somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার মা আমার বাবা এবং আমি

১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঠিক এক বছর আগেও বাবাকে বেশী ভালোবাসি বলে মনে হত , বাবা চাকরি সুত্রে ছোট বেলা থেকেই আমাদের থেকে দূরে দূরে থেকেছেন । বছরে এক বার দেখা হত ।

মা সব সময় ছায়ার মত সাথে ছিল, আছে । সাথে থাকলে যা হয়, রাগ করত মাঝে মাঝে । তখন মনে হত বাবাই বুঝি সব থেকে ভালো । রাগ করে না ।

ছোট বেলা থেকে আমি কখনো বাবা মা'র হাতে মাইর খাইনি ( সত্যি বলছি ) , এখন তো আম্মা রাগও করে না । আমাকে নিয়ে আম্মার গর্বের শেষ
নেই । ভার্সিটি'তে ভর্তির পর থেকে সেটা আরও বেড়ে গেছে । ভার্সিটি'তে ভর্তির আগ পর্যন্ত খুব বেশী জেদি ছিলাম, অকারনে রাগ করতাম । নিজেকে এখন অনেক বেশী নিয়ন্ত্রণ করতে পারি ।

হয়তো এই কারনে আম্মা আগের থেকে অনেক বেশী কেয়ার নেয় । অধিক ভালবাসাও যে বিরক্তির কারন হতে পারে, এক বছর আগেও নিজের কাছে অজানা ছিল ।

অনেকের বাবা মা বেঁচে নেই । কিছু দিন আগে ছোট ভাই Sinbad Konick'sতার বাবাকে হারিয়েছে, Asive Chowdhury বন্ধু ওর বাবা কে সারা জীবনে ৪/৫ দেখেছে ।

আমি জানি না ওরা কিভাবে দিন কাটায়, অনেক বেশী বোঝার চেষ্টা করি বাবা মা ছাড়া আসলেই কি দিন কাটানো যায় ? বেশী ভাবতে পারি না ............

বাবা যদি কিছুক্ষনের জন্যও বলে শরীর খারাপ, নিজেকে অস্থির মনে হয় । এই অনুভুতি আমার এক বছর আগেও ছিল না ।

এখন মা তার রুমে শুয়ে আছে, শরীর , মন দুইটা খারাপ । কারনটাও জানি ।

আমি আমার সুস্থ মস্তিস্কে কখনো বাবা মা কে কষ্ট দেই না, যদিও বা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে কিছু বলি । চিৎকার এর বেশী কিছু না । তারপরও মা এর পা ধরে সাথে সাথে মাফ চাই । মা যতক্ষণ না বলে , যে মাফ করেছে । আমি পা ছারি । না, বেহেস্তের জন্য নয় । বাবা মা কে আমি সত্যি বেশী ভালোবাসি ।

বাবা মা কে হারিয়ে কখনো ভালবাসা বুঝতে চাই না, বুঝতে চাই না - এই পৃথিবীতে বাবা মা আসলে কি । কারন আমি জানি, বাবা মা আমার জন্য বট বৃক্ষ - যারা নিঃস্বার্থ ভাবে ছায়া দিয়ে যাবে । মেঘলা আকাশ হয়ে ছায়া দিয়ে যাচ্ছে । এদের হারিয়ে আমি কি বুঝবো ? তারা আমাকে ভালবাসে কি না ?


তারা আমাকে কত ভালবাসে তা আমি জানি না, জানতেও চাই না । আমার প্রতি তাদের ভালবাসা পরিমাপ করার ক্ষমতা আল্লাহ যেন কোন দিন আমাকে না দেয় । আমি শুধু তাদের জন্য অনেক কিছু করে জেতে চাই ।

একটি ঘটনা বলি, মাস চারেক আগের কথা । বাবা একদিন বলল, খাসির মাংস দিয়ে সে খিচুড়ি খাবে ।



কোন কারনে আমি আমি সেটা ভুলে চাই । মা মাস দুয়েক আগে আমাকে আবার মনে করিয়ে দেয় । আমি খুব লজ্জা পেলেও মুখে কিছু না বলে , আমার টিউশনি'র টাকা জমিয়ে অনেক বড় একটা আস্ত খাসি কিনে আনি ।

উদ্দেশ্য, যাতে বাবা মন ভরে খাসির মাংস ( অন্য যে কোন মাংস বাবা'র জন্য নিষেধ , ডাক্তার কর্তৃক ) খেতে পারে । হ্যাঁ, আমি এক কেজি মাংস কিনে আনতে পারতাম । সেটা বাবাও পারত । আমাকে কেন বলল ? হয়তো কিছু একটা হতে পারে । তাই এক কেজি নয়, ৬০০০ /= খাসি কিনে এনেছি শুধুই বাবার জন্য ।

আমি এই কাজে যে আনন্দ পেয়েছি, এক জীবনে এর থেকে বেশী আনন্দ আমাকে কে দিতে পারবে ? আমি প্রতিটি মুহূর্তে সচেষ্ট থাকি যাতে বাবা মা আমার থেকে কষ্ট না পায় ।

হ্যাঁ, আমি এখন ছাত্র । চাকরি করি না । বেশী টাকা নেই । তাতে কি, বাবা মা কবে থাকবে , কবে থাকবে না । তাতো কেউ বলতে পারে না । আমি মোবাইল চালানো প্রায় অফ করে দিয়েছি । শুধু পড়াশুনা, কম্পিউটার আর আমার পরিবার । হ্যাঁ, এই সময় মানুষ যে ভাবে টাকা খরচ করে আমি সেভাবে করি না ।হয়তো একদিন আমি অনেক টাকা পাব, অনেক বন্ধু হবে । এক বন্ধু চলে গেলে আরেক বন্ধু চলে আসবে , কিন্তু বাবা মা গেলে আর পাবো না । আমি চেষ্টার কোন ত্রুটি থাকবে না, তাদের আমৃত্যু সুখে রাখার । আমি মন থেকে বলছি, সব কিছুর উরদ্ধে আমার বাবা মা । বাবা মা যদি আমাকে দোয়া করে, আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীতে কোন বাঁধা আমাকে আটকাতে পারবে না ।

আমি সব সময় একটি জিনিস চাই, আমার পরিবার, বন্ধু বা অন্য কেউ । সবার কাছে । " সব সময় হাসি খুশি থাকতে" এক জীবনে অনেক কষ্ট, অনেক না পাওয়া - অনেক দুঃখ । যা মানুষকে দেখালে কোন লাভ হবে না । তাহলে কেন ? তাদের সামনে নিজেকে ছোট করা ?

....এখন মায়ের মন খারাপ । তাই এত কিছু লিখলাম । যাচ্ছি, মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে । মা - ই আমার বেহেশত । সেই বেহেশত যদি কালো মেঘ বাসা বাঁধে , তা কি আমি মেনে নিতে পারি ? যে কোন ভাবেই হোক হাসি ফিরিয়ে, আসছি ।

আল্লাহ , আমৃত্যু বাবা মা'র স্নেহের বাধনে রেখো, ভালবাসার এ বন্ধন যেন অটুটু থাক

এটি একটি ফেইসবুক নোট
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×