অলিভ অয়েলের রয়েছে হরেক গুণ। ঐতিহাসিকভাবে এটি শান্তি ও সৌহার্দ্যের প্রতীক। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য হিসাবেও এর কদর আছে। এসব ছাড়াও স্বাস্থ্য পরিচর্যা, ঘর- গৃহস্থালীর জিনিসপত্র পরিষ্কার করার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে অলিভ অয়েল।
অলিভ অয়েলে রয়েছে উপকারী কলেস্টেরাল এইচডিএল (হাই ডেনসিটি লাইপ্রোটিন)। যা পরিপাক প্রক্রিয়ায়-সহায়ক ভূমিকা রাখে। গলস্টোন ও আলসার প্রতিরোধের পাশাপাশি-পুষ্টির যোগান দেয়। এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকায় কাজ করে ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবে।
ঘুমের ঘোরে নাক ডাকার প্রবণতা আছে অনেকেরই। এজন্য -শয্যাসঙ্গীর পাশাপাশি পরিবারের অন্য সদস্যরাও মহা বিরক্ত। বহু চিকিৎসা গ্রহণ করেও ফল মেলেনি। তাদের জন্য অলিভ অয়েল দিতে পারে শান্তির পরশ। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ঘুমুতে যাওয়ার আগে সামান্য পরিমাণ অলিভ অয়েল মুখে নিয়ে চেটে খেলে গলার পেশীতে এটি লুব্রিকেটের ভূমিকা পালন করে। ফলে নাক ডাকার প্রবণতা অনেকটাই কমে যায়। যাদের চুল পড়ার প্রবণতা বেশি। তাদের জন্য অলিভ অয়েল আনন্দের বার্তা বয়ে এনেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিষ্প্রাণ চুলকে সজীব করতে অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। বিশেষ করে শীতের দিনে শুষ্কতার কারণে চুলের রুক্ষভাব বেশি পরিলক্ষিত হয়। একই কারণে চুল ভেঙ্গে যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে যায় পড়ে। তাই- চুল পড়া বন্ধ করতে এবং বিদ্যমান চুলকে আরো উজ্জ্বল রাখতে সপ্তাহে অন্তত দুইবার পরিমাণমত অলিভ অয়েল চুলে মেখে আধ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করলে নির্জীব চুলও প্রাণ ফিরে পায়। বন্ধ হয় চুল পড়া। ত্বক পরিষ্কারে অলিভ অয়েলের গুরুত্ব অপরিসীম। শত শত বছর ধরে লোকজন ত্বক পরিচর্যায় ব্যবহার করে আসছে অলিভ অয়েল। ময়েশ্চারাইজার হিসাবেও এর ব্যবহার সর্বজনবিদিত। অলিভ অয়েল মাখলে ত্বকের জলীয় উপাদান বাষ্প আকারে বের হওয়া বন্ধ হয়। ফলে ত্বক থাকে মোলায়েম। ত্বকের অমসৃনভাব দূর করতে, ত্বক উজ্জল করতে, ত্বকের অবাঞ্ছিত দাগ দূর করার জন্য অলিভ অয়েল যথেষ্ঠ উপকারী। এ জন্য সকল নামী-দামী কসমেটিক্সে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয়।
অলিভ অয়েলের আরো-উপকারী গুণ রয়েছে। যারা কোষ্ঠ-কাঠিন্য রোগে ভুগছেন তারা যদি সকালে এক চামচ অলিভ অয়েল খেতে পারেন তাহলে সুফল পাবেন। এক চামচ খেয়ে সুফল না পেলে দু চামচ খেয়ে দেখতে পারেন।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে :
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে অলিভ অয়েল বা যইতুন তেল সম্পর্কে বলেন,
আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীনের নূর। তাঁর নূরের উপমা একটি তাকের মতই। তাতে রয়েছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি রয়েছে একটি চিমনির মধ্যে। চিমনিটি উজ্জ্বল তারকার মতই। প্রদীপটি বরকতময় যাইতূন (অলিভ) গাছের তেল দ্বারা জ্বালানো হয়, যা পূর্ব দিকেরও নয় এবং পশ্চিম দিকেরও নয়। এর তেল যেন আলো বিকিরণ করে, যদিও তাতে আগুন স্পর্শ না করে। আলোর উপর আলো। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হিদায়াত করেন তাঁর নূরের দিকে। আর আল্লাহ মানুষের জন্য উপমাসমূহ উপস্থাপন করেন। আর আল্লাহ প্রতিটি বস্তু সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত। (সূরা আন নূর, আয়াত ৩৫)
সূরা আত তীনে মহান প্রতিপালক আল্লাহ যইতুনের শপথ করেছেন, বলেছেন,
শপথ তীন ও যইতুনের। (৯৫: ১)
হাদীসে একাধিক বর্ণনায় এসেছে যে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন,
তোমরা যইতুনের তেল (অলিভ অয়েল) খাও ও তা শরীরে মাখ। কারণ এটা বরকতময় বৃক্ষ থেকে উৎসারিত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



