বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
‘‘.... এবং আল্লাহ্ কে ভয় কর, তিনি তোমাদরকে শিক্ষা দিবেন.....’’
(আল-কুরআন, সূরা বাক্বারাহ, আয়াত : ২৮২)
আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেনঃ ‘‘জ্ঞান অন্বেষণ প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর ফরজ। ’’
[আল-মাজলিশি বিহার আল-আনওয়ার, খণ্ড-১, পৃষ্টা-১৭৭
ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী জ্ঞান অন্বেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যা কোন ব্যক্তিকে জান্নাতের পথে পরিচালিত করে। জ্ঞান অন্বেষণের লক্ষ্যটি স্বয়ং জ্ঞানের চেয়েও অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। ঐশী লক্ষ্য নিয়ে সত্য জ্ঞান অন্বেষণ, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং তাঁর সৃষ্টির সেবার উদ্দেশ্যে হলে, ঐ ব্যক্তিকে নবী ও আওলিয়াদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। কিন্তু ব্যক্তিগত ও পার্থিব অর্জন বা দুনিয়াদারীর উদ্দেশ্যে জ্ঞার্ন অজন করা হলে তা ঐ ব্যক্তিকে মূর্খতা, আল্লাহর সৃষ্টির বিরুদ্ধে পাপ এবং সর্বোপরি জাহান্নামের দিকে পরিচালিত করে।
জ্ঞানের বাস্তবতা:
মহানবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন : ‘‘জ্ঞান ব্যাপক র্চচার মাধ্যমে (অর্জিত) হয় না। বরং এটি একটি আলো যা আল্লাহ্ সেই ব্যক্তির হৃদয়ে প্রেরিত করেন যাকে তিনি হেদায়েত করতে চান।’’ [আল-মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড-৬৭, পৃষ্টা-১৪০]
জ্ঞানের সকল শাখাকে এর প্রকৃতি অনুসারে নির্বিশেষে মূলতঃ দু’টি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যায় : (১) আখিরাত বিষয়ক বিজ্ঞান -যার চুড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর উচ্চতম নৈকট্য অর্জন করা, আল্লাহর সৃষ্টির সেবা করা, এবং আখিরাতের পুরস্কার লাভ করা। (২) র্পাথিব বিজ্ঞান –যার চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে বস্তুগত লক্ষ্য, সম্পদ, সামাজিক মর্যাদা এবং ব্যক্তিগত অহমিকা ও স্বার্থপরতার পরিতৃপ্তি বিধান করা। এভাবে জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যই নির্দিষ্ট করে দেয় তা পার্থিব না আখিরাতমুখী।
যে আত্মা সব সময় নিজেকে খারাপ প্রবণতা ও আত্মা প্রীতি থেকে পবিত্র করতে সচেষ্ট থাকে সে ঐশী চেতনা লাভ করে। এরপর যে জ্ঞান সে লাভ করে তা হয় সত্য ঐশী জ্ঞান, কেননা তা তাকে বিভিন্ন ভালো কাজ সম্পাদনের দিকে তাড়িত করে এবং আল্লাহর নৈকট্যের দিকে পরিচালিত করে। এই বাস্তব জ্ঞানই হচ্ছে তার আধ্যাত্বিক আলোকবর্তিকা যা আল্লাহর দিকে সরল পথ দেখায় এবং পরম আনন্দময় জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়।
যে আত্মা আত্মপ্রীতি ও খারাপ প্রবণতা দিয়ে প্রভাবিত থাকে তাকে শয়তানী চরিত্র হাতছানি দেয় এবং সে যুক্ত মূর্খতার (মূর্খতা ও নিজ মূর্খতা সর্ম্পকে অজ্ঞতা) দিকে চালিত হয়। মনে সৃষ্টির ঐশী উদ্দেশ্যের বাস্তবতা, স্রষ্টারগুণাবলী এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবন সম্পর্কে অন্ধত্ব ও অসচ্ছতার পর্দা পড়ে যায়। এভাবে, যে জ্ঞানই সে অর্জন করে তা সে দুনিয়াবী লক্ষ্য, র্স্বাথপর উদ্দেশ্যে এবং খারাপ র্কমকান্ডের দিকে পরিচালিত করে যা শেষ র্পযন্ত তাকে জাহান্নামে নিয়ে যায়।
মহানবী মুহাম্মাদ (সা.) বলেন: ‘‘নিশ্চয়ই জ্ঞান তিনটি জিনিসের সমন্বয়: সুদৃঢ় নির্দশন, ন্যায়ানুগ দায়িত্ব এবং প্রতিষ্ঠিত সুন্নাহ্ (পদ্ধতি)।” [আল-কুলাইনি, আল-কাফী, খণ্ড-১, ‘‘কিতাব ফাদাল আল-ইলম্’’, ‘‘বাব সিফাত আল-ইলম্ ওয়া ফাদ্লুহ’’, হাদীস নং-১]
‘সুদৃঢ় নির্দশন’ বলতে বুঝায় যৌতিক বিজ্ঞানসমূহ, সত্য তত্ত্বসমূহ ও ঐশী শিক্ষাকে। ‘ন্যায়ানুগ দায়িত্ব’ বলতে বুঝায় নৈতিক ও আত্মশুদ্ধি বিজ্ঞানসমূহকে। ‘প্রতিষ্ঠিত সুন্নাহ্’ বলতে সেইসব বিজ্ঞানকে বুঝায় যা বস্তুগত বিষয় ও বিভিন্ন ধরণের ভৌত র্কাযাবলী নিয়ে আলোচনা করে।
বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা বিজ্ঞান, ব্যবচ্ছেদ বিদ্যা, জ্যোতির্ব্বিদ্যা, জ্যোতিষবিদ্যা ইত্যাদিকে যখন ঐশী নির্দশন এবং প্রতীক হিসাবে দেখা হয়, এবং ইতিহাস ও সভ্যতা সংক্রান্ত বিজ্ঞানসমূহকে যখন শিক্ষা গ্রহন ও সর্তকবাণী আহরণের মাধ্যম হিসাবে নেয়া হয় তখন সেগুলিও ‘সুদৃঢ় নির্দশন’-এর শ্রেনীতে অন্তর্ভূক্ত হতে পারে, কেননা এর মাধ্যমে খোদায়ী জ্ঞান বা পুনরুত্থান দিবসের জ্ঞান অর্জিত হয় বা নিশ্চিত করা হয়।
সত্য জ্ঞান অর্জনের কল্যাণঃ
মহানবী (সা.) বলেন : ‘‘যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে বের হয়, আল্লাহ তাকে জান্নাতের পথে পরিচালিত করেন। এবং নিশ্চই ফেরেশতারা তখন আনন্দে জ্ঞান অন্মেষণকারীর ওপর তাদের পাখা বিস্তার করে রাখে। নিশ্চয়ই জান্নাত ও পৃথিবীর সকল সৃষ্টি এমন কি সমুদ্রের মাঝেও জ্ঞান অন্মেষণকারীর জন্য ক্ষমার প্রার্থনা করতে থাকে। জ্ঞানীরা নবীদের উত্তরাধিকারী, কেননা নবীরা যে উত্তরাধকার সম্পদ রেখে যান তা হলো জ্ঞান। সুতরাং যে ব্যক্তি এ থেকে অংশ নেয় সে প্রচুর কল্যাণ লাভ করে।’’ [আল-কুলাইনি, আল-কাফী, খণ্ড-১, ‘‘কিতাব ফাদাল্ আল-ইলম্’’, হাদীস নং-১]
সত্য জ্ঞানের নৈতিক গুণাবলীঃ
জ্ঞান যখন বিশুদ্ধ, নিস্বার্থ এবং খোদায়ী উদ্দেশ্যে অর্জিত হয় তখন তা ঐ ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে জান্নাতী সত্ত্বায় রূপান্তরিত করে। এ ধরনের জ্ঞানী ব্যক্তি ঐশী চেতনালব্ধ বৈশিষ্ঠ্যের ও চারিত্রিক গুনাবলীতে সমৃদ্ধ হয়ে যায় যা তার কথা ও কাজে ফুটে ওঠে।
ইমাম আলী (আ.) প্রায়ই বলতেন : ‘হে জ্ঞান অন্বেষণকারী, জ্ঞানের অসংখ্য কল্যানকর দিক রয়েছে। (একে যদি কোন মানুষের সাথে কল্পনা কর তাহলে)-এর মাথা হল বিনয়, এর চোখ হলো হিংসা হতে মুক্ত হওয়া, এর কান হলো বুঝতে পারা, এর জিহ্বা হলো সত্যবাদিতা, এর স্মরণশক্তি হলো গবেষনা, এর হৃদয় হলো উত্তম উদ্দেশ্য, এর বুদ্ধিমত্তা হলো বিষয়বস্তু ও পদার্থে বিশেষ জ্ঞান (মারিফাহ্), এর হাত হলো দয়া, এর পা হলো জ্ঞানীর সাথে সাক্ষ্যাৎ করা, এর সিদ্ধান্ত হলো সততা, এর প্রজ্ঞা হলো খোদাভীরুতা, এর বাসস্থান হলো পরিত্রান, এর কান্ডারী হলো স্বাচ্ছন্দ্য, এর চূড়া হলো বিশ্বস্ততা, এর অস্ত্র হলো কথায় নম্রতা, এর তরবারী হলো পরিতৃপ্তি (রিজা), এর ধনুক হলো সহনশীলতা, এর সেনাবাহিনী হলো জ্ঞানীদের সাথে আলোচনা, এর সম্পদ হলো পরিশুদ্ধ আচারণ, এর সঞ্চয় হলো পাপ হতে বিরতি থাকা, এর ভ্রমণ পাথেয় হলো নৈতিক উৎকর্ষ, এর পানি পান হলো ভদ্রতা, এর পথ র্নিদেশকারী হলো ঐশী র্নিদেশনা এবং এর সহযাত্রী হলো উত্তম লোকদের প্রতি ভালোবাসা।’’ [আল-কুলাইনি, আল-কাফী, খন্ড-১, ‘‘কিতাব ফাদাল্ আল-ইলম্’’, বাব আল-নাওয়াদির, হাদীস নং-৩]
আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞাস করা হয়েছিলো : ‘‘জ্ঞান কি?’’ তিনি বললেন, ‘‘নিরব থাকা’’ আবার জিজ্ঞাস করা হলো : ‘‘এরপর?’’ তিনি বললেন, ‘‘মনোযোগের সাথে শ্রবন করা।’’ তাঁকে জিজ্ঞাস করা হলো : ‘‘এরপর?’’ তিনি বললেন, ‘‘স্মরণ রাখা।’’ তাঁকে জিজ্ঞাস করা হলো : ‘‘এরপর?’’ তিনি বললেন, ‘‘(জ্ঞান অনুযায়ী) আমল করা।’’ তাঁকে আবার জিজ্ঞাস করা হলো : ‘‘এরপর?’’ তিনি বললেন, ‘‘প্রচার করা।’’ [আল-মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮]
যখন জ্ঞান অর্জন নিষেধ .....
রাসূল (সা.)-এর আহলে বাইতের শিক্ষা অনুযায়ী স্বার্থপর লক্ষ্য ও দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে জ্ঞান অর্জন নিষেধ।
ইমাম আলী (আ.) বলেন : ‘‘চারটি উদ্দেশ্যে জ্ঞান অর্জন করো না- (১) জ্ঞানী লোকদের সামনে নিজের গৌরব প্রকাশের জন্য, (২) মূর্খ লোকদের সাথে তর্কের জন্যে, (৩) জনসমাবেশে নিজেকে জাহির করার জন্য, (৪) কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোন পদ লাভ করতে জনগনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য।’’ [আল-মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩১]
জ্ঞান অর্জনের অত্যাবশ্যকীয় শর্তাবলী:
জ্ঞান অন্বেষনকারীর প্রথম কাজ হলো আধ্যাত্বিক পরিশুদ্ধি অর্জনে সচেষ্ট হওয়া, তার আত্মার ক্রমশ: খোদাভীতিকে প্রবিষ্ঠ করানো, খারাপ প্রবণতা ও দুনিয়াবী উদ্দেশ্য থেকে নিজেকে মুক্ত করা, এবং নিয়মিত আত্ম মূল্যায়ন করা যে, জ্ঞানার্জন দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে হচ্ছে কিনা। এটি অবশ্যই মনে রাখা উচিৎ যে, একজন আলেমের প্রধান বৈশিষ্ঠ্য হলো খোদাভীতি; নয়তো সে জ্ঞানীদের পর্যায়ভূক্ত নয় –তার যত বেশীই স্মরণ থাকুক বা জন সমাবেশে যতই হৃদয়গ্রাহী বক্তা হোক না কেন।
জ্ঞান অন্বেষণের প্রতিটি পদক্ষেপেই আপনাকে ধ্যান করতে হবে এবং এ ব্যাপারে গভীর চিন্তা করতে হবে যে, আপনার জ্ঞান অর্জনের প্রধান উদ্দেশ্য কি। নিজেকে প্রশ্ন করুন: কেন আমি জ্ঞান অর্জন করছি? এটি কি চাকুরিতে কোন ভালো অবস্থান লাভের জন্য, কোন সহকর্মী বা কোন দলের সাথে প্রতিযোগিতার জন্য, কোন পুরস্কার. কোন ডিগ্রি বা কোন সামাজিক মর্যদা লাভের জন্য? আপনি কি উচ্চ শিক্ষা অর্জন করছেন কোন বই বা নিবন্ধ লেখার জন্য, কিংবা কোন খোলামেলা সমাবেশে বক্তৃতার জন্য যাতে লোকেরা আপনাকে একজন বিদ্বান বা বিদুষী বলে প্রশংসা করে? নাকি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এবং তাঁর সৃষ্টির সেবার মানসে?
যে জ্ঞান আপনি অর্জন করেন তা আপনাকে অধিক ধার্মিক হতে সাহায্য করা উচিৎ। একই সাথে তা নিষ্ঠাপূর্ণ কাজ সম্পাদন এবং যত বেশী অগ্রসর হবেন তত বেশী আল্লাহকে ভালোবাসতে ও ভয় করতে উৎসাহিত করা উচিৎ। যে জ্ঞান মানুষকে ভালো কাজের দিকে চালিত করে না তা সত্য জ্ঞান নয়। আর যে জ্ঞান কেবল শব্দাবলীর মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং আল্লাহর সৃষ্টির সেবা করার ক্ষেত্রে কোন বাস্তব প্রয়োগ নেই তা সবচেয়ে নিম্ন স্তরের জ্ঞান; এটি সময়ের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যায়।
জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আপনার আচরণ প্রত্যক্ষ করুন। এটি কি আপনাকে অধিক বিনয়ী এবং আপনার বন্ধু ও সহকর্মীদের প্রতি অধিক ধৈর্য্যশীল করে? নাকি তা আপনাকে আরও উদ্ধত, অহংকারী এবং তর্কপ্রিয় করে? এতে কি আপনার সত্য স্বীকার করতে বা সমাবেশে অজ্ঞতা স্বীকার করতে কুষ্ঠাবোধ হয়? এতে কি যারা আপনার চেয়ে অধিক জ্ঞানী তাদেরও প্রতি হিংসার উদ্রেক হয়? মনে রাখবেন, সত্য জ্ঞান অহমিকাকে ভেঙ্গেঁ দিয়ে তা নিশ্চিহ্ন করে এবং সত্য জ্ঞানের আচারণগত চিহ্ন হলো যে, এটি সম্পূর্ণভাবে অহমিকা, গৌরব, আত্মপ্রীতি এবং ঔদ্ধত্য শূন্য।
জ্ঞান অন্বেষনকালে আল্লাহর ওপর আস্থা রাখুন, আপনার শিক্ষককে সম্মান করুন এবং বয়:কনিষ্ঠদের নিকট হতেও জ্ঞান অর্জন করতে ইতস্তত:বোধ করবেন না। যা শিখেছেন তা পুন:রায় পাঠ করুন এবং চিন্তা করুন। সবসময় আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থণা করুন যেন তিনি ঐশী করুণা বর্ষণ করেন এবং উত্তম চিন্তা দিয়ে অনুপ্রানিত করেন, এবং জ্ঞানকে দুনিয়াবী ও স্বার্থপর প্রবণতার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা থেকে রক্ষা করেন।
পরিশেষ:
ইমাম আলী (আ.) বলেন : ‘‘যে ব্যক্তি জ্ঞান অন্বেষনের উদ্দেশ্য যাত্রা করে সে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদকারীর সমতুল্য।’’ [আল-মাজলিসি, বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৭৯]
[ইসলাম সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য ও বিশুদ্ধ তথ্য বিস্তারিত জানতে হলে নীচের ওয়েব-সাইটটি দেখুন:
http://al-islam.org/faq/]
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



