somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের গ্রাজুয়েট শরীফ ওসমান হাদী, ঢাবিয়ান ওরফে শহীদ হাদি এবং আমার কিছু পর্যবেক্ষণ

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি এই ছেলেটাকে সরাসরি চিনতাম না, যদিও সেদিন প্রথমবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রথমদিনের ইনকিলাব মঞ্চ দেখেছিলাম! খুব সম্ভবতঃ সেদিনটা ছিল ২০২৪ সালের ১৪ই ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষে আমার ছোট ছেলেকে নিয়ে বেরিয়েছিলাম। মিরপুরের বুদ্ধিজীবি শহীদদের কবর জিয়ারত করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটে অবস্থিত জাদুঘরে গিয়েছিলাম। রাকীনকে জাদুঘর দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম। তখন জাদুঘরের সামনে এই ইনকিলাব মঞ্চ আমি প্রথম দেখতে পাই এবং আমার ভ্রু কিছুটা কুঞ্চিতই হয়! কারণ, এই ইনকিলাব শব্দটা আমার বাংলা বা আরবী মনে হয় না। উৎসটা উর্দু বলে আমার ধারণা, কিন্তু সঠিক জানা নেই, তখন আমি এর মানেও জানতাম না। কিন্তু মনের ভিতরে ভাল অনুভূতি হচ্ছিল না। যদিও জানতাম দেখতে পাচ্ছিলাম ঐ মঞ্চ থেকে জুলাই বিপ্লবীরাই মূলত সাউন্ড বক্সে জোরে জোরে দেশের গান বাজাচ্ছিল। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এলাকায় আমি যুৎসই বাংলা শব্দই আশা করি সবসময়ে, আমরা বাঙালী, আমাদের বিপ্লবের, প্রতিবাদের ভাষাও হবে বাংলা, আমি অন্ততঃ এটাই বিশ্বাস করি, মানতে চাই।

আর এই শাহবাগ আমাদের দেশপ্রেম ও দ্রোহের অনুভূতির সাথে খুবই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিদিন উচ্চস্বরে মাইকিং করে (কলরেডি মাইক) যে রাজনৈতিক বক্তৃতা দেয়ার সংস্কৃতি ছিল, আমি তাতে মনে মনে খুব বিরক্ত ছিলাম। আমার রোকেয়া হলের রুম থেকেও খুব উচ্চস্বরে শোনা যেত এই বক্তৃতাগুলো। নবীনবরণের নামে হঠাৎ কলাভবনে যে গোলাগুলি শুরু হয়ে যেত, তাতে নতুন কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের আনন্দিত হবার চেয়ে শংকিতই হতে হতো বেশি! আর জীবন বাঁচানোর জন্য প্রাণপণে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে কি যে স্বাগত হতো তারা বলাই বাহুল্য! তাই একটা সময়ে আমি বলা যায় ছাত্র রাজনীতির প্রতি খুব বিরূপ মনোভাবই পোষণ করতাম, শিক্ষক রাজনীতির ব্যাপারেও একই কথা! সেশন জটের কথা আজ আর কেউ তেমন বুঝবে না, একসময়ে আমরা খুব ভুগেছি এগুলো নিয়ে।

তাই বলে দেশের রাজনৈতিক নানান পরিস্থিতিকে আমরা অস্বীকারও করতে পারি না। এজন্যে প্রয়োজনীয় সার্বজনীন রাজনৈতিক বিষয়ে যেন ছাত্র-জনতা, আপামর জনসাধারণ যেন অংশ নিতে পারে, বলা চলে এই জন্যেই শাহবাগের চত্বরটা মূলতঃ আমি প্রস্তাবনা করি, আমার মতো আরো অনেকেই এই ব্লগে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এ বিষয়ে একমত হয়। মূলতঃ এরপরই শুরু হয় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের ঐতিহাসিক শাহবাগকেন্দ্রিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন, যার ধারাবাহিকতা আজো চলমান! ভাল লাগ যে এরকম একটা স্থানকে আমরা ঐতিহাসিকভাবে নতুন একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে পেরেছি এবং আমার মতো অনেকেরই এটা ভাল লেগেছিল, এখনো লাগে। আজো শাহবাগ আমাদের হৃদয়ের গভীরতম অনুভূতির, ক্ষোভের, অভিমানের বহিঃপ্রকাশের জায়গা‍য় আছে। যেটা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারেও আছে। আরো কিছু স্থান এখন বিখ্যাত, যেমন উত্তরার বিএনএস সেন্টার বা হাউজ বিল্ডিং এরিয়া, এটা উত্তর ঢাকার ছাত্রদের সমাবেশের স্থান, মিরপুর ১০ ইত্যাদি ইত্যাদি।

যাক, আজকের প্রসঙ্গে ফিরে আসি। গতদিন ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ আমাদের অনেকের প্রিয় হাদি এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। তার বিদেহী আত্মা যেন এখনো এই পৃথিবীতেই, এই বাংলাদেশেই, এই ইনকিলাব মঞ্চের আশেপাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে, অনেক ক্ষোভ, হতাশা বা আক্ষেপ অথবা হতে পারে অনেক তৃপ্তি নিয়ে। তৃপ্তি কেন বলছি? কারণ, সময় টিভিতে হাদির দেয়া শেষ সাক্ষাৎকারে তার এরকম মৃত্যুর একটা আকাংক্ষা দেখেছি, তার কিছু বক্তৃতাও এরকম। সে গুলিই খেতে চেয়েছিল, তবে মাথায় নয়, বুকে। এই জুলাই বিপ্লবের অনেকেরই শ্লোগান ছিল, বুক পেতেছি, গুলি কর! প্রচণ্ড সাহস থাকলে এরকম বুক পেতে দেয়া যায়! যেতা দিয়েছিল আবু সাঈদ!

এই আন্দোলনের অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছে, মাথায়, চোখে, বুকে। মুগ্ধসহ অনেকেই! কেউ শহীদ হয়েছে, কেউ প্রচন্ডভাবে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, আমার এক ছাত্রের মাথায় গুলি লেগেছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র শহীদ হয়েছে। এরকম হাজারো ত্যাগের গল্প তৈরী হয়েছে এই ৩৬ জুলাই-এর বিপ্লবকে ঘিরে।

এবার আমার হাদির ব্যাপারে কিছু অনুভূতির কথা বলবো। কিছু পর্যবেক্ষণের কথা বলবো। এ আগ্রহটা তৈরী হয়েছে তার শেষ সাক্ষাৎকার দেখে। যদিও গত কয়েকদিন তার কবিতা আবৃত্তি, টক শো কোন অনুভূতি ছাড়াই শুনে যাচ্ছিলাম। তবে তার আবৃত্তিতে অনেক আবেগ যেন ঝরে পড়ছিল, এটা লক্ষ্য করেছলাম। যেদিন হাদি গুলিবিদ্ধ হয়, সেটা সন্ধ্যায় জানতে পেরেছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে আমাদের ব্যাচের এলামনাইদের পিঠা উৎসব আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। আমরা ৯৬-৯৭ ব্যাচের সকল বন্ধুরা বেশ উপভোগ করছিলাম এই মিলনমেলাকে। কত কত দিন পর কত কত বন্ধু বান্ধবিদের সাথে দেখা! সন্ধ্যার পরেই গান শুরু হলো, এরই মাঝে হঠাত এই দুঃসংবাদ! সাথে সাথেই একটা আতংক, বিষাদ অনেকের মনে, যারা যারা জানলাম। শুনলাম শাহবাগ বন্ধ দিচ্ছে, বাসায় যাব কিভাবে সেটা নিয়ে চিন্তিত হলাম। আমি তখনোএই হাদীকে চিনি না! শুনলাম গোপীবাগের। আমার এক বান্ধবী বলছিল, গোপীবাগ এলাকাটা এমনিতেই সন্ত্রাসী এলাকা, এরকমটা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়! তখনো অতটা গুরুত্ব দেইনি বিষয়টাতে। ছেলেটাকে নাকি ঢামেকে নেয়া হয়েছে, কোমায়, মানে গুরুতর! এরকম একবার অভিজ্ঞতা হয়েছিল ২১শে আগস্ট, ২০০৪ এ। সেদিনও রিকশায় অনেক আহত ব্যক্তিকে আনা হয়েছিল ঢামেক এ! কত রক্ত! কতজনের হাত ঝুলে ঝুলে ছিল! আমরা দেখেছি টিভিতে দোতলা বাস গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে প্রায় ২০ জনের মৃত্যু, আমরা দেখেছি পেট্রোল বম্বিং এর তান্ডব। তখনো নিজে সশরীরে গিয়ে সেসব দগ্ধ মানুষদের দেখে এসেছি। প্রচন্ডভাবে শকড হয়েছি এই অরাজকতায়। এরপর নুসরাত পোড়ানোর ঘটনা। কী বীভৎস! মনে মনে ভাবছি এরকম রাজনীতি আর কত! মন খারাপ হলো, মানুষ যে কেন রাজনীতি করে! জীবনের কোন দামই নেই!

এই ভাবতে ভাবতেই বাসায় ফেরা। ধীরে ধীরে হাদির সম্বন্ধে একটু একটু জানলাম। তার আবৃত্তি শুনলাম, জানলাম ইনকিলাব মঞ্চের মূল আহ্বায়কদের ওকজন সে। সারা বাংলাদেশে সে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা করেছে। আমি তার মূল স্পিরিটের সাথে একমত, সাংস্কৃতিক বিপ্লব অনেক জরুরী একটা বিষয়, যেটা আমিও করার চেষ্টা করি, একেবারে দেশীয় গানের চর্চা, যেমন জারি, সারি, ভাটিয়ালি, নোয়াখালী, সিলেটি, চট্টগ্রাম, রংপুর এর আঞ্চলিক গান, বিয়ের গান, রাজশাহীর কবি গান, পালা গান ইত্যাদি ইত্যাদির নতুন জাগরণের ভিতর দিয়ে। যদিও এটা এখনকার মেটাল বা র‍্যাপ গানের বিপরীতে যায় বা সমান্তরালে।

কিন্তু হাদির সাথে আমার পার্থক্য হলো সে কাওয়ালী বা এরকম আরো গান-কবিতা উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছে, যেটা অনেকটাই বলতে গেলে, বা আমি দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে চাই, সেগুলো পাকিস্তান বা উর্দু ভাষাকেন্দ্রিক। আমার ধারণা বা বোঝা ভুল হলে, বলবেন। যদিও সে বাংলা গা্নও গেয়েছে, কবিতাও আবৃত্তি করে।

পরে তার পড়াশোনা দেখলাম। মাদ্রাসায় পড়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়েছে, হাল আমলে ইলেকশনেও দাঁড়িয়েছে ঢাকা-৮ আসন থেকে। তাই মনোযোগ দিয়ে তার পরিকল্পনা শুনছিলাম, কেন এমপি হতে চায়? আজ বিশেষ করে তার মৃত্যু সংবাদই যেন তার ব্যাপারে আরো জানতে আমাকে আগ্রহী করে তোলে। আমি সময় টিভির সেই সাক্ষাৎকার, আরো কিছু টকশো মন দিয়ে শুনি। আমি অবাক হই! তার পারিবারিক আবহ, তার ছোটবেলার রাজনৈতিক সংস্পর্শিতা, বিশেষ করে জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া সম্বন্ধে তার জানাশোনা, অনুভূতি আমাকে অবাক করেছে। আজকের তরুণ প্রজন্ম জিয়াউর রহমানকে এখনো ধারণ করে! যেটা এখনকার বিএনপির অনেকের মাঝেও পাওয়া যায় না। সে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মতো স্বল্পআয়ু, কিন্তু দীর্ঘ ও গভীর প্রভাবের একজন রাজনিতিবিদ হতে চেয়েছে। প্রায় হেঁটে হেঁটেই তার রাজনৈতিক সংযোগগুলো করার চেষ্টা করেছে। এটা অবশ্য আমরা ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টেও দেখেছি, ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচীতে। সবাই সারা বাংলাদেশ থেকে পায়ে হেঁটে আসছিল! কোথাও কি জিয়াউর রহমানের ব্যাপারে আলোচনা ছিল?!

https://www.youtube.com/watch?v=BMpubqDxf6k

শুনলাম সে তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডের জনগণের মতামত নিয়েছে, সেগুলো সামারাইজ করতে তার রিসার্চ টিমকে দিয়েছে। তার নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করতে এটা মূল ভূমিকা পালন করতো। সে তার আরো অনেক পরিকল্পনার কথা বলেছে, উদ্যোক্তা তৈরী, ইংরেজি, আরবী, স্পেনিশ, জার্মানি সহ বিভিন্ন ভাষাগত দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেছে। মূলতঃ ছেলেটা শিক্ষক। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে না হলেও আমার অনুজই বলতে পারি। তার প্রতিটি চিন্তাই সুচিন্তিত মনে হয়েছে! আফসোস হলো, সে সুযোগ পেল না! বিধাতার হয়তো আরো কিছু পরিকল্পনা আছে! তার শহীদ হবার বাসনাকে তিনি কবুল করেছেন খুব তাড়াতাড়িই।

তবে একটা ব্যাপার যেটা আমার মনে হলো, আমি ইদানীং ফিল করি, হয়তো বড় হয়ে, রক্ত আগের মতো আর গরম নেই! তাই হয়তো বা! কিন্তু তবুও বলি। এককালে, হাদির মতো বয়সে আমিও অনেক ভারত বিরোধি ছিলাম। এই ব্লগে বা আমার ফেইসবুকে এর অনেক প্রমাণই পাওয়া যাবে, কমেন্টে, পোস্টে, ভারতীয় টেলিকম (ল্যান্ডফোন) কোম্পানীর বাংলাদেশে লাইসেন্স দেয়া নিয়ে, ফাইবার অপটিক্যাল কেবলের ব্যান্ডউইডথ ভাড়া দেয়া নিয়ে, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে, গোমতী নদীর উপর দিয়ে মাটির রাস্তা তৈরী করে বিভিন্ন মালামাল ত্রিপুরা নেয়া নিয়ে, ট্রানজিট নিয়ে, তিস্তা চুক্তি নিয়ে, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে, পার্বত্য চট্টগ্রাম দিয়ে যেন ভারত থেকে অস্ত্র না আসতে পারে সেসব নিয়ে, সর্বশেষ আসামের দিক থেক রিলায়েন্স কোম্পানীর বাংলাদেশ থেকে পাইপ দিয়ে গ্যাস নেয়া নিয়ে। মোদ্দাকথা, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানীর ব্যাপারে আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে এবং আমি এই খাতে বাঙ্গালদেশের পুর্ণাঙ্গ সক্ষমতার পক্ষে। সেটা নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট (মূল ভূখন্ডে) এবং পরিবেশবান্ধব সোলার প্যানেল দিয়ে ( দূরাঞ্চলে, বিশেষ করে দ্বীপাঞ্চলে), যাতে করে আমরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরাবরাহ পেতে পারি।

আসলে একমাত্র আওয়ামী লীগার ছাড়া আর বাংলাদেশের সবাই এরকম ভারতবিরোধী মনোভাব নিয়েই বড় হয়! আমি নিজেও এই গুরুদোষে দোষী! অনেক চিৎকার করতাম একসময়ে, কলম দিয়ে, দুঃখিত কি-বোর্ড দিয়ে। এটা এই জুলাই বিপ্লবীদের মাঝেও প্রবল। এদের কেউ কেউ আবার এক ধাপ এগিয়ে, ভারতকেও দ্বিখন্ডিত করতে চায়, এটা আগেও দেখেছি উলফাদের ঘিরে। তবে, কেন জানি আমি এতে পাকিস্তান ভাঙার যে আক্ষেপ, সেখান থেকে এ মনোভাবের উৎপত্তি মনে হয়! ভাল জানি না, এ ব্যাপারে, তবে অনুভব করি!

কিন্তু পাশাপাশি এই বাস্তবতাও জানি, সিকিমের জনগণ নিজেরাই ভারতের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। কাশ্মিরের প্রধান মুসলিম রাজনৈতিক দলের লোকেরা পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের সাথে থাকতেই বেশি পছন্দ করে। জুম্মু কাশ্মীর, আজাদ কাশ্মীরের চাইতে উন্নত। এটা বাস্তবতা!যাই হোক, যার যার ভূখণ্ড, তার তার পছন্দ! তবে এই ভারত বিরোধিতা, আওয়ামী বিরোধিতার চাইতের বেশি বিপদে ফেলে তরুণ প্রজন্মকে, এটাও আমার অত্যন্ত প্রকট অভিজ্ঞতা! তাই, তরুণদের আওয়ামী লীগের মতো নতজানু নয়, কিন্তু অতি বিরোধতার ফলে নিজের স্বপ্নপুরণে পরিবেশ যেন সংকুচিত হয়ে না পড়ে, সেদিকেও তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে এই জুলাই বিপ্লবীদের। প্রতিবেশী দেশ কখনোই একশতভাগ বন্ধু হবে না। সবাই নিজ নিজ স্বার্থকে উপরে রাখবে, এটাই স্বাভাবিক! দুটো মুসলিম রাষ্ট্রও পাশাপাশি পুরোপুরি ভাল সম্পর্ক নিয়ে চলতে পারে না। আয়তন, ইতিহাস ও জনসংখ্যা দিক থেকে ভারত বড় এবং পুরোনো দেশ! সারা বিশ্বে তার প্রভাব প্রতিপত্তি বাংলাদেশের চাইতে বেশি। এটা জেনে ভারসাম্যপূর্ণ এবং আত্মমর্যাদা বজায় রেখে একটা স্বাস্থ্যকর ও নৈতিক সম্পর্ক আমাদের বজায় রাখতে হবে। আমাদের আজকাল বড়দের কথা না শোনার প্রবণতা হয়েছে অনেকেরই। তাই বলি এটা একটা সতর্কতা। জীবন হারিয়ে ফেলাই সবসময় সার্থকতা নয়! তাহলে স্বপ্নগুলো কে পুরণ করবে? এটাও ভাবতে হবে। তাই বুদ্ধিমত্তার সাথে বেঁচে থাকো, লড়াই জারি রাখো এবং স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাও।

স্বপ্নটা অবশ্যই এই লাল সবুজের বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রত্যয়!আমাদের মূল্যবান জীবন ও সময় যেন বাংলাদেশ এবং আত্ম-উন্নতি নিয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। নিজের ভাল যোগ্যতা না থাকলে দেশকে কিভাবে এগিয়ে নিব? এক্ষেত্রে আমি হাদির আরো একটা প্রশংসা করবো। ছোটবেলার ধর্মীয় শিক্ষার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়ার অভিজ্ঞতা, তার সাথে ছোটবেলার সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চমৎকার সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল হাদিকে এক অন্য উচ্চতায় তৈরি করেছিল! সত্যি দুঃখ হয়, ছেলেটা স্বপ্ন পূরণের সময় পেল না! মহান আল্লাহ্‌তাআলা তাকে শহীদের মর্যাদা এবং জান্নাত দান করুন। আমিন!

এক হাদি লোকান্তরে, লক্ষ হাদি ঘরে ঘরে!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৫১
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×