somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীন এ দেশে এসব দাদাগিরি কেন? আসলে বঙ্গোপ সাগরে কারা মাছ শিকার করে?

১১ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বৈরী আবহাওয়ায় পথভুলে পায়রা বন্দরের কাছে আশ্রয় নিয়েছে ৫ শতা‌ধিক ভারতীয় জে‌লে?

বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউ ও তীব্র বাতাসে দিকভ্রান্ত হয়ে ৫১৯ ভারতীয় জেলে ৩২টি ট্রলার নিয়ে পায়রা বন্দরের কাছে আশ্রয় নিয়েছে।

ভারতীয় জে‌লেরা জানায় যে, ঝ‌ড়ের কব‌লে প‌ড়ে তারা বাংলা‌দে‌শের জলসীমায় প্র‌বেশ ক‌রে‌ছে। কোনো ট্রলা‌রে ২০জন, ২২জন, আবার কোন ট্রলা‌রে ১৮জন, ১৭জন ক‌রে জে‌লে র‌য়ে‌ছে।

পটুয়াখালী কলাপাড়া কোস্টগার্ডের কন্টিজেন্ট অফিসার মোহাম্মদ বাবুল আক্তার ও রেজাউল করিম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে আসলে তাদের ফেরত পাঠানো হবে। তাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়টি নজরদারি করা হচ্ছে।

নজরদারিতে কোস্ট গার্ড, আবহাওয়া অনুকূলে আসলে ফেরত পাঠানো হবে।
বৈরী আবহাওয়ায় পথভুলে পায়রা বন্দরের কাছে আশ্রয় নিয়েছে ৫ শতা‌ধিক ভারতীয় জে‌লে

পটুয়াখালীতে ৫১৯ ভারতীয় জেলেকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি

কোস্টগার্ড বলেছে, জেলেদের আটক করা হয়নি। দুর্যোগের কবলে পড়ে ভারতীয় ট্রলারগুলো পথ হারিয়ে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ঢুকে পড়েছে। যার কারণে ট্রলারসহ জেলেদের নিরাপদ হেফাজতে রাখা হয়েছে।

রোববার দুপুরে এসব ট্রলারসহ জেলেদের বঙ্গোপসাগরের মৌডুবী এলাকা থেকে পায়রা বন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া সাগর উত্তাল থাকায় রোববার দুপুর ১ টার দিকে মাছ ধরা অবস্থায় বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করলে কোষ্টগার্ড সদস্যরা তাদের পায়রা সমুদ্র এলাকায় নিয়ে এসে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখে।

পায়রা বন্দরের কোস্টগার্ডের ঘাটে বর্তমানে এ ট্রলারগুলো বেঁধে রাখা হয়েছে। পায়রা বন্দর সংলগ্ন আন্দারমানিক নদে নোঙর করে রাখা এসব ট্রলারের তথ্য জানার জন্য স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা যাওয়ার চেষ্টা করলে কোষ্টগার্ড সদস্যরা তাদের সেখানে যেতে দেয়নি। এছাড়া কোস্টগার্ড, মৎস্যবিভাগ ও প্রশাসন ট্রলার ও জেলেদের নাম সংগ্রহ করলেও তা জানাতে অপরাগত প্রকাশ করে। এমনকি কোন মিডিয়া কর্মীকে জেলেদের ছবি তুলতেও দেয়া হয়নি।

ভারতীয় ট্রলারসহ জেলেদের যখন আটক করা হয়েছে, তখন বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। বঙ্গোপসাগরে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও নিস্কন্টক প্রজননের স্বার্থে এবং সমুদ্র নির্ভর নীল অর্থনীতির লাগসই উৎপাদন ও বাস্তবায়নের নিমিত্তে সরকার বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রসীমায় নিরঙ্কুশ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৬৫ দিনের জন্য সকল প্রকার মৎস্য শিকার নিষিদ্ধ করেছে। গত ২০ মে থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এ বছর এ সময়টাতে প্রথম নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত মেনে বাংলাদেশের জেলেরা মৎস্য শিকার বন্ধ রেখেছে।

নিষেধাজ্ঞাকালীন এ সময়ে ভারতীয় মাছ ধরা ট্রলারগুলো বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায় বলে বাংলাদেশের জেলেরা শুরু থেকেই অভিযোগ জানিয়ে আসছে। জেলেরা জানায়, বঙ্গোপসাগরের সোনারচর এলাকায় ভারতীয় জেলেরা আগে থেকেই প্রবেশ করে মাছ ধরছিল।

উপকূলের কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী এবং মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুরের জেলে এবং আড়তদাররা ভারতীয় ট্রলারসহ জেলেদের নিরাপদ হেফাজতে নেয়ার খবর শুনে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেক জেলে বলেছেন, দুর্যোগের কবলে পড়ে হলেও ভারতীয় ট্রলারসহ জেলেদের বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় অনুপ্রবেশের কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

মহিপুর মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি মো. ফজলু গাজী বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন এ সময়ে ভারতীয় বহু মাছ ধরা ট্রলার বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি মিয়ানমার, থাইল্যান্ডের বহু ট্রলার বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে থাকে ।

এদিকে মহিপুর মৎস্যবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাংলাদেশী জেলেরা সমুদ্রে না গেলেও থেমে নেই মাছ ধরা। ভারতীয় ট্রলার প্রতিদিন বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করছে। বাংলাদেশি জেলেরা ভারতের সমুদ্রসীমা লংঘন করলে মাসের পর মাস জেল খেটে দেশে ফিরতে হয়। অথচ ওদের জন্য আমাদের দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের কোন শাস্তি না পাওয়ায় ওরা উৎসাহিত হচ্ছে সীমানা লংঘনে। এছাড়া সমুদ্র পথে আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্র সক্রিয় থাকায় বিষয়টি তদন্তের প্রয়োজন বলে দাবী করছে সূত্রটি। যদিও ইতোমধ্যে শাড়ি-কাপড় ও মাদকের বেশ কয়েকটি বড় চালান ধরা পড়েছে র‌্যাব ও কোস্টগার্ডের হাতে।

কোস্টগার্ডের পায়রা বন্দরের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. রেজাউল করিম বলেছেন, এসব ট্রলারগুলো ভারতের সমুদ্রসীমায় মাছ ধরছিল। দুর্যোগের কবলে পড়ে পথ হারিয়ে বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে পড়ে। যার কারণে ট্রলারসহ জেলেদের নিরাপদ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

কলাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুপ দাশ বলেন, আমি নিজে গিয়ে ট্রলারসহ জেলেদের দেখে এসেছি। কোস্টগার্ডের মাধ্যমে ট্রলারে থাকা জেলেদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। জেলেদের বাড়ি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিন চব্বিশ পরগণা এলাকায়। এদের বিষয়ে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

এদিকে, জেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, যেহেতু তাদের ট্রলারে জাল রয়েছে তাই তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর আওতায় পড়ার কথা।
পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মো.মইনুল হাসান এবং জেলা প্রশাসক মো.মতিউল ইসলাম চৌধুরী কোস্টগার্ডের বরাত দিয়ে জানান, ভারতীয় জেলেরা ঝড়ের কবলে পরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ঢুকে পরে। পরে তারা নিরাপদে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন রামনাবাদ চ্যানেল এলাকায় আশ্রয় নেয়। বর্তমানে এসকল জেলেরা কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধায়নে রয়েছে। তারা অনুপ্রবেশকারী নয়। কারণ এতগুলো ট্রলার সঙ্গবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় টহলরত একাধিক কোস্টগার্ড পয়েন্ট রয়েছে। ভারতীয় জেলেদের নিরাপদে দেশে ফিরতে সহায়তা করা হবে।
পটুয়াখালীতে ৫১৯ ভারতীয় জেলেকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি

সীমানায় নিরীহ বাংলাদেশী গরু-কারবারিদের তারাও গুলি করে, আমরাও করি। আর আমাদের সীমানার মধ্যে মাছ শিকার করা ভারতীয় মেহমানদের সসম্মানে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৯
১২টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×