somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এগ্রেসিভ আচরণের তিন কারণঃ তাপমাত্রা, ভিড় বা গাদাগাদি, শব্দ দূষণ

০২ রা জুন, ২০১২ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মূল লিংক by Dr. Dale Archer, M.D.

মানসিক 'স্ট্রেস' বা চাপ ক্রমে ক্রমে জমে বাড়তে থাকে। এটা সময়ের সাথে সাথে তৈরী করে হতাশা, রাগ এবং অক্ষমতা-এর অনুভূতি। যদিও আমরা জানি বিবাহবিচ্ছেদ, প্রিয় কোন এক ব্যাক্তির মৃত্যু, অথবা চাকরি হারানো খুবই বাস্তব মানসিক স্ট্রেস, কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা এবং পরিবেশগত মানসিক চাপ-ও 'চাপ'।

তিনটি পরিবেশগত মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী ফ্যাক্টর (যা আগ্রাসন বৃদ্ধি করে) তা হচ্ছে: (1) তাপমাত্রা (2) গাদাগাদি এবং (3) শব্দ-দূষণ ((1) Temperature (2) Crowding and (3) Noise)। যেহেতু সব বড় শহরে ইতিমধ্যে জনাকীর্ণ এবং শব্দ-দূষণে দুষ্ট, তাপ হয়ে ওঠে 'ওয়াইল্ড কার্ড'।

অনেক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেখানে Overcrowding আছে, সেখানে মানুষের মধ্যে অধিক পরিমাণে আক্রমণাত্মক আচরণ দেখা যায় এবং একই সাথে দেখা যায় বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন। অন্য কথায়ঃ বসবাসের স্থান যত কমে আসে, সেখানকার মানুষের মারমুখী আচরণ ও বিষণ্ণতা বাড়তে থাকে।

Peter Csermely-এর Crowding Stress বইয়ে তিনি দেখিয়েছেন, স্ট্রেস বৃদ্ধি পায় Overcrowding-এর ফলে এবং তা দেখা যায় পশু ও মানুষ উভয়ের ক্ষেত্রে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, বসবাসের স্থান ছোট না বড় তা কিন্তু নির্ণায়ক ভূমিকা রাখে না! বরং ব্যাক্তিগত বসবাসের স্থান (individual space)-ই মূল বিবেচ্য। এই space কম হলে আটকে পড়া অনুভুতি এবং খিটখিটে প্রবণতা বেড়ে যায় একজন মানুষের। শুধু তাই না, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক কম দেখা যায়! ইনফেকশন, আলসার, কিছু কিছু ক্যান্সার এমনকি স্কিটজোফ্রেনিয়া জাতীয়
রোগও বেড়ে যায় এসব এলাকায়।

শব্দ-দূষণ বা noise নিয়েও একই রকম সমীক্ষা দেখা গেছে। এরকম না যে শব্দ-দূষণই কাউকে আক্রমণাত্মক করে তোলে। কিন্তু দেখা গেছে আপনি যদি কোনও কারণে ক্রুদ্ধ বা রাগান্বিত থাকেন, তাহলে নিয়ন্ত্রনের বাইরের noise আপনাকে নিয়ন্ত্রনহীন ক্রোধের দিকে ঠেলে দেয়। এর কারণ আমাদের শরীরে কিছু 'স্ট্রেস হরমোন' আমাদের রক্তে রিলিজ হয় শব্দ-দূষণের কারণে। এটা লক্ষনীয় যে, বিমানবন্দর কাছাকাছি অবস্থিত স্কুলের শিশুদের উল্লেখযোগ্যভাবে উচ্চতর রক্তচাপের রোগে ভুগতে দেখা যায় নীরব এলাকার স্কুলের শিশুদের চেয়ে।

এছাড়া উচ্চ তাপমাত্রা আরেকটি বড় ফ্যাক্টর। বড় বড় শহরগুলিতে তাপমাত্রা এমনিতেই অনেক বেশী থাকে কারণ শহরগুলি 'হিট আইল্যান্ড'-এ পরিণত হয়। একটি শহরে এক মিলিয়ন বা তার বেশী মানুষ থাকলে তার পার্শ্ববর্তী এলাকার চেয়ে তাপমাত্রা 5˚ ফারেনহাইট বেশী হতে পারে। এই তাপমাত্রা দূষণ, গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন এবং তাপ সংক্রান্ত অসুখ (যার ভিতরে মানসিক চাপ-ও অন্তর্ভুক্ত) হতে পারে।

অতিরিক্ত উচ্চ তাপমাত্রা শরীরে শারীরিক ও মানসিক চাপ বাড়ায় যার কারণে খিটখিটে ভাব ও আক্রমণাত্মক মনোভাব বেড়ে যায়। উচ্চ তাপমাত্রায় শরীরে 'ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স' তৈরি হয়। গরম আবহাওয়ায় আমরা ঘাম এবং বাষ্পীভবনের মাধ্যমে electrolytes হারাই এবং এই imbalance মুড পরিবর্তন করে, উদ্বেগ বৃদ্ধি করতে পারে এবং অন্যান্য স্ট্রেসরগুলিকে সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের ক্ষমতা হ্রাস করে।

তবে অবশ্যই বলা দরকার, এই ধরণের পরিবেশগত কারণকেই ভায়লেন্সের একমাত্র কারণ বলে দেখানো যায় না। কিন্তু একইসাথে এইসব সমীক্ষা এবং পরিসংখ্যানকে উপেক্ষাও করা যায় না।

মানুষের মাত্র 3 শতাংশ শহরাঞ্চলে বসবাস করতো 1800 সালে; এটি 1900 সালে 14 শতাংশ, 1950 সালে এটি 30 শতাংশ এবং 2008 সালে এটি 50/50 অনুপাতে বিভক্ত ছিল। 2050 সালনাগাদ বিশ্ব জনসংখ্যার 70 শতাংশ শহরাঞ্চলে বসবাস করবে বলে অনুমান করা হয়। এই বিশাল পরিবর্তনের সাথে সাথে ভায়লেন্স বা হিংস্র আচরণ কমিয়ে আনার জন্য এই ফ্যাক্টরগুলি নিয়ে কি করা যায় তা চিন্তা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

*** এগ্রেশন বোঝাতে আমি আসলে ক্রিমিনাল ভায়লেন্স-এর কথা বলতে চেয়েছি। মূল আর্টিকেল দ্রষ্টব্য।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১২ রাত ১১:২১
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×