somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হতাশাঃ এক মরণব্যাধি

১৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


*সামিয়ার মন আজ খুব খারাপ। ওর বেস্ট ফ্রেন্ড হাসবেন্ড নিয়ে কাশ্মীর ঘুরতে গেছে এবং সেখান থেকে ফেসবুকে ছবি আপলোড করেছে। কিন্তু সামিয়ার হাসবেন্ড অঢেল টাকা পয়সা থাকার পরও ওকে সহজে কোথায় নিয়ে যাওয়ার সময় করতে পারে না। বড় পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে সব দায়িত্ব সামিয়ার হাসবেন্ডকেই দেখতে হয়। সামিয়া তার ফ্রেন্ড এর হাসবেন্ড এর একটা দিক দেখেই নিজের হাসবেন্ডকে নিয়ে হতাশ হয়ে গেছে। অথচ সামিয়া এটা জানে না যে, তার ফ্রেন্ডের হাসবেন্ড এক দুশ্চরিত্র লোক। মাঝে মাঝে সে তার স্ত্রীকে নিয়ে দেশ বিদেশে ঘুরতে যায় আর স্ত্রীর অগোচরে অন্য মেয়েদের সাথে মেলামেশা করে।

* সোহান এস এস সি, এইচ এস সি তে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া স্টুডেন্ট। সবার আশা সে অবশ্যই ঢাবিতে ভালো সাবজেক্টে চান্স পাবে। কিন্তু একটুর জন্য সোহান ঢাবিতে চান্স পেল না। ওর অন্য বন্ধুরাও চান্স পেয়েছে। এবার সোহান ভীষণ হতাশায় ভুগছে। রাতের অন্ধকারে সোহান বিছানায় শুয়ে একবার সিলিং ফ্যানের দিকে তাকায় আরেক বার মোবাইলের স্ক্রিনে মায়ের ছবির দিকে তাকায়।

* রেজার জীবনের সবচেয়ে বিভীষিকাময় সন্ধ্যা এটা। একটা উপযুক্ত চাকরি পায়নি বলে দীর্ঘ সাত বছরের প্রেমিকাকে তার পরিবার আজ অন্য কারো সাথে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ রেজার মনে পড়লো তার গ্রামের এক বড় ভাইয়ের কথা যার জীবনেও এরূপ ঘটনা ঘটেছিল। সহ্য করতে না পেরে সে আজ চরম পর্যায়ের মাদকাসক্ত। মাদকের জন্য প্রয়োজনে চুরি ছিনতাইও করে। এসব ভেবে রেজা আরো বেশি হতাশ হয়ে গেল।

* লাবনীর হাসবেন্ড একজন জুয়ারি। দুই সন্তান জন্মের পর লাবনী এটা জানতে পারে। ততদিনে অনেক জায়গা থেকে কর্জ নেয়া হয়ে গেছে। এই কর্জের টাকা শোধ করার জন্য লাবনীও চাকরি শুরু করে। ভালোমন্দ বাচ্চাদের মুখে না দিয়ে সেই টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করতে থাকে। আবার সময় অসময়ে হাসবেন্ডের মারও খেতে হয়। ঋণ পরিশোধ প্রায় শেষ। গতানুগতিক ধারার কোন এক অজুহাতে তার হাসবেন্ড আবারও মারধর করে এবং সন্তানদের নিয়ে আলাদা হয়ে যায়। লাবনীর আজ কষ্টে দমবন্ধ হয়ে আসছে। যার জন্য সে এতো কষ্ট করলো সেই তাকে এতো বড় আঘাত দিলো। হতাশায় ওর আজ বাঁচতে ইচ্ছে করছে না।

* রূপার গায়ের রং শ্যাম বর্ণের। সামাজিক দৃষ্টিতে রূপার বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। ওর বন্ধু বান্ধব, কাজিন সবার বিয়ে বাচ্চা হয়ে গেছে। কিন্তু ও এখনও সিঙ্গেল। লোকজনের প্রশ্ন এড়ানোর জন্য রূপা সহজে কোথাও আসা যাওয়া করে না। আত্মীয় স্বজন পরিবারের লোকজনের কটু কথায় রূপার কাছে জীবনটা এখন বোঝা মনে হয়। এক বুক হতাশা নিয়ে ও আর বেঁচে থাকতে চায় না।

* জাহিদ মাস্টার্স পাশ করে বেশ কয়েক বছর হয়েছে নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আজও সে অবিবাহিত। পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে করতে কখন যে এতো বয়স হয়ে গেছে সে টেরই পায়নি। বন্ধুদের সাথে আর সে এখন কোথাও ঘুরতে যায় না। কারণ সবাই পরিবার নিয়ে বের হয়। সকলের মাঝে জাহিদ নিজেকে খুব একা মনে করে। কোন মেয়ের সাথে যেহেতু কখনো কোন সম্পর্ক ছিলোনা তাই লোকজনের টিপ্পনীর ধরনটা অন্য রকমই বটে। এসব ভেবে জাহিদ আজ খুব হতাশ হয়ে গেছে।

* রাবেয়ার বাবা ভীষণ অসুস্থ। মেডিকেলে তার আর কোন চিকিৎসা নেই। লোকজন টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারে না আর রাবেয়া কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা থাকার পরও তার বাবার জন্য কিছুই করতে পারছে না। নিজেকে ওর খুব অসহায় মনে হচ্ছে। বাবার দিকে তাকিয়ে রাবেয়া হতাশায় ভেঙে পড়ে।

* নাজমা প্রেম করে বিয়ে করে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তার আজ তিন সন্তান। হঠাৎ স্বামীর পরকীয়ার কথা শুনে নাজমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তার স্বামীর কাছে স্ত্রী সন্তান এখন বিশাল বোঝা মনে হয়। কিন্তু নাজমার স্বামীর বাড়ি ছাড়া আর কোন আশ্রয় নেই। হতাশায় একেকবার সে তার সন্তানদের নিয়ে বিষ খাওয়ার কথা চিন্তা করে।



আমাদের চারপাশে আজ হতাশা নামক রোগটি মহামারী আকার ধারণ করেছে। সামিয়া, সোহান, রেজা, জাহিদ, লাবনী, রূপা, রাবেয়া, নাজমা এরা আমাদের আশেপাশেই ঘুরছে। তারা নিজেরাও জানে না যে তারা কত ভয়াবহ একটা রোগে আক্রান্ত। ঘুণ পোকার মতনই হতাশা তাদের জীবনকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে অথচ তারা উপলব্ধি করতে পারছে না। সময়মত নিরাময় করা না গেলে হতাশা নামক রোগটি মরণব্যাধি হয়ে যায়। যার অন্তিম ফলাফল মস্তিষ্ক বিকৃতি বা আত্মহত্যা, কখনও বা হত্যা। হতাশাগ্রস্ত রোগীর লক্ষণ সমূহ ঃ
* সবসময় একা থাকার প্রবণতা
* ক্ষুধামন্দা কিংবা অতিভোজন
* অনিদ্রা রাত্রি যাপন
* বিষন্ন গান শোনা
* অতিমাত্রায় ধূমপান করা
* অল্পতেই রেগে যাওয়া
* দিনের বেলা অন্ধকার করে শুয়ে থাকা
* মোবাইলে অতিমাত্রায় সময় কাটানো
* মলিন মুখ করে থাকা
* কাজকর্মে অনাগ্রহ
* জীবনটা দুর্বিষহ মনে হওয়া
* নিজের কষ্টটা সবার চেয়ে বেশি তীব্র মনে হওয়া
* আয়না দেখতে অনিহা বোধ
* সব কিছুতে বিরক্তি প্রকাশ
একজন মানুষের মাঝে সব লক্ষণ একসাথে দেখতে পাওয়া জরুরি নয়। একটা লক্ষনীয় বিষয় হলো যাদের মাঝে ধর্মীয় চিন্তা চেতনা কম তাদের মাঝে হতাশার মাত্রা খুব বেশি। ইসলামের আঙ্গিকে হতাশার কারণ, অবস্থা ও প্রতিকার তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারীমে বলেছেন,
"যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন কর্মের দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কোন্ ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি মহা শক্তিধর, অতি ক্ষমাশীল।"(সুরা মুলক:২)



আল্লাহ মানুষকে কোন কোন বিষয়ে পরীক্ষা নিবেন তা কোরআনে সুস্পষ্ট বর্ণনা করেছেন।
"তোমাদেরকে ভয় ও ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি (এসবের) কোনকিছুর দ্বারা নিশ্চয়ই পরীক্ষা করব, ধৈর্যশীলদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর।(সুরা বাকারা:১৫৫)

উল্লেখ্য আয়াতটি নিয়ে একটু গভীর বিশ্লেষণ করা যাক। আয়াতের প্রথম শব্দ وَلَنَبْلُوَنَّكُمএখানে و এর অর্থ হচ্ছে এবং / আর, শব্দের শেষে كم শব্দটি ক্রিয়ার কর্ম হিসেবে যুক্ত করা আছে ،যার অর্থ তোমাদের সকলকে। আরلَنَبْلُوَنَّ হচ্ছে ক্রিয়া যার মূল হচ্ছে
بَلَا [ن] (بَلَاء) [بلي]
[বালা] পরীক্ষা করা, কষ্ট দেওয়া, বিপদে ফেলা।
ক্রিয়ার শুরুতে অতিরিক্ত ل ও শেষে অতিরিক্ত ن যুক্ত করার জন্য ক্রিয়াটিতে অতিমাত্রায় জোর দেয়া হয়েছে। এতে অর্থ দাঁড়ায়, আমি অবশ্যই সন্দেহাতীতভাবে তোমাদের সকলকে পরীক্ষা করবোই / বিপদে ফেলবোই / কষ্ট দিবোই। এবার পরীক্ষার বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করা যাক। প্রথমে যে বিষয়টা এসেছে তা হচ্ছে
(১) خَوْف
[খাওফ] ভয়, ভীতি, অস্থিরতা, আশঙ্কা, আতঙ্ক, অনিষ্টের সম্ভাবনায় মনে উদিত চিন্তা,
(২) جُو ع
[জূ'] ক্ষুধা, অনাহার, দুর্ভিক্ষ, শূন্যতাবোধ, আগ্রহ, কামনা, বাসনা, অবসর, অবকাশ, অবসাদ
(৩) نَقْص
[নাক্‌ছ] কমতি, ঘাটতি, হ্রাস, লোকসান, অভাব, স্বল্পতা, ত্রুটি, অবচয়, অপর্যাপ্ত
এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে
مَال ج أَمْوَال [مول]
[মাল] ধন, মাল, অর্থ, পণ্য, সম্পদ, তহবিল
نَفْس ج نُفُوس ، أَنْفُس
[নাফ্‌স] আত্মা, মন, প্রাণ, প্রবৃত্তি, প্রাণী, মানুষ, ব্যক্তি, স্বয়ং,
ثَمْرَة ، ثَمَرَة ج ثَمَرَات
[ছাম্‌রাহ, ছামারাহ] ফল, ফলাফল, ফসল, পরিণতি, পরিণাম, লাভ, মুনাফা, উপকারিতা, বংশধর



সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে মানবজীবনের হতাশার মূলে এই বিষয়গুলোই রয়েছে। আর আল্লাহ তায়ালা আয়াতের শেষে তাদের সুসংবাদ দিতে বলেছেন যারা পরীক্ষা / বিপদ / কষ্টের সময়গুলোতে ধৈর্য্য অবলম্বন করে। পক্ষান্তরে মানুষ যদি অধৈর্য্য হয়ে আল্লাহ বিমুখ হয় তাহলে তার জীবন হয়ে ওঠে সংকীর্ণ।
"আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে নিশ্চয় এক সংকুচিত জীবন এবং আমি তাকে কিয়ামত দিবসে উঠাবো অন্ধ অবস্থায়"।(সুরা ত্ব হা:১২৪)

আর যদি হতাশায় কারো কাছে জীবন যন্ত্রণাদায়ক বোধ হয়, তাহলে বুঝতে হবে তার কৃতকর্মের দরুণ আল্লাহর তরফ থেকে শাস্তি এসেছে যাতে সে নিজেকে শুধরে নিতে পারে।
"গুরুতর শাস্তির আগে আমি তাদেরকে অবশ্য অবশ্যই লঘু শাস্তি আস্বাদন করাবো যাতে তারা ফিরে আসে।"(সুরা সাজদাহ:২১)

আল্লাহ মানুষকে এমন শাস্তি দানের অন্যতম কারণ উল্লেখ করে বলেছেন,
"আর কোন কোন লোক এমনও আছে, যে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে, আল্লাহকে ভালবাসার মত তাদেরকে ভালবাসে। কিন্তু যারা মু’মিন আল্লাহর সঙ্গে তাদের ভালবাসা প্রগাঢ় এবং কী উত্তমই হত যদি এ যালিমরা শাস্তি দেখার পর যেমন বুঝবে তা যদি এখনই বুঝত যে, সমস্ত শক্তি আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহ শাস্তি দানে অত্যন্ত কঠোর।"(সুরা বাকারা:১৬৫)

এমতাবস্থায় মানুষের উচিত নিজের পরিস্থিতি অবলোকন করে সুস্থ সুন্দর জীবন যাপনের জন্য ভুল কৃতকর্ম শুধরে স্রষ্টার নিকট প্রত্যাবর্তন করা। আল্লাহ বলেছেন,
" আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা চাও, আর অনুশোচনাভরে তাঁর দিকেই ফিরে এসো, তাহলে তিনি একটা নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তোমাদেরকে উত্তম জীবন সামগ্রী ভোগ করতে দিবেন, আর অনুগ্রহ লাভের যোগ্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে তিনি তাঁর অনুগ্রহ দানে ধন্য করবেন। আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে আমি তোমাদের উপর বড় এক কঠিন দিনের ‘আযাবের আশঙ্কা করছি।"(সুরা হুদ:৩)

হতাশাগ্রস্ত মানুষকে সর্বাগ্রে তার জীবনের মূল্য বুঝতে হবে। সুখ দুঃখ কোন কিছুই এই জীবনে চিরস্থায়ী নয়। এটা চিরাচরিত নিয়ম। কারো অবস্থাই এ নিয়মের বহির্ভূত নয়।



হতাশা থেকে মুক্তি পেতে অতিসত্বর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
* সর্বাগ্রে হতাশার কারণ খুঁজে বের করা এবং তা কাটিয়ে তোলার সাহস ও শক্তি সঞ্চয় করা।
* সর্বাবস্থায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে শিখা। নিয়মিত মনোযোগের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ও ধৈর্যের সাথে সাহায্য প্রার্থনা করা।
* রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া এবং ভোরে উঠার অভ্যাস গড়ে তোলা। রাতে ঘুম না হলে নফল নামাজ আদায় করা।
* ভোরের স্নিগ্ধ বাতাসে কিছু সময় হাটাহাটি ও হালকা এক্সারসাইজ করা। কথায় আছে, A sound mind lives in a sound body.
* নিজের হতাশার কথাগুলো বিশ্বস্ত কারো কাছে ব্যক্ত করা এতে চাপা কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়।
* বেভারেজ ও ফার্স্টফুড খাওয়া যতটা সম্ভব বাদ দেওয়া। প্রচুর পানি, ফল, শাক সবজি, সহজ পাচ্য খাবার খাওয়া। নিয়মিত খেজুর, মধু ও বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করা।
* নেগেটিভ ভাইবের লোকজন এড়িয়ে চলা। সম্ভব হলে প্রাকৃতিক পরিবেশে কোথাও ঘুরে আসা।
* নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য কোন শখ পালন করা, যেমন বাগান করা, পাখি পোষা, বিড়াল পোষা,বই পড়া, লিখালিখি করা। সময় সুযোগ থাকলে কোন কোর্সে ভর্তি হয়ে যাওয়া।
* সোশ্যাল মিডিয়ায় যতটা সম্ভব কম সময় দেওয়া। পজিটিভ চিন্তাশীল ও ধৈর্যশালী লোকদের সাথে অধিক সময় কাটানো।
* নিজের দায়িত্বগুলো চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে যত্নসহকারে পালন করতে সচেষ্ট হওয়া।
* বিনাস্বার্থে মানুষকে সহযোগিতার অভ্যাস গড়ে তোলা। এমনকি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনও আশা না করা।
* নিজের জীবনকে মূল্যায়ন করতে শিখা এবং অদৃষ্টকে সহজভাবে মেনে নেয়ার প্রবণতা গড়ে তোলা।
* হাসিখুশি ও প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করা। অন্যের মুখে হাসি এনে দেয়া।
* 24/7 কানে ইয়ারফোন গুঁজে দেয়ার অভ্যাস থাকলে পছন্দনীয় কোন কারীর তিলাওয়াত শোনা।
* অধিক পরিমাণে ইস্তিগফার ও অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াতের অভ্যাস করা। সকাল সন্ধ্যার যিকিরগুলো নিয়মিত করা। প্রতিরাতে ঘুমানোর পূর্বে সুরা মুলক ও সুরা বাকারাহ'র শেষ দুই আয়াত পাঠ করা।




পরিশেষে বলতে চাই, এই জগৎ সংসার যেরূপ ক্ষণস্থায়ী তদ্রূপ এর মাঝের সুখ দুঃখ স্বাদ আহ্লাদ স্বপ্ন সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী। তাই আনন্দে আত্মহারা হওয়া যেমন বোকামি তেমনি কোন কষ্ট যন্ত্রণায় বিমর্ষ হওয়াও সময়ের অপচয়। কোন অনুভুতিই দীর্ঘস্থায়ী নয়, এক সময় তা অবশ্যই কেটে যাবে। সুখ দুঃখের পুনরাবৃত্তি চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। শত চেষ্টা করেও সুখকর সময় গুলো স্থির করে রাখা যায় না আবার কষ্টের মুহূর্তগুলো তড়িৎ গতিতে পার করা যায় না। তারা নিজ নিজ গতিতে চলতে থাকে। তাই পরিস্থিতি যেরূপ আকারই ধারণ করুক, নিজের মানসিকতাকে কোন অবস্থাতেই বিহ্বল হতে দেয়া যাবে না। মনের গতিকে সর্বাবস্থায় শান্ত ও অবিচল রাখতে পারলেই পরিস্থিতি মনকে কাবু করতে পারবে না। depression বা হতাশার সময়টা হল একটা টানেলের মত। কষ্ট করে একটু সাহস রাখুন। ধৈর্য্য ধরে এই সময়টা অতিক্রম করতে পারলে দেখবেন এক আলোকিত পৃথিবী আপনার অপেক্ষায় আছে।



কোরআনের সবচেয়ে আশাজাগানিয়া একটি আয়াতঃ

"বলে দাও, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর সীমালংঘন/বাড়াবাড়ি করেছো, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু"।
(সুরা যুমার:৫৩)

Special thanks to:
Mansour al salimi
Al- wafi Dictionary
Universal dict box
Quran.com
Muslim Bangla app
Google research
Motivationaldoc







(١ محرم ١٤٤٥)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০২৫ দুপুর ২:৪৫
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×