somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" পরিবার " - শিশুর / মানুষের নৈতিক শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র , যার প্রভাব মানব জীবনে সুদূর প্রসারী। (মানব জীবন - ১০ )।

১৭ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি - webneel.com

মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পরই মানব শিশুর তথা মানুষের শিক্ষাজীবন শুরু হয়ে যায় । শিশুর জীবনের শিক্ষার হাতেখড়ি হয় বাবা-মায়ের মাধ্যমে এবং এ শিক্ষা তথা পরিবারের শিক্ষার প্রভাব তার জীবনে হয় সুদূরপ্রসারী। যেহেতু শিশুর শিক্ষা তথা নৈতিকতা গঠনে বাবা-মায়ের ভূমিকা এবং দায়িত্ব সর্বাগ্রে এবং সবচেয়ে বেশী তাই প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত বিবাহপূর্বে বা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্বেই এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জন। আমরা প্রকৃতপক্ষে সন্তান প্রতিপালনের কাজটিকে এতই হাল্কা মনে করি যে, এ সম্পর্কে কোন পড়াশুনা করার বা জানার প্রয়োজনই মনে করিনা।
অথচ এটা সত্যি যে -

"তৃণলতা সহজেই তৃণলতা
পশুপাখি জন্মেই পশুপাখি
আর মানুষ !!! প্রাণপণ এবং সারা জীবনের চেষ্টায় তবেই হয় মানুষ"।



ছবি-sylhet71.com

শিশুর জন্য একটি নতুন পৃথিবীর প্রথম বুনিয়াদ পরিবার। একটি শিশুর প্রথম ঘর, প্রথম পাঠশালা এই পরিবার। একটি সমাজ এর প্রথম ভিত্তি এই পরিবার। দুজন নারী পুরুষের শরীয়তসম্মত পবিত্র এক বন্ধনের মাধ্যমে পরিবার নামক প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন হয়। হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়ার পরিবারটি এই পৃথিবীতে শুধু নয় দুনিয়ার প্রথম পরিবার। এরপর যতজন নবী-রাসূল, আম্বিয়া কেরাম,অপামর মানুষ এই দুনিয়ায় এসেছেন সবাই একটি পরিবারবদ্ধ জীবনযাপন করেছেন।


ছবি - pinterest.com

মূলতঃ পরিবারই হল মানুষের মানষিক প্রশান্তি, নিশ্চিন্ত - নিরাপদে থাকার শান্তিপূর্ণ আবাসস্থল। এ প্রসংগে আল কুরআনে বলা হয়েছে, "তিনিই তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন ও তার থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন, যাতে সে তার কাছে শান্তি পায়। তারপর যখন সে তার সাথে সংগত হয় তখন সে এক হালকা গর্ভধারণ করে এবং এটা নিয়ে সে অনায়াসে চলাফেরা করে। অতঃপর গর্ভ যখন ভারী হয়ে আসে তখন তারা উভয়ে তাদের রব আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, যদি আপনি আমাদেরকে এক পূর্ণাঙ্গ সন্তান দান করেন তাহলে আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব"।(সূরা আরাফ,আয়াত - ১৮৯)।


ছবি - pinterest.com

পরিবার হলো প্রেম-প্রীতি ভালোবাসা ও মায়া মমতায় ভরা এমন একটি সুসজ্জিত বাগানের নাম যেখানে প্রতিটি সদস্য তার চারিত্রিক গুণাবলী বিকশিত করার পর্যাপ্ত সুযোগ পায়। নৈতিক গুণাবলীসমৃদ্ধ হয়ে তারা পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে করে মোহিত, সুবাসিত।এটা হচ্ছে এমন এক নিরাপদ আবাসস্থল যা বাইরের যাবতীয় পংকিলতা ও পাপাচার থেকে মানুষকে রাখে সুরক্ষিত। তাই পরিবার বিহীন মানুষ নোঙরহীন নৌকা বা বৃন্তচ্যুত পাতার মত স্থিতিহীন।আল কুরআনে পরিবারকে দূর্গের সাথে তুলনা করা হয়েছে এবং পরিবারে পারস্পররিক জীবন যাপনকারী নারী-পুরুষ ও ছেলেমেয়েকে বলা হয়েছে “দূর্গের অভ্যন্তরে সুরক্ষিত লোকগণ”।

পরিবার কি - পরিবার সাধারণত পিতামাতা, ভাইবোন সন্তান-সন্ততি নিয়ে গঠিত হয় । আমাদের সমাজে যৌথ ও একক পরিবার উভয়ই প্রচলিত।পরিবারকে বলা হয় পরস্পরের কল্যাণ কামনাপূর্ণ নৈতিক বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান । এককথায় মায়ের বাৎসল্যপূর্ণ চুম্বন এবং পিতার স্নেহপূর্ণ সেবা-যত্নের পবিত্র পরিবেশেই জন্ম দিতে পারে মানুষের ভবিষ্যৎ সুস্থ সুন্দর সমাজ ও নৈতিকতা সম্পন্ন ভাল মানুষ। নাগরিকত্বের প্রথম শিক্ষা মায়ের কোলে আর বাবার স্নেহের ছায়াতেই হওয়া সম্ভব।বস্তুত উন্নত ও নৈতিক বোধসম্পন্ন এ পরিবার ও পারিবারিক জীবনই হলো সুস্থ সমাজের রক্ষাদূর্গ।


ছবি-nikahexplorer.com

মানব জীবনে পরিবারের গুরুত্ব - পরিবার প্রথার অবর্তমানে সমাজ টিকে থাকতে পারেনা। সমাজ ও সংস্কৃতির সুস্থতার জন্য পরিবার অপরিহার্য।মহান আল্লাহতায়ালা প্রেম, প্রীতি ভালোবাসা, দয়া, স্নেহ, সহানুভূতি মানুষের প্রকৃতিগত করে দিয়েছেন। এসব শুভ মানবিক গুণাবলীই মানুষকে প্রকৃতপক্ষে মানুষের মর্যাদা দান করেছে। এসব গুণাবলী সংরক্ষণের জন্য যে পারিবারিক জীবন অপরিহার্য তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।বস্তুত সমাজ বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে পরিবার এবং পারিবারিক জীবন হচ্ছে সমাজ জীবনের ভিত্তিপ্রস্তর। এই পরিবারেরই হয়ে থাকে মানুষের সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার হাতেখড়ি।

তাই পারিবারিক জীবনকে সুস্থ ও সর্বাঙ্গীন সুন্দর করে গড়ে তোলা সকলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। পরিবারকে সমাজ নামক দেহের হার্ট এর সাথে তুলনা করা চলে। এই হার্ট যদি দুর্বল বা বিকল হয়ে পড়ে তাহলে পুরো সমাজ ব্যবস্থাই বিকল হয়ে যাবে।সমাজ জীবনের মূল্যবোধের যত অবক্ষয় ঘটেছে তার অধিকাংশেরই কারণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে এর মূলে রয়েছে দুর্বল পারিবারিক ব্যবস্থা।

পবিত্র কুরআনে পারিবারিক জীবনের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতার প্রতি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত করে অনেক আয়াত নাযিল হয়েছে । পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, "এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে আর এক নিদর্শন (হচ্ছে),তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা ওদের নিকট শান্তি পাও এবং তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সহানুভূতি সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে নিদর্শন আছে"।(সূরা আর রূম,আয়াত - ২১)।"এবং যারা প্রার্থনা করে বলে, হে আমাদের রব! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা হবে আমাদের জন্য চোখজুড়ানো। আর আপনি আমাদেরকে করুন মুত্তাকীদের জন্য অনুসরণযোগ্য"।(সূরা আল ফুরকান,আয়াত - ৭৪)।

পারিবারিক রীতি ও বন্ধন ছাড়া পবিত্র কুরআনের এসব নির্দেশ ও দৃষ্টিভঙ্গি কিছুতেই বাস্তবায়িত হতে পারে না।ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, উন্নত চরিত্রসম্পন্ন জাতির অভ্যুদয় ঘটেছিল সুস্থ-সুন্দর ও পবিত্র পারিবারিক ভিত্তির উপর।

বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় পারিবারের হালচাল - বর্তমান সমাজে পরিবারের দায়িত্ববোধ কমে যাওয়ায় এবং এর গুরুত্বকে খাটো করে দেখায় এর প্রতি সদস্যদের আকর্ষণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে বাবা-মা-ভাই-বোন কেউই কারো প্রতি মায়া-মমতা, ভালোবাসা যথাযথ দায়িত্ববোধ অনুভব করছে না।ভোগবাদী এ সমাজের পেছনে ছুটতে ছুটতে মানুষ আজ বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছে । ছেলেমেয়েরা মুরুব্বীদের পরোয়া করছে না। সামান্য ব্যাপারেই পরিবার ব্যবস্থায় ভাঙ্গন ও বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ ন্যূনতম মনুষ্যত্ব ও মানবতা বোধের পরিচয় দিতেও ব্যর্থ হচ্ছে। পরিবার থেকে পাচ্ছেনা মানুষ হওয়ার প্রকৃত শিক্ষা।


ছবি - poribar.net

আমাদের মুসলিম সমাজে পরিবার নামক দুর্গ এখনোও সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে না গেলেও এতে ঘুণ ধরে অনেকটা অন্তঃসারশূন্য করে দিচ্ছে। তার উপর আকাশ সংস্কৃতি ও মাদকের সর্বনাশা ছোবলে পরিবারের ভিতকে করে দিয়েছে অনেকটা নড়বড়ে। যার কারণে চারদিকে আজ হিংসাত্মক সংঘাতের ছড়াছড়ি, নৃশংসতার মাত্রা এতখানি এসে পৌঁছেছে যে কোথাও বাবা সন্তানকে, সন্তান বাবাকে, মা তার আদরের পেটে ধরা সন্তানকে গলাটিপে হত্যা করছে। এ অমানবিক বিপর্যয়ে গোটা দেশ যেন একটা পাগলা গারদে পরিণত হতে যাচ্ছে। পারিবারিক দায়িত্ববোধের অভাবে এ অনৈতিকতার ছড়াছড়ি সর্বত্র। পূর্বে পরিবার ছিল মানুষের আগ্রহ ,আনন্দ উৎফুল্লতার কেন্দ্রস্থল। পারিবারিক জীবনেই মানুষ সন্ধান করত শান্তি, স্বস্তি, তৃপ্তি ও নির্মলতা। কিন্তু এখন পরিবারের লোকজন হয়ে গেছে বিচ্ছিন্ন। বিক্ষিপ্ত কিছু লোক একসাথে বসবাস করলেও তার মূল উদ্দেশ্য বিনষ্ট হয়ে গেছে। হারিয়ে ফেলেছে মানুষে মানুষে সকল প্রীতি ও মাধুর্য, অকৃত্রিমতা, আন্তরিকতা ও পবিত্রতা।

পরিবারের মূল লক্ষ্য কি - পরিবার উদ্দেশ্যহীন কোন বন্ধনের নাম নয়। পারিবারিক জীবন যাপন নিছক পাশবিক লালসা সর্বস্ব যৌন চর্চার স্থান নয় বরং পরিবারের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে সন্তান জন্মদান, সন্তানদের লালন-পালন ও তাদের নৈতিক শিক্ষা দিয়ে এমনভাবে যোগ্য করে তোলা যেন তারা ভবিষ্যৎ সমাজের সুনাগরিক হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে। অর্থাৎ পরিবার হচ্ছে মূলত মানুষ তৈরির কারখানা। এই কারখানায় পরিবারের প্রধান কর্ণধার পিতা ও মাতা পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে নির্ঝঞ্ঝাট ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নতুন বংশধারাকে মৌলিক আকীদা শিক্ষা, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও আদব আখলাক, শিক্ষা, শিশুর নৈতিক প্রেরণা উজ্জীবিত করা এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি, সহানুভূতি, ত্যাগ কুরবানী, ধৈর্য্য ও দৃঢ় সংকল্পের প্রশিক্ষণ দিবেন।এটাই পরিবারে মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

নৈতিক শিক্ষা কি - নৈতিকতা বলতে বোঝায় এমন ধরণের উন্নত আচরণের সমষ্ঠি যার মাধ্যমে ব্যক্তির মধ্যে ভালো-মন্দের প্রার্থক্য বোধের সৃষ্টি হবে এবং যা তাকে সমাজের অধিকাংশের কাছে গ্রহণযোগ্য বা কাংখিত আচরণে অভ্যস্ত করে তুলবে।সাধারণত নৈতিকতা বলতে আমরা বুঝি ,সঠিক ও ভুলের নীতি সম্পর্কিত এবং বেশিরভাগ লোকের দ্বারা গ্রহণযোগ্য এবং সঠিক বিবেচিত আচরণের মান অনুসরণ করা।

আর নৈতিক শিক্ষা হচ্ছে, যে শিক্ষা মানুষকে ভালো-মন্দের পার্থক্য করতে শেখায় এবং এমন উন্নত আচরণের শিক্ষা দেয় যা অধিকাংশ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ও কাংখিত। এ সমস্ত নৈতিক গুণাবলীগুলো হচ্ছে সত্যবাদিতা-সাহসিকতা-পরিশ্রমপ্রিয়তা-অনুগ্রহ-সহানুভূতি- সুবিচার-ইচ্ছাশক্তি-ধৈর্য্য বা সংযম শক্তি-অর্ন্তদৃষ্টি,দূরদৃষ্টি-দৃঢ়তা-উচ্চাশা-ভ্রাতৃত্ব-স্বদেশপ্রেম ইত্যাদি।সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে সমাজের মূলভিত্তিই রচিত হয় পরিবারে। মূলত পরিবার হচ্ছে মানব শিশুর মৌলিক চাহিদা পূরণের আশ্রয়-প্রশ্রয় কেন্দ্র যেখানে সে তার নিরাপত্তা-স্নেহমমতা-ভালোবাসা ইত্যাদি পেয়ে বড় হয়ে উঠবে। আর পরিবার থেকেই শুরু হয় নৈতিক শিক্ষা হাতেখড়ি।তাই পরিবারের মা-বাবার উচিত সন্তানের প্রকৃত কল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে যত্নবান হওয়ার । অথচ আমরা শিশুদের শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি যতটা যত্নবান মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে তার সামান্যতম যত্নবান নই।


ছবি -kalerkantho.com

শিশুর/মানুষের নৈতিক শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র -

পরিবারই হচ্ছে শিশুর/মানুষের পরিবারের প্রাথমিক ও নৈতিক শিক্ষার প্রাথমিক ও শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান। এখান থেকেই তার চরিত্রের ভিত্তি গড়ে উঠে। অর্থাৎ ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ এবং গড়ে উঠার মূল ক্ষেত্রই হচ্ছে পরিবার। তাই পরিবারে পিতামাতার প্রধান দায়িত্বই হচ্ছে সন্তানকে ছোট থেকেই নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।

পরিবার প্রসংগে আল কুরআনে বলা হয়েছে," হে মু’মিনগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে আর তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে মোতায়েন আছে পাষাণ হৃদয় কঠোর স্বভাবের ফেরেশতাগণ। আল্লাহ যা আদেশ করেন, তা তারা অমান্য করে না, আর তারা তাই করে, তাদেরকে যা করার জন্য আদেশ দেয়া হয়"।(সূরা আত্ তাহরীম,আয়াত - ৬)। আল কুরআনের এ আয়াতের অর্থই হচ্ছে- তোমরা তোমাদের নিজেদের ও পরিবার পরিজনদের সুশিক্ষা ও ভালো অভ্যাসের সাহায্যে পরকালীন জাহান্নাম থেকে বাঁচাও।

উপরোক্ত আয়াতের ভিত্তিতে হযরত আলী (রা.) বলেছেন- “তোমরা নিজেরা শেখো ও পরিবারবর্গকে শিখাও সমস্ত কল্যাণময় রীতিনীতি এবং তাদের সে কাজে অভ্যস্ত করে তোল। সন্তান সন্তুতিকে উন্নতমানের ইসলামী আদর্শ শিক্ষাদান ও ইসলামী আইন-কানুন পালনে আল্লাহকে ভয় ও রাসূলে করীম (সাঃ)-কে অনুসরণ করে চলার জন্য অভ্যস্ত করে তোলা পিতামাতারই কর্তব্য। এটা হচ্ছে পিতামাতার প্রতি সন্তানের বড় হক। সন্তানকে ঐ জ্ঞান ও অভ্যাসে উদ্বুদ্ধ করে দেয়ার তুলনায় অধিক মূল্যবান কোনো দান এমন হতে পারে না, যা তারা সন্তানকে দিয়ে যেতে পারেন"। এ প্রসঙ্গে নবী করীম (সা.) বলেছেন- "কোনো পিতামাতা সন্তানকে উত্তম আদব-কায়দা ও স্বভাব চরিত্র শিক্ষাদান অপেক্ষা ভালো কোন দান দিতে পারে না"।তিনি অন্যত্র বলেছেন- "তোমাদের সন্তানদের সম্মান করো এবং তাদের ভালো স্বভাব-চরিত্র শিক্ষা দাও"। তাই দেখা যায় যে পরিবার সন্তানের নৈতিকতা গঠনের ব্যাপারে যত্নশীল সে পরিবারের সন্তানেরাও উন্নত মানুষ হিসেবে সমাজে তত বেশী প্রতিষ্ঠিত ও পরিচিত।


ছবি - banglanews24.com

শিশুর নৈতিক শিক্ষা প্রদানে পরিবারের করণীয় -

সন্তানকে/মানুষকে প্রকৃত মানুষ রূপে গড়ে তোলার কাজটি খুব সহজ নয়। তার ওপর বর্তমানে আমাদের সমাজের অনৈতিক পরিবেশ এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিক শিক্ষার অনুপস্থিতি সব মিলিয়ে একটা নেতিবাচক পরিবেশ থেকে সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে যদি না পরিবারে একেবারে ছোট এবং আরো ভালভাবে বললে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্ব থেকেই প্রস্তুতি নেয়া না হয়। উত্তম পরিকল্পনার সাথে সাথে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মিলে গুরুত্বের সাথে এ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হতে হবে

আগের দিনের নারী শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন তোলা হয়ে থাকে। কিন্তু এ কথা বাস্তব সত্য যে, পূর্বে হারেম(পরিবার)গুলো ছিল একেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেখানে নারীদের পরিবার, সন্তান প্রতিপালন ও অন্যান্য বাস্তব উপযোগী শিক্ষা প্রদান করা হতো। যার ফলশ্রুতিতে যে সব পরিবার থেকে জন্ম নিয়েছিল দেশজোড়া বিশ্বখ্যাত জ্ঞানী গুণী।

তাই এ কথা বলতেই হবে পরিবার নামক গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠান চালাতে প্রস্তুতিমূলক শিক্ষার অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে করণীয় দিকগুলো হচ্ছে-

১। পরিবারকে শিশুর জন্য লালন পালনে সুন্দর ও উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা।
২। পরিবারকে ভক্তি ও ভালোবাসার আকর্ষণীয় কেন্দ্রবিন্দু বানানো।
৩। পরিবারে শিশুর প্রতিপালনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে এবং পরিবারের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৪। পিতা-মাতার পাশাপাশি শিশুর জন্য সর্বোত্তম শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে মেধাবী ও ভাল শিক্ষকদের দ্বারা ।
৫। সবার আগে পিতা-মাতাকে সন্তানের কাছে নিজেকে মডেল(ভাল মানুষ) হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে।
৬। সন্তানকে বেশি বেশি সাহচর্য বা সময় দিতে হবে।
৭। নিজ নিজ পালনীয় ধর্ম সন্তানকে ভালভাবে শেখাতে হবে এবং নিজেদের উত্তম চরিত্রের অধিকারী হতে হবে।
৮। পরিবারের সদস্যদের সংশোধনের প্রচেষ্টার সিস্টেম হচ্ছে- (ক) উত্তম ভাষায় নসীহত (খ) প্রয়োজনীয় শাসন (গ) ক্ষমা।
৯। সন্তানকে ভালো একটি ফ্রেন্ড সার্কেল গড়ে দিতে হবে। কারণ হাদীসে আছে মানুষ তার বন্ধুর দ্বারা প্রভাবিত হয়। অতএব তাকে ভেবে দেখতে হবে এবং ফলোআপ করতে হবে কাকে সে বন্ধুরূপে গ্রহণ করছে।


ছবি-ilbaralbarady.blogspot.com

সর্বোপরি পরিবারে সন্তানদের নৈতিক শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে হযরত লোকমান হাকীমের নসীহতগুলো গ্রহণ করতে হবে। হযরত লোকমান হাকীম তার সন্তানদের যে উপদেশ/পরামর্শ দিয়েছিলেন তা "সূরা লোকমানে "বলা হয়েছে -

১। হে পুত্র ! আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না । যথার্থই শিরক অনেক বড় জুলুম৷।(সুরা লোকমান,আয়াত - ১৩ )।
২। হে পুত্র! একটু পরিমাণ র্শিক কোনো জিনিসেও যদি কোন প্রস্তরের অভ্যন্তরে কিংবা আসমান-জমীনের কোনো এক নিভৃত কোণেও লুকিয়ে থাকে, তবুও আল্লাহ তা’আলা তা অবশ্যই এসে হাজির করবেন। বস্তুত আল্লাহ বড়ই সূক্ষ্মদর্শী গোপন জিনিস সম্পর্কেও পূর্ণ ওয়াকিফহাল।(সুরা লোকমান,আয়াত - ১৩ )।
৩। হে পুত্র! নামায কায়েম করো, সৎকাজের হুকুম দাও, খারাপ কাজে নিষেধ করো এবং যা কিছু বিপদই আসুক সে জন্য সবর করো। (সুরা লোকমান,আয়াত - ১৭)।
৪।হে পুত্র! আর মানুষের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে কথা বলো না, পৃথিবীর বুকে চলো না উদ্ধত ভঙ্গিতে, আল্লাহ পছন্দ করেন না আত্মম্ভরী ও অহংকারীকে ।(সুরা লোকমান,আয়াত - ১৮)।
৫।নিজের চলনে ভারসাম্য আনো এবং নিজের আওয়াজ নীচু করো৷ সব আওয়াজের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হচ্ছে গাধার আওয়াজ ।(সুরা লোকমান,আয়াত - ১৯)।


হযরত লোকমানের এ নসীহতগুলি প্রতিটি শিশুর নৈতিক শিক্ষার প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবে ছোটবেলা থেকেই অন্তরে গেঁথে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। পরিবারে বাবা-মায়ের দায়িত্ব সন্তানকে যতদূর সম্ভব চরিত্রসম্পন্ন করে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করা। তবে এ কর্তব্য পালনে তার নিজের চেষ্টা সাধনা ও যত্নের উপর একান্তভাবে নির্ভরশীল হলে চলবে না। আমাদের এ ব্যাপারে অন্যান্য বিষয়ের মত আল্লাহর উপরই ভরসা বা নির্ভরতা স্থাপন করতে হবে। পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামীন উন্নত নৈতিক চরিত্রসম্পন্ন সন্তান গঠনের জন্য দোয়া করার উপদেশ দিয়েছেন, বলা হয়েছে আল্লাহর নেক বান্দা তারাই, যারা সবসময় দোয়া করে এই বলে- “হে আল্লাহ! আমাদের স্ত্রীদের ও সন্তানদের দিক থেকে চোখের শীতলতা দান করো এবং আমাদেরকে পরহেজগার লোকদের নেতা বানাও।”


ছবি -dreamstime.com

একজন সন্তান কেমন হবে, কী করবে, কীভাবে চলবে, তার চিন্তাধারা কেমন হবে, জীবনকে সে কীভাবে দেখবে, কীভাবে যাপন করবে তার বীজ বপন হয় অতি শৈশবেই, বাবা মায়ের হাত দিয়ে। জীবন যাপন একটা পদ্ধতি যেটা শিশু দেখে শেখে, বড় বড় লেকচার শুনে নয়। অনেকেই আমরা ভাবি শিশু সন্তান কিই বা বোঝে তবে একটা জিনিষ আমরা ভূলে যাই তারা কিন্তু আপনার আমার চেয়ে কম বোঝে না। যে পিতার আয় হাজারের অঙ্কে আর ব্যয় লক্ষের ঘরে সে পরিবারের সন্তান খুব ভাল বোঝে যে শুভঙ্করের ফাঁকিটা কোথায়। সন্তানের প্রতি উদাসীন আত্মমগ্ন যে বাবা-মায়ের সময় হয়না সন্তানকে সময় দেবার, সে কোথায় যায়, কার সাথে মেশে, তার বন্ধু বান্ধব কারা সেই খবর রাখবার সেই সন্তানের চিন্তা, আচরণ আর কাজের দায়ভার কি কেবল সেই সন্তানের? একজন মানুষের চিন্তা, কর্ম, আচরণ একদিনে তৈরি হয়না। পরিবারের সদস্যদের আচরনের গভীর ছাপ সন্তানের আচরনের মাঝে থাকেই ।

তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের নৈতিক শিক্ষা দিয়ে নৈতিক চরিত্রসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে হবে। একথা স্বীকার করতেই হবে বিশ্বজুড়ে বর্তমানে পারিবারিক বিপর্যয়ের কারণে যে নৈতিক স্খলন দেখা দিয়েছে তা রোধকল্পে পশ্চিমা বিশ্বেও মায়েরা সচেতন হওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেক মায়েরাই তাদের চাকুরী জীবন পরিত্যাগ করে তাদের শিশুদের লালন-পালনকে দ্বিতীয় কর্মজীবন হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কারণ মায়েদের এ ভূমিকার উপর নির্ভর করছে গোটা পরিবারের সামগ্রিক সাফল্য। পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব আজ রূপ নিয়েছে এক ধরণের পণ্য উন্নয়নে, যেখানে বাবা-মা মনে করেন একটি শিশুর পেছনে আরো বেশি থেকে বেশি সময় দিতে হবে, শ্রম দিতে হবে। এই সময় ও শ্রম বাবা-মা যত বেশি দেবেন, তাতে তাদের শিশুদের সাফল্যের মাত্রাও তত বাড়বে।

আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে এই বিষয়গুলো সামনে রেখে সন্তানের লালন-পালন ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত তথা নৈতিক চরিত্রসম্পন্ন করে গড়ে তোলার তৌফিক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমিন।


চলবে -
=======================================================================
উৎসর্গ -

ব্লগার ওমেরা'র (মাদ্রাসা শিক্ষকের শিশু নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধের দাবী ও কিছু কথা ) Click This Link
নতুন নকিবে'র(ব্লগে ৬০০ তম পোস্টঃ ইসলামে শিশু নির্যাতনের স্থান নেই) Click This Link
এবং
বোন সোহানীর "শিশুকে সততা, সত্যবাদিতা শেখানোর এখনই সময়....", Click This Link

এ সবগুলি পোস্টেরই মূল সুর ভাল মানুষ।আর ভাল মানুষ গড়ে উঠে এবং উঠার প্রধান উপাদানই হলো পরিবার তথা ভালো পারিবারিক পরিবেশ।আর তাই এ সবগুলি পোস্টের ফলোআপ হিসাবেই এ পোস্টকে বিবেচনা করা যায়।তাই তাদের "ব্লগার বোন ওমেরা,নতুন নকিব ভাই এবং বোন সোহানী" তিন জনকে এ পোস্টটি উৎসর্গীকৃত।

তথ্যসূত্র - আল কোরআন,হাদীস।
===========================================================

পূর্ববর্তী পোস্ট -

মানব জীবন - ৯ "বিবাহের পরে" - Click This Link
মানব জীবন - ৮ " মানব জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য " - Click This Link
মানব জীবন - ৭ " তালাক " - Click This Link
মানব জীবন - ৬ "দেনমোহর - স্ত্রীর হক" - Click This Link
মানব জীবন - ৫ "বিবাহ" - Click This Link
মানব জীবন - ৪ " মাতৃত্ব " - Click This Link
মানব জীবন - ৩ Click This Link
"নারী স্বাধীনতা বনাম নারী(জরায়ু)'র পবিত্রতা "
মানব জীবন - ২ " মাতৃগর্ভ (জরায়ু)"- Click This Link
মানব জীবন - ১ "মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার ইতিকথা"- Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:১৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×