somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন

০১ লা জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিগত দশ বছরে বাংলাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে কোন বিষয়ে? আমি নিশ্চিত যে কোনো পাঠক কোনো প্রকার চিন্তাভাবনা ছাড়াই বলে দিতে পারবেন, “ইংরেজি এবং গণিত”। বাংলাদেশে বাংলা মাধ্যমের একজন শিক্ষার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করতে করতে তিনটি ভাষা শিখে ফেলতে হয়। যদি গণিতকে একটি ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে সংখ্যাটি হবে চার। আমি নিজেকে যদি প্রশ্ন করি একজন ভবিষ্যৎ কৃষিবিদের বৃত্তের স্পর্শকের সূত্র জেনে লাভ কি, আমি কোনো উত্তর পাই না। “Modal verb কাকে বলে”, এই প্রশ্নের উপর একজন ভবিষ্যৎ গণিতবিদের শিক্ষাজীবন বাজি ধরারই বা যুক্তি কি? কৃৎ প্রত্যয় বা ষ-ত্ব বিধানের উপর একজন পদার্থবিজ্ঞানীর ভবিষ্যৎ কতখানি নির্ভর করে?
তেমন করে না। এবং পেশাগত প্রয়োজন পড়লে মানুষ এসব শিখে নিতেই পারে। স্কুল জীবনে পড়ে আসা এসব গভীর পাণ্ডিত্য মানুষ বিশ্ববিদ্যালয় পাড় হওয়ার আগেই ভুলে যাওয়া শুরু করে। যদি সংস্কারের কথা চিন্তা করি, তবে শুরু করার সময়টা বোধ হয়ে চলে এসেছে। নিচে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হলোঃ
১। ইংরেজি ব্যাকরণকে প্রাথমিকের পর ঐচ্ছিক করে দিতে হবে। এর উপরের যে কোনো শ্রেণীর কোনো শিক্ষার্থী ইচ্ছা করলে এবং কেবল মাত্র আগ্রহ পোষণ করলে ইংরেজি ব্যাকরণ অধ্যয়ন করবে।
২। বাংলা ব্যাকরণকে অষ্টম শ্রেণীর পর ঐচ্ছিক করে দেয়া যেতে পারে।
৩। ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষা সকল পর্যায়ে বাধ্যতামূলক কিন্তু পরীক্ষা বিহীন থাকবে। ধর্ম শিক্ষার উদ্দেশ্য পরীক্ষায় নকল করে পাশ করার চেয়ে আত্মিক উন্নয়ন হলে এ শিক্ষার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে।। একজন শিক্ষার্থী যখন নকল করে বা সামান্যতম হলেও দেখাদেখি করে ধর্ম শিক্ষা পরীক্ষায় পাশ করে তখন তার এ বিষয়ে বিনিয়োগকৃত সকল শ্রম ঋণাত্মক ফলদায়ক হয়।
৪। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীদ্বয় নামক বিভীষিকা দূর করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ঠিক আগ মুহুর্তে অনেকগুলো বিষয়ে উচ্চতর জ্ঞান লাভের তেমন কোনো মাজেজা দেখি না। যে মেয়েটি দু'দিন পর ডাক্তারি পড়বে তার জন্য e=mc^2 প্রমাণ করতে শেখার গুরুত্ব ঠিক কতখানি তা আমার মাথায় আসে না। এর চেয়ে আমি বরং সুপারিশ করবো এ ধরণের উচ্চতর জ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে পড়ানো হোক। এর ফলে সময়, শ্রমও বাঁচবে, সততা এবং যোগ্যতার সাথে পাশের হারও বৃদ্ধি পাবে।

পরিশেষঃ
ইংরেজি আমাদের মাতৃভাষা নয়, শতভাগ মাধ্যমিক পাশ শিক্ষার্থীদের ইংরেজি সাহিত্যিক বা ব্যাকরণ পণ্ডিত বানানোর প্রচেষ্টাও যুক্তিযুক্ত নয়। দৈনন্দিন জীবনে এবং উচ্চতর অধ্যয়ন চালিয়ে যাওয়ার জন্যও আমাদের ইংরেজি ব্যাকরণের তেমন দরকার পড়ে না। হাজার হাজার মাধ্যমিকের গণ্ডি পাড় হতে না পারা বাংলাদেশী ও অন্যান্য জাতীয়তার মানুষ ইংরেজিভাষী দেশগুলোতে গিয়ে অসাধারণ ইংরেজিতে কথা বলছে, নোট লিখছে। সেখানে ইংরেজি ব্যাকরণ না পারলে একজন শিক্ষার্থী তার ছাত্রজীবনই চালিয়ে যেতে পারবে না, এটি একটি বেশ একরোখা ভুল সিদ্ধান্ত। বাংলা ব্যাকরণের বেলায়ও বলা চলে মোটামুটি একই কথা। উচ্চ মাধ্যমিকে ব্যাকরণ বিষয়গুলোতে আমরা যা পড়ে এসেছি তার প্রায় কিছুই আমাদের মনে নেই, থাকার কারণও নেই। শেখার জন্য শেখাকে আমি খুবই গুরুত্ব দেবো, কিন্তু একবারে মুখস্থ করে রাখতে হবে এবং পরীক্ষার হলে সেগুলোকে প্রয়োগ করে দেখাতে হবে, ব্যাকরণের বেলায় এমন কড়াকড়ি সবার জন্য না থাকাই উত্তম। সর্বোপরি, সব্যসাচী বানানোর যুক্তি বর্তমান পৃথিবীতে কমে এসেছে। সকলের মেধা বিকাশের সুযোগ দিতে না পারলেও কারো মেধা বিকাশের পথে বাধা না দেয়া হোক।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×