অভিশপ্ত এই খুনীদেরও চিনতে হবে ঘৃণাভরে...
প্রশ্নটা নিজেকেই করেছিলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীদের নাম বলতে গেলে ঠোটের আগাতেই থাকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের কর্মকাণ্ডও। তারা ঘাতক এবং দালাল। কিন্তু যাদের হয়ে এসব করেছে তাদের কজনকে চিনি! বিব্রতকর এক উপলব্ধি, অল্প ক'জনের নাম আমার জানা। পরিচিত কয়েকজন সমমনাকে অনেকটা কুইজের ঢংয়েই জিজ্ঞেস করেছি, তাদের অবস্থাও আমারই মতো। ঠিক না, একদমই ঠিক না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ, চার লাখ বীরাঙ্গনা ও এক কোটি দেশত্যাগীর দায় শুধু রাজাকার-আল বদরদের নয়। সে লক্ষ্যেই এই তালিকা। এদের কথাও জানতে হবে। এদেরকেও চিনতে হবে। আর কিছু না হোক ঘৃণাভরে অভিশাপ তো দিতেই পারি...
নাটের গুরু যেসব জেনারেল :
১. জেনারেল ইয়াহিয়া খান : ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। রবার্ট পেইনের লেখা ‘ম্যাসাকার’ বইতে উল্লেখ আছে "Kill three million of them," said President Yahya Khan at the February conference, "and the rest will eat out of our hands." অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়েছে তার আদেশ।
২. জেনারেল আবদুল হামিদ খান : ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চিফ অফ আর্মি স্টাফ, সেনাপ্রধান। বাংলাদেশে গণহত্যার অন্যতম রূপকার। জেনারেল হামিদ নামেই বেশি পরিচিত। অপারেশন সার্চলাইটের বাস্তবায়নে সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন।
৩. লে. জেনারেল গুল হাসান খান : ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ। বাংলাদেশের গণহত্যার আরেক রূপকার। স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে চট্টগ্রামে উপস্থিত থেকে কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন।
৪. লে. জেনারেল টিক্কা খান : ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে সেনা প্রধান ছিলেন। পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি গণহত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা রাখেন ‘বেলুচিস্তানের কসাই’ নামে কুখ্যাত টিক্কা।
৫. লে. জেনারেল আমির আবদুল্লাহ নিয়াজি : বাংলাদেশের গণহত্যার অন্যতম বাস্তবায়নকারী এবং পরিকল্পক। ১৬ ডিসেম্বর তার নেতৃত্বেই আত্মসমর্পন করেছিল পাকবাহিনী।
৬. লে. জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খান: টিক্কা খানের আগে পূর্ব পাকিস্তানে গর্ভনরের দায়িত্ব পালন করেছেন।
৭. মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী : ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ছিলেন। অপারেশন সার্চলাইটের খসড়া করেছিলেন, সেইসঙ্গে কুখ্যাত আলবদরদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক।
৮. মেজর জেনারেল আবু বকর ওসমান মিঠা : গোটা বাংলাদেশ জুড়ে হত্যা আর ধ্বংসের তাণ্ডবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। মার্চের শুরুতে তাকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে নিয়ে আসা হয় স্রেফ তার খুনী মানসিকতার জন্য।
৯. মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা : অপারেশন সার্চলাইটের অন্যতম বাস্তবায়ক, সারা দেশে এই হত্যাযজ্ঞ সফলভাবে চালানোর দায়িত্বে ছিলেন। সম্প্রতি তার একটি স্মৃতিকথা নিয়ে প্রথম আলোর লাফালাফি ছিলো দেখার মতো, সবচেয়ে আশ্চর্য্যের ছিলো তার একাত্তরের ভূমিকা নিয়ে একটা লাইনও লেখেনি পত্রিকাটি
১০. মেজর জেনারেল আকবর : ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর ডিরেক্টর জেনারেল ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে পাকবাহিনীর গণহত্যায় ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন।
১১. মেজর জেনারেল রহিম খান : ১৪ পদাতিক ডিভিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ময়মনসিংহ-ঢাকা-যশোরের গণহত্যার জন্য দায়ী ছিলো তার অধীনস্থ সেনারা। ঢাকা-ভৈরব বাজার রেলওয়ে লাইন ধরে আশপাশের সব ধরণের হত্যা-ধর্ষণ-লুটপাট চলেছে তার নির্দেশে।
এই ছবিতে এই কুখ্যাতদের ছয়জন আছে। উপরে বা দিক থেকে ইয়াহিয়া, আবদুল হামিদ খান, টিক্কা খান, নিয়াজী, রাও ফরমান আলী এবং খাদিম হোসেন রাজা

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


