১.
জুতোর ফিতে বাঁধছিলেন আলী আমজাদ। সুজুকি সাহেবের সাথে মিটিং আছে ন’টায়। সাতসকালে খেজুরে আলাপ! নাকবোঁচা বাট্লুগো নিয়া এই এক সমস্যা। পুরাডা দিন পইড়া আছে বাপ, তোর মিটিং করার সখ হইল নয়টায়! জাপানী বেকুব ; কাম-ই কইরা যাবি সারাটা জীবন। গজ্গজ্ করতে করতে উঠে পড়লেন আলী আমজাদ। আয়নায় দেখে নিলেন অবয়বটা--বাহ্, লুকিং নাইস! বেরুনোর আগে হেঁকে উঠলেন-“গেলাম সালেহা। বেল বাজলেই হুট্ কইরা দরজা খুইলা দিও না; কি-হোলে দেইখা নিবা। কোন ফকির হারামজাদায় যদি বেল বাজায়, কইষা চড় লাগাইবা!” ফকির-মিস্কিন দু’চোখে দেখতে পারেন না ভদ্রলোক।
সকালের রোদ গায়ে মাখিয়ে লম্বা কদমে চলছেন আলী আমজাদ। হঠাৎ ব্রেক কষলেন সোনা মিয়ার টং এর সামনে। কাঁচা পাত্তি দিয়া এক কাপ চা না হইলে তো চলতেছে না। হাতঘড়িটা দেখে নিলেন একবার। ম্যালা সময় হাতে। দ্যাই এক কাপ মাইরা।
-কড়া কইরা একটা চা বানাও মিয়া। কাঁচা পাত্তি।
-দিতাছি বস্। আছেন কেমুন?
-আর কইয়ো না মিয়া......
২.
-এই আপনার আসার সময় হল আমজাদ সাহেব?!
-কেন স্যার?! কোন সমস্যা?
-সমস্যা মানে?! পাক্কা ৫০ মিনিট লেট আপনি!
-মিনিট? সেটা আবার কি?
-আর ইউ জোকিং?! সিক্সটি সেকেন্ডস মেইক আ মিনিট!!
-সেকেন্ড?! ওটার কি কাজ?
-ঠাট্টা করেন আমার সাথে?! দেখি! দেখি আপনার ঘড়িটা! মিনিট, সেকেন্ড চিনেই আজ এ রুম থেক বেরুবেন!!
এক ঝট্কায় আলী আমজাদের বাঁ হাতটা টেনে নিলেন সুজুকি। “এই, এই কাঁটাটা.....”। একি! অপ্রস্তুত ভাব ফুটে উঠে সুজুকির চোখেমুখে। একটাই কাঁটা ভেতো বাঙ্গালটার ঘড়িতে---সেটা ঘন্টার। সময় যেন থমকে আছে সে ঘড়ির ডায়ালে।
বেচারা সুজুকি সাহেব। জগতের কত কিছুই যে জানেন না। আলী আমজাদরা বাঁচেন বছরে, মাসে। বড়জোর ঘন্টায়। মিনিটে-সেকেন্ডে বাঁচা আর তাদের হল কই?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১০ রাত ৮:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



