসহ পেশ করুন। তাছাড়া রয়েছে গভর্নমেন্ট প্লিডারের মত, পাবলিক প্রসিকিউটারের মত। তদুপরি তদ্দিনে তো নির্ঘাত একটা রঙের টেক্কাই পেয়ে যাবে, মানে বিবেচ্য বিষয়টির ওপর মামলাই হয়ে যাবে। আর তখন তো তুমি অন্তিম স্বস্তির সঙ্গেই লিখবে--বিষয়টি মহামান্য আদালতে বিচারাধীন বিধায় আপাতত আমাদের কোনো বিবেচনার অবকাশ নেই। ব্যস।’

‘মানে কেল্লা ফতে?’

‘সে তো বটেই। এই অন্তিম পঙ্-ক্তিটি রচনার পর নথিখানিতে তোমার আমলামির আয়ুষ্কালে আর কিছু লেখার দরকার হবে না। তবে প্রয়োজন হবে ফি-বছর ডিডিটি-পাউডার মাখানোর। পাছে না-বুঝেসুজে নথিটি উই-ইঁদুরে-না ডিসপোজফ্ করে ফেলে। কোর্টকাছারি-ঘটিত নথিপত্রের রেকর্ড ধ্বংস করার এক্তিয়ার যেখানে জবর অফিসারেরই নেই, সেখানে ইতর জানোয়ারের থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না।’

‘তা তো বটেই। কিন্তু স্যার, আপাতত আমার হাতে-ধরা এই পবিত্র নথিটির কী বিহিত হবে? এ যে টপ-প্রায়রিটি-চিহ্নিত?’

‘আহা, এই টপ-প্রায়রিটির উত্তাপেই তো নথিটি কোথাও একদিনের বেশি দুদিন টিকতে পারছে না--না কোনো ঘরে, না কোনো টেবিলে। কেবল এ-ঘর থেকে ও-ঘর মাকুর মতো মাথা খুঁড়ে মরছে। মানে ফাইলটি ননস্টপ মুভ করছে এবং অবিশ্রান্ত ছুটে চলেছে তার কক্ষপথে।’

‘সে পথ তো অসীমের। কিন্তু এই সসীম নথিটির কী গতি হবে স্যার?’

‘নথির গতি? সে তো অতি সদ্-গতিই হবে হে। নথিটির হ্রস্বযতিঋদ্ধ গতির ‘ছন্দে ছন্দে দুলি আনন্দে’ তোমরা আনকোরা একটা “অধরা” নোট তৈরি করে নেবে, যার মতিগতি হবে সকল-দিক অথচ না-এদিক-না-সেদিক। অর্থাৎ কিনা সমগ্র টোকাখানির শব্দাবলি এমনি ব্যালেন্স্-ড হবে যে, বিবেচ্য বিষয়টির সপক্ষে কি বিপক্ষে--মত অথবা অমত কার যে ঠিক কতটুকু তা বোঝার কোনো উপায়ই থাকবে না।’

‘এ যে মাথা-ঘোরানো ব্যালেন্সের খেলা স্যার।’

‘ব্যাল্যান্সের খেলার নাম সার্কাসে একাধিক থাকলেও, সরকারে ওটার একটাই নাম--ফাইল-ডিসপোজাল। তবে এই সরকারি খেলাটির সার্কাসি নামটি হল গিয়ে--টাইট-রোপ-ওয়াকিং।’

‘তাহলে যে অপার মুশকিলেরই ব্যাপার স্যার! রশির ওপর তো, সার্কাসে দেখেছি, নাবালিকাও হরষেই হাঁটে। কিন্তু এরকম ব্যালেন্স রেখে ফাইল পুটাপ করা তো আমার মতো সাবালকের পক্ষেও সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। প্যারায়-প্যারায় যত প্যাঁচই কষি না কেন, শেষের গিঁটটার--’

‘শেষের গিঁট আবার কিসের? নথিবন্দী কেসমাত্রই তো অশেষ। সবর্জ্ঞ কবি তাঁর অমর গানটিতে নথির গাথাও তো গেয়েছেন--“আমারে তুমি অশেষ করেছ, এমনি লীলা তব--/ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ, জীবন নব নব/”। জান তো--বিবেচ্য বিষয়ের বিহিত-বিনা ফাইলের পৃষ্ঠাসংখ্যা দুই শ পার হলেই নতুন নথি খুলতে হয় এবং তখন মূল নথিটি হয়ে যায় সংযুক্ত নথি।’



‘আমি এখন চলি শাকুরভাই--মাথাটা কেমন যেন ঘুরছে।’

মজিদসাহেবের মতো একজন সদিচ্ছুক নাগরিকের এই মাথাঘোরা কে বন্ধ করবে? এবং কবে?



রচনাকাল ২০০৯
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:২৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×