একটা গভীর শীতকাল বুকের ভিতর শোয়ায়ে রেখে
আমি চলে যাচ্ছি। এই রকম চলে যেতে হয়…
আমার যাওয়ার পথ, এইসব বিষাদগ্রস্থ রেল লাইন
ধরে হাঁটতে হাঁটতে অনেক অনেক বছর পর তোমার
সাথে দেখা। সেইসব দেখাদেখি আর ব্যথাতুর
শরৎকালগুলা কি নিদারুণ ব্যস্ততায় আমরা পার
হইয়া আসছি! আমাদের সেইসব রিকশাযাত্রা আর
আধামরা বেলিফুলের স্মৃতি বুক পকেটে চুপচাপ
মুড়ায়ে রেখে আমার আবার রেললাইন শুরু হলো…
প্রথম দেখার মতো, প্রথম ঠোঁট ছোঁয়াছুঁয়ির মতো
প্রথম শারীরিক উত্তাপের মতো অনেকগুলা উদ্বিগ্ন
বসন্তকাল আমরা হারায় ফেলতে যাচ্ছি…
আমরা নির্বিঘ্নে হারায় ফেলতে যাচ্ছি আমাদের
পারস্পরিক সম্মোধনবাচক শব্দ! এইসব শব্দ তো
মানুষেরা প্রতিদিন হারায় ফেলে, তবুও, কোনো
একদিন ঢাকার চাকায় কিংবা চক্রাকার সার্ভিসে
ফিরতে ফিরতে আমাদের কি সেইসব ব্যক্তিগত
ব্যথা আর ব্যথাতুর নামগুলা মনে পড়বে না?
আমাদের সেইসব ফিরে আসা, ফিরে যাওয়া আর
সেইসব অকারণ অভিমান--সেইসব দ্বিধাগ্রস্থ চোখ
নিয়া মানুষের মতো একটা চোখের কিনারে গিয়া
দাঁড়াবার ইচ্ছা হয়, তবুও, দাঁড়ানো হয়ে উঠে না!
আমরা ফিরতে থাকি সেইসব পুরাতন রেল লাইন
ধরে, যেইসব রেল লাইন পৃথিবীর আদিমতম
বসন্তকালগুলা গুলায়া খেয়ে চুপচাপের মতন
আঁকাবাঁকা হইয়া শোয়ে আছে। সেইসব ব্যথাতুর
বালিহাঁস আর বৌমুনিয়াদের পথ ধরে আমরা
ফিরে যেতে থাকি। সেইসব পুরাতন রেল লাইন…
আমাদের তবুও মানুষের মতো একটা চোখের
কিনারে ফিরে গিয়ে পাশাপাশি দাঁড়াবার ইচ্ছা হয়,
তবুও, আমাদের আর ফিরে যাওয়া হয়ে উঠে না!
০৯ ডিসেম্বর, ’১৯। অঘ্রানের রাত।
মিরপুর, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৮