somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

আল আকসা মসজিদ

০৫ ই মে, ২০২০ রাত ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল আকসা মসজিদ
আল আকসা মসজিদ এবং বায়তুল মোকাদ্দস এক স্থাপনা নয়।



সূরা আল ইসরা ১নং আয়াতে আল্লাহ মসজিদুল আকসার কথা উল্লেখ করেছেন।
"পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।(সূরা ইসরা, আয়াত ১)

আকসা শব্দের অর্থ দূরবর্তী এবং মসজিদুল আকসা অর্থ ‘দূরের মসজিদ’। ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি, যে সময়ে মিরাজ সংঘটিত হয়েছিল সে সময় বাইতুল মুকাদ্দাস ধ্বংসপ্রাপ্তই ছিল। তবে তার মানে এই নয় যে, সে এলাকা একদম শূন্য ছিল। বরং, প্রাচীর দিয়ে ঘেরাও করা ছিল সে পবিত্র এলাকা এবং সেখানে অনেকগুলো প্রবেশ দাড় ছিল। তাছাড়া পূর্ববর্তী নবীদের ব্যবহার করা জায়গার স্মৃতিচিহ্ন ছিল। উক্ত আয়াতেই উল্লেখ আছে ‘যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি’ অর্থাৎ একটি ‘এলাকা’-র কথাই বলা আছে। আর আশীর্বাদপুষ্ট পবিত্র এলাকা বলতে আল হারাম আশ শরীফ বা টেম্পল মাউন্ট এলাকাই আছে সেখানে। হাদিস ও কুরআনে একে মসজিদ বলা হয়েছে, কারণ সেটি সিজদার স্থান ছিল, মসজিদ বলতে কোনো ছাদওয়ালা ইমারতকে বোঝানো হয় না সবসময়।



৬৩৭ সালের এপ্রিল মাসে উমর (রাঃ) যখন জেরুজালেম আসেন বাইজেন্টাইন প্রশাসক সোফ্রোনিয়াসের কাছ থেকে শহরের শাসন ভার গ্রহণ করার জন্য তখন তিনি বায়তুল মোকাদ্দস বলে চিহ্নিত জায়গায় নামাজ পড়েন এবং সেখানে ছোট আকারের একটা নামাজ ঘর নির্মাণ করেন।

উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান (৬৪৬-৭০৫) এ মসজিদটি পুনর্নির্মাণ ও প্রসারিত করা শুরু করেন, তার পুত্র খলিফা আল ওয়ালিদ (৬৬৮-৭১৫) নির্মাণ কাজ শেষ করেন।



৭৪৬ সালের ভূমিকম্পে মসজিদুল আকসা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।

৭৫৪ সালে আব্বসীয় খলিফা আল মনসুর (৭১৪-৭৭৫) সেটি আবার নির্মাণ করেন।

৭৮০ সালে এটি আবার সংস্কার করা হয়।

১০৩৩ সালে মসজিদটি আরেক ভূমিকম্পে আবার ধ্বংস হয়ে যায়।

দু’বছর পর ফাতিমি সপ্তম খলিফা আলী আজ জাহির (১০০৫-১০৩৬) আবারও সে জায়গায় মসজিদটি নির্মাণ করেন। তিনি যে সীমানা অনুযায়ী মসজিদটি বানিয়েছিলেন, আজকের মসজিদুল আকসা ঠিক ততটুকু জায়গার উপরেই দাঁড়িয়ে। এমনকি আজকের সে মসজিদের কিবলা দেয়ালের মোজাইকও তার আমলের।



১০৯৯ সালে ক্রুসেডাররা জেরুজালেম জয় করে নেবার পর এ মসজিদটিকে প্রাসাদ হিসেবে ব্যবহার করে। ক্রুসেডাররা মসজিদুল আকসাকে ডাকত "সলোমন টেম্পল" (Temple of Solomon) বলে।

১১১৯ সালে মসজিদুল আকসাকে নাইট টেম্পলারদের (Knights Templar অর্থাৎ খ্রিস্টান সৈন্য বাহিনী) হেডকোয়ার্টার বানানো হয়। তারা আল আকসা মসজিদের সাথে পূর্ব ও পশ্চিম দিকে দুটো অংশ যোগ করে। বর্তমানে পশ্চিম দিকের সে অংশ নারীদের নামাজের জায়গা এবং পূর্ব দিকের অংশটি ইসলামি জাদুঘর হিসেবে চালু আছে।

১১৮৭ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ক্রুসেডারদের কাছ থেকে জেরুজালেম জয় করবার পর মসজিদুল আকসার চেহারা সম্পূর্ণ বদলে ফেলেন। তিনি এর সংস্কার করেন এবং সুলতান নুর আল দীনের মিম্বর সেখানে যোগ করেন।

১৮১৬ সালে মসজিদুল আকসা জরাজীর্ণ হয়ে গেলে জেরুজালেমের গভর্নর সুলাইমান পাশা আল আদিল একে সংস্কার করেন।

১৯২২ সালে আবার সংস্কার করা হয় মসজিদটির। এরপর আরো নানা সংস্কার করা হয়েছে বিভিন্ন সময়েই।

১৯৫১ সালের ২০ জুলাই জর্ডানের রাজা প্রথম আব্দুল্লাহকে মসজিদুল আকসায় জুম্মার নামাজে গুলি করে হত্যা করা হয়, খুনি ছিল মুস্তাফা আশু নামের একজন মুসলমান।

১৯৬৯ সালে মসজিদুল আকসার উপর নতুন গম্বুজ নির্মিত হয়।

১৯৮৩ সালে অ্যালুমিনিয়ামের বদলে সীসা দিয়ে গম্বুজকে পুনর্নির্মাণ করা হয় খলিফা আজ জাহিরের মূল নকশা ফিরিয়ে আনতে।

মসজিদুল আকসার গম্বুজ কিন্তু সোনালি নয়, বরং কালচে ধূসর। অনেকেই সোনালী গম্বুজের সাথে ভুল করে। সোনালী গম্বুজটা হচ্ছে কুব্বাত আস সাখরা বা ডোম অফ দ্য রক।

বর্তমানে মসজিদুল আকসাতে একসাথে প্রায় ৫,০০০ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারে।

মসজিদুল আকসার ওজু করবার ঝর্ণাটি ‘আল-কাস’ (পেয়ালা) নামে পরিচিত।

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০২০ রাত ১০:১২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×