ছবির মানুষটি ১৯৭১ সালের মুক্তি যুদ্ধে একজন শহীদজায়া। নাম -রিজিয়া বেগম বয়স প্রায় ৮০ বছর। মুক্তি যুদ্ধের সময় উনার স্বামী জনাব সৈয়দ আহমদ সওদাগরকে পাক সেনারা মুক্তি যোদ্ধাদের আর্থিক সহায়তা করার অভিযোগে হাত-পা বেঁধে অর্ধেক বস্তায় ভরে নির্মম ভাবে গুলি করে মোংলার পশুর নদীতে ভাসিয়ে দেয়। পরিবারটি তার লাশটাও খুজে পায়নি। আজও পশুরের ঘোলাজলে নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকে রিজিয়া বেগম
চারটি শিশু কন্যাসহ ভুক্তভোগী পরিবারটি নিদারুন কষ্টে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটিয়েছেন স্বাধীনতা পরবর্তী দিনগুলোতে । রিজিয়া বেগম তার চার কন্যাদের নিয়ে স্বামীর ভিটা মাটিতে পর্যন্ত ঠাই পায়নি। বাস্তহারা হয়ে দ্বারে দারে ঘুরেছেন।
তৎকালীন সময়ে স্থানীয় সমাজ সংস্করক জনাব হাজী মোহাম্মদ ইসমাইল সাহেব রিজিয়া বেগমকে এক খন্ড জমিতে ঘর তুলে থাকতে যায়গা দিয়েছিলেন। সেই একখানা গোলপাতার খুপরি ঘড়ে মেয়েদের নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করেছেন। মানুষের কাথা সেলাই করে, কখনোবা পাটি বুনে দিয়ে, ধান ভানার কাজ করে সংগ্রামী এই নারী মেয়েদের বড় করে একে একে সবাইকে পাত্রস্থ করেছেন। মেয়েরা যার যার পরিবারে দেশের বিভিন্ন শহরে থকেন। নাতিরা ছাড়া এখন তার দেখবাল করারও তেমন কেউ আর নেই।
জীবন যুদ্ধে সংগ্রামী রিজিয়া বেগমের সাথে কথা বলে জানলাম আগে উনি তিন হাজার টাক ভাতা পেতেন সরকার থেকে এখন সেটা দেড়হাজার টাকায় নেমে এসেছে। ইসমাইল সাহেবের থাকতে দেয়া যায়গায় তিনি এখনো আছেন। বর্তমানে তিনি বার্ধক্য জনিত অনেক সমস্যায় ও রোগে আক্রান্ত। মেয়েদের জামাই এবং নাতিদের সাহায্য সহোগীতায় কোন রকম তার দিন চলে। সমাজের বিত্তবানদের কাছেও তিনি তার চিকিৎসার জন্য আবেদন জানান।
জীবনের শেষ বেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট তিনি মুক্তি যুদ্ধে শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি পাবার আশা করেন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৫