কখনও কি ভেবে দেখেছেন আমরা, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু ব্যবহার করছি তার প্রায় সবকিছুই কিন্তু অপরের আবিষ্কার। আমি আবিষ্কার বলতে প্রথম আইডিয়া যার মাথা থেকে প্রথম এসেছিল তা বোঝাতে চাচ্ছি।
টিভি, ফ্রিজ, লাইট, কারেন্ট, আইপিএস, জেনারেটর, ভিডিও গেমস, কমন্পিউটার, জীবন রক্ষাকারীঔষধ, ভ্যাকসিন, বা মাথা ব্যাথ্যা কমানোর ট্যাবলেট-প্যারাসিটামল, খাতা, পেন্সিল, কলম, বল-পয়েন্ট, সার্পনার, রাবার, হেডফোন, ঘরি, গাড়ী, হোন্ডা, বাইসাইকেল, রিকশা, ইন্টারনেট, ব্লগ, এমনকি হালের ফেসবুক সেটার আইডিয়াও কিন্তু আমাদের মাথা থেকে আসে নাই। তাহলে কি আমরা বোকা নাকি আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতা নাই।
কেন আমরা পিছিয়ে আছি আরও অন্যান্য দেশের মানুষ থেকে। আমরা মানলাম আমাদের গবেষণা করার মত পর্যাপ্ত অর্থ নাই, কিন্তু চিন্তা-ভাবনা করার জন্যেত অর্থের প্রয়োজন নাই।
গতকাল যারা এসএসসিতে উত্তীর্ন হলেন তাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন। আর যারা কোন কারনে উত্তীর্ন বা আশানুরুপ ফলাফল লাভ করতে পারেন নাই, তাদেরকেও অভিনন্দন, কারণ আপনারা চেষ্টা করেছেন এবং পরীক্ষাও দিয়েছিলেন সাহস করে সেজন্য। আপনারা আগামীতে আরও ভাল করবেন এই কামনা করছি। আপনাদের সবাইকে আগাম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি পরবর্তী ধাপেও যাতে এর থেকেও ভাল সাফল্য আপনারা লাভ করতে পারেন।
আর একটা অনুরোধ, মনের মধ্যে সবসময় নতুন কিছু একটা করার জন্য বা নতুন কিছু জানার জন্য আগ্রহ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করুন। আপনার চারিদিকে তাকান, প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নেন, অথবা কোন একটা পাখিকে দেখেও ভাবতে চেষ্টা করুন সে কি মেকানিজমনে উড়ছে? একটা পিপড়া কি করে তার শরীরের দশগুন বেশি ভার বহন করতে পারছে? আপনার হাত বা পা কেটে গেলে কেন এন্টিসেপটিক দিতে হচ্ছে? এন্টিসেপটিক না দিলে কেন ইনফেকশন হয়ে যাচ্ছে? একটা বিছে থেকে কি করে এবং কেন প্রজাপতি হচ্ছে?
আপনার মনের মাঝে আরও বেশি বেশি করে "কেন" এর উত্তর জানার চেষ্টা করুন, নিজে নিজেই ভাবুন কি করে কোন সমস্যায় পরলে আপনি কি সমাধান করতেন, কিভাবে করতেন। হাতের কাছে সবসময় একটা কলম/পেনসিল আর একটা ছোট নোটবুক রাখুন, যা ভাবছেন লিখে ফেলুন, সেটা যত অস্বাভাবিক চিন্তা হবে ধরে নিন সেটাই ততধিক জনপ্রিয় আর যুগোপযোগী আবিষ্কার হবে।
লিওনার্ডো দ্যা ভিঞ্ঝি যখন তার আকার খাতায় হেলিকপ্টারের মডেল একেছিলেন, তখন কিন্তু তার সময়ের লোকজন সেটা চিন্তাও করতে পারেন নাই একদিন সত্যি সত্যি মানুষ হেলিক্প্টার বানাবে।
তাই বেশি বেশি করে চিন্তা করুন, ভাবুন আর সেটা ডিসকাস করুন।
আমি বিশ্বাস করি আপনার মাঝেই লুকিয়ে আছে সেই মানুষ, যাকে কিনা ২০১৫ সালেই সারা পৃথিবীর মানুষ একনামে চিনবে, আর বলবে উনি বাংলাদেশের সন্তান, আর তখন আমাদের বুক গর্বে ভরে উঠবে।
আপনাদের সবার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।