ধ্যাত এই অফিস টু বাসা, বাসা টু অফিস করতে করতে লাইফটা ডাইল হয়া গেল, আর ভাল্লাগেনা।
কোথাও যাওয়া দরকার, একটু ঘুরাঘুরি না করলে আর চলছে না।
আরে ক্যাম্নে যাব? টাইম কই? ছুটি ম্যাচ করতেই তো জান বেরিয়ে যাবে।
আরে এইবারের বিজয়দিবস শুক্রবারে পড়সে , সাথে শনিরবির সাপ্তাহিক ছুটি মিলায় ৩ দিনের ছুটি হয়ে যাচ্ছে, এইটারে কাজে লাগান দরকার।
এইভাবেই অফিসের বন্ধুদের মাথায় ঢুকে গেল ১৬,১৭,১৮ তারিখ ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান। কিন্তু কই যাব? নানামুনির নানা মত। কেউ কয় সেন্টমার্টিন, কেউ কয় সুন্দরবন আবার কেউ বলে বান্দরবান। সেইন্টমার্টিন কেন জানি ভাত পাইল না(ভুইলা গেসি কারনটা), সুন্দরবনে দেখা গেল খরচ বেশি পড়বে তাই বান্দরবানকেই সিলেক্ট করল বান্দররা(আমি না কিন্তু, আমি সুন্দরবন্রে ভোট দিসি)
এখন তাইলে বান্দরবনে কই যাব? তেমন কোন ঝামেলা ছাড়াই সিলেক্ট হয়ে গেল বগালেক, কেওকাড়াডং আর নীলগিরি । ১মদিন বগালেক ২য়দিন কেওকারাডং আর ৩য়দিন নীলগিরি ঘুরে আসব(মামাবাড়ির আবদার আরকি) যাইহোক সাতজন মিলে গুরুগম্ভীর মিটিং করে খরচ কত হবে, কোনজায়গা থেকে কোথায় যেতে সময় কত লাগবে এইসব আব্জাব ডিটেইলস প্ল্যান করতে লাগ্লাম(যেন আমগ প্ল্যান অনুসারে চলার জন্য পাব্লিক বইসা আছে)
প্ল্যান শেষে ক্যাম্নে ক্যাম্নে দেখি আমারে সবাই বান্দরবানের টিকেট কিনার জন্য টাকা ধরায় দিসে। শুধু তাই না টাকা যখন নিচ্ছই তখন তুমিই ক্যাশিয়ার এই থিয়োরিতে সহজ-সরল আমারেই বলির পাঁঠা বানায় দিল
যাইহোক প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে গিয়া প্রথমেই খাইলাম ধাক্কা। ঢাকা টু বান্দরবান টিকেট পাইনা। অনেক ঘুরাঘুরি করে শেষে চট্রগ্রামের টিকেট কাটলাম আর আমাদের আরো ২ জন গেল ট্যুরের জন্য জিনিসপাতি কিনতে। কিছুক্ষন পরেই জিনিসপাতি দেইখা মোটামুটি টাশকি খাওয়ার অবস্থা, ট্যুরে যাবে নাকি নতুন সংসার পাতবে ২ জনে বুঝলাম্না। আস্তা মাল্টিপ্লাগ নিয়া আসছে, আসছে তো আসছে ট্যুরের পরে মাল্টিপ্লাগ কার বাসায় যাবে তা নিয়া মোটামুটি প্ল্যানপ্রোগ্রাম কইরা ফালাইতেসে
অবশেষে রাতে রওনা দিয়ে আমরা সকালে পৌছালাম চিটাগাং। পৌছায়ই অস্থির হয়ে গেলাম, বাউরে বাউ কি ঠান্ডা।ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে সিএঞ্জিতে কইরা বাসস্ট্যান্ডে গিয়া দেখি আরেক বিপদ। আবারো বান্দরবানের টিকেট পাইনা(কাহিনী কি?সবাই লাগসে নাকি বান্দরবানের পিছে?) আরেক গ্রুপও টিকেট পাইতেসিলনা তারা কইল আসেন ২ গ্রুপ মিলে একটা মাইক্রো ভাড়া করি । তো রাহাত গেল গেল তাদের সাথে মাইক্রো ভাড়া করতে। মাইক্রোতে ঊঠতে গিয়া দেখি আরেক কাহিনী। এক মাইক্রোতে বলে ১৮ জন ঊঠবো। আরে শালা ঢাকার মিনিবাসগুলিও তো আমগ দেইখা লজ্জা পাইব। যাইহোক আমরা লজ্জা না পায়া উইঠা বসলাম। সিটের এক সাইডে পড়ায় আমার ১/৩ রইল সিটে বাকিটা ঝুলন্ত আর আমি পুরা ডেডলকড অবস্থায়
অতঃপর কোনো একসময় আমাদের মুড়িরটিন পৌছাইল। আমরা সবাই নানান জায়গায় ব্যাথা নিয়া ত্যাড়াব্যাকা অবস্থায় নামলাম। নামার সাথে সাথেই শুরু হল ক্যাইক্ষ্যংছড়ি যাওয়ার জন্য দৌড়। কোনমতে কাউন্টারে পৌছায় শুনলাম বাস একটা এখনি ছাড়বে কিন্তু কোন সিট ফাঁকা নাই । কিসের সিট? আমরা দুর্নিবার অভিযাত্রীদল, একেকটা আগুনের গোলা সিট ছাড়াই উঠে গেলাম এক মুড়ির টিন থেকে অন্য মুড়ির টিনে। আর ওঠার একটু পরেই শুরু হল SKD স্পেশাল, ক্ষুধার্ত SKD ক্ষিদায় কান্দে আর ত্যাঁদড় রবি তারে পচায় ক্ষুধা মিটায়। পাহাড়ি রাস্তায় আরো ২ ঘন্টা খাম্বার মত দাড়ায় থেকে আমরা যখন নড়বড়ে অবস্থায় পৌছায় গেছি তখন নাম্লাম ক্যাইক্ষ্যংছড়ি । এইবার আমাদের ঠিক করার দায়িত্ব নিল সাঙ্গু নদীর ট্রলার।মুরগির খোপেরমত এক ট্রলারে করে রানীক্ষেত মুরগির মত ঘাড় বাঁকা করে মাত্র দেড়ঘন্টার একটা জার্নি আমাদের পৌছায় দিল রুমা বাজার


রুমাবাজার নেমে পেট ঠান্ডা করে আমরা উঠলাম বগালেকের উদ্দেশ্যে চান্দের গাড়িতে। সঙ্গীসাথীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কিছু মুর্গী। চান্দের গাড়ি চলার সাথে সাথে তারা শুরু করল খেলা। গাড়ি ঝাঁকায় আর মুর্গী লাফায়। লাফায় আর হাগে, হাগে আর লাফায়। পুরা মাখামাখি। উৎপলদার দিকে তাকায় দেখি বেচারার অবস্থা চ্রম। উপ্রে গাছের ডালের বাড়ি তো নিচে মুর্গীর মাখামাখি গু, একপাশ থেকে SKD ঝাপায় পড়ে তো অন্যপাশ থেকে সানিয়াত ভাই ঝাড়ি দেয়। আমরা চাইরপাশ দেখব না সাম্নের লাইভ কমেডি দেখব এই নিয়ে পড়লাম ব্যাপক ঝামেলায়। (মাঝে দিয়া একটা কথা বইলা রাখি চান্দের গাড়ির কাছে ফ্যান্টাসি কিংডমের রাইড তেমন কিছুইনা)।


চান্দের গাড়ি থেকে নেমে শুরু হল আমাদের আসল জার্নি, খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠা। SKD প্রথমেই ২টা ঢোঁক গিলে শুরু করল, আর আমি রবি রাহাত আগে বগায় একবার আসার কনফিডেন্সে ব্যাপক ভাবের সাথে শুরু করলাম হাঁটা। শুরু করার কিছুক্ষন পরেই বুঝা গেল এত ভাব নেয়া ঠিক হয়নাই আর SKD কিছুক্ষন পরপরই দেবাকে এই দেবা একটা ছবি তুল বলে বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করে আর বেচারা দেবা ছবি তুলতে তুলতে নিজেরে তোলার আর সময় পায়না। পাহাড় বেয়ে কিছুক্ষন ওঠার পরেই একেকজনের মুখের দিকে তাকায় দেখি বাঙলার ৫ হয়ে গেছে একেক্টা মুখ। আমি যখন হিসাব করতেসি ব্যাগটা হঠাত করে ভারি হইল ক্যাম্নে
বগায় পৌছায়ই সবার কি হইল বুঝলাম্না অভিযাত্রীরা আচানক সব মডেল হয়া গেল। একেক অ্যাঙ্গেল থেকে ছবি তুলে আর হিসাব করে ফেসবুকে এইটা দিব নাকি আগেরটা? নাহ নতুন একটা তুলি। ছবি তোলার ভঙ্গিমায় ব্র্যাড পিট থেকে নায়ক জসিম কাউরেই ছাড় না দিয়ে আমরা শেষ করলাম আমাদের ফটোসেশন
নাহ পরের দিনের কাহিনী পরের দিনই বলি। আইজকা অনেক লিখসি। এখন কিছু ছবি দেখেন। সময় পাইলে পরের কাহিনী দিব(ব্যাপক ভাব








সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


