প্রথমাংশ
ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনা। বাড়ির দিকে হাঁটতে থাকে ধীরেন। রাস্তায় গাড়ি-টারি তো বেশি নেই, হেঁটেই যাওয়া যাক নাহয়...মাথায় গল্প নিয়ে হাঁটতে থাকে ধীরেন। অন্যান্য দিন রাস্তায় যা দেখত গোগ্রাসে গিলত সে। কিন্তু আজ আর সেই দিকে খেয়াল নেই। এত অপেক্ষার পর একটা গল্প...একে কি সে হেলায় হারবে! অন্যদিকে মনযোগ সরায় না ধীরেন। আগের মত একসঙ্গে চারটা গল্পের প্লট নিয়ে জাগল্ করার কিংবা, ক্লাসরুমে কী আড্ডায় বসে কথা বলতে বলতে গল্প বানাবার ক্ষমতা ওর এখনও আছে কি না সেটা ওর জানা নেই। দীর্ঘ বিরতির পর সেই অভ্যাস টিকে না থাকারই কথা...
মোড় ঘুরল ধীরেন। আর সেই সাথে মোড় ঘুরিয়ে দিল গল্পেরও। রাস্তা আজ বেশ ফাঁকা। হুট-হাট একটা-দুটো গাড়ি শাঁ করে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। তবে ধীরেনের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। ও কেবল সেই গল্পটা নিয়েই ভাবছে। উৎফুল্ল ধীরেন ভাবে, নাহ্, গল্পটা বোধহয় দাঁড়িয়েই যাবে।
পাশ দিয়ে আরেকটা ছুটে চলা গাড়ি। কিছুক্ষণ পর...কোন আনাড়ি চালক...বা বেখেয়ালি চালক...কিংবা হয়ত কোন বেপরোয়া চালকের চালানো গাড়ি সজোরে ধাক্কা দিয়ে চলে গেল ধীরেন কে। গল্পের লোকটা সবে একটা কিছু দেখতে পাচ্ছিল কি পাচ্ছিল না, এদিকে ধীরেনের সামনে সব অন্ধকার হয়ে গেল।
'মারা গেছে নাকি?'...'বুঝতেসি না...ধরে নিয়ে যাব?'...'ফোন করতে হবে বাসায়, মানিব্যাগ আছে নাকি দেখেন তো, নাম্বার-টাম্বার...' ...'ধুর, মিয়া, আগে হাসপাতাল নিয়ে যাই, চলেন।'...'নিয়ে লাভ হবে না মনে হয়। বেশিক্ষণ টিকবে না...।'
ভাসা ভাসা অনেক শব্দই আসে ধীরেনের কানে। চোখ খুলতে কষ্ট। সবকিছু বড্ড ঘোলাটে লাগে ওর। মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা। তবু, সব যন্ত্রণাকে ছাপিয়ে যে যন্ত্রণা তীব্র হয়ে ওঠে সেটা অতৃপ্তির। আর সবকিছুকে তুচ্ছ করে একটি আফসোস ভেতর থেকে আর্তনাদ করে ওঠে... গল্পটা! গল্পটা কি তবে আর লেখা হল না...
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




