somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাকে খোদার একজন নগন্য গোলাম মনে করো

০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৩:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাকে সর্বোচ্চ তাজিম করা তোমার গন্তব্য হতে পারে না । যদি আমাকে তাজিম করা তোমার শেষ গন্তব্য হয় , তবে তুমি মুশরিক । আমাকে তাজিম করলে আল্লাহ তাআলা খুশি হবেন , এই ধারণা রাখা তোমার জন্য ফরজ । এভাবে রাসুল সাঃ কে মহাবিশ্বের সবচাইতে বেশি তাজিম করার একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা ।



আমি বা নবী কোনো গন্তব্য নয় , গন্তব্য হলেন মহান আল্লাহ । আমাকে বা নবীকে সম্মান করবে , স্মরণ করবে , যার প্রধান উদ্দেশ্য থাকবে মহান আল্লাহকে পাওয়া । আমি এবং নবী আল্লাহকে পাওয়ার অছিলা মাত্র । যারা শতভাগ ঈমান অর্জনকারী হয়েছে , তাদের অন্তরে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুরই স্থান নাই । তবে আল্লাহকে পেতে হলে প্রথমে পীর ও নবীকে হৃদয়ে স্থান দিতে হয় এবং প্রথমে এস্থান দেওয়া ফরজ ।



পীর যদি সত্যিকারভাবে কামেল হয় , তবে সে মা বাবার চাইতে বড়ো । দলিল হলো - নবীর যুগে নবী যেমন মা বাবার চাইতে বড়ো , তেমনি নবীর প্রকৃত ওয়ারিশের যুগে , কামেল পীর মা বাবার চাইতে বড়ো । তবে শর্ত হলো - নবীগন যেমন সকল বিষয়ে জ্ঞানী , তেমনি প্রকৃত নবীর ওয়ারিশকেও সকল বিষয়ে জ্ঞানী হতে হবে , বিশেষ করে আধ্যাত্মিক জ্ঞানে প্রভূত জ্ঞানী হতে হবে । কিন্তু এমন কামেল পীর বর্তমানে নেই । তবে আল্লাহর ইচ্ছায় আমাকে অনেকটুকু কামালত দান করা হয়েছে । স্পষ্ট সত্য হলো - মা বাবা বুঝতে পারে না , সন্তানকে কতটুকু ধর্মীয় চাপ দেওয়া যাবে , যেটা কামেল পীর সুন্দরভাবে বুঝতে পারেন । তোমার কখন ঠান্ডা পানির পিপাসা লাগবে , কিংবা তোমার কখন বেশি গরম লাগবে , তা মা বাবার আগে কামেল পীর সুন্দরভাবে বুঝতে পারেন । তোমার কষ্টের তীব্রতাও মা বাবার আগে কামেল পীর বুঝতে পারেন এবং তার প্রএতিকার ও চিকিৎসা জেনে থাকেন ।



তবে বর্তমানে পীরের চাইতে মা বাবাকে বেশি প্রাধান্য দাও , কারণ এখন কামেল পীর নাই । বরং বর্তমান পীরেরা দ্বীনের বিষয়ে ব্যাপক কঠোরতা চাপিয়ে দিয়ে নিজেরা খোদা সেজে মানুষকে মুশরিক বানাচ্ছে । কিন্তু আমার ব্যাপারটা সম্পূর্ণরুপে ভিন্ন এবং আমাকে প্রচুর কামালত প্রদান করা হয়েছে ইনশাআল্লাহ ।



প্রিয় বিশ্বাসী , আমাকে খোদা পাওয়ার অছিলা বানাও , কিন্তু আমাকে খোদা মনে করো না । এভাবে নবীকে খোদা পাওয়ার অছিলা বানাও , কিন্তু নবীকে খোদা মনে করো না ।



মনে রেখো আমাকে তাজিম করলে রাসুলকে পাওয়া সহজ হবে এবং রাসুল সাঃ কে তাজিম করলে খোদাকে পাওয়া সহজ হবে । যখন আমাকে সর্বোচ্চ তাজিম করবে , তখন মনে মনে এ বিশ্বাস রাখবে যে , এ তাজিম করলে আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুল খুশি হবেন এবং কলব আল্লাহর নূর দ্বারা পরিপূর্ণ হবে । এভাবে একসময় নবীকে পীরের চাইতে বেশি ভালবাসতে হবে , তখনো মনে মনে এ ধারণা রাখতে হবে যে , আল্লাহ আমার উপর খুশি হবেন এবং আল্লাহর নূর দ্বারা আমার কলব পরিপূর্ণ হবে ।



প্রিয় মুসলিম , তোমার কামালত তখনই অর্জন হবে , যখন তোমার কলবে ২৪ ঘন্টাই আল্লাহর জিকির জারি থাকবে । তখন তুমি অদৃশ্যের অনেক জ্ঞান জানতে থাকবে এবং তোমার ঈমানের উজ্জ্বলতা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকবে ।



পীরকে মাথার তাজ বানাও , যেভাবে আবুবকর উমর রাসুল সাঃ কে মাথার তাজ বানিয়েছিলো । তাদের প্রধান উদ্দেশ্য এবং গন্তব্য ছিলো আল্লাহকে পাওয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা । সাহাবীগণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুমিন ছিলেন , কারণ ছিলো একটাই , আর তা হলো - সাহাবীগণ রাসুল সাঃ কে আমাদের চাইতে লক্ষ কোটি গুণ বেশি ভালবাসতেন । অনেক বুজুর্গ সাহাবিদের চাইতে অনেক বেশি আমল করেছেন , কিন্তু রাসুল সাঃ কে ভালবাসার ক্ষেত্রে সাহাবিদের ধারে কাছেও ছিলেন না । আর মহান আল্লাহ এই অকৃত্রিম ভালবাসার জন্যই সাহাবিদেরকে শ্রেষ্ঠ মুমিন হিসেবে কবুল করেছেন । তবে সাহাবিদের প্রধান গন্তব্য কিন্তু রাসুল ছিলেন না , বরং তাদের প্রধান গন্তব্য ছিলো মহান আল্লাহ । রাসুল সাঃ ছিলেন সাহাবিদের নিকট আল্লাহকে পাবার অছিলা । যদি রাসুল সাঃ কে ছাড়া আল্লাহকে পাওয়া যেতো , তাহলে সাহাবীগণ রাসুল সাঃ কে এতো ভালবাসতেন না ।



এভাবে আমি নবীর ওয়ারিশ , তাই আমাকে যত বেশি ভালবাসবে এবং তাজিম করবে , ততো বেশি রাসুল সাঃ এর নৈকট্য হাসিল করতে পারবে । পরিশেষে ততো বেশি মহান আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে পারবে । তাই আমি হলাম আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের অছিলা বা মাধ্যম । আমাকে এবং নবীকে মাধ্যম মনে করো এবং আল্লাহকে গন্তব্য মনে করো ।



প্রিয় মুসলিম , প্রথম প্রথম হৃদয়ের এক কোণে মহান আল্লাহকে স্থান দাও এবং আল্লাহকে পাবার অছিলা হিসেবে হৃদয়ের আরেক কোণায় আমাকে স্থান দাও । কিছুকাল পর আল্লাহকে পাওয়ার অছিলা হিসেবে নবীকে হৃদয়ে স্থান দাও , সর্বশেষ আল্লাহ ছাড়া সবকিছু ভুলে যাও, আর এটাই তোমার কামালত । পুনরায় যদি আল্লাহকে ভুলে যাও , তবে পুনরায় আমাকে স্মরণ করো , পরবর্তীতে নবীকে মনে করো এবং শেষে আল্লাহ ছাড়া বাকিসব ভুলে যাও । এভাবে আমৃত্যু চলতে থাকো , আশা করা যায় ঈমানের সাথে মৃত্যু হবে এবং পরকাল মুক্তি নিশ্চিত হবে ইনশাআল্লাহ । এপথ ছাড়া পরকাল পাবার আর কোনো পথ নেই এবং এটাই সিরাতাল মুস্তাকিম ।



এবার আমার নিকট হতে ফরজ ওয়াজিব ও হালাল হারাম জানিয়া লও এবং এগুলো কিভাবে আমল করিবে তার পদ্ধতি জানিয়া লও । সত্যিকারের আলেম বা পীরের কাজই হলো এগুলো শিখাইয়া দেওয়া , বিশেষ করে নামাজের শরিয়ত ও মারেফাত শিখাইয়া দেওয়া । ইনশাআল্লাহ আমি প্রথমে নামাজ শিখাইবো , কারণ নামাজ ঠিক তো সব ঠিক । পৃথিবীতে নামাজ শিখানোর আর কাউকে তো দেখতেছি না । মহান আল্লাহ আমার পীর ওয়ায়েস কারনীর অছিলায় আমাকে নামাজ শিখাইয়াছেন , নামাজের মাধ্যমে আমি আল্লাহকে দেখতে পাই এবং আল্লাহর সাথে কথা বলে থাকি । তোমরা চাইলে আমি আল্লাহর ইচ্ছায় শিখাতে পারি ।



এখন তো পীরেরা গরু ছাগলের ব্যবসা করে , এরা নামাজের কিছুই জানে না । আহলে হাদিসরা তো নামাজে চরম অস্থির থাকে এবং নামাজের কিছুই জানে না । তাছাড়া পৃথিবীর কোনো আলেমই বা কোনো মানুষই নামাজ কি জানে না । নামাজ শিখতে চাইলে আমার সাথে নামাজ পড়ো এবং নামাজের ভিতরেও আমাকে তাজিম করো , কারণ সাহবীগণ তাদের নামাজে রাসুল সাঃ কে সর্বোচ্চ তাজিম করতেন । আর গরু ছাগলের ব্যবসা দ্বারা পরকাল মুক্তি হবে না , বরং মুরিদসহ পীর জাহান্নামে যাবে । আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন । আমীন ।



( ডাঃ আকন্দ ) ।

৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×