দিনাজপুর গণপূর্ত বিভাগে টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র হাতে প্রতিপক্ষকে ধাওয়া করছেÑ শুক্রবার যুগান্তরসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ ছবি দেখে যে কেউ উদ্বিগ্ন হবেন। যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনের শিরোনামÑ ‘পঞ্চগড়ে টেন্ডার নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ সংঘর্ষে নিহত ১ : মহাসড়ক অবরোধ’। টেন্ডার দাখিল করায় চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে ব্যবসায়ী খুন হওয়া সংক্রান্ত অন্য একটি খবর রয়েছে আগের দিনের যুগান্তরে। এসব ঘটনায় প্রশ্ন জাগে, টেন্ডারবাজি কি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে? প্রধানমন্ত্রী এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়ায় টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সদিচ্ছা প্রকাশ পায়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বলে বিবেচিত ছাত্রলীগ-যুবলীগের একশ্রেণীর নেতাকর্মীর আচরণে তিনি যে অসন্তুষ্ট, সেটা প্রকাশে প্রধানমন্ত্রী কখনও দ্বিধা করেননি। যুগান্তরের আরেক খবরে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘গুটিকয় লোকের কারণে দল বিব্রত হচ্ছে, আমিও বিব্রত। এসব চলবে না।’ বৈঠকে তিনি টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। তার এ অবস্থানকে আমরা সাধুবাদ জানাই। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে এর সাংগঠনিক নেত্রীর পদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েও প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রে কঠোরতার পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক, এরপরও বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী নামধারীদের টেন্ডারবাজি ও সংঘাতে জড়িয়ে পড়া বন্ধ হয়নি। এ বিষয়ে সরকারের কঠোর মনোভাবের কারণ বোধগম্য। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এসব ঘটনায় সরকারই সবচেয়ে বেশি বিব্রত হচ্ছে। ক্ষুণœ হচ্ছে তার ভাবমূর্তি। প্রশ্ন হল, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে তার অবস্থান স্পষ্ট করে দেয়ার পরও টেন্ডারবাজি বন্ধ হচ্ছে না কেন? বৈধ পন্থায় টেন্ডার দাখিল করতে গিয়ে অনেককে অপদস্থ এমনকি খুনও হতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরও কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস কোথায় পায়? প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাই কি এজন্য দায়ী? তারা কি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধান্বিত? সেরকম কিছু হয়ে থাকলে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেই এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। এটা ঠিক, ছাত্র সংঘর্ষে কেবল ছাত্রলীগই জড়িয়ে পড়ছে তা নয়। ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরও বিভিন্ন স্থানে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার জন্য দায়ী। তবে সাধারণ প্রবণতা হল, সব সময় ক্ষমতাসীনদের সমর্থনপুষ্ট সংগঠনই থাকে শিক্ষাঙ্গনে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার পুরোভাগে। টেন্ডারবাজির বেলায় এটা আরও বেশি প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায়ও লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে জড়িয়ে পড়ে সংঘাতে। যেমন, দিনাজপুর গণপূর্ত বিভাগে ১৪ কোটি টাকার টেন্ডারের ৪০ লাখ টাকা ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগের দু’গ্র“প সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। পঞ্চগড়ে পুকুর লিজের টেন্ডারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই গ্র“প। সেখানে অবরোধ-ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে। অর্থাৎ এসব ঘটনা জনদুর্ভোগেরও কারণ হচ্ছে। জনগণ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে বিপুলভাবে জয়যুক্ত করে। এ প্রেক্ষাপটে জনদুর্ভোগের কারণগুলো সরকারকে দৃঢ়তার সঙ্গেই মোকাবেলা করতে হবে। টেন্ডারবাজি বন্ধে এর প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনার যে চিন্তাভাবনা রয়েছে নীতিনির্ধারকদের, তার দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারের সক্রিয়তাই কাম্য। সরকার ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার অংশ হিসেবেও এ প্রক্রিয়ার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন দরকার। প্রয়োজনে টেন্ডারের বিকল্প ব্যবস্থাও নেয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে সমঝোতার মাধ্যমে ১২শ’ মেগাওয়াটের ভাড়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসানোর সিদ্ধান্তটি দৃষ্টান্ত হতে পারে। দেশে দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডারবাজির যে সংস্কৃতি চলে আসছে, তা বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। যে উপায়েই হোক, এ লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।
আলোচিত ব্লগ
আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?


৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন
এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন
মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)
ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)
০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।
ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।