নারীজাতি মায়ের জাতি। মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত। তাই নারী জাতির ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হওয়া নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, যারা সর্বদা নারীদের উপর জুলুম ও অবিচার করে এসেছে এবং এখনো করছে। কখনো সভ্যতা ও নারী-মুক্তির নামে, আবার কখনো সন্ত্রাস দমনের নামে এই পরিমাণ জুলুম করছে যে, অতীতের সকল মূর্খতা ও বর্বরতা তার সামনে তুচ্ছ। তাদের কথামতোই কি নারী-অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে? কুরআন ও সুন্নাহ প্রদত্ত ন্যায্য অধিকার সম্পর্কে তাদের যে সন্দেহ-সংশয় তারা কি কখনো কুরআন ও সুন্নাহয় নারী-অধিকার সংক্রান্ত আয়াত ও হাদীসগুলো অধ্যয়ন করেছেন? তা না করেই কীভাবে তাদের নিশ্চিত বিশ্বাস হল যে,-নাউযুবিল্লাহ-ইসলামে নারীদের প্রতি ইনসাফ করা হয়নি?
আর কুরআন-হাদীসের চর্চায় যাঁরা জীবনপাত করছেন, জীবিকার অনেক পথই রুদ্ধ বা সংকীর্ণ জেনেও ধর্মশিক্ষা ও শিক্ষাদানের ত্যাগপূর্ণ পথকেই যাঁরা স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে বেছে নিয়েছেন তাঁদের জ্ঞান যে যথার্থ নয়, সে বিষয়েইবা কেমন করে নিশ্চিত হলেন? তাঁরা যে বিজাতীয় চিন্তা-চেতনার শিকার হয়ে ঘরের সবকিছুকে পর ভাবতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন তা কি তারা বুঝতে পারছেন?
সমাজ-ব্যবস্থা ও সামাজিক কাঠামো সম্পর্কে আপনি যে মতটি পোষণ করেন, কেউ তা সমর্থন না করলেই তাকে ধর্মব্যবসায়ী, ধর্মের অপব্যাখ্যাকারী নামে যে নির্বিবাদে আখ্যায়িত করে দেন এ অধিকারটি আপনি কোথায় পেলেন?
এ সম্পর্কে সবচেয়ে মৌলিক ও বড় প্রশ্নটি হল, আপনি যদি ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী হয়ে থাকেন তবে কুরআন-হাদীসের স্বীকৃত সামাজিক কাঠামোকে গায়ের জোরে নাকচ করে দেওয়ার তো কোনোই অধিকার আপনার নেই। কারণ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ উচ্চারণের সাথে সাথে আপনি কুরআন-হাদীসের শিক্ষাকে সত্য বলে মেনে নিয়েছেন এবং কালিমায়ে শাহাদত উচ্চারণ করে যথারীতি তার ঘোষণাও দিয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত : কুরআন-হাদীস নারীকে যতটুকু হক বা অধিকার দিয়েছে আপনি একে যতই অপর্যাপ্ত মনে করেন, আপনার ব্যক্তিগত জীবনে কি এ অধিকারগুলো তাঁদেরকে দিয়েছেন?
আপনি কি আপনার স্ত্রীর মোহর যথারীতি আদায় করেছেন, নাকি শ্বশুরের নিকট থেকে বড় অংকের যৌতুক নিয়ে স্ত্রীকে বৈধ স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছেন?
আপনি কি আপনার ফুফু ও বোনদের ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্য হকগুলো, নগদ অর্থ, জমিজমা ও পৈত্রিক বাড়ির অংশ মূল্য বাবদ প্রাপ্য পাওনা কড়ায়-গন্ডায় আদায় করেছেন? আপনার ফুফুরা বা বোনেরা কি এ বিষয়ে আপনার পক্ষে সাফাই দিতে রাজি হবেন?
আপনি নারী হয়ে থাকলে আপনার ভাইদের ও স্বামীর নিকট থেকে কি এ হকগুলো বুঝে নিতে পেরেছেন?
কুরআনের অনুশাসন অনুযায়ী আপনার
স্বামী আপনার জীবনযাত্রার পূর্ণ ব্যয় বহনের যিম্মাদার। আপনি কি তা ভোগ করতে পারছেন, নাকি নিজে চাকুরি-বাকুরি করে নিজের ব্যয় নির্বাহ করেন? আপনার ব্যক্তি-জীবনেই যদি এগুলো আদায়ে সমর্থ না হন, জাতীয় জীবনে আপনি কী করে এগুলো প্রতিষ্ঠিত করবেন?
আমার মনে হয় আকেলমন্দের জন্য ইশারাই কাফী।
বিঃদ্রঃলেখাটি মাসিক আলকওসার থেকে গৃহিত

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




