somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সন্ধি [ছোট গল্প]

০৩ রা এপ্রিল, ২০১১ রাত ১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার নাম অমলেশ মিত্তির,পিতা-স্বর্গীয় জয়প্রকাশ মিত্তির, ঠাকুরদা-স্বর্গীয় মহেশ মিত্তির, আমার পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটি ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের (বর্তমানে পাকিস্তান) পেশোয়ারে। অবশ্য সে ভিটেবাড়ি দেখার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য কোনটাই আমার হয়নি। ১৯৪৬ সালের হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গার পরে আমার ঠাকুরদা আমার বাবাকে নিয়ে পূর্ববঙ্গে (তখন ভারতবর্ষ অবিভক্ত ছিল) চলে আসে অনেক বিপদ অতিক্রম করে।

অবশ্য তৎকালীন অধিকাংশ হিন্দু সমপ্রদায়ের লোকজন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তান (বর্তমানে পাকিস্তান) ত্যাগ করে ভারতে রিফিউজি হিসেবে চলে আসে তবে খুব কম সংখ্যক লোক তাদের সম্পত্তি বদল করার সুযোগ পেয়েছিল।

আমাদেরও ভারতে রিফিউজি হিসেবে থাকার কথা ছিল কিন্তু ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্টের দাঙ্গার পরে আমার ঠাকুরদা ভারতের উত্তর কোলকাতার এক হিন্দু পল্লীতে আশ্রয় নেয় কিন্তু পরবর্তীতে ঐ হিন্দু পল্লী উগ্র মুসলমান পন্থীদের দ্বারা আক্রান্ত হলে আমার ঠাকুরদা আমার বাবাকে নিয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে পূর্ব বঙ্গে (পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশ) চলে আসে।

এই ঘাট ঐ ঘাট করতে করতে আমার ঠাকুরদা ও বাবার আশ্রয় জোটে (ততদিনে আমার ঠাকুমা গত হয়েছেন) পূর্ব বঙ্গের খুলনা জেলার রামপাল থানাধীন রাজনগর নামক এক পল্লীতে। ঐ পল্লীতে আরো প্রায় ৩০-৩৫ পরিবার আমাদের মত পালিয়ে এসেছে পূর্ব পুরুষদের ভিটেমাটি ছেড়ে তবে তাদের মধ্যে অধিকাংশ ছিল মুসলমান। পরবর্তীতে আশেপাশের স্থায়ী বাসিন্দা আমাদের ঘটী বলে ডাকত। আমার ঠাকুরদার মূল ব্যবসা ছিল গুড় এবং চিনির। ঠাকুরদার যে পাওনা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের পেশোয়ারে তার এক সিঁকিও উদ্ধার করে আনতে পারেননি।

এদিকে বাবার বয়স ১৩ বা ১৪ বছর, সবে ক্লাস এইটে উঠেছে, অন্য কোন কাজও জানা নেই। অবশেষে আমার ঠাকুরদা পাশের এক মুসলমান পরিবারের কর্তার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করে আমাদের গ্রামের হাটে একটা মুদীখানার দোকান দেন। তাতে কোন রকম চলে যাচ্ছিল দুই বাপ-পোর সংসার। আমার বাবাকে ভর্তি করে দেওয়া হল রামপাল হাইস্কুলে। বাড়ী থেকে প্রায় ৪ ক্রোশ (আট মাইলের কিছু বেশি) হেঁটে স্কুলে যেতে হত। বাবাকে লেখাপড়া শিখতেই হবে কারণ সে ছিল প্রথমত হিন্দু দ্বিতীয়ত ঘটী সমপ্রদায়ের। লেখাপড়া শিখে যদি দু-এক খানা ডিগ্রী লাগানো যায় আর তাতে যদি একখানা কেরাণীর চাকুরী জোটে। এছাড়া তার বাঁচার জন্য আর কোন অবলম্বন বা অস্ত্র ছিল না।

১৯৪৯ সালে আমার বাবা মেট্রিকুলেশন পাস করলেন। ১৯৫০ এর মাঝামাঝি সময় বাবা খুলনা জেলা জজ আদালতে একখানা টাইপিস্টের চাকুরী পান, বেতন ২০ টাকা (তখন রূপী)। বাবা সপ্তাহে এক দিন গ্রামে যান এবং জেলা জজ আদালতে চাকুরী করার বদৌলতে গ্রামের মানুষ তাকে বেশ খাতির করত এবং আর ঘটী বলে ডাকত না। এভাবে চলতে লাগল বেশ কিছু বছর। সাল ১৯৬৯, ঠাকুরদা বাবার বিয়ে ঠিক করলেন।

মেয়ে অর্থাৎ আমার মা জাতে নমশূদ্র কিন্তু বাপের অর্থাৎ আমার নানার মোটামুটি টাকা-কড়ি ছিল। যাই হোক ১৯৬৯ এর ডিসেম্বর মাসে জয়প্রকাশ মিত্তির (আমার বাবা) ও রাধিকা দাস (আমার মা) এর বিবাহ সম্পন্ন হয়। বাবার চাকুরী জেলা শহরে থাকা সত্ত্বেও মা গ্রামেই থাকতেন। বাবা সপ্তাহে এক বার গ্রামে আসতেন। এভাবে চলে এল ১৯৭১ সাল, আমাদের জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিলেন। ১৯৭১ এর এপ্রিলে আমার ঠাকুরদা মারা গেলেন।

আমার বাবা সরকারী চাকুরে হবার কারণে তার পরিচয় পত্র ছিল তাছাড়া বাবা খুব ভালো উর্দু বলতে পারতেন কিন্তু পরিচয়পত্রে বাবার নামের শেষে মিত্তির ছিল তাই ঐ যুদ্ধের মধ্যে তিনি প্রাণের ভয়ে গোপনে নিজের কোন একটা বিশেষ অঙ্গের চামড়া কাটিয়ে নিয়েছিলেন এবং মুসলমানদের চার কলেমা মুখস্ত করেছিলেন যাতে কোন সন্দেহের অবকাশ না থাকে যে .......।

আমার মাকে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমার নানার বাড়িতে রাখা হয়েছিল। আমার নানার বাড়ি থেকে জলপথে সুন্দরবনের দূরত্ব ছিল মাত্র ৮ মি. মি. তাই নানারবাড়ি যুদ্ধে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা খুব কম ছিল। রক্তক্ষয়ী ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হল। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি দেশ প্রতিযোগিতা করে জায়গা করে নিল।

১৯৭২ সালের মাঝামাঝি সময় আমার বাবা খুলনা জেলা সদরে একটা টিনের বাসা (দেয়াল ইটের) ভাড়া করে মাকে নিয়ে আসে গ্রামের বাড়ি থেকে। ১৯৮০ সালের আগস্টে আমার জন্ম। বাবা-মায়ের অনেক সাধনার ফসল আমি। আমার পরে আমার আরো দুটি ভাই ও শেষে একটি বোন আছে। বাবা আমার নাম রাখলেন অমলেশ মিত্তির। ১৯৮৪ সালে বাবার অফিসে হেড ক্লার্ক জেলা জজ সাহেবের দেয়া একটি রায়ে গোপনে সামান্য কাটাকুটি করেছিলেন কোন এক পক্ষ থেকে টাকা পয়সা খেয়ে কিন্তু পরবর্তীতে ঐ দোষ আমার টাইপিস্ট বাবার ঘাড়ে পড়ে।

তদন্ত শেষে ৩ মাসের মাথায় আমার বাবার চাকুরী চলে যায়। ঐ সময় আমার ছোট বোন মায়ের গর্ভে। এদিকে বাবা উন্মাদপ্রায়। আমি, আমার দুটি ভাই ও মা-বাবা এই পাঁচ জনের সংসার। বাবা খোঁজ নিলেন যে বরখাস্ত করা কোন চাকুরে পেনসন তো পাবেই না বরং জরিমানা হিসেবে প্রভিডেন্ট ফান্টের ১/৩ অংশ কাটা যাবে এবং সাথে জেলও হতে পারে যদি কর্তৃপক্ষ মামলা করে। বাবা ভয়ে চুপসে গেলেন। মা তার ভাইদের (আমার মামাদের) কাছ থেকে প্রতিমাসে এক বস্তা করে চাল ও দুইশত করে টাকা আনতে লাগলেন। বাবা যেহেতু ১৯৪৯ সালের মেট্রিক পাস তাই তার দশম শ্রেণী পর্যন্ত অংক ও জ্যামিতিতে ভালো দখল ছিল।

তিনি টিউশনি খুঁজতে লাগলেন, অবশেষে পেয়েও গেলেন দুটি। যাইহোক এইভাবে সংসার কোনরকম চলে যাচ্ছিল। বাবা জেলের ভয়ে ঐ প্রভিডেন্ট ফান্ডের বাকী ২/৩ অংশ টাকার খোঁজও নেননি। এইভাবে আমার বয়সও ছয়ে পড়ল। বাবা আমাকে শিশু বিদ্যালয় নামক একটি প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি করে দিলেন। মোট ছয়জনের সংসার বাবার ঐ টিউশনি আর মামা বাড়ি থেকে পাঠানো যতসামান্য সাহায্য নিয়ে আমাদের সংসার চলতে লাগল। আমি একদিন আমাদের স্কুলের সামনে দাড়িয়ে আছি দেখলাম ফুল দিয়ে ঘেরা একটা খাটের উপর ধূপের ধোয়া উড়ছে আর লোকজন বল হরি, হরি বল বলতে বলতে এগিয়ে আসছে।

আরো কাছে আসতেই দেখলাম খাটের উপর একটা মৃতদেহ এবং সামনে একটা লোক মাটির ঠিলের মধ্য থেকে খৈ আর সিঁকি-আধুলি মাটিতে ফেলছে। ব্যাপারটি দেখে আমার বেশ ভালো লাগল কারণ ফেলে দেয়া ৭ টা সিঁকি ও ৩ টা আধুলি আমি কুড়িয়ে পকেটে পুরেছিলাম। তখন বাড়ি থেকে সপ্তাহে বড়জোর ২ দিন একটি করে সিঁকি পেতাম তাই ঐ ৭টা সিঁকি আর ৩ টা আধুলির লোভ সামলানো আমার মত পরিবারের ছেলের পক্ষে খুব শক্ত কাজ ছিল। এরপর থেকে আমি মনে মনে ভাবতাম যদি আর দু-একটা মরা আমার স্কুলের সামনে দিয়ে যায় তাহলেতো ভালোই হতো।

আমার এখনো দিব্যি মনে আছে ঐ ৭ টা সিঁকি আর ৩ টা আধুলি আমার বন্ধু ফরহাদের সঙ্গে ঘুরে, খেয়ে খরচ করেছিলাম মেলাতে। তখন খুলনা জিলা স্কুলের মাঠে বসন্ত মেলা হত। ১৯৯২ সাল, মার্চ মাসের ১৩ তারিখে আমার বাবা হঠাৎ মারা গেলেন কোন রোগভোগ ছাড়া, আমি তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। তখনো বাবার জন্যে মনে তেমন হাহাকার জন্ম নেয়নি তবে দু-একফোটা চোখের জল ফেলেছিলাম। এখনো মনে আছে আমার ছোট মামা আমাকে দিয়ে বাবার মুখাগ্নি করিয়েছিলেন।

বাবা মারা যাবার পর ছোট মামা আমাদের সংসারে থাকতে লাগলেন। বাবা মারা যাবার আগে মা প্রতি বৃহস্পতিবারে ঘরে লক্ষ্মীপূজা করতেন। তাও অতি যতসামান্য উপায়ে। ঘরের এক কোণে লক্ষ্মী ঠাকরুনের ছোট মূর্তি, আর কয়েকটা ছবি, সামান্য কিছু ফুল, কোষাকুষি। আর পেতলের ছোট্ট থালায় প্রসাদের জন্য বরাদ্দ আটআনা বা এক টাকার বাতাসা। মা প্রতি বৃহস্পতিবারে স্নান করে এসে নিজেই পূজা করতেন, পূজা মানে ‘লক্ষ্মীর পাঁচালি ও ব্রতকথা’ নামে একটি পুস্তিকা পাঠ। মাঝে মাঝে মায়ের বদলে আমাকেও এই কাজটি করতে হত।

এখনো সেই পুস্তিকার দু-চারটি পঙ্‌তি মনে আছে। যেমন:
দোল পূর্ণিমার নিশি নির্মল আকাশ
মৃদু মন্দ বহিতেছে মলয় বাতাস
মলয় পর্বতে বসি লক্ষ্মী নারায়ণ
মনোসুখে দুইজনে করে আলাপন...........।


যাইহোক মাকে আর কখনো পূজা দিতে দেখিনি বাবা মারা যাবার পর। হয়তোবা লক্ষ্মী ঠাকরুন আমার মায়ের দিকে এক চোখ খুলেও তাকাননি। কিন্তু দেবী স্বরস্বতী আমার ভাই-বোনদের দিকে একটু হলেও তাকিয়েছিলেন। যার কারণে কয়েকটা অ্যাকাডেমিক ডিগ্রী আমাদের ঝুলিতে বিদ্যমান। ১৯৯৭ সাল, আমি এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি, জুলাই মাসে রেজাল্ট বের হবে। পরীক্ষা দিয়ে আমি আর ফরহাদ চুটিয়ে টিউশনি করতে লাগলাম। সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে ছাত্র পেতে অসুবিধা হয়নি। মাকেও কিছু টাকা দিতাম। আমাদের সংসার চলত মূলত মামাদের সাহায্যে।

১৩ই জুলাই দুপুরে ঘুমিয়েছি সবে। এর মধ্যেই দরজার কড়া নাড়ার শব্দ পেলাম। আমি বুঝতে পারলাম ফরহাদ ছাড়া আর কেউ নয়। দরজা খুলে দেখি ফরহাদের সমস্ত শরীর ঘর্মাক্ত, বললাম ভিতরে আয়। আমি বুঝতে পারলাম রেজাল্টের দুশ্চিন্তায় এই অবস্থা। আমি বললাম যা হবার তাই হবে, চল স্কুলের দিকে। বিকাল সাড়ে চারটায় রেজাল্ট দেয়ালে টানিয়ে দেয়া হল। ভয়ে ভয়ে গেলাম দেয়ালের কাছে। আমার আর ফরহাদের রোল পাশাপাশি, দেখলাম দুই জনই স্টার পেয়েছি। দৌড়ে বাড়িতে এসেই মাকে প্রণাম করলাম। এবার কলেজে ভর্তি হবার পালা। আমি আর ফরহাদ দুই জনেই খুলনা সিটি কলেজে ভর্তি হলাম। দুই জনই টিউশনি করতাম।

আমার একটা টিউশনির বিচিত্র অভিজ্ঞতা আছে। আমি পড়াতাম একজন ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ারের ছেলেকে, সে অঙ্কে খুবই কাচা ছিল। আমার যা মনে হয়, অঙ্কে সে পাস করবে না এই প্রতিজ্ঞায় বিধাতা তাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, যেমন: ৪ × ১৭ = চার সাতে আটাইশ, আটাইশের আট আর হাতে রাখলাম দুই, এই দুই সে আর হাতে রাখতে পারবে না কারণ তার হাত সবসময় খালি। যাইহোক সেই ছেলেটিকে আমি কখনো অঙ্কে পাস করাতে পারিনি। এভাবে আস্তে আস্তে এইচ.এস.সি পরীক্ষা এসে গেল, পরীক্ষা দিলাম। এবার আমি পেলাম ফার্স্ট ডিভিশন আর ফরহাদ পেল আবারো স্টার মার্কস। পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে লাগলাম।

অবশেষে আমি চান্স পেলাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে আর ফরহাদ পেল একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগে। ফরহাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও চান্স হয়েছিল তবে আমার জন্য সে খুলনায় থেকে গেল। আমরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০০ সালের ব্যাচ। এই ভাবে টিউশনি আর পড়াশুনা দুটোই একসাথে চলতে লাগল। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ফরহাদ একটা মেয়েকে পছন্দ করত। মেয়েটির সম্পর্কে আমি তেমন কিছুই জানতাম না তবে যখন জানলাম ততদিনে পানি অনেক দূর গড়িয়েছে। মেয়েটা ছিল তিন নম্বর কালোজিরা চালের সাথে ৫ নম্বর পামওয়েল মিশিয়ে ৬ নম্বর মশলা দিয়ে রান্না করা পোলাও, যা থেকে সুঘ্রাণ আসে ঠিকই তবে হযম করা বড় শক্ত কাজ।

এভাবে চলে এল ২০০৪ সাল, বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহারে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া শুরু হল তৎকালীন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের প্রভাবে। ছাত্রসমাজে আস্তে আস্তে ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে এবং এই দানা বাঁধা ক্ষোভ একসময় বিক্ষোভে রূপ নেয় যেখানে ফরহাদের নেতৃত্ব ছিল চোখে পড়ার মত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে শুরু করে অধিকাংশ শিক্ষক ফরহাদের বিরুদ্ধে চলে গেল।

অবশেষে ভিসি ফরহাদকে পাস করার পরপরই (অনার্স শেষ করার পর) শিক্ষক হবার প্রস্তাব দেন কিন্তু ফরহাদ সরাসরি না করে দিল। বিশেষ করে ফরহাদ এই কারণে আমার কাছে নমস্য, নমস্য এবং নমস্য। ২০০৪ সালের ৫ই মে শুরু হল বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমুল আন্দোলন, ভিসির বাসভবন ঘেরাও হল (বোধহয় ইট পাটকেলও ছোড়া হয়েছিল)। পুলিশ নির্বিচারে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট চার্জ করল। ফরহাদ গ্রেফতার হয়ে গেল এবং আমার নামে মামলা হল। আর একজন ছাত্র, নাম-পারভেজ (বিশ্বাসঘাতক) তাকে প্রলোভন দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাজসাক্ষী হবার জন্য রাজি করাল।

এদিকে আমি ও কয়েকজন শিক্ষক ঢাকায় দৌড়াদৌড়ি করে হাইকোর্ট থেকে ফরহাদসহ ৪ জনের জামিন করালাম। এদিকে আমার মা শুধু মানতের উপর মানত করে গেছেন মন্দিরে। আমারতো মনে হয় নিম্নমধ্যবর্তী পরিবারের মানতের ভোগে কোন দেবতাই তুষ্ট হতে পারে না কারণ কোন নিম্নমধ্যবর্তী পরিবারের মানত আমি খুব কমই সফল হতে দেখেছি। মোটের উপর দেবতাদের এত সময় কোথায় এদিকে তাকানোর ...! ফরহাদ জামিনে ছাড়া পাবার পর আর এক বিপদ নেমে এল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফরহাদসহ ৫ জনকে ৩ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করল।

ফরহাদের বাবার সামান্য একটা ছোট জুতার দোকান আছে এবং আর্থিক ভাবেও সেরকম সচ্ছল নয় তারপরে আবার ওর মা-বাবা দুজনেরই হাপানী রোগ আছে। সেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বহিষ্কারের তালিকায় আমি আমার নামও দেখেছিলাম কিন্তু আমার পরিবারকে জানাইনি পাছে যদি ‘মা’ টাও চলে যায় এই ভয়ে। ফরহাদ তখনো ভেঙে পড়েনি। এদিকে পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে ভিসির দুর্নীতি নিয়ে। এক সময় ফরহাদকে প্রস্তাব দেয়া হল যে লিখিত ভাবে যদি সবাই ক্ষমা চায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাস্তি প্রত্যাহার করবে। এই প্রস্তাবে আমি আর ফরহাদ বাদে বাকী তিনজন লিখিতভাবে ক্ষমা চাইল।

আমি আর ফরহাদ এক শিক্ষকের সহযোগিতা নিয়ে হাইকোর্টে রীট করলাম। মহামান্য হাইকোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত শাস্তির উপর স্থগিতাদেশ দিলেন। তারপরেও আমাদের দুশ্চিন্তা রয়েই গেল কারণ সর্বশেষে কি হয় কে জানে! এর মধ্যে ফরহাদের শরীর প্রচন্ড খারাপ করল। খুলনার চিকিৎসকগণ কোন সমাধান দিতে পারলেন না। আমার কিছু টিউশনির টাকা সঞ্চিত ছিল তা দিয়ে ও বন্ধু-বান্ধব এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে ধার করে আমি ফরহাদকে সাথে নিয়ে ব্ল্যাকরুটে ভারতের কোলকাতায় চলে গেলাম।

সেখানে ফরহাদকে পিয়ারলেস (Pyeerless) হাসপাতালের ডা. পি. কে সেনকে দেখালাম। ডাক্তার সাহেব কিছু টেস্ট দিলেন করতে। আমরা দুই দিনের মাথায় টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট দেখাতে গেলাম ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার সাহেব রিপোর্ট দেখলেন এবং খুবই স্বাভাবিক ভাবে ফরহাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থার বৃত্তান্ত শুনলেন। ডাক্তার সাহেব ফরহাদকে বের করে দিয়ে আমাকে থাকতে বললেন। ডা: সেন বললেন “ওর তো লিউকোমিয়া ধরা পড়েছে এখন বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করাতে হবে যদি বাঁচাতে চান”। আমি বললাম কত খরচ হতে পারে? ডা. সেন বললেন প্রায় ২৫ লক্ষ রূপী।

আমি শুনে চোখে ঝাপসা দেখতে লাগলাম (আমাদের কাছে সেই সময় সর্বসাকুল্যে ২০ হাজার রূপী আছে)। ডা: সেন আমাকে একটু পানি খেতে দিলেন। পানি খেয়ে আমি ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরিয়ে দেখি ফরহাদ দাঁত বের করে হো হো করে হাসছে। আমি বললাম কি হয়েছে? ও বলল তুই বোধ হয় ভুলে গেছিস যে আমি ফার্মেসীর ছাত্র, তুই কি মনে করিস আমি লিউকোমিয়া রোগ বুঝি না! আমি চুপ হয়ে গেলাম। ফরহাদ বলল চল হোটেলে ফিরি (কোলকাতায় নিউমার্কেটের পশ্চিম পার্শ্বে ভুয়া পরিচয় দিয়ে একটা সস্তা হোটেলে আমরা উঠেছিলাম যেহেতু না ছিল আমাদের ইন্ডিয়ান পরিচয়পত্র না ছিল বাংলাদেশী পাসপোর্ট)। রাত্রে আমি কিছুই খেলাম না।

ফরহাদ যেন ওর একটা ব্যক্তিগত ডায়েরীতে কিছু লিখছিল। রাতে শুয়ে আমি শুধু এপাশ-ওপাশ করছিলাম। ফরহাদ হঠাৎ করে বলল রোগ আমার নাকি তোর? আমি কোন কথাই বললাম না, কেন জানি বাবা মারা যাবার পর সেই প্রথম কোন এক অজানা কারণে আমার চোখ থেকে জল ঝরছিল। সেই জল কি শুধু ফরহাদের প্রতি ভালোবাসার টানেই ঝরেছিল নাকি.... ? শেষ রাতের দিক ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে উঠলাম, উঠে দেখি ফরহাদ সেই ডায়েরী লিখছে। আমি উঠতেই বলল “জীবনে অনেক সাধ ছিল অনেক দেশ ঘোরার কিন্তু তা আর হল কোথায়! চল যাই ধার কর্জ করে আনা টাকাগুলো দার্জিলিং ঘুরে শেষ করে আসি”। আমি হতবাক হয়ে গেলাম ওর কথা শুনে! ওতো নাছড়বান্দা, শেষ পর্যন্ত দুপুরের দিকে হোটেল থেকে চেক আউট নিয়ে বেরিয়ে সোজা হোটেল আমানিয়ায় গেলাম খেতে। জীবনের ঐ দিন সর্বপ্রথম আমি ফরহাদের সাথে গোমাংস খেয়ে আমার ব্যক্তিগত হিন্দুত্বের (তথাকথিত) শ্রাদ্ধ করলাম কারণ মা বলেছিল গোমাংস খেলে নাকি স্বর্গে জায়গা হবে না কারণ গরু আমাদের দেবতা। পরে সমস্তদিন ট্যাক্সি নিয়ে কোলকাতা শহরটা ঘুরলাম।

রাত সাড়ে দশটায় শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে বাসে রওনা দিলাম। বাসে উঠার আগে ফরহাদ দোকান থেকে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দ করা মেয়েটির কাছে ফোন দিল। ফোন দিয়েই নিজের পরিচয় দিল তারপর বলল “অভিশাপ দিচ্ছি সুখী হও” এবং ফোন রেখে দিল। অনেক পরে অবশ্য আমি জেনেছিলাম যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফরহাদকে বহিষ্কারের পর সেই মেয়েটি একজন নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষককে বিয়ে করে। সকাল সাড়ে দশটায় শিলিগুড়ি পৌঁছালাম, ওখান থেকে মাহেন্দ্র জীপে করে বেলা দুটোর মধ্যে দার্জিলিং পৌঁছে গেলাম। দার্জিলিঙে টাইগার হিলে সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখলাম, যেন মনে হল সূর্যের আলো কাঞ্চনজঙ্গায় আঘাত করার সাথে সাথে বরফের চাংগুলো সোনায় পরিণত হচ্ছে। যাইহোক দার্জিলিঙে পাঁচ দিন এবং গ্যাংটকে তিন দিন ঘুরে আমরা আবার কোলকাতায় ফিরলাম।

এই ঘোরাঘুরির মধ্যে ফরহাদ অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল তারপরেও ফরহাদ শরীরের উপর বাজি ধরে দার্জিলিং এবং গ্যাংটক ভ্রমণ উপভোগ করেছিল। এখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন যে আমরা যে সময় ঘুরতে গিয়েছিলাম সে সময় এতটা পুলিশি চেকিং ছিলনা যেমনটা এখন ঐ রকম ঝামেলা পোহাতে হয়। কোলকাতায় ফিরে আমরা সেই পুরনো হোটেলে ফিরলাম। ফরহাদ কোলকাতায় ফিরেই ভয়াবহ রকমের অসুস্থ হয়ে পড়ল। আমি চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে যাচ্ছিলাম। আমাদের ঐ হোটেলের ম্যানেজার ছিলেন একজন বাঙাল, (এখনো কোলকাতায় বাংলাদেশের লোকদের বাঙাল বলা হয়) তাকে আমি সব খুলে বলি। সে আমাকে বলে যে “আপনার বন্ধু বেঁচে থাকা অবস্থায় দেশে ফিরে যান নতুবা উনি মারা গেলে আপনি চরম সমস্যায় পড়বেন”।

আমিও তাই মনস্থির করলাম। ২০০৫ সাল, ২রা জানুয়ারী সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠেই ব্যাগ গোছাতে লাগলাম। ফরহাদকে ডাকলাম কিন্তু কোন সাড়া নেই, আমি যেয়ে ওর মাথা ঝাকাতেই মাথা বালিশ থেকে বিছানায় হেলে পড়ল, আমার বুঝতে আর কিছু বাকী রইল না। আমি সোজা ম্যানেজারের কাছে দৌড়ে গেলাম। কাউন্টারে গিয়ে ম্যানেজারকে গোপনে ডেকে এনে সব বললাম। ম্যানেজার বলল “যেহেতু আপনাদের পাসপোর্ট নেই তার উপর এক জন মুসলমান লোক মারা গেছে, এই লাশ আপনি ওপারেতো (বাংলাদেশে) নিতে পারবেনই না বরং জেলও খাটবেন বোনাস হিসেবে”।

আমি বললাম এখন উপায় কি? ম্যানেজার বললেন “একটা উপায় আছে তবে দশ হাজার রূপী লাগবে”। আমি বললাম আমার কাছে সর্বসাকুল্যে হাজার ছয়েক রূপী আছে। ম্যানেজার বলল দেখছি চেষ্টা করে। ঘন্টা দুয়েক পরে ম্যানেজার গোটা বিশেক লোক নিয়ে এল আমার কাছে এবং বলল “দাদা ঐ হাজার ছয়েকই দিন, এরা সব ব্যবস্থা করে দেবে”। আমি বললাম কি ব্যবস্থা? ম্যানেজার বলল “এরাই সোজা ক্যাওড়াতলা পার করে দেবে আপনাকে কোন চিন্তা করতে হবে না, আপনি শুধু টাকা দিয়ে ওপার (বাংলাদেশ) চলে যান”। আমি বললাম “ক্যাওড়াতলা পার মানে”? ম্যানেজার বলল “ওখানে আপনার বন্ধুকে হিন্দু নাম দিয়ে, আমাদের ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেখিয়ে পোড়ানো হবে”।

আমি বললাম “আমি কি পোড়াতে যেতে পারি”? ম্যানেজার বললেন “যেতে পারেন ওদের সাথে তবে ভেজালে পড়লে আমরা কিন্তু মশাই ডুব মারব”। আমি বললাম “ঠিক আছে চলুন”। ওদের মধ্যে থেকে কয়েকজন একটা চৌকি নিয়ে এল ফুল দিয়ে সাজিয়ে তারপর ফরহাদকে কোন অন্তিমস্নান না দিয়েই খাটে ওঠানো হল, ধূপ জ্বালানো হল। ওরা হাটছে আর বলছে-
“বল হরি, হরি বল
বল হরি, হরি বল”


আর একজন একটা পাত্র থেকে খৈ আর সিঁকি ও আধুলি উপরের দিক ছুড়ে মারছে। আমি ঘাড়ে দুটো ব্যাগ নিয়ে হাটছি আর ভাবছি সেই আমার স্কুলের সামনে দিয়ে মরা নিয়ে যাবার কথা, যেখান থেকে আমি সাতটা সিঁকি আর তিনটি আধুলি কুড়িয়ে নিয়েছিলাম। আমি ভাবছি যে সেদিনের আমার মত বয়সের কেউ পয়সা কুড়ানোর লোভে আশেপাশে দাড়িয়ে আছে কিনা!!! ঐ দিনেই ফরহাদকে বার্ণিং হিটারে দাহ করেই আমি ব্ল্যাকরুটে বাংলাদেশে ফিরলাম। ফেরার পথে যখন ফরহাদের ব্যাগ হাতড়াচ্ছিলাম তখন সেই ডায়েরিটা আমার হাতে পড়ল।

আমি পাতা উলটাতে উলটাতে সবশেষ পৃষ্ঠায় দেখলাম এই আটটি লাইন:
“শরীরে প্রলেপ দিয়ে গেছে এ্যালকোহল আর নিকোটিন
বাঁচার আশা যে বড় ক্ষীণ
হৃৎপিন্ড দিয়ে যাচ্ছে সিগন্যাল
বিছিয়ে রেখেছি যে জাল
হবই তাতে বন্দী
দিয়েছি কথা
হবে না এবার বৃথা
করব না কারো সাথে সন্ধি”।


[বি: দ্র: ফরহাদ একজন চেইন স্মোকার ছিল এবং পকেটের স্বাস্থ্য¨ ভালো থাকলে মাঝে মাঝে একটু আধটু মদ্য পানও করত।]
সত্যি ফরহাদ কারো সাথেই কোন সন্ধি বা আপোষ করে নাই যেমনটি আমি করেছিলাম বাস্তবতার সাথে ২০০৫ সালের ২রা জানুয়ারী, আমার বাবা করেছিল অসহায়ত্বের সাথে ১৯৭১ সালে এবং আমার ঠাকুরদা করেছিল অপারগতার সাথে ১৯৪৬ সালে।
........................


( বিঃ দ্রঃ এই ছোট গল্পটি আমার বন্ধু ও সহপাঠি "খানে জাহান আলী সুকার্ণ" এর লেখা। যা রাকসুতে ২০১১ সালে ছোট গল্প প্রতিযোগীতায় ১ম স্থান পেয়েছে। )
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১১ সকাল ৮:৩৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×