somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কালসাপ

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাড়ির সামনেই ত্রিশ কানি ধানী জমির মাঠ, স্থানীয় লোকেরা বলে গুরা মিয়ার বিল। বৃদ্ধ ওজর আলী বসে আছে বাড়ির লাগোয়া বিলের পারে। হেমন্তের বিকেল। রোদ মরে গেছে। থেমে থেমে আসা হিমে জড়ানো উত্তরের বাতাস পৌষ আসছে বলে জানান দিয়ে যাচ্ছে। ওজর আলীর ছানি পড়া ঘোলা চোখের সামনে ত্রিশ কানি জমিতে পাকা ধানের শিষ লকলক করছে। বয়স হয়েছে, আজকাল দূরে কোথাও যেতে পারে না। অথচ খোলা হাওয়া, মাঠ জুড়ে ফসলের গন্ধ, কিষাণ কিষাণীর হাঁক ডাক ওজর আলীকে আজও সম্মোহিত করে রাখে। তাই যখনই পারে, বিলের পাড়ে এসে বসে থাকে। এদিকেই কোথাও কালিজিরা ধান লাগিয়েছে কেউ। বিলের এ পাশটা সেই ধানের গন্ধে মৌ মৌ করছে। আহ! ওজর আলীর মনে পড়ে কালিজিরা চালের পায়েসের কথা। কি মজা করেই না ওটা করতো ওর বউ চুনি। কেজি দুয়েক দুধ জ্বাল দিয়ে দিয়ে আধা কেজির ঘন সর করে ফেলতো, তাতে কালিজিরা চাল, পাটালী গুড়, বাদাম বাটা দিতো, আর দুষ্টু শিশুদের হাসি হাসি মুখের মতো বুদবুদের মতো উঁকি দিতো সবার ওপরে ছড়িয়ে দেয়া কিসমিস। শেষ কবে খেয়েছে যদিও মনে নেই এখন। চুনিই যে ওকে ছেড়ে চলে গেলো। সেই পায়েসের স্মৃতিতে নাকি চুনির ওপর অভিমানে বোঝা গেলো না, অশীতিপর ওজর আলীর বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। সেই শ্বাসের সাথেই যেন খন খন কর বেজে উঠলো বুকের খাঁচাটা। খনখনে কাশিটা জ্বালিয়ে মারছে গত বছর পাঁচেক। এখন ওর বাড়ির লোকেরাও বলে ওজর আলী কথা বলে না, কাশে। তাই সে আজকাল কথা বলাও কমিয়ে দিয়েছে, অযথা বিপত্তি। সারাদিন চুপচাপ বসে থাকে আর কাশে,সকাল আর বিকেলটা এই বিলের পারে, দুপুরটা বাড়ির দাওয়ায়। চার ছেলে তিন মেয়ে ওজর আলীর। ছেলে মেয়ে সবার বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেরা সবাই ভিটেতেই আলাদা ঘর করে থাকছে। খেলা শেষে অনাদরে মাঠের একধারে পড়ে থাকা বলের মতো চার ছেলের পায়ে পায়ে ঘুরে ঘুরে অবশেষে ওজর আলীরও ঠাই হয়েছে ভিটের এক কোণায় জংলা ডোবাটার ধারে। ওটা অবশ্য চুনিরও ইচ্ছে ছিলো। ছেলেদের সংসারে ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে মোটেই রাজি ছিলো না চুনি। খুব স্বাধীনচেতা মেয়ে ছিলো। শেষের দিকে ওজর আলীর শরীর ভেঙ্গে পড়লে চুনিই গ্রামের ঘরে ঘরে গিয়ে ধান সেদ্ধ করা থেকে শুরু করে, চাল গুড়া করা, পিঠা বানানো হেন কাজ নেই যা করেনি। তাতে চুনির শরীর ভাঙলেও ওজর আলীর আহার জুটেছে নিয়মিত। চুনি মারা যাবার পর তাই খাওয়া জোটানোই বৃদ্ধ ওজর আলীর জন্য হয়ে গেছে সবচেয়ে বড় দুর্গতি। মেজ বউয়ের দয়ার শরীর। শাশুড়ি মারা যাবার পর বৃদ্ধ শ্বশুরের খাবারের দায়িত্ব নিজে নেয়। সংসারে ছোট বড় পাঁচ ছেলে মেয়ে, ওদের মুখে খাবার যোগানোর পাশাপাশি হাস মুরগী পালে কিছু, ভিটের চারপাশে সবজিও লাগায়। অন্য বউদের চেয়ে বেশ পয়মন্ত ওর হাত। কিন্তু সেই বা আর কত পারে। সবকিছু সামলে ওজর আলীর ঘরে তিনবেলা আহার পাঠাতে সময়ের হেরফের হয়েই যায়। তাই বৃদ্ধ ওজর আলীর শরীর যেন গনগনে ছাই ভরা মালসা, ক্ষুধায় জ্বলছে সারাক্ষণ। আজ সকাল থেকেই মেজ ছেলের বাড়িতে হৈ হুল্লোড় চলছে। ওর বড় মেয়েকে দেখতে আসছে কে যেন। বাড়ি সাজানো গোছানো থেকে শুরু করে মেহমানদের জন্যে কয়েক পদের রান্না করা নিয়ে মেজ বউয়ের দম ফেলার ফুরসৎ মিলছে না। আর এই হুল্লোড়ে ওজর আলী কেমন করে যেন বিস্মৃত হয়ে গেলো, ওর ঘরে খাওয়া পাঠানো হলো না। সারাদিনের অভুক্ত শরীর নিয়ে হেমন্তের হিম হিম বিকেলে বৃদ্ধ ওজর আলী গুরা মিয়ার বিলের পাড়ে বসে ঠক ঠক করে কাঁপছে আর কাশছে।

বিস্মৃত হওয়া, বৃদ্ধ ওজর আলীর জীবনভর এক ক্লান্তিকর বিড়ম্বনার নাম। সে এক অদ্ভুত বিড়ম্বনা। সবার চোখের সামনে থেকেও সে যেন হারিয়ে যায়। মানুষ তাকে দেখে না, তার কথা ভুলে যায়। এটা সে প্রথম বুঝতে পারে ওর সাত বছর বয়সে, গুরা মিয়ার বিলে,এক পৌষ মেলায়। ওজর আলীর পিতৃপুরুষের ভিটে এখন যেখানে আছে তার থেকে মাইল দুয়েক পুবে সোনাডিঙ্গি গ্রামে। সেই ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছে, হেমন্তে ধান কাটা হয়ে গেলে, গুরা মিয়ার বিলে পৌষ মেলা বসে, এই এলাকার সবচেয়ে বড় মেলা। ওর সাত বছর বয়সে ফুপুর সাথে প্রথম সেই মেলায় আসে, বাড়ির আরও গোটা পাঁচেক ছেলেপুলেসহ। ওজর আলী ছোট বেলা থেকেই একটু ভাবুক ধরণের। ওর মা বলতো ‘বেভুইল্যা’। যা দেখছে তা দেখছেই। চুপচাপ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কি যেন ভাবে আর নিশ্চুপ তাকিয়ে দেখতে থাকে। বস্তুত চারপাশের সবকিছুই ওর কাছে বিস্ময়। বৃষ্টি থেমে গেলে গাছগুলো কেন গা ঝাড়া দিয়ে পানি ছিটায়, শুঁয়ো পোকা কেমন করে অমন রঙিন প্রজাপতি হয়ে ওঠে, দোয়েল কেমন করে শিস দেয়, মা পুকুরের ঘাটলায় চাল ধোবার সময় মাছগুলো কেন চারপাশে ঘাই মারতে থাকে। প্রকৃতি তার সব উপাদান নিয়েই যেন শিশু ওজর আলীর চোখে জাদুর কাজল মাখিয়ে দিয়েছিলো। তাই সেবার মেলা শুরু হলে ওজর আলী পালা করে বাড়ীর বড় সবার কাছেই ধরনা দিচ্ছিলো। শেষে ফুপুই ওকে মেলায় নিয়ে যাবে বলে রাজি হয়। ওটাই ছিলো ওজর আলীর প্রথম বাড়ির বাইরে পা রাখা। বাড়ির বাইরে পা রেখে মেলায় আসতে আসতে সোনাডিঙি, ঝিমলি, ঝাড়মুড়া একটার পর একটা গ্রাম দেখতে দেখতে শিশু ওজর আলী যেন রূপকথার জগতে হারিয়ে যায়। ওর চোখের সামনে প্রকৃতি বিস্ময়ের পর বিস্ময়ের পসরা সাজিয়ে রেখেছে। ওদের গ্রামের সীমানাতেই আছে বিঘেটাক জমির ওপর বাঁশ বাগান। পৌষের সকালের রোদ বাঁশের চিকন পাতার ফাঁকে ফাঁকে পুরো বাগানজুড়ে আলো ছায়ার আলপনা এঁকে রেখেছে। চড়ুই, বাবুই, ময়না, শালিক, কোকিল হাজারো পাখি আস্তানা গেড়েছে ওখানে। ঝরঝর ঝরঝর বাঁশের শুকনো পাতা ঝরছে। মাটি ঢাকা পড়ে গেছে। মাঝে মাঝেই ঠাণ্ডা একঝলক বাতাস এসে শুকনো পাতাগুলো উড়িয়ে এদিক থেকে সেদিক ঝেঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পাতা ঝরার ক্লান্তি নাই, চরকির মতো ঘুরতে ঘুরতে পাতাগুলো যখন নিচে পড়তে থাকে, সেও এক দৃশ্য বটে। ওদের দলটা হাঁটতে হাঁটতে সেই বাগানে ঢুকতেই পায়ের নিচে শুকনো পাতা গুড়ো হবার মচমচ শব্দে ওজর আলী থমকে দাঁড়ায়। মাথার ওপরে বাগানজুড়ে বয়ে যাওয়া বাতাসের অপার্থিব শনশন শব্দ, চরকির মতো টুপটাপ পড়তে থাকা বাঁশের পাতা আর হাজার পাখির কোরাস গানে ওজর আলী নিজেকে হারিয়ে ফেলে। আচানক গালে সপাটে এক চড় খেয়ে ওজর আলীর ঘোর কাটে। তাকিয়ে দেখে ফুপু দাঁড়িয়ে আছে ওর সামনে। রাগে ফুঁসছে। ওদের দলটা বাগান পেরিয়ে বেশ অনেক দূর এগিয়েছিলো, হঠাৎ এক ছেলের চোখে আসে ওজর আলী ওদের সাথে নাই। আবার ঘুরে আসতে হলো বলে ফুপু বেশ রেগে ছিলেন।

ঝিমলি গ্রামে ঢোকার মুখে বোসদের সেই দীঘি, ওটাও কি কম জাদুকরী? চারপাড়ে চারটা সাদা মার্বেলের ময়ূরমুখী ঘাট। পানি শুকিয়ে গেছে খানিকটা। পুরো দীঘিজুড়ে শাপলা ফুটে রয়েছে। গ্রামের ভেতর দিয়ে যাবার সময় সবাই সেই ঘাটগুলোতে একটু বসবেই। ওরাও বসেছিলো খানিক। দীঘির চার কোণায় নিম আর তেঁতুল গাছের ঝাকড়া সখ্যতা, পাড় ছাড়িয়ে দীঘির জলেও যেন বন্ধুত্বের নিমন্ত্রন ছড়িয়ে দিচ্ছিলো। শুকিয়ে আসা সেই দীঘির জল, জলে ফোঁটা শাপলা আর চার কোণায় নিম তেঁতুলের সখ্যতা ওজর আলীকে জাদু করেনি? আবার সেই গালে চড় খেয়ে, কান ধরে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে চলা। তারপর আর কোথাও থামা হয় নি ওদের। পথজুড়ে ঘাসফুল, ঢোল কলমি, ঢেঁকি শাক আর ওজর আলীর প্রিয় লজ্জাবতী লতা মাড়িয়ে ওদের মেলায় পৌঁছানো। আহ! সে এক দৃশ্য! শিশুদের হাতে হাতে বাঁশি, ভেঁপু, ঢোল। সে কত রকমের বাঁশি! তালপাতার বাঁশি, বাঁশের বাঁশি, টিনের বাঁশি।একপাশে নাগরদোলা বসেছে, তার কড়কড় শব্দ, বাঁশি, ভেঁপু, ঢোল-করতাল আর হাজার মানুষের একসাথে চিৎকার আর দিগ্বিদিক ছুটে চলা। বিস্ময়ে ওজর আলীর চোখ যেন কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। মেলায় ঢুকতেই মনোহারি দোকান সাজিয়ে বসেছে কয়েকজন। চুড়ি, আলতা, কাজল, মুখে মাখার ক্রিম থেকে শুরু করে মেয়েদের মন হরন করার সবকিছুই যেন ওদের কাছে আছে। ওদের পার হয়ে এগোলেই ঘরামীরা বসেছে , বাঁশ, কঞ্চি, বেত দিয়ে তৈরি গৃহস্থালি জিনিষ নিয়ে। ওদের পাশেই বসেছে খাবার দোকান। একপাশে লাল সামিয়ানা দিয়ে ঘিরে রেখেছে, ফুপু বললো, ওখানে পুতুল নাচ দেখাবে। পুতুল নাচবে? তাও কি হয়? হরেক রকমের মিঠাই নিয়ে বসেছে একজন। শিশুদের ভিড় মনে হলো ওখানেই বেশী। বেদেরা বসেছে একপাশে সাপের ঝুড়ি নিয়ে, ওরা সতর্ক হয়েই বেদেদের এড়িয়ে গেলো। কুমোররা বসেছে হরেক রকমের মূর্তি আর মাটির খেলনা নিয়ে। ওদের পাশেই কয়েক দোকান কামারদের। গনগনে লাল আগুনে পুড়িয়ে লোহাকে লাল করে তারপর হাতুড়ী দিয়ে পিটিয়ে দা, ছুরি, কাস্তে সহ নানা দরকারি জিনিষ বানাচছে। সারা গা ঘেমে নেয়ে একাকার, তারপরেও ক্লান্তি নেই যেন। ওজর আলীর চোখ আর ভেতরে ঢুকছে না। বিস্ময়ের পর বিস্ময়! তবে তাকে জাদু করলো, জিলিপি!খাবার দোকানগুলোতে একজন জিলিপি বানাচ্ছে। ময়দার পাতলা ময়ান একটা ফুটো করা লাল ছিটের কাপড়ে ঢেকে নিয়ে গরম তেলের কড়াইতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কি সুন্দর আলপনা করছে! কোথাও এক ফোঁটা বেশী বা কম হচ্ছে না, কোথাও মোটা বা সরু দাগে পড়ছে না। তিনি আবার ফরমায়েশ মতো জিলিপি বানান। কেবল গোল নয়, চারকোণা বা তেকোনাও হচ্ছে, হরেক রকম ফুল হচছে, কারো কারো নাম হচ্ছে। ওজর আলী একপাশে দাঁড়িয়ে দেখছে তো দেখছেই। দুপুরের সূর্য ঢলে পড়তেই ওজর আলীর পেটে খিদে জানান দিলো। আশপাশে তাকিয়ে দেখে ও একা, ফুপু কিংবা বাড়ির অন্য ছেলেরা কেউ নেই। এবার ভয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে সে। বেশ খানিক পরে ওদের গ্রামের একজনের চোখে পড়লে সে ওকে কিছু খাইয়ে হাতে ধরে নিয়ে আসে বাড়িতে। তখনকার সময়ে একান্নবর্তী কৃষক পরিবারগুলোতে সন্ধ্যের সময়েই কেবল হাস মুরগী, গরু ছাগল বা ছেলেপুলেদের ঘরে তোলা হতো এবং সবাই ঠিক আছে কিনা দেখা হতো। তাই বিকেলের দিকে ঘরে ফেরা ওজর আলী তার এই হারিয়ে যাওয়া নিয়ে বাড়িতে তেমন কিছুই ঘটতে দেখলো না, সেও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো যে, তার এই হারিয়ে যাওয়া নিয়ে মা’র হাতে আর মার খেতে হবে না।

এ’রকম কতবার যে ওজর আলী বর্তমান থেকে বিস্মৃত হয়েছে, হারিয়ে গেছে তার ইয়ত্তা নাই। বিয়ে হ’বার পর থেকে তাই তার বউ চুনি তাকে কড়া নজরে রাখতো। বেভুইল্যা ওজর আলীর কিছুই যে ঠিক ছিলো না! সময়ে সময়ে সামনে খাবার না দিলে, খাবার কথাই যে ভুলে যেতো। এই যেমন সেবার চুনির বাপের বাড়ি যাবার সময়। তখন ওজর আলী দুই ছেলের বাবা হয়ে গেছে। ওরা গঞ্জে গিয়ে সকাল নটা বিশের লোকাল ধরে আরও দুই ষ্টেশন সামনে রউফাবাদ যাবে। ট্রেন এসেছে, চুনি বাচ্চাদের নিয়ে ট্রেনে ওঠে গেছে। ওদিকে ওজর আলীর চোখে পড়ে সঙ সেজে এক লোক ঝালমুড়ি, আঁচার এসব বিক্রি করছে ষ্টেশনের এক কোণায়। তার বিচিত্র বর্ণের পোশাক, রং দেয়া মুখে কতরকমের অভিব্যক্তিই না করছিলো। কখনো কৃত্রিম আনন্দে হেসে লুটোপুটি, কখনো কৃত্রিম দুঃখে কেঁদে বুক ফাটানো। ওজর আলীর পায়ে যেন পেরেক গেঁথে গেছে, সে নড়তে পারছে না। পরে ট্রেন ছেড়ে দেবার সময় হয়ে এলে ওজর আলীকে দেখতে না পেয়ে চুনি বাচ্চা আর বোঁচকা বুচকি সহ ঝাঁপ দিয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়ে। বেভুইল্যা স্বামীর হাত ধরে বাপের বাড়ীর ট্রেন মিস করে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে শ্বশুর বাড়ি ফিরে আসার যন্ত্রণা এবং লজ্জার সে অসহনীয় অনুভূতি চুনি যতদিন বেঁচেছিলো ওজর আলীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। এইতো সেবার, বড় ছেলের বিয়েতে, খাওয়া দাওয়া শেষ তখন, বউ নিয়ে সবাই রওয়ানা হবে, চুনির হঠাৎ মনে পড়ে মানুষটা খেয়েছে তো? খোঁজ খোঁজ খোঁজ, ওজর আলীকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। সে প্যান্ডেলের এক কোণায় ছেলেরা বাজি পোড়াচ্ছিল তা দেখছে আশ্চর্য হয়ে। চুনির চিৎকার চেঁচামেচিতে সবাই তখন বেশ ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে ওজর আলীর আপ্যায়নে। নিরীহ, বেভুইল্যা ওজর আলীর জীবনের পাতাগুলো এরকম হাজারো বিস্মৃতি আর ভুলে যাওয়া অনুগল্পে ঠাসা। তবে তার আশপাশের মানুষ তার উপস্থিতি বিস্মৃত হয়েছে, তাকে ভুলে গেছে এ নিয়ে ওজর আলী কখনো অনুযোগ করে নি। বরং তার উপস্থিতি কিংবা আচরণ তার চারপাশের লোকেদের বিব্রত করছে কিনা তা নিয়েই কুণ্ঠিত থাকে সে। এই যে, আজকে মেজ ছেলের বাড়িতে মেহমান আসছে, এতোসব কাজের হুজ্জতে মেজ বউয়ের চোখে যদি সে পড়ে, তাকে খাওয়াতে মেজ বউ কি ব্যস্তই না হয়ে পড়বে। হাজার জরুরী কাজের ভিড়ে তা কি ভালো দেখাবে? তাই ওজর আলী এই বিলের পাড়ে বসে আছে সারাদিন।

-ভাইজান, আব্বার সাথে কথা কি বলছিলেন? ছোট মেয়ের বাড়িয়ে ধরা নতুন গামছায় হাত মুছতে মুছতে বড় ভাই শহিদ আলীকে কথাটা বলে সাবিদ আলী, ওজর আলীর মেজ ছেলে। আজ ওর বড় মেয়েকে দেখতে আসা উপলক্ষ্যে বাকি তিন ভাইকেও খেতে বলেছে ওর ঘরে।
-নাহ, সময় করে উঠতে পারি নাই। দেখি সময় করে বসতে পারলে আলাপ কইরা নিব। ছোড, মুরগী সালুনের বাটিডা আগাইয়া দে
-মেজ ভাবির সঙ্গে উনার দহরম মহরম! তিনিই আলাপটা কইরা নিক না। বড় ভাইয়ের দিকে মুরগী সালুনের বাটি এগিয়ে দিতে দিতে কথাটা বলে সবার ছোট জহির আলী।
-তার কথা বলিস না, সেতো শুনলেই ঘরে আগুন দিবে।
- কেন? তার মাথা গরম হল কেন? মুরগীর হাড়ে জুতসই একটা কামড় দিয়ে কথাটা বলে শহিদ আলী।
- তার মাথা গরম হবে না? আব্বারে নিজের বাপের মত জানে, উনারে ঘর থেকে বাহির করার চিন্তা করতেছি জানলে ঘরে আগুন দিবে না?
- আব্বা কি সমস্যা করলেন আবার? তাঁরে ভিটা থেকে বাহির করতেছেন কেন? এবার অবাক হয়ে কথাটা বলে সেজো ভাই জমির।
- ওহ তোকে বলা হয় নাই, ডোবার পাড়ে আব্বার ঘর নিয়া ডোবা সহ তিন শতক জমি আছে। আব্বাস চেয়ারম্যানের ছোট ভাই হেলাল ওই জমিটা কিনতে চায়, ভালো টাকা সাধতেছে। বললো মেজ ভাই সাবিদ।
-হেলাল মানে আপনের ইটের ভাঁটার পার্টনার? জহির জিজ্ঞেস করে।
-হ্যাঁ, সেই। বলে সাবিদ আলী।
-তাইলে সে নিশচয় কোন ব্যবসার চিন্তায় এটা নিবে, শহিদ বলে।
- সে একটা চালের কল দিবে, তাই বিলের পাড়ে জায়গাটা তার দরকার।
- চালের কলে আপনার শেয়ার নাই? বলে জহির।
- আছে, আমরা আধাআধি পার্টনার।
- আমাদের জমিতে চালকল দিয়া হেলাল আর আপনে মিলে ব্যবসা করবেন আর আমরা কিছুই পাব না? জমির বলে।
- তোরা কি চাস?
- ব্যবসায় শেয়ার চাই। জহির বলে।
এবার চোখ কুঁচকে ওঠে মেজ ভাই সাবিদ আলীর। এটা সে কল্পনাও করেনি। বড় ভাই শহিদ সহজ সরল। ভেবেছিলো বড় ভাইকে দিয়ে বাবার কানে কথাটা তুলে কাগজ পত্রের কাজটা আরেকদিন সেরে ফেলবে। ছোট ভাইয়েরা এভাবে বাগড়া দেবে ভাবেনি। ওরা চালাক চতুর, তবে এতোটা চতুর হয়েছে বুঝতে পারেনি। কাজটা সে কাউকে না জানিয়ে নিজেই সেরে ফেলতে পারতো। শুধু ওর বউয়ের রাগী চেহারা কল্পনা করে ভাইদের জড়াচ্ছে। সাবিদ আলী চায়না মেজ বউ জানুক এসবের সঙ্গে সে জড়িত। অথচ তাতেই দেখো কি ঝামেলা শুরু হয়ে গেলো। হেলাল ওর অনেক পুরনো ব্যবসার পার্টনার। ওরা কতদিন ধরে স্বপ্ন দেখছে বিলের পাড়েই একটা চাল কল দিবে।
- দেখ, হেলালকে তো চিনস। সে শেয়ার ছাড়বে না। আমার অর্ধেক শেয়ার আমরা চার ভাই ভাগ করে নিতে পারি।
- আমাদের জমিতে চালকল হবে আর হেলাল নিবে অর্ধেক? আমরা সবাই বাকি অর্ধেক? আপনের কি মাথা খারাপ হইছে মেজ ভাই? জহির যেন চিৎকার করেই কথাটা বলে।
- আস্তে কথা বল! এঁড়ে বাছুরের মতন চেচাইস না। তোর ভাবির কানে গেলে খবর আছে কইলাম।
- ঠিক আছে, আমাদের জমি বেচার দরকার নাই। জহির বলে।
- দেখ মাথা গরম করার দরকার নাই। এই জমিতে তোরা সবাই যদি ব্যবসাই করতে চাস, আমি হেলালের সাথে কথা বলে দেখি। বড় ভাই পরিবেশ ঠাণ্ডা করার প্রয়াস পায়।
- ঠিক আছে, আপনের আলাপের দরকার নাই, সে আমার পার্টনার, আমিই আলাপ করে দেখব।
- আমরা চারভাই আর সে মিলে পাঁচজন। ব্যবসা সমানভাবে ভাগ হবে। এইটাতে সে রাজি থাকলে আমাদের জমি পাবে। তা নাইলে জমি বিক্রি হবে না। সাফ কথা জানিয়ে দেয় জমির।
- ঠিক আছে তোরা যেমনে কস। আমি আলাপ করে দেখি ওর সাথে।

মেহমান সবাই চলে গেলে হাঁড়ি পাতিল, থালা বাসন গোছাতে গিয়ে মেজ বউয়ের আচানক বৃদ্ধ ওজর আলীর কথা মনে পড়ে যায়। হায়রে হায়! আজ সারাদিন লোকটা অভুক্ত রয়ে গেছে! সারাদিন এতবার সে নিজে ভেতর বাহির করেছে, একবারও তো লোকটাকে দেখেনি। নিশ্চয় সারাদিন ঠাণ্ডায় বিল পাড়ে বসে আছে। মেজ বউয়ের চোখ দিয়ে ঝরঝর করে জল গড়াতে লাগলো। এতো বড় ভুল কি করে হলো তার? যদিও সারাদিন রান্না আর ঘর গোছানোর ফাঁকে ওর নিজেরও কিছু খাওয়া হয়নি, ক্লান্তিতে শরীর ভেঙ্গে আসছে তার। তারপরেও একটা বাসনে মাছের ভাঙগা একটা মাথা, ভাত আর একটা বাটিতে কিছু মুরগী তরকারী উঠিয়ে নিয়ে মাথায় কাপড় টেনে নিয়ে ছুটে বেরিয়ে যায় মেজ বউ।

মেজ বউ বেরিয়ে যেতেই, বিরক্তিতে হু! করে একটা শব্দ করে দাওয়ায় বসে পড়ে ওজর আলীর মেজ ছেলে সাবিদ আলী। মেজাজ বিগড়ে আছে তার। তার বউই তার বাবার খবরাখবর রাখছে, নিজে ঠিক ভাবে না খেলেও বৃদ্ধ শ্বশুরের খাওয়া দাওয়া ঠিক রাখছে। কই অন্য কোন বউতো উঁকি দিয়েও দেখলো না কোনদিন! এখন ব্যবসার পার্টনার হতে চাই! লাত্থি মারি ব্যবসার! আরে বাপে এখনো বেঁচে আছে, জমি বাপের নামে, তোদের এতো জোর কিসের? বাবায় যদি জমি লেখে দেয় তোরা কই যাবি? হেলাল তার ব্যবসার অনেক পুরনো অংশীদার। তাদের বোঝাপড়া ভালো। ব্যবসা করবে সে আর হেলাল আর সমান ভাগ চায় ভাইয়েরা! মামার বাড়ি গিয়েও আজকাল অমন আবদার করলে মামি ঝাঁটার বাড়ি দিয়ে তাড়াবে। কিছু একটা উপায় বের করতে হবে। বিল পাড়ের এই জমিটা হাতছাড়া করা যাবে না। হেলাল আর ও মিলে কতদিন ধরে স্বপ্ন দেখছে একটা চালকল দেবার, আর ওটার জন্যে বিল পাড়ের এই জমিটা একটা আশীর্বাদ। তাছাড়া তার বড় মেয়ের হবু শ্বশুর, যে কিনা হেলালের দূর সম্পর্কের আত্মীয়, তিনি বলেছেন, ওরা যদি চালকল খোলে, তিনি টাকা দেবেন। প্রস্তাবটা হেলালের মাধ্যমেই এসেছে। সে আর হেলাল মিলে এরই মধ্যে ব্যবসার ছক এঁকে ফেলেছে। সে জমি দেবে, হেলাল চালকলের মেশিনসহ পুরো মিল চালু করে দেবে, আর ওর হবু বেয়াই ধান কেনা থেকে শুরু করে চাল বাজারে বিক্রি পর্যন্ত ব্যবসার টাকার যোগান দেবে। এতো সুন্দর একটা ব্যবসার ছকে ওর ভাইদের ঠাই কোথায়? সাবিদ আলী ভেবেছিলো ভাইয়েরা মুফতে কিছু নগদ টাকা পেলে জমি বিক্রি নিয়ে উচ্চবাচ্চ করবে না, তাছাড়া বাবা বেঁচে থাকতে বাবার জমি বাবা কি করলেন তা নিয়ে অত উৎসাহ থাকার কথাও নয়। আর একবার রাজি হয়ে গেলে ওদের মুখের ওপর নগদ কিছু টাকা ছুড়ে দিয়ে বাকি টাকা পরে দেবে বলে পাশ কাটিয়ে যাবে। তাইতো আজ বাড়িতে ভালো মন্দ রান্না হচ্ছে বলে এই সুযোগে ওদেরও ডেকে খাইয়ে দিয়েছে। অথচ কি হতে কি হয়ে গেলো? ছোট দু ভাই পুরো পরিকল্পনা গুলিয়ে দিলো। তোরা এতো চালাক হয়ে গেলি? আমার মাথার ওপর লাঠি ঘোরাস? আমারে লেঙ মারার চেষ্টা করস? যা করার ঠাণ্ডা মাথায় করতে হবে। মাথা গরম করা যাবে না। কিছু একটা বুদ্ধি বের করতেই হবে। উঠোনজুড়ে পায়চারি করতে থাকে সাবিদ আলী। হঠাৎ ওর নজরে আসে ডোবার পাড়ে বাবার ঝুপড়ি ঘর থেকে এখনো আলো আসছে। মেজ বউ খাবার নিয়ে গেলো অনেকক্ষণ। করছে কি ওরা? হালকা পায়ে বাবার ঘরের দিকে যেতে লাগলো। বাবার ঘরের কাছাকাছি পৌঁছুলে, ঘরের একমাত্র জানালা দিয়ে ঘরের ভেতরে চোখ পড়তেই কেমন জমে গেলো। কুপি ঘিরে মাটিতে বসে আছে বাবা আর মেজ বউ। মেজ বউ মাছের কাঁটা বেছে দিচ্ছে আর ফাঁকে ফাঁকে বাবার মুখে ভাতের গ্রাস তুলে দিচ্ছে। ঠিক যেন মা ছেলেকে খাইয়ে দিচ্ছে, পরম যত্নে, ভালোবাসায়। দু’জনের চোখ দিয়ে তখনো অঝোরে জল ঝরছে। খাওয়নোর ফাঁকে থেমে থেমে শাড়ির আঁচল দিয়ে তাই মুছে দিচ্ছে মেজ বউ। সাবিদ আলীর পায়ে কে যেন পেরেক ঠুকে দিয়েছে, ও নড়তে পারছেনা। কুপির আলোয় দুটো নিষ্পাপ মুখের জ্যোতি যেন ঝলসে দিচ্ছে ওর প্রতারক চোখ। কিছুক্ষণ তাকিয়েই ও ছুটে চলে এলো নিজের ঘরের দিকে। আর ঠিক তখনই ভাবনাটা তার মাথায় এলো। আচ্ছা সে যদি বাবাকে নিজের সাথে এনে রাখে ? তার বউতো এমনিতেই বাবাকে দেখাশোনা করে, সে বরং খুশিই হবে। তারপর সুযোগ বুঝে একদিন জমিটা চাইতে হবে। আর তখন বাবা নিশচয় জমিটা তাকে খুশি মনেই দিয়ে দিবেন। তাই করতে হবে, মাথা গরম করে লাভ নেই। আচ্ছা বাবাকে আজকেই ওদের বাড়িতে নিয়ে এসে রাখলে কেমন হয়? ঝানু ব্যবসায়ী সাবিদ আলী জানে লোহা গরম থাকতেই হাতুড়ির আঘাত যুতসই হয়, এবং আজকের পরিবেশ মনে হয় ওর অনুকুলেই আছে। লম্বা একটা নিঃশ্বাস ফেলে বুকের পাথরটা যেন ঝেড়ে ফেলে দিলো সাবিদ আলী। অন্ধকারে হালকা পায়ে আবার ডোবার পাড়ে বাবার ঘরের দিকে যেতে লাগলো সে, আনন্দে, উত্তেজনায় তার চোখ চকচক করছে। নিস্তব্ধ চরাচরে একটা সরীসৃপ তার শিকারের দিকে এগিয়ে যাচছে।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×