ঈদের রাতে বখাটেরা পিটিয়ে মেরেছে এক বৃদ্ধকে,তিনি শিল্পব্যাংকের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা,
তার ছেলের মুখে টিভিতে যা শুনলাম ,তা মোটামুটি এরকম,
তার বাসার সামনে কিছু ছেলেকে জড়ো হতে দেখে তিনি ডেকে বল্লেনঃ”তোমরা কারা,এখানে কি কর?”
খুনীরাঃ”আপনাকে বলতে হবে?”
বৃদ্ধঃ”আমার বাসার সামনে মদ খেয়ে মাতলামি করবে, আর আমাকে বলবা না?”
তারপর তারা এই বৃদ্ধকে পেটানো শুরু করে।তার ছেলেকেও পেটায়।বৃদ্ধ মারা যান।
তারপর টিভিতে এক এলাকাবাসী রিপোর্টারকে বলছেন,”কি আতংক আপনি বুঝতেছেন না?আমি কথা বলতেছি আর আশপাশ থেকে লোকজন সরে যাইতেছে”।
এই হল ঘটনা।
এ কি অবস্থা আমার দেশের? আগে অনেকের মুখেই শুনতাম এই দেশকে দিয়ে কিছুই হবে না।আমি প্রতিবাদ করতাম।বলতাম,এই দেশের মানুষের অনেক সম্ভাবনা।এদের দিয়ে অনেক কিছু সম্ভব।আমি এই দেশের মানুষদের নিয়ে,এই দেশের মানুষদের জন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখতাম।কিন্তু এখন যা দেখছি, তাতে চিতকার করে বলতে ইচ্ছে করছে,ধিক ধিক ধিক ধিক......তোরা মর,ঘৃণ্য শয়তানের দল,তোরা মর।
এই দেশের মানুষেদের শত কোটি ধিক।যারা খুন করেছে তারা যেমন দোষী,তেমনি তার প্রতিবেশীরাও দোষী, যারা তাকে বাচাতে এগিয়ে আসে নি।নাহ, আর এই দেশে থাকতে ইচ্ছা করছে না,এই দেশের মানুষের জন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখতেও ইচ্ছা করছে না।
কিন্তু আমাদের দেশের ছেলেরা যে বখাটে হয়ে যাচ্ছে, এর পেছনে কারণ কি?আগে দেখা যেত, মুরুব্বি কেউ ডাক দিলে ছেলেরা শুনত, এখন এই মুরুব্বিদের সাথেই এই অবস্থা?মেয়েকে উত্তক্ত করায় মা ডাক দেয়ায় মাকে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে হত্যা,মেয়ের বাবা ইভ টিজিংযের প্রতিবাদ করায় ্মেয়ের বাবাকে ধরে পিটানো... এরকম ঘটনাগুলোর কারন কি?
আমার মনে হয়, এর পেছনে দায়ী নোংরা আকাশ সংস্কৃতি।অনেক হিন্দী সিনেমায় দেখানো হয়, নায়ক রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে নায়িকাকে নিয়ে টানাটানি করছে, আমাদের রোমিওরাও এভাবে মেয়েদের দেখে টানাটানি শুরু করে।হিন্দী মুভিগুলোতে আরো দেখানো হয়, নায়িকার বাবা-মা বাধা দিলে তাদের সাথে নায়করা কি রকম বাজে ব্যবহার করে,তাদের কথার উপযুক্ত জবাব দিয়ে দেয়।আমাদের রোমিওরাও এ সব দেখে মুরুব্বিদের সাথে ভাল ব্যবহার করা ভুলে যাচ্ছে।আবার,হিন্দী সিনেমার নায়িকাদের ইউপ্র পোশাক দেখে আমাদের মেয়েরাও এসব পোশাক পরছে।এতে ছেলেরা আরো বখাটে হচ্ছে।আমি হিন্দী সিনেমার বদনাম করছি না, অনেক গুলো কারনের মধ্যে এটা একটা করণ হতে পারে, সেটা বলছি।
আরেকটা কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে, সেটা হল ধর্মহীনতা।ধর্মে মানুষকে অপর মানুষকে ভালবাসতে শেখায়,অপ্রকে শ্রদ্ধা করতে শেখায়, ধর্মে বলে, একজনের জান-মাল অপরের কাছ থেকে নিরাপদ।
আর কেউ যদি অন্যায় করে, তবে তার রয়েছে শাস্তি। কিন্তু পোলাপান ধর্ম কর্ম না করায়, এসব মূল্যবোধ তাদের কাছ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।
কারণ যাই হোক, আমি এই সব মানুষদের ঘৃণা করি, আগে কোন অন্যায় দেখলেই কোথা থেকে যেন প্রতিবাদ করার সাহস পেয়ে যেতাম,আর এখন কোন অন্যায় দেখলেই মনে হয়,এ জাতি তো এসবই করবে।ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেই।
যাই হোক, এক বুক ঘৃণা নিয়ে আজকের লেখা শেষ করছি।