somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" তালাক " - ইসলামের এবং মানব জীবনের সবচেয়ে নিকৃষ্ঠতম হালাল কাজ।সর্বাবস্থায় এবং শেষপর্যন্ত নর-নারী প্রত্যেকেরই যা পরিহার করাই সর্বোত্তম পন্থা।(মানব জীবন - ৭)।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি - pinterest.com

পরিণত বয়সে একজন নারী,একজন পুরুষ অনেক আশা-আকাংখা এবং ভবিষ্যতের সুখ-স্বপ্নে বিভোর হয়ে বিবাহ নামক একটি পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয় তিন অক্ষরের একটি শব্দ "কবুল" বলার মাধ্যমে। এর মাঝে প্রতিজ্ঞা করা হয় সুখে-দুঃখে আমৃত্যু একসাথে থাকার এবং তার সাথে সাথে দাম্প্যত্য জীবনে তাদের পথচলা শুরু হয় স্বামী-স্ত্রী হিসাবে।যার মাধ্যমে উভয়েই প্রতিজ্ঞা করে একের সুখে সুখী,দুঃখে দুঃখী হবার। দাম্প্যত্য জীবনে তথা সংসারে বেশীরভাগ স্বামী-স্ত্রী'ই সাফল্যের, সাথে সুখে-দুঃখে আমৃত্যু একসাথে এক জীবন কাটিয়ে দিতে পারলেও কারো কারো জীবনে নেমে আসে নানা কারনে অশান্তি -অসুখের কালো মেঘ। সংসারের জটিলতায়,নানা ঘটনা-দূর্ঘটনা,অবস্থা-পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, মানষিক টানা-পোড়ন, মানিয়ে নেয়া-মানিয়ে চলার মানষিকতার অভাবে,ত্যাগ-সমঝোতার অনুপস্থিতি ,ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব , সামাজিক-মানষিক অবস্থা ও পরিস্থিতির বৈষম্য,শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন,পরিবারের বাকী সদস্যদের সাথে মানিয়ে চলার অক্ষমতা ইত্যাদি নানা কারনে ধীরে ধীরে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মাঝে দ্বন্দ্ব-মতবিরোধ তৈরী হতে থাকে ।

এসব দ্বন্দ্ব-সংঘাতেের সাথে সাথে মত-মনের অমিল ও নানা ঘটনার প্রেক্ষাপটে ছোট খাট ঘটনা মহিরুহ আকার ধারন করে এবং একটা সময় আর স্বামী-স্ত্রী কেউ কাউকে সহ্য করতে পারেনা। উভয়ের মাঝে তৈরী হয় ব্যাপক মানষিক দূরত্ব।আর এই দূরত্ব বাড়তে বাড়তে একসময় তা অনতিক্রম্য হয়ে উঠে ।আর এভাবে চলতে চলতে একটা সময় স্বামী-স্ত্রী কেউ কারোর ছায়াও সহ্য করতে পারেনা ,তখন তাদের মাঝে বেজে উঠে বিচেছদের করুন সূর।তখনই হয় স্বামী মুক্তি পেতে চায় তিন অক্ষরের একটি শব্দ "তালাক" বলার মাধ্যমে অথবা স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে মুক্তি পেতে চায় "তালাক" নামের আইনি কিছু প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার মাধ্যমে।তিন অক্ষরের একটি শব্দ "কবুল" বলার মাধ্যমে যেখানে উভয়ে উভয়ের জন্য হয়েছিল হালাল,গড়ে উঠেছিল আত্মার সম্পর্ক সেখানে তিন অক্ষরের একটি শব্দ "তালাক" বলার মাধ্যমে উভয়ের সাথে উভয়ের সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে হয়ে যায় উভয়ে উভয়ের জন্য হারাম তথা প্রতিপক্ষ।কেন এবং কিসের অভাবে তাদের জীবনে নেমে আসে এ অমানিশা যার ফলে বিবাহের পবিত্র সম্পর্ক এবং ভালবাসাময় পারিবারিক সম্পর্ক ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং মহান আল্লাহপাক ও তার রাসুল (সঃ)তা অপছন্দ করলেও ধর্মে কেন এবং কোন অবস্থায় তালাকের অনুমতি দেয়া আছে তা আমাদের সবার জানা আবশ্যক।

বিবাহ শুধু সামাজিক একটি প্রথা বা রীতিনীতিই নয়, বরং এটি একটি মহৎ ইবাদত। এটি আল্লাহর হুকুম ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুযায়ী করলে সাওয়াবও হয়। অন্য বিধানের মতো বিবাহও ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। তাই অন্য বিধান পালনে যেরূপ সে বিষয়ের জ্ঞান থাকা অপরিহার্য, যথা নামাজের জন্য তার আনুষঙ্গিক বিধান জানতে হয়, তদ্রূপ বিবাহ করতে হলেও তার আনুষঙ্গিক বিধানাবলি অবশ্যই জানতে হবে। দাম্পত্য জীবনের আচরণবিধি সম্পর্কে বিবাহের আগেই জ্ঞানার্জন করতে হবে। এটি এমন একটি সম্পর্ক যা মানব জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাকে কিভাবে সঠিকভাবে টিকিয়ে রাখা যায়, কিভাবে সম্পর্কের উন্নয়ন হবে, আল্লাহ না করুন যদি সম্পর্কের অবনতি হয়, তাহলে কিরূপে মিল হবে অথবা জীবনের তাগিদে যদি সম্পর্ক ছিন্ন তথা তালাক দিতে হয়, তাহলে কিভাবে দিতে হবে-এরূপ যাবতীয় বিষয়ে জ্ঞানার্জন আবশ্যক। নচেৎ মনগড়া ও প্রচলিত ভুল রীতি অবলম্বনে নিজের দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই ধ্বংসের দিকে চলে যাবে। পৃথিবীটা সংকীর্ণ হয়ে আসবে। নিজের অজ্ঞতার খেসারতই নিজেসহ গোটা পরিবার ও সমাজ ভোগ করবে।


ছবি - sodomalaw.com

তালাক অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। কেউ এর অপব্যবহার করলে কিংবা ভুল পন্থায় তা প্রয়োগ করলে সে একদিকে যেমন গুনাহগার হবে, অন্যদিকে তালাকও কার্যকর হয়ে যাবে। তাই প্রত্যেক বিবেচক স্বামী-স্ত্রীর দায়িত্ব হলো তালাকের শব্দ কিংবা এর সমার্থক কোনো শব্দ মুখে উচ্চারণ করা থেকে সতর্কতার সঙ্গে বিরত থাকা। অতি প্রয়োজন ছাড়া স্বামীর জন্য যেমন তালাক দেওয়া জায়েজ নয়, তেমনি স্ত্রীর জন্যও তালাক চাওয়া নিষিদ্ধ। তালাকের পথ খোলা রাখা হয়েছে শুধু অতি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য। বর্তমান সমাজে, বিশেষ করে আমাদের সমাজে কোনো পরিবারে তালাকের ঘটনা যে কত বিশৃঙ্খলা, জুলুম, অত্যাচার এবং ঝগড়া-বিবাদের কারণ হয় তা বলে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। বিষয়টি যতটাই স্পর্শকাতর, আমাদের সমাজে দিন দিন ততটাই তার ব্যবহার বেড়ে চলছে।আর বিবাহ বিচ্ছেদের প্রভাব যে শুধু নর-নারীর মানসিক অবস্থার ওপরেই পড়ে তা নয়, শারীরিক ভাবেও ক্ষতি হয়।বিবাহ বিচ্ছেদের মতো মানসিক ঝড় নর-নারীর জন্য বড় ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যাও তৈরি করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল হওয়া, হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, ঘুমের প্রচণ্ড অবনতি, প্রচন্ত মানসিক অস্বস্তি ও হতাশা এদের মধ্যে অন্যতম।তার সাথে সাথে স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ হলে তার সব চেয়ে বড় প্রভাব গিয়ে পরে তাদের সন্তানদের ওপর।বাবা-ময়ের বিচ্ছেদ অনিশ্চিত করে দেয় অনেক ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যত।আর এর ফলে এইসব পরিবারের ছেলেমেয়েদের সামাজিকীকরণ ব্যাহত হয়। তারা সবসময় একধরনের মানসিক চাপের মধ্যে থাকে।এর ওপর তাদের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ বা সামাজিকীকরণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।ফলে সুনাগরিক হয়ে গড়ে ওঠার জন্য যে ধরনের পরিবেশের মধ্যে থাকা দরকার তা থেকে তারা বঞ্চিত হয়।


ছবি - sodomalaw.com

তালাক কি - তালাক শব্দের অর্থ বিচ্ছিন্নতা বা ত্যাগ করা। ইসলাম ধর্মে আনুষ্ঠানিক বিবাহ বিচ্ছেদকে তালাক বলা হয়।স্বামী সর্বাবস্থায় তালাক দিতে পারেন।স্ত্রী শুধুমাত্র তখনই তালাক দিতে পারবেন, যদি বিয়ের সময় এর লিখিত অনুমতি দেওয়া হয় বা কিছু প্রক্রিয়া অনুসরন করে।শরীয়তের পরিভাষায় তালাক অর্থ "বিবাহের বাঁধন তুলিয়া ও খুলিয়া দেওয়া, বা বিবাহের শক্ত বাঁধন খুলিয়া দেওয়া "স্বামী-স্ত্রীর সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে দেওয়া।

জীবনে চুড়ান্ত বিপর্যয় থেকে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে রক্ষার জন্য ইসলামে তালাকের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যখন চরমভাবে বিরোধ দেখা দেয়,পরস্পর মিলে মিশে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে শান্তিপূর্ণ ও মাধুর্য মন্ডিত জীবন যাপন যখন একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়,পারস্পারিক সম্পর্ক যখন হয়ে পড়ে তিক্ত,বিষাক্ত।একজনের মন যখন অপরজন থেকে এমন ভাবে বিমূখ হয়ে যায় যে,তাদের শুভ মিলনের আর কোন সম্ভাবনা থাকেনা,ঠিক তখনই এই চূড়ান্ত পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইসলামে। তালাক হচ্ছে নিরুপায়ের উপায়। স্বামী স্ত্রী পরস্পরকে বেঁধে রাখার শেষ চেষ্টাও যখন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় তখন সেখানে তালাক সর্বশেষ উপায়।


ছবি - news.virginia.edu

বর্তমান সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ কেন বেড়ে চলছে - এখানে একটি প্রশ্ন, বর্তমান সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ প্রবণতা কেন ক্রমাগত ভাবে বেড়ে চলছে? সমাজবিজ্ঞানীরা নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নানা কারণ বর্ণনা করেন। তবে যে কথাটি প্রায় সবাই বলছেন তা হচ্ছে - ধর্মীয় অনুশাসনের ও মূল্যবোধের অভাব। ধর্মীয় অনুশাসনের বিষয়টি অনেক বিস্তৃত। বিশ্বাস ও মূল্যবোধ, জীবনদর্শন, স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক, একে অপরের হক সম্পর্কে সচেতনতা - এ সবই ধর্মীয় অনুশাসনের অন্তর্ভুক্ত। এরপর পর্দা রক্ষা, পরপুরুষ বা পরনারীর সঙ্গে মেলামেশা থেকে বিরত থাকা ইত্যাদিও বিশেষ ধর্মীয় অনুশাসন, যা পালন না করাও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতির কারণ। গবেষণা-পরিসংখ্যান বলছে,বেশীরভাগ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে পরকীয়ার জেরে। কোনো ক্ষেত্রে স্বামীর পরকীয়া, কোনো ক্ষেত্রে স্ত্রীর। এ ছাড়া তথ্য-প্রযুক্তির প্রভাব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও আধুনিক সংস্কৃতির কারণেও সংসার ভাঙছে। বর্তমানে নর-নারী নির্বিশেষে বিদেশি চ্যানেল ও বিভিন্ন ধরনের সিরিয়াল দেখে সাংস্কৃতিক দিক থেকেও প্রভাবিত হচ্ছে।’

এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের করণীয় -

** ইসলামে যে সুসংহত জীবনব্যবস্থা রয়েছে, তার প্রতিটি অংশই অতি প্রয়োজনীয়। যে অংশ বাদ দেওয়া হবে তার কুফল ভোগ করতে হবে।স্বামী-স্ত্রী একে অন্যকে কোনোভাবেই কষ্ট না দেওয়া, প্রত্যেকে অন্যের হক রক্ষায় সচেষ্ট থাকা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। স্বামী ও স্ত্রী প্রত্যেকেরই রয়েছে কর্তব্য এবং অধিকার। নিজের কর্তব্য পালন আর অন্যের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হলেই সবার মাঝে শান্তি আসবে এবং পরিবার রক্ষা পাবে ভাংগনের হাত থেকে।

** শুধু পরিবারকেন্দ্রিক ইসলামী অনুশাসনগুলোই নয়, সাধারণ অনুশাসনগুলো মেনে চলারও গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন—মাদকাসক্তিও অনেক পরিবারের ভাঙনের কারণ। মাদক ইসলামী বিধানে হারাম।তাই নার-নারী সকলকে সমাজের সাধারন অনুশাসনগুলোও মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে।

** নারী-পুরুষ উভয়ে যদি পর্দার বিধান মেনে চলে, তবে পরকীয়া জাতীয় কিছু ঘটার আশঙ্কা থাকবে না। পর্দা বলতে শুধু সামনের মানুষটির সঙ্গেই পর্দা নয় বরং এ ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট, মোবাইল ইত্যাদির মাধ্যমেও ব্যাপকভাবে পর্দা লঙ্ঘিত হয় এবং তাও একসময় সংসার ভাঙার কারণ হয়ে থাকে। বিশেষত, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির মতো তথাকথিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো যে বিশ্বব্যাপী কত সংসার ভাঙার কারণ ঘটেছে, তার সঠিক হিসাব হয়তো কোনো দিনই প্রকাশিত হবে না।কাজেই স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই দায়িত্ব-কর্তব্য হচেছ উভয়ে উভয়কে সময় দেয়া এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্র তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সীমিত করা।

** তালাক দেওয়ার অধিকার ইসলামে শুধু স্বামীকেই দেওয়া হয়েছে। স্ত্রীর হাতে এ জন্য দেওয়া হয়নি যে নারীদের স্বভাবে সাধারণত তাড়াহুড়ার প্রবণতাটা একটু বেশি। তাই তাদের ক্ষমতা দিলে ছোটখাটো বিষয়েও তাড়াহুড়া করে তালাক দেওয়ার আশঙ্কাটা বেশি। তাই বেশি পরিমাণে বিবাহবিচ্ছেদ রোধেই ইসলাম নারীদের তালাকের ক্ষমতা দেয়নি। তাই বলে কি প্রয়োজনে স্ত্রী তালাক দিতে পারবেনা?

ইসলামে স্ত্রী কি স্বামীকে তালাক দিতে পারে -

একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, ইসলাম নারীকে তালাকের অধিকার দেয়নি, কিন্তু তালাকের যে মূল উদ্দেশ্য বিবাহবিচ্ছেদ, তার অধিকার দিয়েছে। অর্থাৎ কোনো কারণে নারী চাইলে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে। ইসলামে নারীদের আটকে রাখা হয়নি, বরং তারাও প্রয়োজনে যথাবিহিত নিয়মে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারে। যেমন -

ক. বিবাহের আগেই স্ত্রী এ শর্ত দিতে পারবে যে আমাকে "তালাক" (বিবাহবিচ্ছেদ) দেওয়ার অধিকার দিতে হবে। তখন স্বামী থেকে প্রাপ্ত অধিকারবলে স্ত্রী প্রয়োজনে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে পারবে, যা আমাদের দেশের কাবিননামার ১৮ নম্বর ধারায় উল্লেখ থাকে এবং যা তালাক-ই-তৌফিজ নামে পরিচিত।

তালাক-ই-তৌফিজহলো স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে প্রদত্ত তালাক প্রদানের ক্ষমতা। স্বামী দি স্ত্রীকে বিবাহ রেজিস্ট্রির তথা কাবিন নামার ১৮ নাম্বার কলামে বিয়ে বিচ্ছেদের ক্ষমতা অর্পণ করে থাকেন এবং সে ক্ষমতার বলে স্ত্রী যদি স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চান তাহলে সে বিচ্ছেদকে ‘তালাক-ই-তৌফিজ’ বলে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী আদালতের আশ্রয় ছাড়াই স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। তালাক-ই- তৌফিজের ক্ষেত্রে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশের ৭ ধারায় বর্ণিত নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। স্ত্রী তালাকের নোটিশ কপি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবেন ও এক কপি স্বামীর কাছে পাঠাবেন। নোটিশ প্রাপ্তির পরবর্তী ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। এজন্য নিকাহনামার ১৮ নাম্বার ঘরটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পূরণ করা উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, বিয়েতে প্রশ্নকারীরা কনেকে এই প্রশ্নটি করেন না এবং ঘরটি শূন্য থাকে। কাজীদের অবশ্যই দুই পক্ষকে এই ঘরটি সম্পর্কে অবগত করা উচিত এবং বর ও কনেপক্ষ উভয়েরও বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত। স্বামী যদি এ ঘরটি পূরণ না করেন অর্থাৎ কোনো কিছুই উল্লেখ না করেন অথবা কেবল সীমাবদ্ধ দু- তিনটি বা একটি ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা প্রদান করেন, তখন স্ত্রীর তালাক প্রদান করার ক্ষমতা সীমিত হয়ে যায়।স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক প্রদানের অধিকারের আরেকটি উপায় হলো ‘খুলা’ তালাক।

খ. যদি বিবাহের সময় শর্ত না-ও দিয়ে থাকে, তার পরও স্ত্রী স্বামী থেকে আপসের ভিত্তিতে এমনকি প্রয়োজনে বিনিময়ের মাধ্যমেও তালাক নিতে পারবে। এটাকে "খুলা তালাক" বলা হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস - ৫২৭৩)।

খুলা তালাক - হলো স্বামী এবং স্ত্রীর আলোচনা সাপেক্ষে বিয়েবিচ্ছেদ। স্বামীকে খুলার মাধ্যমে বিয়েবিচ্ছেদে রাজি করানোর দায়িত্ব হচ্ছে স্ত্রীর। অর্থাৎ বিচ্ছেদের উদ্যোগ অবশ্যই স্ত্রীর কাছ থেকে হতে হবে। প্রয়োজনে স্ত্রী স্বামীকে কোনো কিছুর বিনিময় প্রদান করবেন। সাধারণত বিনিময় বা ক্ষতিপূরণ হিসেবে স্ত্রী তার আর্থিক দাবির কোনো অংশ ত্যাগ করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে স্বামী রাজি থাকলে এভাবে বিচ্ছেদ ঘটতে পারে। খুলা তালাকের ক্ষেত্রে অন্য কোনো চুক্তি না থাকলে স্ত্রী মোহরানা পাওয়ার অধিকারী হবেন না, কিন্তু ইদ্দত পালনকালে স্ত্রী তার গর্ভের সন্তানের জন্য স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে প্রস্তাবক যেহেতু স্ত্রী, সেহেতু তালাকের নোটিশ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌরসভার চেয়ারম্যান/ সিটি করপোরেশন বরাবরে স্ত্রীই পাঠাবেন।


ছবি - stlouiscollaborativelaw.com

গ. ওই পদ্ধতিদ্বয় ছাড়াও স্বামী নপুংসক, পাগল, অস্বাভাবিক ক্রোধসম্পন্ন হলে কোনোক্রমেই মনের মিল না হলে বা নিখোঁজ হয়ে গেলে অথবা যেকোনো কঠিন সমস্যায় পতিত হলে স্ত্রী বিচারকের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ করিয়ে নিতে পারবে। (শরহুস সগির, দরদির : ২/৭৪৫, কিফায়াতুল মুফতি : ৬/২৫২) ।

আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ

স্ত্রী যদি তালাক-ই-তৌফিজ ও খুলার মাধ্যমে বিয়েবিচ্ছেদ ঘটাতে ব্যর্থ হন এবং বিয়েবিচ্ছেদ হওয়া একান্ত প্রয়োজন মনে করেন তাহলে তাকে ১৯৩৯ সালের মুসলিম বিয়েবিচ্ছেদ আইনে বর্ণিত নিয়ম অনুসরণ করতে হবে (ধারা ২)। সেই আইনে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে কোন কোন কারণে একজন স্ত্রী আদালতে বিয়েবিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীকে পারিবারিক আদালতে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে তালাকের জন্য আবেদন করতে হবে। আদালতের ডিক্রিমূলে তখন স্ত্রীর তালাক কার্যকর হবে।

আইন অনুযায়ী স্ত্রী যেসব কারণে আদালতে তালাক চাইতে পারেন সেগুলো হলো -

** চার বছর পর্যন্ত স্বামী নিরুদ্দেশ থাকলে।
** দুই বছর স্বামী তার স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে।
** স্বামীর সাত বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি কারাদণ্ড হলে।
** স্বামী কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া তিন বছর যাবত দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে।
** বিয়ের সময় পুরষত্বহীন থাকলে এবং তা মামলা দায়ের করা পর্যন্ত বজায় থাকলে।
** স্বামী দুই বছর ধরে অপ্রকৃতিস্থ বা পাগল থাকলে অথবা কুষ্ঠরোগে বা মারাত্মক যৌন ব্যধিতে আক্রান্ত থাকলে।
** বিয়ে অস্বীকার করলে। অর্থাৎ যদি কোনো মেয়ের বাবা বা অভিভাবক মেয়েকে ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে বিয়ে দেন এবং সেই মেয়েটি ১৯ বছর হওয়ার আগে বিয়ে অস্বীকার করে বিয়ে ভেঙে দিতে পারে। তবে শর্ত হলো, মেয়েটির সঙ্গে স্বামীর দাম্পত্য সম্পর্ক (সহবাস) যদি স্থাপিত না হয়ে থাকে তখনই কেবল বিয়ে অস্বীকার করে আদালতে বিচ্ছেদের ডিক্রি চাওয়া যাবে।
** স্বামী একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করলে। অর্থাৎ স্বামী ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান লঙ্ঘন করে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করলে।
** স্বামীর নিষ্ঠুরতারকারণে। নিম্নলিখিত আচরণগুলো ‘নিষ্ঠুরতা’ হিসেবে গণ্য হবে।

(১) অভ্যাসগত আচরণে স্ত্রীকে আঘাত করা, (দৈহিক আঘাত ছাড়াও মানসিক আঘাতও এর অন্তর্ভুক্ত, যা তার জীবন শোচনীয় বা দুর্বিষহ করে তুলেছে)।
(২) অন্য কোনো খারাপ নারীর সঙ্গে জীবনযাপন বা মেলামেশা।
(৩) স্ত্রীকে অনৈতিক জীবনযাপনে বাধ্য করা।
(৪) স্ত্রীর সম্পত্তি নষ্ট করা।
(৫) স্ত্রীকে নিজস্ব ধর্মপালনে বাধা দেয়া।
(৬) যদি স্বামীর একাধিক স্ত্রী থাকে, তাদের সঙ্গে পবিত্র কোরআনের নির্দেশ অনুসারে সমান ব্যবহার না করা।
(৭) এছাড়া মুসলিম আইনে বিয়ে বিচ্ছেদের জন্য বৈধ বলে স্বীকৃত অন্য যে কোনো কারণে স্ত্রী পারিবারিক আদালতে বিয়ে বিচ্ছেদের দাবি করতে পারবে।


ছবি - vanbibberlaw.com

উপরের যে কোনো এক বা একাধিক কারণে স্ত্রী আদালতে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারেন। অভিযোগ প্রমাণের দায়িত্ব স্ত্রীর। অভিযোগ প্রমাণিত হলে স্ত্রী বিচ্ছেদের পক্ষে ডিক্রি পেতে পারেন। যদি আদালত বিচ্ছেদের ডিক্রি দেয় তাহলে তার পরের সাতদিনের মধ্যে একটি সত্যায়িত কপি আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ইউপি/ পৌরসভা/সিটি করপোরেশনের চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে পাঠাবেন। স্বামীর অবস্থান জানা না থাকলে মুসলিম বিয়ে-বিচ্ছেদ আইন ১৯৩৯-এর ধারা ৩ অনুসারে তার উত্তরাধিকারদের কাছে নোটিশ দিতে হবে।১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুযায়ী তালাকের নোটিশ পাওয়ার পর চেয়ারম্যান আইনানুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন এবং চেয়ারম্যান যেদিন নোটিশ পাবেন সেদিন থেকে ঠিক নব্বই দিন পর তালাক চূড়ান্তভাবে কার্যকর হবে। গর্ভাবস্থায় বিয়েবিচ্ছেদ হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। এ ক্ষেত্রে ৯০ দিন এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার মধ্যে যেদিনটি পরে হবে সেদিন থেকে তালাক কার্যকর হবে। স্ত্রী গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসব না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না।

স্ত্রী তালাক দিলেও কি মোহরানা পাবে

স্ত্রী তালাক দিলেও মোহরানার টাকা তাকে দিতে হবে এবং তালাক কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ভরণপোষণ করতে হবে। তবে দাম্পত্য মিলন না ঘটলে এবং মোহরানা সুনির্দিষ্ট হয়ে থাকলে স্ত্রী মোহরানার অর্ধেকের অধিকারী। ১৯৩৯ আইনের ৫ ধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, এই আইনের কোনো কিছুই কোনো বিবাহিত নারীর বিয়েবিচ্ছেদের ফলে মুসলিম আইনানুসারে তার দেনমোহর বা এরকোনো অংশের ওপর কোনো অধিকারকেই প্রভাবিত করবে না।

ইসলামে তালাকের অবস্থান -

ইসলামী শরিয়তে অতি প্রয়োজনে তালাকের অবকাশ থাকলেও বিষয়টি অপছন্দনীয়। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, "আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপ্রিয় হালাল বস্তু হচ্ছে তালাক"।(আবু দাউদ শরীফ, হাদিস - ২১৭৭)

তাই নারী-পুরুষ উভয়ের কর্তব্য তালাক থেকে দূরে থাকা। তালাক দেওয়ার ক্ষমতা যেহেতু পুরুষের, তাই পুরুষকে ক্ষমতা প্রয়োগের ব্যাপারে খুবই সংযমী হতে হবে। অন্যদিকে নারীর ব্যাপারেও হাদিস শরিফে এসেছে, "যে নারী স্বামীর কাছে বিনা কারণে তালাক প্রার্থনা করে, তার জন্য জান্নাতের সুঘ্রাণ পর্যন্ত হারাম" (ইবনে মাজাহ, হাদিস - ২০৫৫)

সম্প্রতি পরকীয়ার বিস্তারে যেমন পুরুষের অপরাধ আছে, তেমনি আছে নারীরও। দেখা যাচ্ছে, এক নারীর দ্বারাই অন্য নারীর সংসার ভাঙছে। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর এই বাণী খুবই প্রাসঙ্গিক,"কোনো নারী যেন তার বোনের (অপর নারীর) অংশ নিজের পাত্রে নেওয়ার জন্য তালাকের আবেদন না করে। সে নিজে পছন্দ মোতাবেক বিবাহ করুক, কেননা তার ভাগ্যে যা লেখা আছে সে তা-ই পাবে"। (বুখারি শরীফ, হাদিস - ৬৬০০)

তাই প্রত্যেকের কর্তব্য, নিজের ভাগ্যে যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা। অন্যের জিনিস নিজের করে নিয়ে নেওয়ার মতো লোভী মানসিকতা কোনো ভদ্র মানুষের হতে পারে না। উপরন্তু যখন ওই নারীটিও একজন নারী।


ছবি -123rf.com

দাম্পত্য সম্পর্কের দৃঢ়তায় ইসলামের দিকনির্দেশনা

যেসব কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়, সেগুলো দূর করার জন্য কোরআন-হাদিসে অনেক নির্দেশনা রয়েছে।

প্রথমত, বিবাহের আগে একে অন্যকে ভালোভাবে দেখে নেবে, যাতে বুঝে-শুনেই বিবাহ সম্পন্ন হয় এবং কোনো ধরনের দৈহিক ত্রুটির কারণেই যেন বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করার উপক্রম না হয়।

দ্বিতীয়ত, শুধু একে অন্যের দোষ-ত্রুটির দিকেই দেখবে না, বরং তার মধ্যে যেসব ভালো গুণ বিদ্যমান সেগুলোর দিকে তাকিয়ে অপছন্দের দিকগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন, "যদি তাকে তোমার অপছন্দও হয়, তবু তুমি যা অপছন্দ করছ আল্লাহ তাতে সীমাহীন কল্যাণ দিয়ে দেবে"। (সুরা নিসা, আয়াত - ১৯)

এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, "কোনো মুমিন পুরুষ মুমিন নারীর ওপর রুষ্ট হবে না, কেননা যদি তার কোনো কাজ খারাপ মনে হয়, তাহলে তার এমন গুণও থাকবে, যার ওপর সে সন্তুষ্ট হতে পারবে"। (মুসলিম শরীফ, হাদিস - ১৪৬৯)।

স্ত্রীকে সংশোধনের কয়েকটি নির্দেশনা

যদি স্ত্রী স্বামীর আনুগত্য না করে, হক আদায় না করে, বরং উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত হয়, তাহলে স্বামীর দায়িত্ব হলো তাকে সংশোধনের সর্বাত্মক চেষ্টা করা। শরিয়ত এ ধরনের স্ত্রীকে সুশৃঙ্খল জীবনে ফিরিয়ে আনতে কিছু দিকনির্দেশনাও দিয়ে দিয়েছে। প্রথমে সেগুলো অনুসরণ করবে। তার পরও যদি স্ত্রীর মধ্যে কোনো পরিবর্তন না আসে, তাহলে চূড়ান্ত ফয়সালা তালাকের পথ বেছে নিতে পারবে।

প্রথম পদক্ষেপ : প্রথমেই উত্তেজিত হবে না বরং নিজেকে সংযত রাখবে এবং ভালভাবে মিষ্টি কথায় স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করবে। মায়া-ভালোবাসা প্রকাশ করে মন গলানোর চেষ্টা করবে। কোনো ভুল ধারণায় থাকলে যথাসম্ভব তা দূর করার চেষ্টা করবে। মায়া-মমতা-ভালবাসার মাধ্যমে যত দূর সম্ভব দাম্পত্য জীবন স্থায়ী করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে।

দ্বিতীয় পদক্ষেপ : ওই পদক্ষেপের মাধ্যমে কাজ না হলে রাগ-অনুরাগ প্রকাশের উদ্দেশ্যে স্ত্রীর সঙ্গে রাত যাপন থেকে বিরত থাকবে। ঘুমানোর জায়গা পৃথক করে নেবে। যদি এতে সতর্ক হয়ে যায় এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয় তাহলে দাম্পত্য জীবন সুখের হবে।

তৃতীয় পদক্ষেপ : উল্লিখিত দুটি পদক্ষেপ গ্রহণের পরও কোনো কাজ না হলে তৃতীয় পদক্ষেপ হিসেবে শরিয়ত স্ত্রীকে হালকা শাসন, হাত ওঠানোর অনুমতি দিয়েছে। তবে ক্ষিপ্ত হয়ে নয় বরং অন্তরে মহব্বত পোষণ করে বাহ্যিকভাবে স্ত্রীকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে তা করবে। তবে এতে যেন তার শরীরে কোনো দাগ না পড়ে এবং চেহারা বা স্পর্শকাতর কোনো স্থানে আঘাত না আসে।কেউ কেউ স্ত্রীকে শাসনের নামে বেধড়ক মারপিট করে থাকে, যা শরিয়ত সমর্থিত নয় এবং তা সুস্পষ্ট জুলুম।রাসুলুল্লাহ (সা.) স্ত্রীদের এ ধরনের শাস্তি দেওয়া কখনো পছন্দ করেননি।

এ প্রসংগে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, "পুরুষেরা নারীদের অভিভাবক। কারণ, আল্লাহ তাদের একের ওপর অপরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং পুরুষেরা নিজের ধন-সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সতী-সাধ্বী স্ত্রীরা অনুগত এবং বিনম্র। স্বামীর অনুপস্থিতিতে তারা তাঁর অধিকার ও গোপন বিষয় রক্ষা করে। আল্লাহই গোপনীয় বিষয় গোপন রাখেন।যদি স্ত্রীদের অবাধ্যতার আশংকা কর তবে প্রথমে তাদের সৎ উপদেশ দাও। এরপর তাদের শয্যা থেকে পৃথক কর এবং তারপরও অনুগত না হলে তাদেরকে শাসন কর৷ এরপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তবে তাদের সাথে কর্কশ আচরণ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমু্ন্নত-মহীয়ান।" (সুরা নিসা, আয়াত - ৩৪)।

চতুর্থত ও সর্বশেষ পদক্ষেপ : উল্লিখিত তিনটি পদক্ষেপ গ্রহণের পরও কোনো কাজ না হলে চতুর্থ পদক্ষেপ হিসেবে পবিত্র কুরআনের নির্দেশ হলো,উভয় পক্ষ থেকে এক বা একাধিক সালিসের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করবে। এ প্রসংগে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, "যদি তোমরা উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশঙ্কা কর, পুরুষের পরিবার থেকে একজন সালিস ও নারীর বংশ থেকে একজন সালিস পাঠিয়ে দেবে।। যদি তারা মীমাংসা কামনা করে,তবে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং সবার মনের কথা জানেন ।"( সুরা নিসা, আয়াত - ৩৫)।

তালাক হলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

আর যদি পরিস্থিতি এমন হয়ে যায় যে,মীমাংসা ও সংশোধনের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়, কোনোক্রমেই একমতে পৌঁছা সম্ভব না হয় - এ রকম চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে শরিয়ত স্বামীকে তালাক দেওয়ার এখতিয়ার দিয়েছে। তালাক অত্যন্ত অপছন্দনীয় কাজ হলেও তা ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা না থাকলে শরিয়ত সমর্থিত পদ্ধতিতে তালাক দেবে।

তালাক দেওয়ার শরিয়ত নির্দেশিত পদ্ধতি

কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা অনুসারে তালাক দেওয়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো—স্ত্রী যখন হায়েজ (মাসিক) থেকে পবিত্র হবে তখন স্বামী তার সঙ্গে সহবাস না করে সুস্পষ্ট শব্দে এক তালাক দেবে। যেমন,আমি তোমাকে এক তালাক দিলাম। এরপর স্বামী যদি স্ত্রীকে ইদ্দত চলাকালীন ফিরিয়ে নিতে চায় তাহলে তা পারবে। আবার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কায়েম হয়ে যাবে। অন্যথায় ইদ্দত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং স্ত্রী স্বামী থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে যাবে। তালাক কার্যকর হওয়ার পর স্ত্রী ইচ্ছা করলে অন্যত্র বিবাহ করতে পারবে। তালাক দিতে একান্ত বাধ্য হলে এই পদ্ধতিতে তালাক দেওয়া কর্তব্য।

শরিয়ত নির্দেশিত পদ্ধতিতে তালাক দেওয়ার সুফল

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, তালাকের পরে দাম্পত্য জীবনের সুখ-শান্তির কথা মনে পড়ে পরস্পরের গুণ ও অবদান স্মরণ করে উভয়েই অনুতপ্ত হয় এবং বৈবাহিক সম্পর্ক পুনর্বহাল করার আপ্রাণ চেষ্টা করে। যদি শরিয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী এক তালাক দেওয়া হয়, তাহলে এ আশা পূরণ হওয়ার সুযোগ থাকে এবং আবার বৈবাহিক জীবন শুরু করতে পারে। এ পদ্ধতিতে দীর্ঘ সময় স্ত্রীকে পুনঃ গ্রহণের অবকাশ পাওয়া যায় এবং তালাকের কারণে সৃষ্ট সমস্যা নিয়েও ভাবার সুযোগ থাকে।

আর যদি ইদ্দত শেষ হয়ে বিচ্ছেদের পর আবার তারা দাম্পত্য জীবনে ফিরে আসতে চায়, তাহলে নতুনভাবে মোহর ধার্য করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এ ক্ষেত্রে অন্যত্র বিবাহের প্রয়োজন হবে না। দুর্ভাগ্যবশত, দ্বিতীয়বারও তাদের মধ্যে বনিবনা না হলে এবং আবার তালাকের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সে ক্ষেত্রেও ইসলামের নির্দেশনার পূর্ণ অনুসরণ করে ওই সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

উল্লেখ্য, তালাকের সময় স্ত্রী গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত তার ইদ্দতের সময়। আর গর্ভবতী না হলে তিন হায়েজ (মাসিক) অতিক্রম হওয়া পর্যন্ত।

তবে স্বামী যেহেতু স্ত্রীকে দুই ধাপে দুই তালাক প্রদান করেছে, তাই এখন শুধু একটি তালাক তার অধিকারে আছে। এই তৃতীয় তালাক প্রদান করলে আর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকবে না এবং আবার বিবাহও করতে পারবে না। কেননা এই সুযোগ দুই তালাক পর্যন্তই সীমিত। যে ব্যক্তি উপরোক্ত পদ্ধতিতে দুই তালাক দেওয়ার পর আবার বৈবাহিক সম্পর্ক কায়েম করবে, তাকে আগামী দিনগুলোতে খুব হিসাব-নিকাশ করে চলতে হবে। একটু অসতর্কতার কারণে তৃতীয় তালাক দিয়ে ফেললে আর এই স্ত্রীকে নিয়ে ঘর-সংসার করার সুযোগ থাকবে না, বরং সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যাবে।

শরিয়তের নির্দেশনা অমান্য করার কুফল

এভাবেই ইসলামী শরিয়ত বৈবাহিক সম্পর্ক অটুট রাখার অবকাশ দিয়েছে। কিন্তু মানুষ শরিয়তের এই সুন্দর পদ্ধতি উপেক্ষা করে। শিক্ষিত-অশিক্ষিত সব শ্রেণির লোকদের মধ্যেই এ প্রবণতা দেখা যায় যে, তারা যখন রাগে ক্ষোভে লিখিত বা মৌখিকভাবে তালাক দেয় তখন একসঙ্গে তিন তালাকই দিয়ে থাকে। তিন তালাক দিলে ইদ্দত চলাকালেও স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে না এবং ইদ্দতের পরেও নতুনভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সুযোগ থাকে না। একে অপরের জন্য সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যায়। এমতাবস্থায় অনুতপ্ত হওয়া এবং আপসের জন্য আগ্রহী হওয়া কোনো কাজে আসে না।


ছবি -smartaboutmoney.org

যারা তিন তালাক দেওয়ার পর শরিয়তের বিধান জানতে মুফতি সাহেবদের কাছে আসে, তাদের অনেককেই দেখা যায় অত্যন্ত অসহায়ত্বের সঙ্গে নিজের দুঃখের কথা বলে মুফতি সাহেবের মন গলাতে চেষ্টা করে। নিষ্পাপ সন্তানদের কথা বলে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করতে থাকে,যেভাবেই হোক কোনো হিল্লা-বাহানা বের করে তার পরিবারটিকে যেন ধ্বংস থেকে বাঁচানো হয়। কিন্তু এসব আবদার-অনুরোধ বিফল। তার নিজ হাতেই সব সুযোগ বিনষ্ট হয়েছে। তালাক দেওয়ার শরিয়তসম্মত পদ্ধতি অনুসরণ না করার কারণে স্ত্রী তার জন্য সম্পূর্ণ হারাম হয়ে গেছে। উপরন্তু শরিয়তের নিয়ম অমান্য করে মারাত্মক গুনাহ করা হয়েছে। আর অন্যায়ভাবে তালাক দেওয়ায় স্ত্রীর ওপর চরম জুলুমও করা হয়েছে, যা আরেকটি কবিরা গুনাহ। এখন আবার তাকে স্ত্রীরূপে ফিরে পাওয়ার যে সম্ভাবনাটি রয়েছে তা অত্যন্ত দূরবর্তী সম্ভাবনা।

প্রচলিত হিল্লা বিয়ে ইসলামে নিষিদ্ধ

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তিন তালাকের পরই স্বামী-স্ত্রী উভয়েই নানা রকম হিল্লা-বাহানার আশ্রয় নেওয়া শুরু করে। এটা যেমন অশালীন, তেমনি শরিয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ ও লানতযোগ্য কাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, "(হিল্লা-বাহানার মাধ্যমে) অন্যজনের জন্য স্ত্রী হালাল করার উদ্দেশ্যে বিবাহকারী এবং যার জন্য হালাল করা হয়েছে—উভয়ের ওপরই আল্লাহর লানত" (আবু দাউদ শরীফ, হাদিস - ২০৭৬)।

যদিও এমতাবস্থায় ওই নারী অন্যত্র বিবাহ করে সেই স্বামীর সঙ্গে সহবাসের পর স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত হলে প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে। তবে এ পদ্ধতি গ্রহণ করা অত্যন্ত ঘৃণিত।

উপরন্তু হিল্লা-বাহানা গ্রহণের মাধ্যমে ইসলামের বিরোধীদের ইসলামের বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। তারা হিল্লা বিয়ে নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে থাকে। অথচ ইসলাম এ ধরনের হিল্লা বিয়ের অনুমতিই দেয় না। ইসলামে নিষিদ্ধ একটি হীন কাজের দায় ইসলামের ওপর চাপিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হচ্ছে। আর এটি হয়েছে শুধু কিছু মুসলমানের অনৈতিক কাজের কারণে। ইসলামের বিধান হলো—তিন তালাকের পর উভয়ে উভয়ের রাস্তা ধরবে। স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে নেবে। তদ্রূপ স্ত্রীও ইদ্দত শেষে অন্যত্র বিয়ে করে তার সঙ্গেই ঘর-সংসার করবে। স্ত্রী প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার বা স্বামী তাকে ফিরিয়ে নিতে কোনো হিল্লা-বাহানা করা অবৈধ। তবে হ্যাঁ, কোনো কারণে যদি দ্বিতীয় স্বামী কখনো তালাক দিয়ে দেয় বা মারা যায়, তখন ইদ্দত শেষে চাইলে সে আবার প্রথম স্বামীর কাছে যেতে পারবে। ইসলামের এই স্বচ্ছ বিধানের সঙ্গে প্রচলিত হিল্লা বিয়ের কোন সম্পর্কই নেই।


ছবি - moneycontrol.com

সব দেওয়ালেরই যেমন দুদিক আছে তেমনি সব জিনিষেরই ভাল-খারাপ দুটি দিক আছে। তালাক যেহেতু দুতরফা ভাবেই সম্ভব, তাই তার সুযোগ নিয়ে কিছু দুরভিসন্ধিমূলক মানুষ (নারী-পুরুষ উভয়েই,তবে বেশীরভাগই পুরুষ) অনেক সময় এর অপব্যবহার করে, ইসলামের চোখে তালাক কতটা গর্হিত ও নিকৃষ্ট তা না ভেবেই। এমনকি, কোন পরিস্থিতিতে -কী ধরনের অপরাধে কোন তালাক দেওয়া জায়েজ (ইসলাম সম্মত) এবং তার পদ্ধতিগত ধাপগুলি ঠিকঠাক মানা হল কি না সেটা না ভেবে। সর্বোপরি, দেখা দরকার পারস্পরিক সংশোধন ও সম্পর্কের পুনর্জাগরণের সুযোগ দেওয়া হল কি না। এ সব কিছু না ভেবে নিছক হঠকারিতা কিংবা বহুবিবাহের লিপ্সা থেকে তাৎক্ষণিক তিন তালাককে বিবাহবিচ্ছেদের সহজলভ্য ছাড়পত্র বানানো ইসলাম সমর্থন করেনা বা মেনে নেওয়া যায় না। এর ফলে কত নর-নারীর জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে, কত ছেলে-মেয়ে তাদের বাবা-মায়ের তালাকের কারনে মানবেতর জীবন যাপন করছে ,আর কত শত পরিবার এর ভূক্তভোগী তার হিসাব করতে বসলে চোখ ভিজে যাবে।এই অপব্যবহারের হোতা যারা, তাদেরকে ইসলাম ধর্মে ক্ষমার অযোগ্য পাপী বলেই মনে করা হয়।মুশকিল হল এই ভুল মানুষগুলির জন্য ইসলামের তালাক নিয়ে ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে অনেক ভ্রান্ত ধারণা জন্ম নিয়েছে এবং তারা ইসলামের অনেক সমালোচনা করে থাকে। এ ব্যাপারে সবারই সহনশীল হওয়া এবং শেষ সময় পর্যন্ত মানবিক ভাবে বিবাহ রক্ষার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত।

আল্লাহ আমাদের সকলকে দাম্প্যত্য জীবনে ক্ষমার,মেনে চলা-মানিয়ে চলার তওফিক দান করুন।সকল স্বামী-স্ত্রীকে সকল বিভেদ, মনোমালিণ্য ভুলে মিলে-মিশে আমৃত্যু একসাথে জীবন কাটানোর তওফীক দান করুন এবং তালাক নামক নিকৃষ্ট কাজ থেকে হেফাজত করুন।

চলবে -
================================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -

মানব জীবন - ৬ "দেনমোহর - স্ত্রীর হক" - Click This Link
মানব জীবন - ৫ "বিবাহ" - Click This Link
মানব জীবন - ৪ " মাতৃত্ব " - Click This Link
মানব জীবন - ৩ Click This Link
"নারী স্বাধীনতা বনাম নারী(জরায়ু)'র পবিত্রতা "
মানব জীবন - ২ " মাতৃগর্ভ (জরায়ু)"- Click This Link
মানব জীবন - ১ "মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার ইতিকথা"- Click This Link



উৎসর্গ - এ পর্বটি সকল স্বামী-স্ত্রীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত যাতে আমরা সকলেই সংসারের সকল সমস্যা এবং নিজেদের মাঝের সকল মনোমালিন্য এড়িয়ে উভয়ে উভয়ের প্রতি বিশ্বস্ত ও আন্তরিক থেকে ,ত্যাগ ও সমঝোতার মাধ্যমে সংসারকে সুখি ও শান্তিময় করে গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে পারি।যাতে ভাল-মন্দ সব বিষয়ে আমরা আমাদের অবস্থান বুঝতে পারি এবং এ ব্যাপারে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সংসার রক্ষায় সর্বোচ্চ করণীয় কাজ করতে পারি। মহান আল্লাহপাক আমাদের জীবনে সংসারের সুখের জন্য সহযোগীতার মনোভাব অর্জনের এবং সকল ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে চলার তওফিক দান করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:০৬
১৯টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×