ক্লাস থ্রি থেকে টেন - এই দীর্ঘ সময়টি আমি ধানমন্ডি গভঃ বয়েজ হাই স্কুল-এ কাটিয়েছি। (ব্যাচ ১৯৯৭। কেউ আছেন নাকি ব্যাচমেট?)
ক্লাস থ্রি-তে যখন ভর্তি পরিক্ষা দেই তখন মনে আছে "ঢাকার সেরা দু'টো স্কুল" বলতেই সবাই বুঝতেন "গভঃ ল্যাব" আর "ধানমন্ডি বয়েজ"। আস্তে আস্তে সময় পাল্টাতে লাগলো। আমি টেনে উঠতে উঠতে ধানমন্ডি বয়েজের আর সেই আগের জৌলুস রইলো না। কেনো তা নিয়ে বিবিধ মতবাদ আছে। তবে বেশির ভাগই প্রাক্তন প্রধানশিক্ষিকা এবং তার চাটুকার ক'জন শিক্ষককে এর জন্য দায়ী করে থাকেন।
এসএসসি-র ফলাফল দিলেই আমি সংবাদপত্রে সেই সংক্রান্ত লেখাগুলো খুব মন দিয়ে পড়ি। আমার খুব ভালো লাগে। মনে হয় কি সব দিন কাটিয়ে এসেছি - সেই স্কুল! কত ঘটনা, কত গল্প, কত বন্ধু। ছাত্র-ছাত্রিদের হাসিমুখ দেখতে ভাল্লাগে। আর যারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি তাদের জন্য খুব কষ্ট হয়। আমাদের দেশে এমন একটা ধারণা দেয়া হয় যে এসএসসি ফেল মানেই "লাইফ শেষ"। পাড়া-মহল্লায় সবাই আলাদা চোখে দেখে। বড়রা বাজে কথা শোনান। এই কষ্টের মধ্যে দিয়ে বাচ্চা ছেলে-মেয়ে গুলোকে যেতে হবে ভাবলেই মনটা কেমন ভারী হয়ে যায়।
সংবাদপত্রের খবরে আরেকটি জিনিস খেয়াল করি। সেটি হলো আমার স্কুলটি কেমন করলো। বেশ কয়েক বছর থেকেই খেয়াল করছি আমার স্কুল যেনো পুরানো জৌলুস আবার ফিরে পাচ্ছে। গত ৪/৫ বছর ধরেই ঢাকা বোর্ডের সেরা স্কুল তালিকায় ধানমন্ডি বয়েজের নাম দেখছি। এ বছরের ফলাফলের কথা আর কি বলবো! ২৮৯ জনের মধ্যে ২৮৯ জনই উত্তীর্ণ, এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১৩ জন। আমার তরফ থেকে আমার প্রাক্তন স্কুলটির প্রতিটি কর্মচারি, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র ও অবিভাবককে শুভেচ্ছা। আমার স্কুল আবারও আমাকে গর্বিত করেছে!
সব শেষে ভালোবাসা সারা দেশে যারা উত্তীর্ণ পারেনি কিংবা খুব খারাপ করেছে, তাদেরকে। তোমরা তোমাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করেছো। তোমাদেরকে হয়তো এমন বলা হয়েছে, এমন শেখানো হয়েছে - এই পরীক্ষাটি খারাপ মানেই জীবন শেষ। কথাটি ঠিক নয়। এই পরীক্ষার পরেও জীবনে আরও অ-নে-ক পরীক্ষা আসবে। সেসব পরীক্ষায় হয়তো তুমিই সবাইকে টপকে যাবে। মানুষ যত যাই বলুক, নিজের উপর বিশ্বাস হারাবে না।
সবাইকে ধন্যবাদ!
ব্যবহৃত ছবি: ধানমন্ডি গভঃ বয়েজ হাই স্কুলের প্রবেশদ্বার
ছবি কৃতজ্ঞতা: DGBHS Alumni Association (DExSA)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১:৫৫