কখোনও কখোনও এই পাখিগুলি এসে বসতো জাহাজের মাস্তুলে, গান গাইতো আপন মনে নাচত মনের আনন্দে আর নাবিকেরা অপার অনন্দে তাদের দেখত অবাক হোত। নাবিকেরা পাখিগুলি ধরবার চেস্টা করতো কিন্তু পাখিগুলি কিছুতেই ধরা দিত না। আকাশে উড়ে গান গাইতে গাইতে চলে যেত পশ্চিমদিকে। যেদিকে আটলান্টিকের শুধু জল আর জল--ডাঙ্গার চিহ্নমাত্র নাই। সেই থেকে লালঝুঁটি হলুদ পাখির নাম ক্যানারী আর সেই থেকে উৎপত্তি স্পেন ও পার্টুগালের ক্যানারীজ সং এন্ড ড্যান্স।
কিন্তু পাখিগুলি পশ্চিমদিকে কোথায় যায়। একবার কিছু নাবিক পাখিদের পিছু নিল। কয়েকদিন চলার পর তাদের চোখে পড়ল দিগন্ত বিস্তৃত ধোঁয়া আর ধোঁয়া। দিন যায় রাত আসে । চারিদিকে আধাঁর আর নিকষ কালো পানি। এত কালো কুচকুচে পানি তারা কখনও দেখেনি। চারিদিক ভয়াবহ রখমের আধাঁর। নাবিকেরা ভয় পেয়ে যায়। এরপর তারা যখন দেখে পশ্চিম আটলান্টিকের সাগরের বুকে আগুন লেগেছে তখন তারা ভয়ে আতংকে বিবশ হয়ে পড়ে। সে আগুনের লেলিহান শিখা যেন আকাশকে পর্যন্ত পুড়িয়ে ফেলছে। আর আগুন চারিদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তাদের চোখে এ এক নারকীয় দৃশ্য। তারা তাড়াতাড়ি ফিরে আসে তাদের জাহাজে।
এই কাহিনী ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র ইউরোপের বন্দরে বন্দরে। সব নাবিকেরা জানে যে এইগুলি পাখি নয় এই গুলি মায়া এই মায়ার টানে যে যাবে সেই ধ্বংস হবে।
ক্যানারী দ্বীপ আসলে ছিল একটি আগ্নেয়গিরি। প্লেটো বলে গেছেন-- এখান থেকেই পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে বিস্তৃত ছিল সেই হারানো মহাদেশ--‘আটলান্টিস’। ভূমিকম্প ও অগ্নুৎপাতের সম্মিলিত ধ্বংসযজ্ঞের ফলে বিপুল সভ্যতার অধিকারী সেদিনের আটলান্টিস মহাদেশ রূপান্তরিত হয়েছে আজকের এই আটলান্টিক মহাসাগরে।
সোভিয়েত বিজ্ঞানীরা অনুসন্ধান চালিয়ে প্লেটোর এই উক্তির সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন। তারা সংগ্রহ করেছেন অনেক ভৌগলিক তথ্য ও ঐতিহাসিক নিদর্শন যার মধ্যে রয়েছে প্রকান্ড অট্টালিকা, প্রশস্থ রাজপথ এবং সুগভীর নর্দমার বিস্ময় কর সব আলোকচিত্র।
সে থেকে শতশত বছর কেটে গেছে ক্যানারীর আগ্নেয়গিরি স্তিমিত হয়ে এসেছে। ফুটে উঠেছে একটি ছোট্ট সুন্দর দ্বীপ। এই দ্বীপটি এখন পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য টুরিস্ট সেন্টার গুলির মধ্যে একটি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


