(১)
- বস্। মিল্কিওয়ে নামের ছুডুখাডু এক খান গ্যালাক্সির চিপা দিয়া একবার মাদারশিপ ছুটাইছিলাম। ইয়াদ আছে নি?
- হ ...ক্যান কইতাছো মিয়া?
- আইজকা এক খান রেডিয়ো সিগন্যাল পাইলাম ঐহান তন। যোগাযোগের চেষ্টা মনে লয়।
- হো হো হো হো...খ্যাক খ্যাক খ্যাক...মইরা গেলাম, মইরা গেলাম...
- খ্যাক খ্যাক খ্যাক...আর কইয়েন না বস্...আমি তো হাসতেই আছি...
- রেডিয়ো সিগন্যাল দিয়া যুগাযুগ......হো হো হো... ওডিন-৪৫, এইরাম কথা আর কইয়ো না মিয়া...গুনা হয়, গুনা হয়...হো হো...
- হে হে হে...হাসাইতে বড় ভালু লাগে বস্। তা, সিগন্যাল ডিকোড করুম নি?
- হুর মিয়া। হ্যাগো লগে আবার কি যুগাযুগ?! সিগন্যাল -লোকেশন ট্র্যাস্ করো। জায়গা সুবিধার হইলে কয়দিন মজা মাইরা আসুম।
- কবে ওই কাম সারছি!
- কি পাইলা?
- মাঝারি সাইজের একখান প্ল্যানেট। সবুজ আর উর্বর কিসিমের। গ্যলাক্টিকা ঘাইটা আরো কিছু ইনফো পাইছি। কমু নি?
- খাড়াও খাড়াও! সবুজ নি কইলা?
- হ বস্।
- আরেক খান সবুজ গ্রহে গেস্লাম আড়াই মিলিয়ন বছর আগে। মুনে আছে নি মিয়া?
- কি কন বস্? ভুলন যায়?! ...বড় বড় পিস্ কইরা মাখো মাখো ধাঁছে রানছিলো ইম্পেরিয়াল এরানার বাবুর্চি কবুরা-৫২! আহা! কি সোয়াদ!! এহনো মুখে লাইগা আছে।
- জানোয়ার গুলার গায়ে তেল আছিলো মিয়া। কাবাব খানও হইছিলো সিরাম। হেরাও তো রেডিয়ো সিগন্যাল পাঠাইছিলো ইয়াদ হয়!
- হ হ......যুগাযুগ...রেডিয়ো সিগন্যাল ...হো হো হো...
- খ্যাক খ্যাক খ্যাক...হাসি থামাও মিয়া...খ্যাক খ্যাক...কামে লাগো এইবার। ফোর্থ ডাইমেনশন ছেদা কইরা চল, হাইপার ড্রাইভ লাগাও।
- এহুনি লাগাইতাছি বস্!
- আমি শিপ-লেভেল ১২০০ তে গেলাম। এক খান ২৯৪ মাত্রার সিউডু-কমপ্লেক্স ইকুয়েশন সল্ভ করন লাগবো। ওহ...এক খান কথা। ইনহ্যাবিটেন্টগো সর্বোচ্চ বুদ্ধিমত্তার লেভেল কত?
- আমগো ইন্টেলিজেন্স ম্যাপারে তো লেভেল জিরোর নিচে কিছু নাই। তাই কওন যাইতেছে না। আমারে জিগাইলে কমু -২০০।
- হো হো হো হো... -২০০...যুগাযুগ...হো হো হো...
১২২ টা ট্যান্টাকল নিয়ে গদাইলস্করি চালে উঠে পড়ল ম্যাগ্নাম-৫।
(২)
সচেতনতা মাত্রার সপ্তম স্তরে গিয়ে ম্যাগ্নাম-৫ এর সাথে ট্যালিপ্যাথিক যোগাযোগ করল ওডিন-৪৫।
- বস্।
- কি হইলো মিয়া আবার!
- খবর সুবিধার না। এই স্পিসিস গুলারে আমগো ডাইজেস্টিভ সিস্টেম সহ্য করতে পারবো না। এই টাইপের অরগানিক স্ট্রাকচার আমগো খাদ্য হওনের যোগ্য না।
- হায় হায়! কয় কি?! এইদিকে আমি সিসিলি-৩৪ থিকা থার্ড ডাইনেস্টির বাবুর্চি খাইখো-৩১ রে উড়াইয়া নিয়া আইছি! বিশিষ্ট ভোজনরসিক খ্যামার-২৮ রেও দাওয়াত দেওয়া হইছে!!
- কপাল খারাপ বস্।
- কপালের নাম গোপাল! কি আর করা। তা, এনভায়রনমেন্ট কেমুন? মাখদুন গ্রহের ত্যালত্যাইল্লা স্পিসিস টার ব্রিডিং করা যাইবো নি?
- তা যাইবো।
- তাইলে আর কি। বুরবুক গুলার ডি-এন-এ স্যাম্পল লও, ওইটা এনালাইসিস কইরা একখান পারফেক্ট এক্সটিংশন-অর্গানিজম তৈরি কইরা বাতাসে ছাইড়া দাও। অন্য কোন স্পিসিস এর যাতে কোন ক্ষতি না হয়। মাখদুনের জানোয়ার গুলার ফিডিং এর কামে লাগতে পারে।
- -২০০ বুদ্ধিমাত্রার কিছু জানোয়াররে মাইরা কি লাভ বস্?
- প্ল্যানেট-X এর ছয়-পাইয়া গর্দভ গুলার মতন কথা কইছো ওডিন-৪৫। কোন গ্রহ কব্জা করনের পয়লা শর্ত হইলো হাইয়েস্ট ইন্টেলেকচুয়াল লেভেলের স্পিসিস টারে ঝাইরা ফেলা। হ্যাগো ক্ষ্যামতা না থাকলেও ইগো থাকে। ইগো জিনিসটা ভালা না মিয়া।
- ভুল হইছে বস্। এহনি কাম সারতাছি। ২৪ সেকেন্ড সময় দেন।
- হ, যাও মিয়া। মুড টাই অফ কইরা দিলা...
(৩)
লাশের স্তুপ এখানে-ওখানে। এক, দুই, তিন, ...হাজার...অজুত...অগন্য। একটা ম্যাগ্নোলিয়া ঝোপের পাশে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন সোবহান সাহেব। দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসছে, জীবণ প্রদীপ নিভে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। কারা যেন লাশ মাড়িয়ে আসছে – অস্পষ্ট দেখতে পেলেন মানুষ টা। একটু দূরত্ব রেখে থামল ওরা। সোবহান সাহেবের জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হল--কেন? কি দোষ ছিল আমাদের?
- বস্। সচেতনতা মাত্রার প্রথম স্তরে আসেন। জানোয়ারটা কিছু জিগাইতাছে মনে লয়।
- পন্ডিতি কইরো না মিয়া। ওইডার প্রশ্ন বহুত আগেই পইড়া ফালাইছি। জওয়াব ভি দিয়া দিছি।
- কি জওয়াব দিছেন বস্?
- ঠিক জওয়াব না, একডা পাল্ডা প্রশ্ন করছি।
- কি বস্?
- তেলাপোকার কি দোষ, কি দোষ ইঁদুরের? খ্যাক, খ্যাক, খ্যাক............
[নাসা এক্সট্রা-ট্যারিস্টোরিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (মহাজাগতিক বুদ্ধিমত্তা) উদ্দেশ্যে নিয়মিত বেতার বার্তা পাঠায়। এসব বার্তায় থাকে মানব জাতির পরিচয়, বন্ধুত্বের আহ্বান আর এই সবুজ গ্রহের অবস্থান। এমনি একটা ‘রেডিয়ো সিগন্যাল ফর ETI’ নিয়ে লেখাটা।]
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



