একগ্র প্রেমও যে প্রতারণা করতে পারে…তা বিশ্বাস করা যায় না। প্রেম এমণই যে আজ একজনের উপর ভর করে অন্যদিন আরেকজনের উপর। তবে এই বিষয়টা অনেক বেশি হয় মেয়েদের ক্ষেত্রে। চেহারা সুন্দর হলেতো কথাই নাই!! ঘুরে ফিরেই উপরে এসে যায়, তো কি করার ১০টা ছাড়লে একটাতো ধরতেই হয়। মনতো বিবেকময় না। তাই মাঝে মাঝে লাগামহীন হয়ে পড়ে, এই ক্ষনিকের লাগাম হীনতাই দীর্ঘ দিনের জন্য পাভাঙ্গা কষ্ট বয়ে আনে তা সেই জানে, যে একবার প্রকৃত প্রেমে পড়ে। মানুষ প্রেম করতে পারে অনেক কিন্তু আমার বিশ্বাস একবারই প্রেমে পড়ে। লোভই যে পাহাড় সমান বিশ্বাসকে ধ্বংস করে দিতে পারে তা আজ আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো.....
সে অনেক কথা বলতে হয়, ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সীট বন্টন চলছে। ভার্সিটিতে উপযুক্ত বিষয় বাছাই করে নেওয়াতো কঠিন বিষয়, চাইলেই পাওয়া যায় না। তাই নেতাদের স্বরণাপন্ন হতেই হয়। আমি মাস্টার্স করেছি একবছর হলো এখন কলেজেই নেতামি করি। ঠিক নেতামি বললে ভুল হবে…আসলে সব বন্ধুরা মিলে ক্যান্টিনে আড্ডা দেই, সময় কাটাতেও ভাললাগে কারণ বন্ধুদের মাঝে আমিই মেধাবী এবং সর্বাধিক জনপ্রিয়। ঠিক এমনসময় এক সুন্দরী নারী এসে হাজির, তার পছন্দের বিষয়টি পাওয়ার আর্জি নিয়ে। কতোজনকেইতো সাহায্য করি, কারও কাছ থেকে টাকা নিয়ে, কাউকে বিনে পয়সায়। এমন সুন্দরী মিষ্ট ভাষী একটা মেয়ে তাও আবার গাও গ্যারামের, মনতো মানেই না। দিলযে ছিড়ে যায়, তার প্রতি মায়ার সীমা নেই। চেহারা যতটানা সুন্দর তার মায়া, আচার ব্যবহার আমাকে আকুল করে তুলল।
সেই ভর্তি নিয়ে তার সাথে প্রথম দেখা। এর পর চলতে থাকলে ক্যাম্পাসে কথা, কিছুটা ফোনে, ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা, এখানে সেখানে, ফোনে। চলবেই তো এ যে গাঢ় প্রেম। পৃথিবীতে এই মেয়েটিই আমাকে ভাল করে বুঝতে পারে, সব থেকে বেশি ভালবাসে, এভাবে চলল সাত বছর, অনেক প্রেম পাগলামী হয়েছে, রয়ে গেছে বন্ধু-বান্ধুবী মহলে স্বরণীয় হয়ে। আমি তখনও চাকরি খোজার প্রয়োজন মনে করি না, তাছাড়া চাপও নেই তেমন। ও এখন অনার্স শেষ করল, বিয়ে করতে রাজি না, তার এখন অনেক দায়িত্ব, তাছাড়া সে পরিবারের বড় মেয়ে। পারিবারিক অর্থনৈতিক চাপে চট্টগ্রামে তাকে চাকরি নিতে হলো। মাস্টার্সে ভর্তি হয়েই চলে গেল চাকরিতে। আমাদের রাত বিরাতে কথা চলে, মাঝে মাঝে ভার্সিটিতে আসলে দেখা হয়। আমি তখনও চাকরি পাইনি চেষ্টা চলছিল। ওর সাথে যোগাযোগ ঠিক মতই হয়, কিন্তু হঠাৎ ই ওকে আমার অচেনা মনে হতে লাগল, যেন ও আমার অপরিচিত। রাতে মাঝে মাঝেই কল ওয়েটিং পাই।
একদিন হঠাৎ রাত ১২ টার দিকে ফোন করে বলল এখনই ১০ টাকা আমার নাম্বারে লোড করে দাও। কি মুশকিল আমি কার কাছ থেকে এতরাতে লোড করব? পড়লাম বিপদে, আমার একবন্ধুর কাছ থেকে রিচার্জ করিয়ে দিলাম। রিচার্জ করার একটু পরে আমি কল দিয়ে দেখি ওয়েটিং। আমার মানে সন্দেহ সৃষ্টি হল..খোজ নিলাম তার এক ঘনিষ্ট বান্ধুবীর কাছ থেকে ওনাকি গোপনে বিয়ে করেছে ওর কোম্পানির বসকে তা প্রায় ৬ মাস। লোকটি অনেক ধনী ওকেও নাকি খুব ভালবাসে। শুনে আমার মাথায় বাজ পড়লো। আমার রিচার্জ করা টাকা দিয়ে ও অন্য প্রেমিকের সাথে কথা বলে….কি কষ্ট লাগতে পারে আমার!!!!!! আমি নিজেকে সামলে নিয়ে ওর সাথে ভাল ভাবেই কথা বলছিলাম, আগের মতো করেই। আমাদের যোগাযোগ রীতিমতই হয়, হঠাৎ ও একদিন ফোন করে বলল, আমার বস তোমাকে ফোন করতে পারে, তুমি বলবা, তুমি আমার খুব ভাল বন্ধু। হঠাৎ করে তোমার নাম বলে ফেলায়, চাকরিতে ঝামেলা হয়েছে। আমি বললাম ঠিক আছে, তাই বলবো। ঠিক তার বস আমাকে ফোন করল, আমি কথা বললাম, লোকটা ভাল ব্যবহারই করল। আমি তখনও ওকে বুঝতে দেইনি আমি সব জানি! যোগাযোগে কোন ক্রটি নেই, দুজনেই আগের মত করে কথা বলি। অন্যদিকে কলেজে নতুন আসা একটি মেয়ে আমাকে খুব পছন্দ করে আমারও তাকে ভাল লাগে, তখনই রবীন্দ্রনাথের ঐ কথাটা মনে পড়ল, “বিয়ে কর তাকে যে তোমাকে ভালবাসে, তাকে নয় যাকে তুমি ভালবাস”। ব্যস বিয়ে করে ফেললাম তাকে। আমি বিষয়টি ওর কাছে গোপন রাখলাম। ওর মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ, তখন একদিন ভার্সিটি এসে আমার সাথে দেখা করল এবং আমাকে বিয়ে করতে চাইল….আমি শুধু জিজ্ঞাসা করলাম, ঐ রাতের ১০টাকা রিচার্জ করে কি তুমি তোমার বসের সাথেই কথা বলছিলে? ও স্বীকার করল এবং এক বছর ঐ বসের সাথে সংসার করার কথা স্বীকার করে আমার কাছে মাফ চাইল। আমিও আরকিছু না বলে আমার স্ত্রীর ছবি দেখিয়ে দিলাম এবং বললাম আমিও বিয়ে করেছি একবছর হল। ঘৃণা ভরা চোখে তাকিয়ে এই বলে চলে এলাম “আমি তোমার বিয়ের বিষয়টা আগেই জানি!!!!” আর কোনদিন যোগাযোগ হয়নি।
যদিও আমার স্ত্রী আমাকে খুব ভালবাসে, আমিও তাকে খুব ভালবাসি। তবুও
আমার মাঝে মাঝে ওর কথামালা খুব মনে পড়ে এবং মনে হয় ওর থেকে কেউ আমাকে বেশি ভালবাসতে পারবে না।
সূত্রঃ আমার নিকটতম বন্ধু, আরিফ
মধ্য রাতের আমার ১০ টাকা ফ্লেক্সিলোড এ অন্যের সাথে কথা কয় (কি কষ্টই না লাগে বুকে)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১২টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।