somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চুরির ভাগ ও একজন বালিশ মাসুদ

২৪ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইদানিং সোশ্যাল মিডিয়ায় রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মাসুদের কান্ড নিয়ে অনেক লেখা লেখি হচ্ছে আমি মনে করি বিষয়টা অন্ধের হাতি দর্শনের মত হয়ে যাচ্ছে । তিনজন অন্ধকে হাতি স্পর্শ করে তাদের হাতি সম্পর্কে বলতে বলা হয়েছিল একজন অন্ধ যে কান ধরেছিলো সে বললো হাতি বড় কলা পাতার মত , যে পা ধরেছিলো সে বললো মোটা খুঁটির মত যে লেজ ধরেছিলো সে বললো রাশির মত অর্থাৎ তিনজনের মূল হাতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই।
মাসুদ ও হাতির একটা অংশ মূল হাতি আরো অনেক বড় ও বিশাল । বালিশের দাম ও বালিশ তোলার খরচ বৃদ্ধির কারণ মাসুদ একা না তার সাথে আরো অনেকে জড়িত তাদের ভাগ মিলায়ে এই হিসাব । এই বালিশ তোলার সাথে আরো অনেকে ও অদৃশ্য ভাগাভাগি আর ক্ষমতাধরেরা জড়িত । যে কোনো ঠিকাদারি কাজে যেমন প্ল্যানিং এর লোকেরা আগে টাকা নিয়ে নেয় জব বানানোর জন্য চুরির হিসাব শুরু হয় সেখান থেকে । প্ল্যানিং এ থাকে বালিশে কার কত টুকু ভাগ যেমন সচিবালয়ের ভাগ মন্ত্রণালয়ের ভাগ স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করার ভাগ ,টেন্ডার এ অন্যেরা যাতে অংশ না নেয় তাদের ভাগ ,ঠিকাদারের ভাগ ,টেন্ডার এর সংবাদ গোপন রাখার ভাগ , একাউন্টস অফিসের ভাগ ,বিল ছাড়ানোর জন্য ভাগ ,এবং ইঞ্জিনিয়ার এর ভাগ । প্রায় প্রতি ডিপার্টমেন্ট এ এই ভাগাভাগি আছে ছিল থাকবে কারণ বালিশের ভাগের উপরি নির্ভর করে কাজ , ভাগ না দিয়ে কাজ করবে এই কথা বোকা ছাড়া কেউ চিন্তাও করতে পারে না । ঠিকাদারি কাজ পাওয়া থেকে কাজ উঠানো পর্যন্ত ক্ষমতা ও ভাগাভাগি আমাদের দেশের একটা নিয়মে পরিনিত হয়ে গেছে ।যার যত উপরে হাত সে তত বড় কাজ পাবে বা করবে এটাই রেওয়াজ । বালিশ মাসুদের মত শত শত মানুষ এই মহা উন্নয়ন ও পকেট ভর্তি করণের কাজে লিপ্ত আছে । আপনি অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজে একজন সৎ এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বা এক্সেন পাবেন কিনা সন্দেহ । এমনকি লাল রঙের মেহেদী লাগানো দাড়িওয়ালা থেকে ক্লিন সেভ , প্রত্যেকের লক্ষ্য বালিশের তুলা। দুই চারজন সৎ যা ও আছে তাদের কোনো দাম নেয় কারণ উপরের চাপের কাছে নতি শিকার না করলে তাদের চাকুরী করে বৌবাচ্চা লালন পালন করার উপায় ও থাকবে না । এই যে তুলা ভাগাভাগি এর মুলে কিন্তু সিস্টেম , মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে যাই বলুক সুযোগ পেলে দুর্নীতি করেন না এমন লোক আজকাল পাওয়া খুব মুশকিল । তাই ঘুনে ধরা সিস্টেম এর ভিতরের কিছু চিত্র দেখে আমরা অন্ধের হাতি দর্শনের মত চিৎকার করছি আসল দুর্নীতির চিত্র আরো অনেক বিশাল ও ভয়াবহ । চিন্তা করুন বালিশে যদি এই চুরি হয় বিল্ডিং বানাতে কেমন চুরি হয়েছে ? আসলে ডাকাতি কে এখন চুরি বলা হয় ।প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট এ ডাকাতি হচ্ছে , দুই একটা কেস জন সমূক্ষে আসলেও অনেক বড় ডাকাতি ধামাচাপা দিয়ে কাজ চলছে । সরকারের সদিচ্ছার অভাব আছে , মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এই জন্য মানুষ সরকারের কথায় আস্থা রাখতে পারছে না । মহা দুর্নীতির দেশ পাকিস্তানে ইমরান খান এসে দুর্নীতি প্রায় শুন্যের কোঠায় নিয়ে এসেছেন, আমাদের দেশে কেন হবে না ? কারণ দুর্নীতির সাথে বর্ণচোরা দুর্নীতিবাজ রা ক্ষমাতসীন দলের নেতা নেত্রীর সাথে লিংক বা যোগাযোগ রাখেন ।ভাগ অনেকেই পায় তাই দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না । দুর্নীতি তখনি বন্ধ হবে যখন সরকার সরাসরি জনগণ কে সাথে নিয়ে দুর্নীতি বন্ধে সরাসরি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে ।ভুক্তভোগী জনগনের চেয়ে সচেতন ও বড় কোনো সংস্থা হতে পারে না । জনগণ ই পারে যেখানে দুর্নীতি সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দরকার শুধু সরকারের সদিচ্ছা আর সহযোগিতা । সরকার কোটি কোটি টাকা ঢালছে দেশের উন্নয়নের জন্য আর সেই টাকা লুটে পুটে খাচ্ছে চাটার দল । প্রত্যেক সরকারি ডিপার্টমেন্ট এখন ডাকাত গোছের কর্মকতা নিয়ন্ত্রণ করছে , ফলে সরকার টাকা খরচ করলেও সেই বরাদ্দ চলে যাচ্ছে চোর ডাকাতের পকেটে । কিছু সৎ কর্মকর্তা যে নেই তা নয় কিন্তু তাদের কথায় কেউ কান দেয় না ।দুর্নীতিবাজরা দলের লেবাস লাগিয়ে বিরাট দলের সমর্থক সেজে সরকারকে ধোঁকা দিয়ে নিজের উন্নয়ন করছে ফলে সরকারের ভালো ভালো উদ্যোগ মানুষের জন্য কোনো সুফল আনতে পারছে না । দুর্নীতিবাজ এই দলবাজদের চিহ্নিত করা সহজ তাদের নিজ নাম আর আত্মীয় স্বজনের নামে সম্পদের হিসাব নিলে থলের বিড়াল বের হয়ে যাবে । এদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে জেলে ভোরে রাখলে অন্যেরা আর সরকারকে বিব্রত করতে পারবে না ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৫:১৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×