এবার গল্প বলি ছোটবেলার বন্ধুদের। আমরা ছিলাম পাঁচ বন্ধু। রকেট, রাজীব, আদনান, রাহাত আর আমি। "বন্ধু বলতে কি বোঝায়" তা বোঝার অনেক আগে থেকেই আমরা বন্ধু। সাইকেল চালানো শেখা, সাঁতার শেখা, প্রথম সিগারেট খাওয়া, প্রথম প্রেমের অনুভূতি শেয়ার করা, পানির ট্যাঙ্ক এর উপর উঠে আকাশে কাছাকাছি চলে যাওয়া, নাটক (থিয়েটার) করা, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই তোলা...... আরও কত কিছু... সব মনেও পড়ছে না। কখনো রবার্টসনগঞ্জ কখনো ঘাঘট নদী, কখনো কারমাইকেল কলেজ তো কখনো জেলা পরিষদ ভবন। আর টাউন হল চত্বর তো আছেই।
ওহহো আমাদের শুরু টা তো বলা হল না। আমরা সবাই রংপুর জিলা স্কুল এ পরতাম। আমি, রাজীব, রাহাত আর আদনান থ্রী তে ভর্তি হয়েছিলাম আর রকেট সিক্স-এ। তো থ্রী থেকে ফাইভ পর্যন্ত পাড়ার ছেলেরাই ছিল খেলার সাথি। তখন ওদের শুধু ক্লাস-এর ছেলে হিসেবে চিনতাম। সিক্স-এ উঠে আমাদের দেখা হল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আসরে। শুক্রবার করে সকালে। রকেট আসতো হাফ প্যান্ট পরে। আমাদের মধ্যে মিলটাও খুব তাড়াতাড়ি হয়ে গেল। আমরা স্কুল-এর পড়াশুনা ছাড়া আর সব ব্যাপারে খুব সিরিয়াস ছিলাম। প্রতিদিন সন্ধ্যায় একসাথে হতাম। কিভাবে কিভাবে জানি প্রতি সন্ধ্যায় দেখা হত। রাহাত ছাড়া আর কারও বাসায় ফোন ছিল না। তারপরও দেখা হত। মেনটর অপু ভাই, সেলিম ভাই অথবা টুকু ভাইএর সাথেও দেখা হত। সৈয়দ আরিফ ভাই এর সাথেও দেখা হত। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে 'প্রতিদিন দেখা হওয়া'।
গল্পের প্রত্যেকটা চরিত্রকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলতে পারবে না কিভাবে তারা মিলত প্রতি সন্ধ্যায়। আজও আমরা বন্ধু আছি। মেনটরদের কথা বাদ দিলাম। কিন্তু আমরা পাঁচজন কবে আবার একজায়গায় মিলতে পারব, পাঁচজনের কেউ জানিনা। প্রত্যেকের আজ শুধু ল্যান্ড ফোন না, মোবাইল ফোনও হয়েছে। পাঁচজনের চারজন ঢাকায় থাকে। কাউকেই বাবা-মার কাছে হাত খরচের জন্য ঘ্যাং ঘ্যাং করতে হয়না। তারপর-ও আমাদের দেখা হয় না। কত বছর হল? ১,২ না ৮,৯? আগে তো ৮/৯ ঘণ্টা পর দেখা হত। স্কুল এর বারান্দায় বা অ্যাসেম্বলি তে।
বন্ধু, তোরা ভালো থাকিস। শুনলাম রকেট-ও খুব শীঘ্রই ঢাকা-এ আসছে। জানি দেখা হবে। লিজেন্ড সিগারেটটাকি পাওয়া যায়? না হলেও চলবে। তো দেখা হবে তো???