পুরুষ ভুল করতে পারে। কিন্তু ভদ্র নারী এ ধরনের অভিযোগ তুলবে কেন?’
নিজের সম্পর্কে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগের এই জবাব ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালক (ছাপাখানা উন্নয়ন) হালিম হোসেন খানের। অভিযোগকারী হালিম হোসেন খানের মৃত সহকর্মীর স্ত্রী। যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি চার মাস আগে। কিন্তু ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো পদক্ষেপের তথ্য অভিযোগকারী জানতে পারেননি।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক বরাবর লেখা আবেদনপত্রে বলা হয়, ‘আমার স্বামীর (মৃত) পাওনার বিষয়ে মে মাসে আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপসচিব তাহের হোসেনের সঙ্গে আলাপ করতে গেলে সেখানে উপস্থিত আমার স্বামীর জুনিয়র এক কর্মকর্তা আমাকে আজেবাজে কথা বলেন। পরবর্তীতে মোবাইলে ফোন করে আজেবাজে প্রস্তাব দিতে থাকেন।’
তাহের হোসেন তাঁর সামনে অভিযোগকারীর সঙ্গে ওই কর্মকর্তার কথাকাটাকাটি হয়েছে স্বীকার করে গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু বাজে কথা হয়েছে কি না, মহাপরিচালকের অনুমতি ছাড়া বলা যাবে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মকর্তার দাবি, অভিযুক্ত হালিম হোসেন খানের সঙ্গে মহাপরিচালকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় অভিযোগের বিষয়টির সুরাহা হচ্ছে না। গত চার মাসে অভিযোগকারীর কাছ থেকে বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কেউ যোগাযোগ করেননি।
অভিযোগকারী জানান, ২০০৫ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর পাওনা বুঝে দিতে তিনি প্রতিষ্ঠানটিতে যান; তবে এখনো সব টাকা পাননি। এরই মধ্যে হালিম হোসেন একাধিকবার ফোনে তাঁকে বাজে ইঙ্গিত দিতে থাকলে একপর্যায়ে তিনি মুঠোফোনে তাঁর কথা ধারণ (রেকর্ড) করেন।
অভিযুক্ত হালিম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সে (অভিযোগকারী) একটি সংঘবদ্ধ ইসলামি গোষ্ঠীর হয়ে আমার বিরুদ্ধে জাল বিছিয়েছে। নয়তো সে আমাদের কথা রেকর্ড করল কেন?’ একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘ওই মহিলার সম্ভ্রম থাকলে তিনি এসব নিয়ে কথা তুলতেন না। আমি যদি কোনো ভুলও করে থাকি, তাই বলে এভাবে বলবে? তার তো বয়স হয়েছে, ছেলেমেয়ে আছে, বিধবাও হয়েছে। তাই প্রশ্ন আসে, সে আসলে কী চায়?’
একপর্যায়ে হালিম হোসেন বলেন, ‘আপনারা যা ছাপতে চান ছাপুন, আমার কিছু যায় আসে না। ওই মহিলা ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক শামিম মো. আফজালের সঙ্গে গতকাল যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বিষয়টি নিয়ে আর অগ্রসর না হওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রথম আলোর আরেকজন প্রতিবেদক এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে মহাপরিচালক জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে সভায় ব্যস্ত আছেন বলে জানান। পরে বলেন, কথা বলতে পারবেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফাউন্ডেশনের একাধিক নারীকর্মী জানান, বিষয়টি তাঁরা জানেন। তবে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার বিষয় তাঁরা জানেন না বা এ বিষয়ে কোনো তদন্তের কথাও তাঁরা শোনেননি।
অভিযোগকারী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা (ফাউন্ডেশন) এখন আমাকে খারাপ মেয়ে প্রমাণের চেষ্টা করছে। আমি ন্যায়বিচার চাই।’
সূত্রঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



