somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শহীদ মিনার ও নামাজঃ এর কোন শিরোনাম নেই।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু লোক শহীদ মিনারে নামাজ পড়ছেন,
তারা কি কোন রাষ্ট্রবিরোধী, সমাজবিরোধী কিংবা অনৈতিক কাজ করছেন, যা কোন উপায়ে কোন মানুষের ন্যুনতম ক্ষতি করতে পারে?
বা তারা কি কোন রাজনৈতিক সভা সমাবেশ করছে অথবা জংগী হামলার ছক কষছে?

উত্তরঃ অবশ্যাম্ভাবীভাবে "না"।

তাদের হঠাৎ করে শহীদ মিনারে নামাজ পড়তে দেখে আমার কৌতুহলী মনে কিছু প্রশ্ন আসেঃ

ঐ শহীদ মিনারের আশেপাশে কি কোন মসজিদ নেই (তারা বাধ্য হয়ে শহীদ মিনারে নামাজ পড়তে আসছে)?

বাংলাদেশে এমন কোন গ্রাম নেই, যেখানে একাধিক মসজিদ নেই, এমন কোন বন্দর নেই যার ন্যুনতম ১০ মিনিট হাটা দূরত্বে মসজিদ নেই। উক্ত শহীদ মিনারের নিকটবর্তী অবশ্যই মসজিদ আছে; তা হঠাৎ করে মসজিদ রেখে শহীদ মিনারে নামাজ পড়তে হল কেন?

এর উদ্দেশ্য কি নামাজ পড়া নাকি অন্য কিছু?

এই ধর্মীয় মৌলভী গোষ্ঠীই প্রথমে ফতোয়া দিল, শহীদ মিনারে ফুল দেয়া পূজার শামিল।
সুবিধা করতে পারল না, অর্থাৎ পাবলিক এই তত্ত্ব খেল না।
এর পরে ফতোয়া দিল, শহীদ মিনারে ফুল না দিয়ে শহীদদের জন্য দোয়া করলে তো হয়।
(যেমনটা, পহেলা বৈশাখ আসলেই শুরু হয়, “দিন শুরু হোক দুই রাকাত নফল নামাজ দিয়ে”। নামাজ পড়তে তো কোন বাধা নেই)।
না, এতেও কাজ হল না; তো চল শহীদ মিনারে গিয়ে নামাজ পড়ি।

তাদের যদি নামাজ পড়ারই ইচ্ছে থাকত, তবে তারা মসজিদেই নামাজ পড়তে যেত। তাদের উদ্দেশ্য ছিল show off করা, তারা এতে ২০০% সফল।
আর তাদের যদি দোয়া করার ইচ্ছাই থাকত, তবে তারা মসজিদে গিয়েই করতে পারত, শহীদ মিনার প্রাংগনে বড়জোর দরূদ পাঠ ও মোনাজাত করতে পারত।
এতে তাদের দুটো লাভ হলঃ
প্রথমত, এতদিন ধরে তারা যে শহীদ মিনারে ফুল দেয়াকে মূর্তি পূজার সাথে তুলনা করে ইমেজের ক্ষতিসাধন করেছিল, সাধারন মানুষের কাছে তা recover করা গেল।

দ্বিতীয়ত, তাদের এতদিনের উদ্দেশ্য, শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করাকে অপ্রয়োজনীয় বলে সাব্যস্ত করাঃ তারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, “আমরাই সঠিক”।

আচ্ছা এই গোষ্ঠির প্রভাতফেরি, ১লা বৈশাখের মংগল শোভাযাত্রা নিয়ে এত আপত্তি কেন?

এই যে তারা শহীদ মিনারে নামাজ পড়ে তাদের নিজস্ব তরিকা অন্যদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে এটাই কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা?

কই, কেউ তো এদেশে কোন ধর্মীয় আচরণ কিংবা উৎসবের বিরোধীতা করছে না, সকলেই ঐ সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহন করছে।

অনুরুপভাবে, বইমেলা প্রাঙ্গন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের দূরত্ব খুব বেশী না। পায়ে হাটা পথ। ইচ্ছে থাকলেই বইমেলা থেকে পায়ে হেটে গিয়ে মসজিদে নামাজ পড়া যেত। এমনকি বুক স্টলের কোন কর্মচারি যদি নামাযের জন্য বাইরে যেতে চাইত, তাতেও কোন বাধা আসত না। ওতে তো আর show off হবে না।

আমি জানি, এইবার আপনি আমার বক্তব্যের বিরোধীতা করবেন, ইসলাম বিদ্বেষী বলতে পারেন, নাস্তিক ট্যাগও দিতে পারেন, তবে আপনি নিশ্চয়ই একটি বিষয়ে একমত হবেন, যারা বইমেলা প্রাংগনে নামাজ পড়েন, তারা কুরান সম্বন্ধে জানেন।

Surah Al-Araf, Verse 55:
ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ
তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাক, কাকুতি-মিনতি কর সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
যেখানে পবিত্র কোরানে নির্জনে, সংগোপনে প্রার্থনা করার কথা বলা আছে, এবং প্রার্থনা করার মত উপযোগী স্থান আছে, সেখানে বই মেলার মত কোলাহলপূর্ণ স্থানে নামাজ পড়াকে যদি কেউ সন্দেহের চোখে দেখে…

অনেকটা শিবির যেমন বিজয় দিবসে ব্যনার করেছিল, “স্বাধীনতা অর্জন করেছি, স্বাধীনতা রক্ষা করব।“

অনুরুপভাবে, ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে ইসলামিকরণের প্রচেষ্টা চলছে, থাক না এটা বাংগালী স্টাইলে, ২১ শে ফেব্রুয়ারি তো ইসলামের কোন ক্ষতি করছে না, শুধু শুধু এটাকে নিয়ে টানাটানি কেন?






সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৫১
১৫টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×