somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযোদ্ধ আমার অহঙ্কার

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্তিযোদ্ধ আমার অহঙ্কার
গর্ব যত বলার
সময়ের প্রবাহে হারিয়ে যায় দিন ,মাস ও বছর ; কিন্তু কিছু কিছু ঘটনা বা কার্যক্রম সেই সময়ের প্রবাহকে আলোকিত করে।সেই আলোকিত ঘটনার ফসল যুগ যুগ ধরে তাতে আলোর জ্বালানি সরবরাহ করে।সেই আলোক রশ্ণি মানুষের বিবেক এবং ইতিহাসের পাতাকে সঙ্গায়িত করে ,তার উৎস দূরত্ব (সময়) এবং জ্বালানী সরবরাহের গুরুত্বের উপর নির্ভর করে । এমনি একটি গুরুত্বপূর্ন ঘটনা ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধ

১৯৫২ সালের একুশে ফ্রেবুয়ারী যে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল তা বাঙালি সংস্কৃতিকে পুষ্ঠ করেছে ।তেমনি রাজনীতি ও সংস্কৃতির সেতুবন্ধনে বাঙালি এগিয়েছে একাত্তরের অর্জনের দিকে। একুশে বাঙালি জাতির হাজার বছরের ঘোর অন্ধকার রাত্রির পথ কেটে কটে নিয়ে এসেছে মুক্তির আলোক ইশারা ,শুনিয়েছে মুক্তির মহামন্ত্র জাগরণী গান ।প্রতিষ্ঠা দিয়েছে এর ভাষাকে ,ঐক্য দিয়েছে এর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ; চিন্তা ও চেতনা ;মন ও মননকে ।
এই মাতৃভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের জাতীয় সত্তার প্রথম আত্নবিকাশ ঘটেছে ।একুশ শ্বাশত সত্যরুপে চিহ্নিত অমর দিন ,যে দিনটি এদেশের ইতিহাসকে দিয়েছে পাল্টে এবং চেতনার বাপ্লবে পরিবতূত করেছে আমাদের সংগ্রামী চিত্তকে ।একুশের জের ধরেই হয়েছে স্বাধিনতার সংগ্রাম ।১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ ।সেদিন জাতির মানসভূমিতে স্বাধীকারের যে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল ,আজ তা স্বচ্ছলতায় শিকড় গাড়া সশাখ বৃক্ষ ।সে দিনের চারপ্রহরে আটকে আছে বাঙালির অনন্ত মহাকাল ,অখন্ড সময় । সে চেতনার অর্জনে গর্বিত জাতির ইতিহাসে সংযোজিত হয়েছে আরো অনেক অধ্যায়।প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ,যুগ থেকে যুগান্তরে সত্যভাষণ প্রতিষ্ঠার যে অঙ্গীকার ,একুশ তার অমিয় শক্তির উৎস ।

সুজলা সুফলা ,শস্য শ্যমলা আমাদের এই দেশ বারবার বিদেশীদের হাতছানি দিয়ে ডেকেছে । কেউবা এসেছে ব্যবসা করতে ,কেউবা এসেছে পর্যঠকের বেশে আবার কেউবা এসেছে রাজ্য শাসনের লোভে ।কিন্তু স্বাধীনচেতা এ দেশের মানুষ কাউকেই বেশি দিন শোষনের রাজত্ব করার জন্য দেয়নি ।সাম্রাজ্য জয়ের জন্য যে যুদ্ধ তাকে ঘৃণা করি।
যুদ্ধ মানূষকে মুক্তি দেয় তার প্রকৃত উদাহরন বাংলাদেশ । বাংলা ভাষার হাজার বছরের মাধুরী ,রুপালি নদি বিধৌত বাংলাদেশের প্রকৃতির অণুপম সৌন্দর্য স্নিগ্ধ অজস্য পল্লী এবং কুরআন পুরাণ পালা পাবনের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নানা ঐতিহ্যময় জন জীবনে যে নারকীয় বিভীষিকা সৃষ্টি করা হয়েছিল ,তা থেকে মুক্তির জন্য যে যুদ্ধ হয়েছিলো তাই মুক্তিযোদ্ধ ।

অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভুমি আমাদের এ মাতৃভূমি বাংলাদেশ বাশ্বস্রষ্টা যেনো আপন সাজে সাজিয়েছেন এ দেশকে ।সবুজে ছাওয়া বাংরার মাঠ ঘাঠ প্রান্তর পত্র পল্লবে ভরপুর।আবহমান বাংলা দেশের প্রাকৃতিক সৌন্ধর্য ,পদ্মা ,মেঘনা এ যমুনার রপালী তীরে আম ,জাম ,নারিকেল এর সুশীতল ছায়া ঘেরা এদেশ সত্যিই অনুপম সৌন্দর্যের আধার ।এ দেশের গাছে গাছে পাখি গান গায় ,কোকিলের কুহুতানে মুখরিত হয় সমগ্র প্রকৃতি ।প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই এ দেশের গুনাগুন নয় ।আবহমান কালের এতিহ্যে লালিত এ দেশের সংস্কৃতিও বড্ড মহিমায় উজ্জ্বল ।

বাংলার লাল সবুজ পতাকার নিচে নানা পেশা ,নানা জাতি ,নান ধর্মের মানুষ বাস করে ।বাংলাদেশের নদীতে মাঝি পাল তোলে নৌকা চালায় ; তাঁতী বুনে তাঁত ,আউল-বাউল গানের তালে মেতে ওঠে লক্ষ কোটি প্রাণ ।পুন্যাহের সানাই রদ্দুরে রঞ্জিত পথ বেয়ে হেঁটে যায় গ্রাম বাংলার মানুষ ।হিন্দু মুসলমান -বৌদ্ধ -খ্রীস্টান সবাই যেন একই মাতৃভূমির সন্তান ।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত ।পদ্মা -মেঘনা -যমুনার তীরের এ শান্ত জনপদ পালা-পার্বনে একাকার ।বাংলার আবহমান কালের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধ্বংস করার মানসে পাক শোষকরা বারবার ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠো ।মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বুনোদল তাদের বর্বর আক্রমনে এদেশে এক নারকীয় বিভীষিকার জন্ম দেয়।

১৯৭১ এর ভয়াল দিনগুলোতে পাক হানাদার দের ভূমিকা ছিল বর্বরোচিত ।বাংলার লক্ষ মানুষের ওপর হিংস পশুর মতো পাক বাহিনী ফেলেছিলো তাদের দানবীয় থাবা।বাঙালির রক্ত নেশায় উন্মাত্ত নেশার ফসলে পরিনত হয়েছীলো বাঙার নিরিহ জনতা ।নারী নির্যাতনের যাতাকলে পিষ্ট হয়েছিলো ২ লক্ষ মা-বোন ।তাদের হত্যাযজ্ঞে পরিনতো হয়েছিলো ৩০ লাখ শহীদের লাশ ।মৃত্যু পদযাত্রী মানুষ ও স্বজন হারা মানুষের আর্ত চিৎকারে প্রকম্পিত হয়েছিল বাংলার আকাশ- বাতাস ।কিন্তু শত অত্যাচারেও বাঙালি জাতি মাথা নত করেনি । লক্ষ প্রাণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তিযুদ্ধের পসল । ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ হানাদার বাহিনী আত্নসমর্পন করে ।বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয় সূচিত হয় ।

হঠাৎ অপ্রস্তুত গ্রাম বাংলার কৃষক ,শ্রমিক ,ছাত্র-শিক্ষক সহ সমাজের নানা পেশার মানুষ বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে মোকাবেলা করেছে -বলা যায় কোনো রকম ট্রেনিং ছাড়াই ।
দেশের জন্য আত্নহুতি দিয়ে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে এ দেশের দামাল ছেলেরা ।ধনী-দরিদ্র সবাই একহতে পেরেছিলো একটি উপলক্ষকে কেন্দ্র করে। কাধেঁ কাধঁ মিলিয়ে হাতে হাত রেখে যুদ্ধ করেছে ।শহরের কোটিপতির ছেলে এবং গ্রামের কৃষকের ছেলে রাত কাটিয়েছে একই তাবুর নিচে ।ভাত খেয়েছে একই থালায় মেখে ।এভাবে অনেক সীমা রেখার বাষ্প টান্ডা করে পাওয়া গেলো এক টুকরো মানচিত্র ।অগ্নি সংযোগ হত্যাকান্ড ,লুন্ঠন নির্যাতনে তারা ছারকার করেছে গ্রাম বাংলা ।এভাবে মৃত্যু এবং আর্তনাদের ভেতর দিয়ে জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল লাল সবুজের পতাকা।মাত্র ৯ মাস যুদ্ধ করে মানচিত্র পাওয়া বিরল ইতিহাস ।তাই মুক্তিযুদ্ধ আমার অহংকার ।

একুশে ফেব্রুয়ারি বর্তমানে পৃথিবীর সকল মাতৃভাষাকে সম্মান দেখানোর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দিবস।ভাষা শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমদের জাতীয় সকল আয়োজনে ,সকল প্রয়োজনে ,সকল নির্মাণে কিংবা বিনির্মাণে একুশের প্রকাশ আমাদের জাতীয় দায়।এই দায়বোধ থেকে উৎসারিত চেতনাবোধ আজকের দৃর্বৃত্তায়িত সমাজ ও রাজনীতির সংস্কারে কাজে লাগাতে হবে।

মাতৃভাষা ,মুক্তযুদ্ধ এবং বিজয় এর চেতনাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।দেশকে এগিয়ে নিয়ে সেই চেতনার জ্বালানি চাহিদা ।এ জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে ,তবেই আমার অহংকার এ বাঙালি জাতিকে বিশ্ব দরবারে অলংকৃত করবে ।

অতএব ,কবির ভাষায় বলতে চাই ,
"বন্ধু ছাড় উদ্বেগ ,সুতীঘ্ন কর চিত্ত ,
বাংলার মাটি দূর্জয় ঘাটি -বুঝে নিক একাত্তরের দুর্বৃত্ত ।"


সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×