somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আকাশলীনা] ১৩ :: ভিন্ন আয়োজনে অন্য সাময়িকী

২৩ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৩:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশলীনা]
শ্রাবণ ১৪১৮ :: জুলাই ২০১১ :: বর্ষ ০২ :: সংখ্যা ০১
----------------------------------------------------------------------------
পাঠ-পূর্বক বিজ্ঞপ্তি]

আকাশলীনা- মূলত এটি একটি ছোট পত্রিকা; প্রতি বাংলা মাসের প্রথম সপ্তাহে মুদ্রণ কাগজে প্রকাশিত হয়।
বলা যেতে পারে, সাদা-কালোয় প্রকাশিত এটি আমাদের রঙিন এক স্বপ্নের গল্প!
এখানে মূল পত্রিকার বর্তমান সংখ্যাটি অনলাইন পাঠকদের জন্য সরবারাহ করা হয়েছে। ভালোলাগা-মন্দলাগা বিষয়ে যে কেউই মন্তব্য করতে পারেন...
পত্রিকাটির মুদ্রিত কপি নিয়মিত পেতে চাইলে; ফোন নম্বরসহ আপনিও ঠিকানা লিখে জানান।
আমাদের সম্পাদনা পরিচিতি এবং সরাসরি যোগাযোগ করার ঠিকানা এই লেখার নিচে উল্লেখ আছে।

সকলকে ধন্যবাদ।
-সম্পাদক, আকাশলীনা
----------------------------------------------------------------------------
মূল পত্রিকা এখান থেকে শুরু-
----------------------------------------------------------------------------
:: সম্পাদক সমীপেষু ::

অবশেষে পেতে শুরু করলাম আকাশলীনা।
এই শহরের চেনা জায়গায় থাকি, তারপরও ডাকপিয়ন আমার সাথে মাঝে মাঝে করে বিদ্রোহ। কখনো কখনো ইচ্ছে করেই দেরি করিয়ে দেয় এঁরা; আবার কখনো-বা দেয়ই না খোলাডাক বা প্রিয়জনের চিঠিগুলো...
সম্পাদক, পেলাম আপনার পাঠানো আকাশলীনা; যা আমার কাছে মূল্যবান। ধন্যবাদ আকাশলীনা-র কর্তাদের। দারুণ লোভ লাগিয়ে দিয়েছেন। তাই চাইবো এর পরবর্তী সংখ্যাগুলোও যেনো নিয়মিত পাই।
সফলতার ওপরে উঠুক আকাশলীনা। []
::
মুহাম্মদ দিদারুল আলম
সম্পাদক, লিখিয়ে; পূর্ব রামপুর, চট্টগ্রাম ৪২২৪
----------------------------------------------------------------------------------
:: পর্যালোচনা ::
এক বছরের পথচলায় প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির খতিয়ান
মো. শহীদুল কায়সার লিমন

বন্ধুর কাছে মনের কথা পৌঁছাবার এক আবেগী প্রত্যয় নিয়ে ১৪১৭ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ মাস, অর্থাৎ ২০১০-এর জুলাইতে যাত্রা করে নোমান ভূঁইয়া সম্পাদিত ভিন্ন আয়োজনে অন্য সাময়িকী আকাশলীনা। দেখতে দেখতে আকাশলীনা-র বয়স এক বছর হয়ে গেলো। এই এক বছরে আকাশলীনা-র কাছ থেকে আমরা কি পেলাম? আমাদের সব প্রত্যাশা কি আকাশলীনা পূরণ করতে পেরেছে? উত্তর হবে- নিশ্চয়ই না।
প্রথম তিনটি সংখ্যা বেরুবার পর, চতুর্থ সংখ্যায় আকাশলীনা-কে শুভেচ্ছা জানিয়ে দু-কলম লিখেছিলাম। নতুন একটি প্রকাশনার ভালো দিকগুলোই তখন শুধু তুলে ধরেছি। কিন্তু এখন আকাশলীনা পরিপক্ক হয়েছে এবং হচ্ছে। তাই এর ভুলগুলো তুলে ধরা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বৈকি।
প্রথম সংখ্যায় শ্রদ্ধেয় লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের বর্ষা নিয়ে একান্ত ভাবনা আমাদেরও শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এ ধরনের লেখা প্রকাশের জন্য সম্পাদককে ধন্যবাদ। উল্লেখ ছিলো, এই লেখাটি বিশেষ সংগ্রহ থেকে প্রকাশিত। বিশেষ সংগ্রহ বলতে সম্পাদক কি বোঝাতে চাচ্ছেন তা আমার বোধগম্য নয়। বিশেষ সংগ্রহ থেকে লেখা প্রকাশ করা হলে, লেখকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে কেনো? সম্পাদকের বিশেষ সংগ্রহ মনে হয় শেষ হয়ে গেছে। কারণ, এখন আর লেখার শেষের এই লেজটুকু চোখে পড়ে না!
দ্বিতীয় সংখ্যায় আফ্রিকান বিয়ে উৎসব নিয়ে বিশেষ লেখা এবং শফিকুল ইসলামের গল্প এপার-ওপার ভালো লেগেছে। যদিও এরই মধ্যে শফিকুল ইসলাম তাঁর নাম পাল্টে শফিক হাসান হয়ে গেছেন।
তৃতীয় সংখ্যায় ফারুক ওয়াসিফের ইরাক যুদ্ধ বিষয়ক লেখা এবং আব্দুল মান্নান সৈয়দকে নিয়ে বিশ্বজিৎ ঘোষের লেখা চমৎকার হয়েছে। যদিও ফারুক ওয়াসিফের লেখাটি প্রথম আলো-এ পড়েছি।
চতুর্থ সংখ্যায় ইশতিয়াক হাসানের মূর্তি গায়েব এবং হাসান ফেরদৌসের আফগান কন্যা : আয়েশা কাহিনি ভালো লেগেছে। তবে ইশতিয়াক হাসানের লেখাটি পড়ে মনে হলো, এটিও কোথায় যেনো পড়েছি।
পঞ্চম সংখ্যায় হাসান খুরশীদ রুমী-র প্রাণপণ মরুযাত্রা দৈনিক কালের কন্ঠ-এর ছোটোদের ম্যাগাজিন টুন টুন টিন টিন-এ প্রকাশিত। লেখাটি ভালো সন্দেহ নেই। কিন্তু যতো ভালো লেখাই হোক, পুনঃপ্রকাশিত হলে তা উল্লেখ থাকা জরুরি। অন্যথায় কেউ কেউ এটিকে পাঠকের সাথে প্রতারণা হিসেবে ভাবলে তাঁকে দোষ দেওয়া যাবে না।
ষষ্ঠ সংখ্যায় দুই কালজয়ী প্রতিভা মার্ক টোয়েন এবং লেভ তলস্তয়-কে নিয়ে জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর আয়োজনটি সত্যিই চমৎকার।
সপ্তম সংখ্যাটি আকাশলীনা-র শোকসংখ্যা। একজন পাঠিকার মৃত্যুতে ভিন্ন মাত্রার সাময়িকী আকাশলীনা-র শোক প্রকাশের এ ভিন্ন আয়োজন তথা শোকের প্রকাশ সত্যিই অসাধারণ। এ ধরনের আবেগকে শ্রদ্ধা না জানিয়ে পারা যায় না। সম্পাদকের সাথে পুরো পাঠক সমাজও একাত্মতা প্রকাশ করেছে নিঃসন্দেহে।
অষ্টম সংখ্যার ১৪ পৃষ্ঠায়, ভালোবাসা বিশেষ কবিতায় কবির নাম কি ঠিক আছে? সম্পাদক আমাদের মানিকগঞ্জের “সাবরিনা আহমেদ” আপুকে “সারবিনা” বানিয়ে ফেললেন! এ রকম ভুল, বিশেষ করে ভুল বানান প্রায়শই চোখে পড়ে। এটি আমাদের ভীষণভাবে হতাশ করে, ব্যথিত করে।
নবম সংখ্যার ৩ পৃষ্ঠায় স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ নিবন্ধের সাথে যে ইলাস্ট্রেশন ছাপা হয়েছে, সেখানে একটি গুরুতর ভুল রয়েছে। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের পরিবর্তে ৫৬ হাজার বগ-কিলোমিটার হয়ে গেছে। আমাদের দেশের আয়তন ৫৬ হাজার বর্গ-কিলোমিটার নয়; ১,৪৬,৫৭০ বর্গকিলোমিটার।
একাদশ সংখ্যায় কবিগুরুর সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী সংখ্যা হিসেবে মাত্র একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে, যাতে দুটি চিঠি রয়েছে। রবীন্দ্রনাথের চিঠি মানেই আমাদের জন্য বিশাল পাওয়া, কিন্তু আরো বেশি কিছু পাঠককে উপহার দেওয়া কি দুঃসাধ্য ছিলো? রবীন্দ্রনাথের প্রতি সম্পাদকের এতো কার্পণ্য কেনো?
বেশিরভাগ মূল রচনার ক্ষেত্রে দেখা যায় ভাষা, গাঁথুনি, বলার ঢং একই ধরনের। এতে পাঠকের মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে- একই ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন নামে মূল রচনা লিখছেন কিনা। সত্যিই যদি এ ধরনের কিছু হয়ে থাকে, তবে পাঠকদের অনুশোচনা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। বিষয়টির প্রতি সম্পাদক দৃষ্টি দেবেন বলে আশা করি।
আকাশলীনা-র স্লোগান কোনটি? “বন্ধুর সাথে মনের কথা”? সব সংখ্যা দেখে এটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু দ্বিতীয় সংখ্যাতে দুটি স্লোগান ব্যবহার করা হয়েছে- “ভিন্ন আয়োজনে অন্য সাময়িকী” এবং “বন্ধুর কাছে মনের কথা”।
আকাশলীনা-র প্রতি সংখ্যাতেই সময়োপযোগী এবং সংশ্লিষ্ট মাসের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে ফিচার থাকে যা আমাদের দারুণভাবে নাড়া দেয়। এর প্রায় প্রতিটি সংখ্যাতেই আমরা এক বা একাধিক সচেতনতামূলক নির্দেশনা পাই ভিন্ন আঙ্গিকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। পানি, গ্যাস কিংবা বিদ্যুতের অপচয় রোধ করার জন্য এ ধরনের সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপনের জন্য অবশ্যই সম্পাদক ধন্যবাদ পাবেন সকল শ্রেণির পাঠকের কাছ থেকে।
লিটলম্যাগগুলোতে আমরা সাধারণত যা দেখি না, সম্পাদক তা উপহার দিতে চেষ্টা করছেন। যেমন, দশম সংখ্যার ১১ পৃষ্ঠায় সিনেমার গল্প যা আমার কাছে খুবই ভালোলেগেছে। অন্য পাঠকরা বিষয়টিকে কিভাবে নেন তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। ভালো না লাগলে নিশ্চয়ই কেউ না কেউ লিখবেন।
আমি প্রথম সংখ্যার সম্পাদকীয়র শেষ লাইনটি পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- “এর প্রতিটি সংখ্যায় আপনি পাবেন নতুন স্বপ্নে সমৃদ্ধ রঙিন স্বপ্নের ঘ্রাণ”। আমার মনে হয়, সম্পাদক তাঁর কথা রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এবং এ চেষ্টা অব্যাহত থাকুক সবসময়- এ কামনা করি। []
::
পরিচালক, রেমাশ গ্রন্থ সম্ভার
শ্রীপুর, গাজীপুর ১৭৪৩
[email protected]
------------------------------------------------------------------------------
:: উপন্যাস ::
অসংজ্ঞায়িত ভালোলাগা
অথবা কাকভেজা এক বিকেল
জয়ন্ত সাহা জয়

ঝুম বর্ষার কোনো এক বিকেলে, দুজনেই কাকভেজা। বাস স্টপেজে দুজনে পাশাপাশি, অচেনা দুই মানুষ। ভিন্ন গন্তব্যের যাত্রী...
ভেজা শাড়ি লেপ্টে আছে তার সারা গায়ে। নীরবতা ভেঙে ব্যাগে রাখা স্পোর্টস টি-শার্ট তাকে দিতে দিতেই দেখি, অনাবিল পরিবহনের বাসটি চলে এসেছে। দেরি না করে উঠে পড়লাম আমি।
পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখি, কৃতজ্ঞতায় হাত নাড়ছে মেয়েটা। মনটা কেমন আনচান করলো। মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম, পরের স্টপেজে নেমে হিমালয় পরিবহনে দুজনে একসাথেই যাবো।
দ্বিতল সড়কের কাজ চলছে বলে, শনির আখড়া থেকেই তুমুল জ্যাম। মনে মনে ভাবছিলাম- আচ্ছা, মেয়েটা তো হিমালয় পরিবহনের টিকিটই কেটেছিলো, নাকি?
আমি নেমে পড়লাম শনির আখড়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে। অপেক্ষায় আছি কখন আসবে হিমালয়। আমার অপেক্ষার সময় ফুরাচ্ছে, বাসটির আসার কোনো নাম-গন্ধ নেই। এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। তবে কী হিমালয় পরিবহন ধর্মঘট ডাকলো বুঝি? ওফসস!
ঘড়ির হিসাব নয়, তবু যেনো ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পরই হিমালয় পরিবহনের দেখা পেলাম। কাছে এসে থামতেই দেখি, ভেতরে যাত্রী বেশি নেই। দেরি না করে লাফ দিয়ে উঠে পড়লাম। পেছনের দিকে এগুতেই চোখ পড়লো মেয়েটার ওপর। শেষদিকের একটা সিটে একা বসে আছে সে। আমারই দেওয়া টি-শার্টটি গায়ে।
আমাকে দেখেই ও হতভম্ব। মনে মনে কী ভাবছে- কে জানে! এদিকে আমার মনের মধ্যেও তোলপাড় চলছে...
কই? এতো মেয়ে জীবনে এসেছিলো; কেউ তো ওর মতো করে হাত নাড়েনি!
মেয়েটি কি ভাবছে? নিশ্চয় কোনো কু-মতলব নেই তো আমার! পর মুহূর্তেই দেখলাম, কেমন একটা ভয়ের মধ্যে আছে যেনো সে; কোলের উপর রাখা ব্যাগটা আঁকড়ে ধরে আছে।
কাছাকাছি গিয়ে বসলাম।
লক্ষ করে দেখলাম, সারা গা চুঁইয়ে পানি পড়ছে দুজনের।
মেয়েটির জ্বর আসবে ভেবে মন খারাপ হলো। ব্যাগে রাখা তাওয়ালটা বের করে দিলাম ওকে। কথা হচ্ছে চোখের ভাষায়। নীরবতাই যেনো শ্রেয় বোধ হয়েছিলো তখন। আমি মৌচাক নামবো। ও কোথায় নামবে জানি না। জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি নামবেন কোথায়?’
মেয়েটি নিরুত্তর। হাতের ঈশারায় বুঝিয়ে দিলো, সে কথা বলতে জানে না। আমি থ! ওর মায়াবী মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। ঠিক ও সময়েই জোর ব্রেক কষছে বাস। কোনোভাবেই তাল সামলাতে না পেরে, মেয়েটা আমার গায়ে উপরই হেলে পড়েছে।
সোজা হতে হতে ঈশারায়, ‘স্যরি’ বললো।
যাত্রাবাড়ি পর্যন্ত আসতেই গাড়িতে যাত্রী বোঝাই হয়ে গেছে।
মেয়েটি আমার ভিজে যাওয়া প্যাডের উপর লিখেছে- আমি শান্তিনগর নামবো। আমার গন্তব্য বাড্ডা। যে কারণে আমাকে মৌচাক নেমে আরেকটি বাস ধরতে হবে।
এবার সে মুঠোফোনের মেস্যাজ অপশনে লিখলো- আপনি আরেকটু কষ্ট করবেন আমার জন্য? আমাকে যদি কনকর্ড টুইন টাওয়ার-টা চিনিয়ে দিতেন...
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি জানালাম।
পল্টন ছাড়িয়ে ঢুকে পড়েছি বিজয়নগরে। আর একটু পর মেয়েটি নেমে যাবে তার গন্তব্যে। আমার টি-শার্টটি সে রেখে দিবে তার এক বন্ধুর দেওয়া উপহার হিসেবে।
‘ক্ষনিকের দেখায় আমি বন্ধু হলাম কী করে?’ আমার এ প্রশ্নে, সে প্যাডের উপর লিখে দিয়েছে- বাস স্টপেজের হাজারো মানুষের কুদৃষ্টির মাঝে, আপনার টি-শার্ট আমার সম্ভ্রম বাঁচিয়েছে।
মনের অজান্তেই একটা মানুষের উপকার করে ফেললাম তাহলে! বাস শান্তিনগরের জ্যামে পড়তেই, আমি টুইন টাওয়ার চিনিয়ে দিতে নেমে গেলো মেয়েটা। নামার আগে ফের হাত নাড়লো আমার উদ্দেশ্যে। এবার আমিও।
০২.
ক্লাস করতে ভালোলাগছে না। বিরক্তিকর এক ম্যামের ক্লাস! ভার্সিটিতে সময় কাটানোর কোনো উপায় নেই। কী করা! দুপুর গড়িয়ে বিকেল হবি-হবি! অফিসে আজ আর যাবো না বলেই ঠিক করেছি। মনটাও ভার হয়ে আছে। নিরিবিলিতে একটু একা সময় কাটাবো, এই পাথুরে শহরে তার উপায় নেই।
গুলশানের কাছেই বারিধারা লেক পার্ক। লেকের পাশেই একটা খালি বেঞ্চি পেয়ে গেলাম। দুপুরের খাওয়ার সময় বলে লোকজনের আনাগোনাও কম। তবে স্কুল পালানো ছেলেমেয়েরা আসছে জোড়া বেঁধে।
লেকের বাতাসে গা জুড়িয়ে যাচ্ছে। ঘুমও পাচ্ছে খুব। বেঞ্চিতে গা এলিয়ে দিতেই দুচোখ-জুড়ে ঘুম নেমে এলো। আমি হারালাম স্বপ্নের দেশে।
পার্কটা নিরাপদই। জিয়া উদ্যান বা বোটানিক্যাল গার্ডেনের মতো মাদকাসক্ত কিংবা হিজড়াদের উৎপাত নেই একদম। তাছাড়া আমার ঘুম গাঢ় নয়। ঘড়ির কাঁটা ধরে একান্ন মিনিট তেপান্ন সেকেন্ড ঘুমিয়েছি।
ঘুম ভেঙে যাওয়ায়, লেকের পাড়ে নেমে আজলা ভরে জল তুলে মুখ ধুলাম। অনেকটাই হালকা লাগছে এখন। একাকীত্বের স্বাদটা তারিয়ে তারিয়ে ভোগ করছি। এ ফাঁকে শখের মোবাইল ফটোগ্রাফিটাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। পড়ন্ত বেলায় জলের রঙ বদলের খেলা ক্যামেরাবন্দি করছি আমি।
হঠাৎ করেই কে যেনো পিঠে ধাক্কা মেরে বসলো। আমি জলের কাছাকাছি তখন। ভাগ্যিস! পা-টা ছিলো পাথরের খাঁজে। নয়তো এতোক্ষণে লেকের বুকে সাঁতরাতে হতো...
ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখি, হিমালয় পরিবহনের সেই মেয়ে- কথা!
ঘটনার আকস্মিকতায় আমি আবারো থ! মুখে কথা সরছে না। নিষ্পলক তাকিয়ে আছি ওর মায়াভরা সেই মুখটার দিকে। দুজনে দেখা হলো ফের?
ও ব্যাগ থেকে প্যাড আর কলম বের করে লিখেছে- কেমন আছো? আমি সত্যটা গোপন রেখেই বললাম, ‘চলে যাচ্ছে। তুমি এই পার্কে! এদিকেই কী থাকো?’
আবারো লিখলো কথা- না। ঘুরতে ঘুরতেই চলে আসা। তুমিও এখানে যে! জবাবে বললাম, ‘একটু খোলা বাতাসের জন্য এ পার্ক ছাড়া কোথায় যাবো, বলো?’
হুম... কথা লিখেছে- সে বুঝলাম। তোমার তো আবার ফটোগ্রাফির শখ। একটা ভালো ক্যামেরা কিনলেই পারো। মোবাইল দিয়ে ছবি তুললে মানুষ হাসে না? ওর এ লেখা পড়ে বললাম, ‘আমার শখ! তাই আমি মোবাইল দিয়েই ছবি তুলি।’
এবার সে আমার ছবিগুলো দেখতে চাইলো। কি কারণে যেনো, আমি কোনোভাবেই মুঠোফোনটা ওর হাতে দিচ্ছি না। প্রাণপনে টানছে সে। শক্তিতে কুলাচ্ছে না। ওদিকে বৈকালিক আড্ডার জন্য আসা মুরুব্বি গোছের কজন লোক দেখছে আমাদের। তাঁদের ভাব দেখে মনে হলো, মুরুব্বিয়ানা ফলাবে আর কিছুক্ষণ পরই।
এরপর আমি কথাকে নিয়ে ফিরে এসে, সেই বেঞ্চিটাতে বসি। সে মাথা এলিয়ে দেয় আমার কাঁধে। আমাদের নতুন করে আলাপচারিতা শুরু হয়। ওকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কথা, তুমি এই পার্কে এলে কীভাবে?’
সে লিখেছে- বললাম না, ঘুরতে ঘুরতে চলে আসা! সিএনজি থেকেই দেখলাম তুমি ব্রিজের গোড়াটায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলছো।
আমি হেসে ফেলি, হা হা হা! ‘আর বোলো না, ক্লাস করতে ভালোলাগছে না। একটু একা থাকার জন্য চলে এসেছি পার্কে। ...তারপর, তোমার খবর বলো। কেমন আছো?’
কথা লিখেছে- এইতো, চলে যাচ্ছে।
এদিকে লক্ষ করলাম, সূর্যটা হেলে পড়েছে পশ্চিমের আকাশে। পাশাপাশি আমরা দুজন। সময় বয়ে যাচ্ছে নিরন্তর।
তারপর কি কারণে যেনো, অনেকক্ষন দুজনই চুপচাপ। কারো মুখে কোনো কথা নেই।
আচমকা নিরবতা ভাঙলো মৃদু একটা গোঙ্গানির শব্দে। মশার উৎপাতে অতীষ্ট হয়ে কথা অসহ্য হয়ে বলে উঠলো, ‘উফ! মশার যন্ত্রণায় যুৎ নেই কোথাও!’
আমি চমকে ওঠলাম! ও কথা বলতে জানে? তারমানে ওর এসব পুরোটাই স্রেফ অভিনয়! ধাপ্পাবাজি?
রাগে গা রি-রি করছে। এমনিতেই বদমেজাজী মানুষ আমি। নিজেকে কতোক্ষণ ধরে রাখতে পারবো জানা নেই। ও তাহলে বাক-প্রতিবন্ধীর অভিনয়ই করে গেছে আমার সঙ্গে? কেনো?
কথার মুখ লাল হয়ে উঠেছে। ডাঙ্গায় তুলে আনা মাছের মতো ছটফট করছে। আমি এর শেষ না দেখে ছাড়বো না। ভনিতায় না গিয়ে বলে উঠলাম, ‘তোমার পুরোটাই অভিনয়। সেই সেদিনের সানারপাড় কাউন্টার থেকে, আজ অবধি সবটাই ধোঁকা!’
এ কথা শুনে ওর দুচোখে জল ঝরছে টপটপ করে। মুখ তুলে বললো, ‘আজ আমি সব বলবো তোমায়।’
‘কী বলবে? নতুন চাল চালবে বৈ কী!’
‘আমার কথা শোনো। সবটা জেনেই না হয় আমায় দোষ দিও। আজকের এ বিকেলটাই চাইছি তোমার কাছে।’
বাসায় ফোন করে বলে দিলাম, ‘ফিরতে রাত হবে।’
০৩.
কথা হাত ধরে পাশে বসালো।
‘আমি জানি তোমার সময় নেই। তবু তোমায় বন্ধু মনে করেছিলাম বলে, আমার না জানা অনেক কথা বলতে চাই তোমাকে।’
মানুষের না বলা কথা শোনার আগ্রহ কার না থাকে? আমারও হয়। বললাম, ‘ঠিক আছে, শুরু করো। কথা অবশ্যই সংক্ষেপে বলবে।’
‘আমার মেয়েবেলা কেটেছে গ্রামে। স্কুলে পড়েছি গ্রামে আর কলেজ জীবন শুরু হয় শহরে। বাবা ছিলেন রেল অফিসের সামান্য মাইনের এক খেটে খাওয়া কর্মচারী। আমরা চার ভাইবোন পড়াশোনায় ছিলাম দুর্দান্ত। আমার রেজাল্ট ভালোই ছিলো। এসএসসিতে এ-প্লাস আর এইচএসসিতে ৪.৭। গরীবের ঘরে মেয়েদের দেখা হয় বোঝা হিসেবে, জানোই। আমি কলেজের গণ্ডি পেরুতেই বাবা অবসরে গেলেন। মা সেলাই কাজ করেন। শেষমেশ আমাদের অবস্থা এমন যে, দুবেলা দুমুঠো ভাতও জোটে না কারো। সবচেয়ে বড় জ্বালা আমিই একমাত্র মেয়ে। এর ভেতরই আমার বিয়ের জন্য মা ওঠে-পড়ে লাগলেন। বাবা স্বপ্ন দেখতেন আমি একদিন ইঞ্জিনিয়ার হবো। নিজের ভেতর অজান্তেই বাবা এ স্বপ্ন বুনেছেন। কোনোকালেই মায়ের অবাধ্য হইনি। আমার কাছে মা-বাবাই সব...’
কথার কথা শেষ না হতেই আমি বলে ওঠলাম, ‘হয়েছে! তোমার বাংলা সিনেমার ডায়ালগ মারা বন্ধ করবে? এসব বাদ দিয়ে আসল ব্যাপারটা বলে ফেলো।’
কথা বলে, ‘ভাবতাম, তোমরা সব পুরুষেরাই খারাপ। সেদিন আমাকে, তোমার টি-শার্ট দিয়েছিলে বলে, আমি বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছিলাম। জানো, সেদিনের সেই কুলাঙ্গার বদমাশটা কে ছিলো?’
‘কে?’
‘আমার প্রাক্তন স্বামী।’
‘তার মানে!’ ভীষণ চমকে ওঠি। ‘তোমার বিয়েও হয়েছে? ওফসসস...’
০৪.
কথার বিয়ে হয়েছিলো- এটা শুনে আমি এতোটা অবাক হয়েছি কেনো, বুঝতে পারছিলাম না। এই ছেলেমানুষির জন্য, মনে মনে নিজেকে দু-চারটা ধমকও দিই।
মেয়েটার এরপরের গল্পটা আমাদের খুব চেনা। বাংলা নাটক বা সিনেমায় হরহামেশাই দেখা যায় এ দৃশ্যগুলো। কিন্তু ওর বেলায় এটা ছিলো নিরেট সত্য। তাহলে সে গল্পই বলা যাক-
...কথার বিয়ের বয়স না হতেই, বিয়ে হয়েছিলো ওর চেয়েও বিশ বছরের বড় এক মধ্যবয়সী মেম্বারের সাথে। কথার কোনোকালেই সে মানুষটাকে ভালোলাগেনি। স্বামীর অধিকার সে গায়ের জোরেই আদায় করে নিয়েছিলো। ওর শ্বাশুড়ি-মা বড় ভালো মানুষ। নাতির মুখ দেখবেন বলে উতলা হয়ে ওঠলেন। কিন্তু কথার শরীরটা তো সন্তান ধারনের জন্য উপযুক্ত হতে হবে? স্বাস্থ্যকর্মী এসে একদিন পুরো ব্যাপারটাই বোঝালেন সবাইকে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? এর মধ্যেই কথার স্বামী, সেই মেম্বার সাহেবের নজর পড়েছে ক্লাস টেনে পড়–য়া অন্য এক মেয়ের দিকে। চতুর্থ বিয়ে করতে তার বড় শখ। বাপের টাকা-পয়সাও মেলা। এমন বউ পাওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার। বাবা-মা তাই বাধ সাধলেন না ছেলের বায়নাতে। রাজ্যে এখন নতুন রানী; তাই স্বামী কেনো মেনে নেবেন পুরনো মরচে পড়া কথাকে? অনিবার্যভাবে কথার ঠাঁই হলো দাসীর ঘরে। এরই মধ্যে যৌতুকের দাবিও তুললেন কথার শ্বশুর। বুড়ো বাপ-মা, ভিটে-মাটি বিক্রি করে পথে নামলেন মেয়ের সুখের জন্য। ভাইগুলোও বোন অন্তঃপ্রাণ। খোলা আকাশের নিচে কতোদিন যে কেটেছে তাদের... অবশেষে পেটের তাগিদে ওদের ঠাঁই হয়েছিলো মহাখালীর সাততলা বস্তিতে। রিকশা টেনে বুড়ো বাপ-মাকে খাইয়েছেন ছেলেরা। কিন্তু ঢাকার বাতাস যে অন্য কথা কয়! সঙ্গদোষে একদিন এক ভুল করে বসলো কথার বড় ভাই। নারীর অবমাননা করে জেলের ঘানি টানছে যখন; বাবা মরলেন বার্ধক্যে আর মা মরলেন পুরনো বিমারে। কথার কেউ নেই তখন। উঠতে-বসতে কথার ওপর চলে অত্যাচার। একদিন কথা জানে, সে মা হবে। নারীর সবচেয়ে বড় ধন তার সন্তান। কিন্তু সে চায় না এ সন্তান। রাতের আঁধারে সে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে। চেনা এক আপুকে দিয়ে গর্ভপাত করালো। মাতৃত্বের ইতিহাসে এক ছোপ কালো রঙ ছড়ালো। ডাক্তার বলে দিয়েছে, ও আর কোনোদিন মা হবে না। এমন বড় বঞ্চনা বিধাতা তাকেই দিলো? শেষমেশ ওর একটাই সান্ত্বনা- কোনো কুলাঙ্গারের সন্তানের মা হতে হয়নি ওকে।
মাতৃত্বের কলংক আর শোকে, এই মা সেই থেকে বাইরের জগতের মানুষগুলোর কাছে মূক সেজে রইলো। সবাইকে জানিয়েছে, রোড অ্যাক্সিডেন্টে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলো। নিজেকে বুঝ দিয়েছে, পাপের প্রায়শ্চিত্ত সে একাই করছে।
সেই থেকে, সবাই ওকে করুণার চোখে দেখে। বাকপ্রতিবন্ধী বলে চারপাশ থেকে কটু মন্তব্য ভেসে বেড়ায়। বুক ফাটে, তবুও সন্তানের নির্মম পরিণতির জন্য দায়ী মা যে বড় নিরুপায়। পৃথিবীর আলো না দেখা সেই সন্তানের ছবি সে খুঁজে বেড়ায় পথশিশুদের মাঝে। তারপর অনেকটা সময় কাটবে অন্ধকারে। অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষে আলোর রেখা ফুটলো একসময়। পেটের দায়ে, চোখের জলে বুক ভাসিয়ে কথা একদিন বেছে নিলো সেলাই দিদিমনির চাকরি।
সেখানেই পরিচয় শাহাদাৎ-এর সাথে। নতুন করে ওকে জীবন শুরুর স্বপ্ন দেখিয়েছে শাহাদাৎ। শাহাদাতের ঘরে কেবল মা। পূজনীয়া মা, ভালোবেসে কথাকে বউ করে নিলেন ঘরে। কথা মা হবে না জেনে, শাহাদাৎ একটা পথশিশু দত্তক নিয়েছে। আদর করে ওরা সে বাচ্চাটার নাম রেখেছে সম্রাট।
...আমার বিস্ময়ের ঘোর কাটতেই দেখি কথা গল্প তখনো ফুরোয়নি। শাহাদাৎ চলে এসেছে পার্কে। ততোক্ষণে পার্কে সন্ধ্যা নেমেছে। কথার হাতটা ধরে রেখে সে আমার উদ্দেশে বলে, ‘জানেন, দাদা, আমার জীবনে কোনো দুঃখ নাই। কোনো কষ্ট নাই। আমি, আমার বউ-পোলা আর মারে নিয়া অনেক খুশি আছি।’
শাহাদাতের একটা হাত ধরে, ওদের ছোট্টো ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে। সম্রাট ডাকলো, ‘মা, ঘরে যামু। লও, রাইত নামতাছে।’
সম্রাটকে কোলে নিয়ে ওর মা ফিরছে ঘরে। আমার কানে বাজছে, “মা ঘরে যামু। লও রাইত নামতাছে।” যাবার আগে কথা জানালো- সে একটা কলেজে ভর্তি হয়েছে, পাস কোর্সে।
সম্রাটের মাকে যে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে! কথা স্বপ্ন দেখে- প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হবে। সে পড়াবে কোনো অজপাড়াগায়ে। যেখানে ণেণে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা জোতদার, মেম্বার কিংবা কুসংস্কার-প্রবণ বৃদ্ধা-শ্বাশুড়ি- কেউই থাকবেন না।
আমি তাকিয়ে আছি ওদের চলে যাওয়া পথের দিকে। চোখের আড়াল হতে ফিরে এলাম সেই বেঞ্চটার কাছে। লেকের জলে ততোক্ষণে সোডিয়াম বাতির নিয়ন আলো এসে পড়েছে। জলের রঙ একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে...
হঠাৎ খেয়াল হলো- আমার মন খারাপটা নেই আর! কেমন এক ভালোলাগার রেশ ছড়িয়ে পড়েছে শিরায় শিরায়! এ ভালোলাগার কোনো নাম হয়তো নেই; এই ভালোলাগা সংজ্ঞাহীন।
টিপটিপ বৃষ্টি ভিজিয়ে দিচ্ছে আমায়। আমি ঘরে ফিরছি কাকভেজা এক বিকাল আর অসংজ্ঞায়িত ভালোলাগাকে সঙ্গী করে... []
::
[email protected]
---------------------------------------------------------------------------------
:: কবিতা ::
ইট হ্যাজ সামথিং ফর এভরিওয়ান
মু. এস হোসাইন

শুধু তাই নয়! সে আমায় শুনবে ও শোনাবে-
অনুভূতি ব্যক্ত করা সহজ নয়।
সত্য প্রকাশে শব্দভাণ্ডার শূন্য হয়ে পড়ে;
মনকে জাগাও- অনুভূতি স্পষ্ট হয়ে ওঠবে।
কিন্তু ভাষা রয়ে যাবে গতিহীন।

তাই তো! পাখির গানের মতো কথামালা,
ভালোবাসা, আত্মার উপাসনা- সবকিছু বিফল হয়ে যাবে,
যদি না থাকে আনন্দময় অনুপ্রেরণা।

সুখতৃষ্ণা বা কল্পনার জগৎ,
সবকিছুর মূলেই ভালোবাসার শক্তি।
মানুষ মিলিত হয় বন্ধুত্বে, ভালোবাসায়, যৌনতায়
এতো আয়োজন! তবু কেনো দলাদলি, রক্তারক্তি?
কালের বিবর্তনে সভ্যতার আয়োজন;
আলোকিত পৃথিবী, আলোকিত আমরা
এখান হতেই আমাদের আত্মায় আসে প্রেম।
যে প্রেম সংজ্ঞাহীন, সীমাহীন।

যা হোক, আমার প্রেম তাকে নিবেদন করতে চাই-
তোমায় নিয়ে আমার আত্মায় আমি যেথা ইচ্ছে যেতে পারি;
আবার তোমার গৃহকোণের বন্দিদশা হতে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারি!
তোমাকে নিয়ে আমার স্বর্গ, যেখানে আছে আমার সুখবিলাস।
কিন্তু জানো কি? তুমিহীনা আমার নরককে যদি আমি স্বর্গ মনে করি,
সেখানেও আমার সুখের অভিবাস।
শেষকথা, এবং এ কথা অবিনশ্বর।
যদি আমি সকালের ডানা ঝাপটানো পাখি হই, কিংবা
সমুদ্রের অকূলস্রোতে প্রাণে জোয়ার তুলে হারিয়ে যাই,
হয়তো তোমার হাত আমায় এড়াতে চাইবে।
কিন্তু তোমার অন্য হাত চিরন্তন আমায় আকড়ে রাখবে। []
::
[email protected]
---------------------------------------------------------------------------------
আকাশলীনা]
শ্রাবণ ১৪১৮ :: জুলাই ২০১১ :: বর্ষ ০২ :: সংখ্যা ০১

কৃতজ্ঞতা :: হিমেল অনার্য
সম্পাদক :: নোমান ভূঁইয়া

সহযোগী ::
জাহীদ ইকবাল, মহিবুল হাসান কাউসার
সাবরিনা আহমেদ, মেহেদী ফেরদৌস
প্রচ্ছদ পরিকল্পনা ও পষ্ঠাসজ্জা :: রঙছুট
শব্দ বিন্যাস ও সমন্বয় :: সৈয়দা সুধন্যা
সার্বিক ব্যবস্থাপক :: সাইফুল আমিন

যোগাযোগ ::
+88 011 95199280
+88 018 18731377
[email protected]
http://www.facebook.com/akashlina.mag

মূল্য :: ১০ টাকা

সম্পাদক ও প্রকাশক
নোমান ভূঁইয়া কর্তৃক সার্কুলার রোড, ধানমণ্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত;
এবং হাতিরপুল, ধানমণ্ডি, ঢাকা ১২০৫ থেকে মুদ্রিত।
================================================
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×