"মাশরাফি বিন মর্তুজা"
আচ্ছা এই নামটা নিয়ে বিশ্লেষণ করে ব্যাক্তিটাকে কি চেনানোর দরকার পড়ে? কারণ নামটা নিলেই এসে যাই সেই মানুষের মুখ ,যে মানুষটাকে বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসতে কোনো খেলার পারফর্মেন্স লাগেনা।আচ্ছা তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের সর্বোচ্চ উইকেটধারী বোলার বলেই কি মানুষ তাকে ভালোবাসে? আমি হলফ করে বলবো না!না!না!
তিনি যদি ম্যাচের পর ম্যাচ ফ্লপ ও মারেন তাকে মানুষ ভালোবাসবে,মনের অন্ত:স্থল থেকে ভালোবাসবে। কেনো? তিনি কি জাদু জানেন? তিনি কি জাদুকর? এই প্রশ্নটির উত্তর হবে "হয়তোবা" । কেননা তিনি তার মন উজাড় করা ভালোবাসার জাদু আর দেশের প্রতি ডেডিকেশন দিয়ে মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন।
আচ্ছা আমি যদি প্রশ্ন করি ক্রিকেট খেলাটা আপনার জন্যে কি? আপনি উত্তরে কয়েকটি কথা বলবেন, বিনোদন আর দেশপ্রেম। আর ক্রিকেটারদের জন্যে কি? এটা তাদের প্রফেশনাল কাজ। তাদের রুজি রোজগার।
কিন্তু মাশরাফির ক্ষেত্রে এই কথাটি ভিন্ন।
"ক্রিকেট" শব্দটি মাশরাফির সংস্পর্শে এসে আরো অনেক গুণে গুণান্বিত হয়েছে। এই ক্রিকেট মাশরাফির জন্যে শুধুই প্রফেশন না,একটি আবেগ ,ভালোবাসা,ডেডিকেশনের জায়গা। তিনি যদি ক্রিকেটকে ক্রিকেট ভেবে খেলতেন হয়তো শেন বন্ডের মত প্রথম ইঞ্জুরিতে পড়েই খেলাটা ছেড়ে দিতেন। কিন্তু এই মানুষটি ৮বার কাঁচির নীচে গিয়েও খেলে যাচ্ছেন "ক্রিকেট"। ইনজুরিতে পড়েছেন আবার ফিরে এসেছেন বিজয়ীর বেশে।
এ ক্ষেত্রে হাবিবুল বাশার কে ধন্যবাদ দিতেই হয়।কারণ তার একটি কথায় হয়তো টনক নাড়িয়ে দিয়েছিলো বর্তমান ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিককে।
২০০৩ সালে ইনজুরিতে পড়ার পর মাশরাফি যখন বসে ছিলেন, ভাবছিলেন কি করবেন তখন হাবিবুল বাশার বলেছিলেন, মাশরাফি তোর কাছে ২টি অপশন হয় ১."ক্রিকেট ছেড়ে দিবি, চিত্রা পাড়ের বন্ধুদের সাথে বিকালের আড্ডায় জীবনকে পার করে দিবি ।তখন তোকে সবাই ভুলে যাবে" । না হয়,
২."যদি ক্রিকেটে বেঁচে থাকতে চাস,তাহলে তাড়াতাড়ি সেরে উঠ।" এরপরেই মাশরাফি গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছিলেন। এরপর মাশরাফি ইনজুরি থেকে এসেছেন,জয় করেছেন আবার ইনজুরিতে পড়েছেন এবং পালাক্রমে এটি চলতে থেকেছে বছরের পর বছর।
আচ্ছা সিনেমা বলেন ,নাটক বলেন আমরা যেই হিরো গুলোকে মনে মনে কল্পনা করে নেই আসলে কি বাস্তবে তারা তেমন হয়? অধিকাংশ উত্তর আসবে "না"। কিন্তু আমাদের মাশরাফিকে আমরা যেরকম ভাবি ,যেভাবে আমারা কল্পনা করি মাশরাফি তার থেকে বড় হিরো। সিনিয়র জুনিয়র থেকে শুরু করে ড্রেসিংরুমের কোচিং স্টাফরা ও তার বড় ফ্যান। শুধু কি তাই? বর্তমান তরুণ প্রজন্মের বড় ক্রেজ আর ভালোবাসার নাম ও এই মাশরাফি।
ভাঙ্গা হাটু নিয়ে একটি সিংগেল বাঁচানোর বা ক্যাচ ধরার জন্যে লাফটা মারার পর ,স্টেডিয়াম থেকে শুরু করে টিভি সেটের সামনে সবাই চিন্তায় থাকে ঠিক আছে তো গুরু? দাঁড়াতে পারবে তো? হ্যা তিনি এমন ই একজন মানুষ।
পরিসংখ্যান দিয়ে যেই মানুষের মান বিচার করা যাইনা,ট্রফি দিয়ে যেই মানুষের মান বিচার করা যাইনা সেই মানুষটাই তো মাশরাফি।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অবিচ্ছেদ্য এবং অতুলনীয় একজন মানুষ যার হাত ধরে এসেছে অনেক অনেক সাফল্য সেই মানুষটির আজ জন্মদিন।
শুভ জন্মদিন ক্যাপ্টেন ফ্যান্টসটিক!
শুভ জন্মদিন গুরু ❤️
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৩১