আমরা জাতি হিসেবে কতই না সৌভাগ্যবান। আমাদের পূর্বপূরুষেরা মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার জন্য যে জীবন উৎসর্গ করেছিলো, তারই স্বীকৃতি হিসেবে সারাবিশ্বের মানুষের জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার প্রচলন। অথচ আমরা জাতীয়ভাবে এর মূল্য বুঝতে এখনো অপারগ। আমরা বাংলাভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম কার্যকরি ভাষা হিসেবে প্রচলনের জন্য অনেকদিন ধরেই চেষ্ঠা করে আসছি, অথচ নিজ দেশের মধ্যেই বাংলাভাষার সর্বোচ্চ প্রচলনের বিষয়ে আমরা অবহেলা করে আসছি। আমরা যদি সত্যিই আমাদের ভাষাকে ভালোবাসি তাহলে প্রথমেই আমাদের ভাষাকে সর্বস্তরে প্রচলন করে তার প্রমান দিতে হবে।
আমাদের দেশে প্রায় ৮ কোটি মুঠোফোন গ্রাহক আছে। এর মধ্যে খুব বেশি হলে ১/২ কোটি গ্রাহক ইংরেজি ভাষা বুঝেন। তার মানে প্রায় ৬/৭ কোটি মানুষ মুঠোফোনের ভাষা না বুঝেই অসাচ্ছন্দের সাথে তা ব্যবহার করছেন। মুঠোফোনের ব্যবসার জন্য গ্রাহক সংখ্যার কারনে বাংলাদেশ একটি বড় বাজার। আমরা যদি বাংলাদেশে মুঠোফোনে বাংলাভাষার ব্যবহারকে বাধ্যতামূলক করতে পারতাম, তাহলে অধিকাংশ গ্রাহকই সাচ্ছন্দের সাথে তার মুঠোফোনটিকে ব্যবহার করতে পারতেন। এরফলে মুঠোফেনের মাধ্যমে তথ্যপ্রবাহকে (যথা: সাধারণ কৃষি, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যসমূহ) জনগণের আরও কাছে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো। দেরীতে হলেও বিটিআরসি স¤প্রতি এরকমের একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফেব্র“য়ারি ২০১২ হতে বাংলা কি-প্যাড বিহীন মুঠোফোনসেট আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এ পদক্ষেপ যথেষ্ঠ নয়, কারন আজকাল অনেক মুঠোফোনসেটেই কি-প্যাড থাকেনা এবং শুধুমাত্র কি-প্যাডে বাংলা অক্ষর থাকলেই হবে না, মুঠোফোনের সকল অপশন বাংলা ভাষায় প্রচলিত হতে হবে। এজন্য মুঠোফোন অপারেটরদের প্রদত্ত বিভিন্ন সেবাগুলোও বাংলাভাষায় প্রচলন করতে হবে। উল্লেখ্য বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৬০ লাখ মুঠোফোনসেট আমদানি হয়ে থাকে। বাংলাভাষার প্রচলনের জন্য প্রতিটি মুঠোফোনসেটে গড়ে ১০০ টাকা খরচ হলেও, বাংলাভাষার কারিগরদের জন্য বছরে ৬০ কোটি টাকার কাজ সৃষ্টি হবে। এর পাশাপাশি মুঠোফোন অপারেটরদের প্রদত্ত বিভিন্ন সেবাগুলো বাংলাভাষায় প্রচলনের জন্য অনুরূপভাবে বাংলাভাষার কারিগরদের জন্য নতুন নতুন কাজ সৃষ্টি হবে। তাই মুঠোফোনে সার্বিকভাবে বাংলাভাষার প্রচলন করা গেলে আমরা বহুমাত্রিকভাবে লাভবান হবো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




