somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিনহাজ উল ইসলাম
ডাকনাম অপি। সবাই মিনহাজ বলে ডাকতেই সাচ্ছন্দ বোধ করে। স্কুল, কলেজ এর গণ্ডী পেরিয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তেজগাওয়ের বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছি। যদিও কখনই ইচ্ছা ছিলনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার।

নুহাশ পল্লী ভ্রমন কাহিনী

১১ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ল্যাবের ফাকে হঠাৎ শামীম বলে উঠল, চল কোথাও ঘুরে আসি।
আতেল ঘরোনার কয়েকজন বন্ধু এমনভাবে তাকালো যেন শামীম কোনো গালী দিয়েছে।
আমি পাশের টেবিলে এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। অমনোযোগী আমার এই সুন্দর দৃশ্য মিস করার কোনো কারন ছিল না।
যাহোক শেষ পর্যন্ত লাইক মাইন্ডেড কয়েকজন বন্ধু ঠিক করে ফেললাম ঢাকার আশেপাশেই কোথাও ঘুরে আসি।
কোথাই যাওয়া যায় কোথায় যায় করতে করতে ঠিক করে ফেললাম নুহাশ পল্লী। নুহাশ পল্লি যাওয়ার আইডিয়া দিতে না দিতেই সবাই রাজি হয়ে গিয়েছিল। এর পেছনে অবশ্য দুইটি কারন ছিল।
১। সবাই মোটামোটি হুমায়ূন ভক্ত।
২। সবাই ঢাকার আশেপাশে যাওয়ার পক্ষপাতি ছিল।
যাহোক শেষ পর্যন্ত আমরা দিন ও সময় ফিক্স করে ফেললাম। যেহেতু আমরা দিনে যেয়ে দিনেই ফিরে আসার প্লান, তাই খুব ভোরে রওনা দেবার ইচ্ছা ছিল।
কিন্তু বিপত্তি ঘটল অন্যত্র।
যে বন্ধু গুলো আমাদের সাথে প্রথম দিকে যেতে চাইনি তারাও শেষ পর্যন্ত যোগ দিল।
সবার উত্তরার রাজলক্ষী থেকে উঠার কথা ছিল। সবার পৌছানোর কথা ছিল সকাল ৭ টাই। কিন্তু ওই যে বললাম, কালপ্রিটগুলোর জন্যে লেট হয়ে গেল।
আগে থেকে আমি দেখে রেখেছিলাম কি কি বাসে চড়ে সরাসরি নুহাশ পল্লী যাওয়া যায়। সেই অনুযায়ী প্রভাতি-বনশ্রী নামক বাসে উঠার কথা ছিল। কিন্তু বাসটি লম্বা রুটে চলে বিধায় এদের বাস গুলো একেকটা দীর্ঘ সময় পর আসে।

অপু, শাকিল আর শামীম এর অপেক্ষা সহ্য হলো না। বিকল্প উপায়ে যাবার প্লান করলাম। প্রথমে গাজীপুর চৌরাস্তা, এরপর গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে বাস নিয়ে হোতাপাড়া বাস স্টপেজে। গাজীপুর পর্যন্ত ৩০ টাকা এবং গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে হোতাপাড়া বাস স্টপেজ পর্যন্ত ১৫ টাকা ঠিক করলাম যদিও ভাড়া ২০ টাকা করে ছিল। স্টূডেন্ট বলে কম দিয়েছিলাম।

হোতাপাড়া বাসস্টপেজে নেমেই কয়েকজন অটোবাইক ঠিক করলাম। ভাড়া ৪০ এর মত মাথাপিছু। বাকি কয়েকজন গেল রেস্টূরেন্টে। কেন? কারন আমরা আগেই জানতাম নুহাশ পল্লী বা এর আশেপাশে খাবার পাওয়া যায়না। যাহোক খাবার নিয়ে আমরা অটোতে চড়ে রওনা দিলাম নুহাশ পল্লীর উদ্দেশ্যে।নুহাশ পল্লী কিভাবে যাবো এবং কি কি খাব এ ব্যপারে আরও জানতে ভ্রমনচারী তে নুহাশ পল্লী আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।

যাহোক অটোতে যাবার পথে গ্রামের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করেছিলাম।

অতঃপর পৌঁছে গেলাম পিরুজালি গ্রামেঃ পল্লীতে হুমায়ুন আহমেদের নন্দন পল্লী নুহাশ পল্লীতে।

নুহাশ পল্লী প্রবেশ মূল্য ২০০ টাকা। স্টূডেন্টদের জন্যে অর্ধেক।

আমরা যেদিন নুহাশ পল্লী গিয়েছিলাম, সৌভাগ্যক্রমে অইদিন বৃষ্টি শুরু হলো। সে কি বৃষ্টি।

আগেই প্লান ছিল নুহাশ পল্লীর লীলাবতী দীঘিতে গোসল করব আমরা। গামছা, এক্সট্রা কাপড় নিয়ে গিয়েছিলাম সাথে তাই। আবার এর সাথে যুক্ত হলো বৃষ্টি।
প্রথমেই লাফ দিলাম হুমায়ুন আহমেদের শোবার ঘরের সামনের সুইমিংপুলে। কিন্তু সমস্যা ছিল একটা। সুইমিংপুলে যে পানিই নেই। তার উপর অল্প যতটুকু পানি ছিল, তার ভিতরেই স্কুলের কতকগুলো সুন্দর সুন্দর মেয়ে ঝাপাঝাপি করছিল।

একটু পরেই ওরা উঠল। তারপর আমরা নামলাম। মটর দিয়ে পানি ভরার চেস্টা করলাম। কিন্তু পুরো সুইমিংপুল ভরতে তো অনেক সময় লাগে। তবুও যতটুকু পানি ছিল তার ভিতরে গাপ্তাগায়ী খুনসুটিতে মেতে ছিলাম। অসাধারন এক অভিজ্ঞতা।


ছবিঃ ভ্রমনচারী
মজার ব্যপার হলো জাওয়াদ নামে আমার এক বন্ধু চোখে যাতে পানি না যায় এবং সাতার কাটার সময় যাতে পানির নিচে সবকিছু দেখতে পায়, এজন্য ওয়াটার প্রুফ গ্লাস নিয়ে গেসিল। সুইমিংপুলে পানি ছিলনা, তবুও তার গ্লাসটি বের করতেই হলো। আর কি রক্ষা, দুষ্টু নাজিরের হাতে পড়ল সেটা। যা শেষ পর্যন্ত ভাঙ্গা অবস্থায় জাওয়াদের হাতে ফিরল।

এ পর্ব শেষ করে, সিদ্ধান্ত নিলাম লীলাবতী দীঘিতে গোসল করব। যেমন সিদ্ধান্ত তেমন কাজ।

বিশাল দীঘিতে নামলাম গোসল করতে। আমরা যারা সাতার জানতাম সাতরে পার হয়েছিলাম এপাড় থেকে ওপাড় পর্যন্ত। দীঘি দেখতে খুব বেশি বড় মনে না হলেও আসলে অনেক প্রশস্ত। সাতরে পার হওয়াটাও তাই কষ্টকর। আকাশ তো পার হতে গিয়ে ডুবেই যাচ্ছিল। আল্লাহ সহায় ছিল, শেষ পর্যন্ত নাজির ধরে ফেলছিল ওকে।

লীলাবতি দীঘিতে গোসল শেষে পোশাক পরিবর্তন করলাম। এরপর খেয়ে নিলাম বৃষ্টিবিলাসে। বৃষ্টিবিলাসে ওয়াশরুম ও বিশ্রাম নেবার ব্যবস্থা আছে। আমরা ওখানে বেশ খানিকটা রেস্ট নিয়েছিলাম।

খাওয়া-দাওয়া শেষে পুরো নুহাশ পল্লী ঘুরে দেখলাম। অসাধারন সুন্দর। সবচেয়ে ভাল লাগার এবং অনুধাবন করার বিষয় হলো লেখক তার সৃষ্টিসত্তা দিয়ে এগুলো তিলে তিলে সাজিয়েছেন।

ঘোরাঘুরি শেষে চা বানিয়ে এনে দিয়েছিল নুহাশ পল্লির এক পরিচার্যক। আহ! কি অনুভুতি ছিল। ভেরি ভেরি হার্ড টু এক্সপ্লেইন।

মজার সেই ঝটিকা ট্রিপের কথা আজও মনে পড়ে।

পুনশ্চঃ ফেরার পথে আতেল প্রকৃতির মাহির আসিফ, আমাদের সিজিবয় হারিয়ে গেছিল :-& । ভেবেছিল আমরা ওকে রেখে চলে গিয়েছি। এটা ভেবে অনেকক্ষন কেদেছিল ও। লুকিয়ে লুকিয়ে দুষ্টুর দলেরা আবার তাই দেখছিল। :(
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:৫৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পশ্চিমা ইসলামবিদ্বেষ থেকে বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনীতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৬


আমি যখন কানাডায় বসে পাশ্চাত্যের সংবাদগুলো দেখি, আর তার পরপরই বাংলাদেশের খবর পড়ি, তখন মনে হয় - পশ্চিমা রাজনীতির চলমান দৃশ্যগুলো বহু পথ পেরিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে আলো-ছায়ায় প্রতীয়মান... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×