somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" বিবাহের পরে - সাজিয়ে তুলি,গুছিয়ে তুলি ছোট্ট সুখের ঘর " - সুখী-সুন্দর দাম্পত্য ও পারিবারিক জীবনের জন্য স্বামী-স্ত্রী'র করণীয় বিষয় সমুহ (মানব জীবন - ৯)।

০৮ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি - proptiger.com

বিবাহ হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি, যার মাধ্যমে দু’জন (নর-নারী) মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়।বিবাহের মাঝে প্রতিজ্ঞা করা হয় সুখে-দুঃখে আমৃত্যু একসাথে থাকার এবং তার সাথে সাথে দাম্প্যত্য জীবনে তাদের পথচলা শুরু হয় স্বামী-স্ত্রী হিসাবে।যার মাধ্যমে উভয়েই প্রতিজ্ঞা করে একের সুখে সুখী,দুঃখে দুঃখী হবার। সাধারণ ভাবে বিবাহ এমন একটি প্রতিষ্ঠান যার মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও যৌন সম্পর্ক সামাজিক স্বীকৃতি লাভ করে।বৈবাহিক কার্যক্রম সাধারণত দম্পতির মাঝে সমাজ-স্বীকৃত বা আইনগত দায়িত্ববোধ তৈরি করে, এবং এর মাধ্যমে তারা বৈধভাবে স্বেচ্ছায় সন্তান-সন্তানাদির জন্ম দিতে পারে।বিবাহের পর-পরই নর-নারী নির্বিশেষে বিশাল কর্তব্য ও দায়িত্বের মুখোমুখি হয়।

বিবাহের মাধ্যমে নর-নারী তথা স্বামী-স্ত্রী'র একসাথে তাঁদের জীবনে শুরু হয় আর তার সাথে সাথে শুরু হয় সংসারসমুদ্র পাড়ি দেওয়ার পালা। একে তো বর্তমানে জটিল বিশ্ব পরিস্থিতি,জীবন ধারনের জটিলতা এবং সংসারের নানা টানা-পোড়নের ধাক্কা ,তার ওপর বিয়ের পর সংসার-আপনজনদের নানা চাপ। সব সামলে সংসারে সুখী হতে পারা তথা সুখী-সুন্দর দাম্পত্য ও পারিবারিক জীবনের প্রত্যাশা পূরণ করা খুবই কঠিন বর্তমান সময়ে ।আর এই সুখী-সুন্দর দাম্পত্য জীবনের প্রত্যাশার চাপ এবং তা পূরণ না হওয়ার হতাশা থেকে সংসারে শুরু হয় নানা রকমের মানষিক টানাপোড়ন ও অশান্তি।

একজন নারী,একজন পুরুষ অনেক আশা-আকাংখা এবং ভবিষ্যতের সুখ-স্বপ্নে বিভোর হয়ে বিবাহ নামক একটি পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয় তিন অক্ষরের একটি শব্দ "কবুল" বলার মাধ্যমে। দাম্প্যত্য জীবনে তথা সংসারে বেশীরভাগ স্বামী-স্ত্রী'ই সাফল্যের, সাথে সুখে-দুঃখে আমৃত্যু একসাথে এক জীবন কাটিয়ে দিতে পারলেও কারো কারো জীবনে নেমে আসে নানা কারনে অশান্তি -অসুখের কালো মেঘ। সংসারের জটিলতায়,নানা ঘটনা-দূর্ঘটনা,অবস্থা-পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, মানষিক টানা-পোড়ন, মানিয়ে নেয়া-মানিয়ে চলার মানষিকতার অভাবে,ত্যাগ-সমঝোতার অনুপস্থিতি ,ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব ,সামাজিক-মানষিক অবস্থা ও পরিস্থিতির বৈষম্য,শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন,পরিবারের বাকী সদস্যদের সাথে মানিয়ে চলার অক্ষমতা ইত্যাদি নানা কারনে ধীরে ধীরে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মাঝে দ্বন্দ্ব-মতবিরোধ তৈরী হতে থাকে ।তাছাড়া ধর্মীয় অনুশাসনের ও মূল্যবোধের অভাব,বিশ্বাস ও মূল্যবোধ, জীবনদর্শন, স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক, একে অপরের হক সম্পর্কে অসচেতনতা ,পর্দা রক্ষা, পরপুরুষ বা পরনারীর সঙ্গে মেলামেশা থেকে বিরত না থাকা, পরকীয়া(কোনো ক্ষেত্রে স্বামীর পরকীয়া, কোনো ক্ষেত্রে স্ত্রীর)এবং তথ্য-প্রযুক্তির প্রভাব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও আধুনিক সংস্কৃতি ইত্যাদি নানা কারনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতির হয়।


ছবি - pinterest.com

পারিবারিক অশান্তির মূল কারণ স্বামী-স্ত্রী একে অপরের হক যথাযথ আদায় না করা। একজন অন্যজনকে গুরুত্ব না দেওয়া। কথায়-কাজে অযথা দ্বিমত পোষণ করা। একে অন্যের প্রতি আস্থা না রাখা, বিশ্বাস না করা। এ সকল কারণে একসময় তাদের মাঝে হিংসা-বিদ্বেষ চরমে পৌঁছে এবং দাম্পত্য জীবন ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়। সুতরাং উভয়ের কর্তব্য হল, পরস্পরের হকগুলো যথাযথভাবে জানা এবং তা আদায় করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা। কোনো ক্ষেত্রে দোষ-ত্রুটি হয়ে গেলে তা অকপটে স্বীকার করে নেওয়া এবং অতি দ্রুত সেটাকে শুধরে নেওয়া। এভাবে সবকিছুকে সহজভাবে মেনে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। তাহলে সম্পর্ক দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হবে। এরকম শুধরে নেওয়া ও মেনে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে না তুললে সামান্য মনোমালিন্যেও অন্তরে প্রচন্ড কষ্ট অনুভব করবে।

আমাদের মনে রাখা উচিত, একজন নারী তার স্বামীর কাছে শুধু ভাত-কাপড়ের জন্যই আসে না। তাহলে তো ধনাঢ্য পরিবারের মেয়েদের বিয়েরই প্রয়োজন হতো না। বরং স্ত্রীর অর্থনৈতিক (ভরণ-পোষণের) অধিকারের পাশাপাশি তার আরো কিছু অধিকার রয়েছে, যেগুলো অপূর্ণ থেকে গেলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হতে পারে। বৈবাহিক ব্যবস্থার স্থায়িত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। স্ত্রীর মানসিক বিনোদন তার অন্যতম। একজন স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে শুধু ভরণ-পোষণে তুষ্ট থাকতে পারে না। বরং স্বামীর কাছে তার আরো কিছু চাওয়া-পাওয়ার আছে। সেগুলো সে পূর্ণভাবে পেতে চায়। কোনো স্ত্রী যদি সত্যিকার অর্থে স্বামীভক্ত হয়, তাহলে সে তার স্বামীকে মনে-প্রাণে ভালোবাসে, স্বামীকে নিয়ে সে তার স্বপ্নের সৌধ নির্মাণ করে। সে ক্ষেত্রে স্ত্রীও চায় স্বামী তাকে ভালোবাসুক, তার প্রতি আলাদাভাবে খেয়াল করুক, তাকে গুরুত্ব দিক, তার সাথে হাসিমুখে কথা বলুক এবং আবেগপূর্ণ আচরণ করুক।স্বামীভক্ত কোনো স্ত্রী যদি তার স্বামীর কাছ থেকে এসব অধিকার না পায় অথবা কোনো কারণে সে তা থেকে বঞ্চিত হয়, তখন সে মারাত্মক অপমান বোধ করে এবং মানসিকভাবে আহত হয়। স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার কিংবা হালকা হওয়ার এটাও একটি কারণ।


ছবি-nikahexplorer.com

অনেক স্বামী আছেন, স্ত্রীর এসব বিষয়ের প্রতি খেয়াল করেন না; বরং তারা ভরণ-পোষণটাকেই বড় কিছু মনে করেন। তাদের ধারণা, স্ত্রীর খরচ বহন করা, তার ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা করা, তাকে বাসস্থান দেয়া হলেই তার প্রতি সবটুকু দায়িত্ব পালন হয়ে যায়। তারা নিজেদের বিনোদনের জন্য বন্ধুবান্ধবদের সাথে বিনোদন ও নিয়মিত সময় কাটান। কিন্তু স্ত্রীর মানসিক প্রত্যাশার ব্যাপারটার প্রতি একদম খেয়াল করেন না। এটা স্ত্রীর প্রতি একপ্রকার জুলুম। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর এই দৃষ্টিভঙ্গি ইসলাম সমর্থন করে না। বরং এই মনোভাবের কঠোর নিন্দা করেছে ইসলাম। নিশ্চিত করেছে স্ত্রীর নিরাপদ ও সম্মানজনক জীবন।বিয়ের আসল উদ্দেশ্য হলো, শান্তি ভালোবাসা ও দয়া। হাদিস শরিফে আছে, রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘যদি কোনো স্বামী স্ত্রীর দিকে দয়া ও ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকায়, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার দিকে দয়া ও রহমতের দৃষ্টি নিয়ে তাকান।’ এই হাদিসে বোঝা যায়, স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা তাদের প্রতি রহম করা ইসলামী শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

বিবাহ যেখানে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে বৈধভাবে কাছে থাকার সুযোগ করে দেয়, সেখানে জীবন ধারনের জটিলতায় এবং প্রত্যাশা পূরণের ব্যর্থতায় স্বামী-স্ত্রীরা একে অপরের থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। যে সুখের সন্ধানে দুজন নারী-পুরুষ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তা নানা কারণেই প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে পারে। বিশেষ করে অনাগত ভবিষ্যত্, শ্বশুরবাড়ির নতুন মানুষ, সেখানকার পরিবেশ, নিজের এত দিনের অভ্যাস, পছন্দ-অপছন্দ—এসব কিছু নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় পড়েন । এ জন্য বিয়ের পরপরই বর-কনেকে কিছু বিষয়ে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।আর এ সব সতর্কতা বা কিছু কাজ-কর্মের মাধ্যমে খুব সহজেই সুখী হওয়া যায়।


ছবি-nikahexplorer.com

১।উভয়ে উভয়ের প্রতি বিশ্বস্থ হোন -

স্বামী-স্ত্রী উভয়ে উভয়ের প্রতি বিশ্বস্থ থাকতে হবে। নিজেদের ভেতরে কোন সন্দেহ সংশয় না রাখা। সন্দেহ যেখানে অশান্তি সেখানে। এটা শুধু সাংসারিক জীবনে নয়, জীবন সমাজ ও রাষ্ট্রের সকলে ক্ষেত্রে এ কথা সমানভাবে প্রযোজ্য যে, দায়িত্বশীলগণ একে অপরকে বিশ্বস্থ হতে হবে। পারস্পরিক বিশ্বস্থতার বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে হবে। যদি অবিশ্বাসের কোনো দানা কারো ভেতরে জেগে উঠে তাহলে পুরোটা কাজই হবে অসুন্দর অসফল অকৃতকার্য। আর সেই অবিশ্বাস যদি দানা বাঁধে স্বামীর মনে স্ত্রীর বিশ্বাস নিয়ে, আর স্ত্রীর মনে স্বামীর বিশ্বাস নিয়ে - তাহলে নির্ঘাত এমন সংসার হতে নরকই ভালো। সম্পর্ক হবে বিনষ্ট। সম্পর্ক হবে ভাঙ্গা ভাঙ্গা। আমাদের সমাজের অধিকাংশ বিচ্ছিন্নতার মূলে রয়েছে এই অবিশ্বাস ও সন্দেহ।কারো কারো মাঝে সন্দেহের একটি রোগই আছে। সে অযথা সন্দেহ করতেই থাকে। আর এই সন্দেহে সে জ্বলে পুড়ে নিজেও মরে অন্যকেও মারে। এই কুঅভ্যাস স্বামী-স্ত্রী কারো মাঝে থাকাই শুভকর নয়।কাজেই উভয়ে উভয়ের প্রতি বিশ্বস্থ হতে হবে এবং অবিশ্বাস ও সন্দেহ থেকে দূরে থাকতে হবে।

২।পরিবর্তনকে স্বাগত জানান -

বিয়ের পর কনেরা বাবার বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি পাড়ি জমান। সেখানকার নতুন পরিবেশকে স্বাগত জানান। পরিবর্তনে ভয় পাওয়া থেকে দূরে থাকুন। অমূলক ভয় পাওয়া যাবে না। বিয়ে একটি সামাজিক রীতি। যুগ যুগ ধরে দুটি মানুষ এই রীতি মেনে জীবন যাপন করে আসছেন। সেটাকে ভয় না পেয়ে সাহসিকতার সঙ্গে জয় করতে শিখুন। মনে রাখুন, আপনি একজন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক। জীবনের সব সমস্যা ও সম্ভাবনায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা আপনার আছে। আরেকটা বিষয় তো আছেই, আপনি এখন আর একা নন। যেকোনো সুবিধা-অসুবিধার কথা আপনার স্বামীর কাছে খুলে বলুন। দেখবেন ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হয়ে আসবে আপনার কাছে। অনুরূপভাবে বরেরও শ্বশুরবাড়ির ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব থাকা উচিত।

৩।উভয়ে উভয়কে ভাল বাসুন প্রকৃত ভালোবাসা -

ভালোবাসা মানে কি? স্বামী তার স্ত্রীকে তো ভালোবাসবেই, স্ত্রীও তার স্বামীকে ভালোবাসবেই এটাই স্বাভাবিক।স্বামী তার স্ত্রীর সব আশা-আকাঙ্খা পূরণ করে, পূরণ করার পরও আরো কিছু হয়ত অতিরিক্ত দেয় কিন্তু স্বামী তার কর্ম ব্যস্ততা বা অন্য কোনো ব্যস্ততার কারণে একমুহূর্ত সময় স্ত্রীকে দিতে পারে না’ এটাকে ভালোবাসা বলে না। স্বামী তার স্ত্রীকে খাঁটি ভালোবাসার আলামতই হলো সে স্ত্রীকে সময় দিবে তার সঙ্গে হাসি রসিকতায় মজবে বা সময় কাটাবে,খোশগল্পে মেতে উঠবে,তাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে । চাকরি, ব্যবসা ও সংসারের চাপে নিজেদের চাওয়া-পাওয়ার কথা ভুলে যাওয়া চলবে না।যে যা-ই করুন না কেন, পাশের মানুষটার খোঁজ নিন। এমন নয় যে প্রতিদিনই তো ওর সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে, আলাদা করে খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন কী! প্রতিদিন সকালে কিংবা বিকেলে দুজন একসঙ্গে কফি পান কিংবা ছাদে গল্প করুন। ছুটির দিনে রেস্টুরেন্টে খেতে যান, একসঙ্গে সংসারের কেনাকাটা করুন। মাঝেমধ্যে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়াও মন্দ নয়।অর্থ্যাৎ স্বামীর জীবন শুধু তার স্ত্রীকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতে হবে।অন্যদিকে বিপরীত ভাবে স্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।তার সবকিছুই তার স্বামীকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতে হবে।আর এটাই প্রকৃত ভালোবাসা ।

৪।বাড়িয়ে তুলুন পারস্পরিক বোঝাপড়া -

বিয়ের পর সুখী ও সুন্দর দাম্পত্যজীবন গড়তে বর-কনের পারস্পরিক বোঝাপড়া খুব জরুরি।বিয়ের রকমফের আছে। কেউ প্রেম করে বিয়ে করেন। কেউ পারিবারিক পছন্দে বিয়ে করেন। আবার অনেক নারী-পুরুষ আছেন, যাঁরা নানা পারিপার্শ্বিক চাপে পড়েও বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য হন। যেভাবেই বিয়ে হোক, এরপর সুখী হওয়া না-হওয়া পুরোপুরি স্বামী-স্ত্রীর দায়িত্ব। কেউ বাইরে থেকে এসে তাঁদের সুখী করবে না। এ জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি পারস্পরিক বোঝাপড়া।

৫।একে অন্যকে দোষারোপ নয় বা নয় ঘৃণা -

একে অন্যের দোষ নয়, গুণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। কোনো মানুষই ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। পারস্পরিক দোষারোপ দাম্পত্যজীবন বিষিয়ে তোলে।নবদম্পতি পূর্বপরিচিত হোক বা না হোক বিয়ের পরের জীবন কিন্তু আলাদা। এ জন্য আমি তোমাকে জেনেশুনেই বিয়ে করেছি কিংবা তুমি তো আমাকে জানতে চিনতে, তবে এখন কেন এসব প্রশ্ন করছ? আমাদের মধ্যে তো এমন কথা ছিল না—এই ধরনের প্রশ্নালাপ থেকে সচেতনভাবে দূরে থাকতে হবে। যদি অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ হয়, তবে কেন তুমি আগে এ বিষয়ে আমাকে জানাওনি। আমি ভেবেছিলাম এমনটাই হবে—এই ধরনের প্রশ্নও তোলা যাবে না। দুজন মানুষ একসঙ্গে জীবন শুরু করলে সেখানে নানা প্রতিবন্ধকতা আসবে যাবে। এটা জীবনেরই নিয়ম। দুজন মিলেই সেসব বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে উঠতে হবে। সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন ঠিক করে সেই লক্ষ্যে স্বামী-স্ত্রীকে এগোতে হবে। সংসারে সুখী হওয়ার অন্যতম গুণ হচ্ছে দুজনের মধ্যকার মিল।

একজন মানুষের সবগুলো গুণই যে আপনার ভালো লাগবে এমন কিন্তু নয়। মানুষের মাঝে দোষ থাকবে গুণও থাকবে। ভালোও থাকবে খারাপও থাকবে। ভালো-মন্দ মিলেই মানুষ। আপনি চিন্তা করেন; আপনার সবগুলো স্বভাব বা আচারণ তার ভালো লাগে কিনা? আর দশ-বারো জন সুদর্শন পুরুষের কাতারে আপনাকে রেখে যদি আপনার স্ত্রীকে বলা হয় নিরপক্ষভাবে তোমার পছন্দমত পুরুষ বেছে নাও! আপনাকে বেছে নিবে কিনা? তাই প্রতিজন স্বামীর উচিত তার স্ত্রীর ভালো গুণগুলোর প্রতি লক্ষ করে জীবনসংসার পাড়ি দেয়া।
এ প্রসংগে মহান আল্লাহপাক বলেন, "হে মানুষ সকল! তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সদ্ভাবে জীবনযাপন করো। যদি তোমরা তাদের (কিছু) অপছন্দ করো, তবে এর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে যে, তোমরা কোনো জিনিসকে অপছন্দ করছো অথচ আল্লাহ তাতে প্রভূত কল্যাণ নিহিত রেখেছেন" (সূরা: নিসা, আয়াত:-১৯)। এই আয়াত থেকে একথা প্রতিয়মান হয় যে, স্ত্রীর কোনো বিষয় অপছন্দ হলেও তার সঙ্গে ঘরসংসার করতে থাকলে এতেই আল্লাহ বহুকল্যাণ নিহিত রেখেছেন।

৬। খোলামেলা হোন দাম্পত্য সম্পর্কে -

বিয়ের পর বর-কনে দুজনের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব বন্ধু হওয়া জরুরি। দুজনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের বাইরে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠলে একে অন্যকে বুঝতে সুবিধা হয়। তখন দুজন দুজনের কাছে মন খুলে একে অন্যের সুবিধা-অসুবিধার কথা বলতে পারেন। বর-কনের আয়-ব্যয় সম্পর্কে দুজন আগেভাগেই আলাপ করে নিন। এরপর সেই অনুযায়ী নিজেদের পারিবারিক আয়-ব্যয়ের হিসাব কষুন দুজন মিলেই। কোনো বিষয়ে কোনো সমস্যা হলে দুজন মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। কোনো সমস্যা ও সন্দেহ জিইয়ে রাখবেন না।

৭।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিযোগিতা নয় বরং এড়িয়ে চলুন যথাসম্ভব -

বিয়ের আগে সংসারজীবন সম্পর্কে নারী ও পুরুষ দুজনের মধ্যেই অনেক স্বপ্ন থাকে। জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে, বর আসবে পালকি করে, দামি গয়নায় লাল টুকটুকে কনে সাজ, তারপর রংবাহারি রিসোর্টে হানিমুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখিয়ে বেড়ানোর এই যুগে নবদম্পতিদের এ নিয়ে উচ্ছ্বাস ও আকাঙ্ক্ষারও কমতি নেই। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, পর্দায় আমরা যা দেখি তা থেকে বাস্তবের অনেক ফারাক।সামাজিক মাধ্যমে সুখ দেখানোর প্রচেষ্টা থেকে সচেতনভাবে দূরে থাকুন। বিয়ের পর সবার আগে অন্য পাশের মানুষটির সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করুন। তাঁর পছন্দ-অপছন্দ, ভালোলাগা-মন্দলাগার বিষয়ে জেনে নিন। এটা শুধু স্বামী কিংবা স্ত্রী নয়, দুজনের বেলায়ই প্রযোজ্য।আর সংসারের জন্য,উভয়ে উভয়কে বেশী বেশী সময় দিন এবং এড়িয়ে চলুন যথাসম্ভব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।


ছবি - facebook.com

৮। উভয়ে উভয়কে ভালোবাসুন প্রাণ খুলে -

এই পৃথিবীতে মানুষ সবচেয়ে বেশি ভালোবাসার কাঙাল হয়। তাই স্বামী-স্ত্রী দুজন দুজনকে প্রাণ খুলে ভালোবাসুন। ভালোবাসা এমনই যে যাঁকে যত ভালোবাসবেন তাঁকে তত ভালোবাসতে ইচ্ছা করবে, তত বেশি ভালোলাগা তৈরি হবে। এ জন্য ভালোবাসায় কার্পণ্য করবেন না। বিয়ের দিন-তারিখ মনে রাখুন, নির্দিষ্ট দিনটিতে প্রিয় মানুষটিকে উপহার দিন। উপহার যে দামি হতে হবে তা নয়, ছোট একটি লাল গোলাপই ভালোবাসার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে যথেষ্ট।

৯।নিজের যত্ন নিন নিজের প্রয়োজনেই -

বিয়ে তো হয়ে গেছে আর নিজের যত্ন কিসের! এই ভাবনা মনের মধ্যে চেপে বসতে দেবেন না। নিজেকে সব সময় আকর্ষণীয় রাখার চেষ্টা করুন। স্বাস্থ্যের পাশাপাশি নিয়মিত চুল ও ত্বকের যত্ন নিন। সংসার ও ভবিষ্যতের চিন্তার সঙ্গে নিজেকে ভুলে গেলে চলবে না। দুজনকে দুজনের কাছে আকর্ষণীয় করে রাখতে নিজেদের যত্ন নিন। সুস্থ শরীর ও সুন্দর মন থাকলে সংসারে অসুখ ঠাঁই পাবে না।


ছবি - shaadimatchmaking.com

১০।স্বামীরা সাজুন স্ত্রীর উদ্দেশ্যে -

প্রতিজন স্বামীই চায় স্ত্রী তার সামনে সেজেগুজে আসুক বা সেজেগুজে থাকুক। সবসময় যেন স্ত্রীর চেহারা রূপ লাবণ্যয় ভরা থাকে এবং সুন্দর ও পরিপাটি থাকে। ঠিক তেমনিভাবে স্ত্রী'রাও চায় তার স্বামী স্মার্ট থাকুক। এজন্যে উচিৎ স্বামীরা যেন স্ত্রীর উদ্দেশ্যে সাজগুজ করে। এ প্রসংগে আল কোরআনে বলা হয়েছে , 'আর স্ত্রীদেরও ন্যায়সঙ্গত অধিকার রয়েছে, যেমন তাদের প্রতি (স্বামীদের) অধিকার রয়েছে। অবশ্য তাদের উপর পুরুষদের এক স্তরের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আল্লাহ পরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময়" (সূরা বাকারাহ, আয়াত নং - ২২৮)।

এই আয়াতের ব্যাখ্যাতে হজরত ইবনে আব্বাস বলেন- আমি আমার স্ত্রীর জন্য সাজসজ্জা করতে পছন্দ করি। যেমন আমি পছন্দ করি স্ত্রী আমার জন্য সাজসজ্জা করুক। কারণ আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন বলে’ তিনি উপরোক্ত আয়াতটি তেলাওয়াত করেছেন। উপরোক্ত হাদিস আয়াত ও তার ব্যাখ্যা দ্বারা বুঝা যায়, স্বামী স্ত্রীর উদ্দেশ্যে সাজগুজ করা জরুরি। বিশেষ করে মিলনের মুহূর্তগুলোতে যেন অবশ্যই ভালো পোশাক শরীরের ফিটনেস ভালো থাকে। ঘর্মাক্ত ও অপ্রস্তুত শরীর নিয়ে স্ত্রীর কাছে যাওয়া বিরাট দোষের বিষয়। এর কারণে স্ত্রীর কষ্ট হয়, ঘৃণাবোধ জাগ্রত হয় যদিও মুখ ফোটে কিছু বলে না। কিন্তু বাস্তবে সে স্ত্রী ভেতরে ভেতরে খুব অসহ্যবোধ করে। স্বামীকে সেজে থাকার আরো অনেক কারণের মধ্যে এটাও একটি কারণ, শুধু কারণ নয় শক্তিশালী একটি কারণও এই যে, অন্য কোনো পুরুষের আর্কষণে স্ত্রী পড়বে না। স্ত্রী সব সময় দেখে তার স্বামী আনস্মার্ট অথচ পাশের বাড়ীর পুরুষ লোকটি সবসময় স্মার্ট। আরো একটি বিষয় এমন থাকতে পারে স্ত্রীর পছন্দসই পোশাক পরিধান করা। স্ত্রীর পছন্দসহ বিশেষ মুহূর্ত যাপন করা। মোদ্দাকথা, শরীয়তের মধ্যে থেকে স্ত্রীর মনোরঞ্জন করা, তার পছন্দ অপছন্দের মূল্যায়ন করা, ভালোমন্দের বিবেচনা করা।

১১। স্বামী সাধ্যমত চেষ্টা করুন স্ত্রীর মনোরঞ্জনের -

স্ত্রীর সঙ্গে হাসি মজা রসিকতা করা স্বামীর কর্তব্য। স্বামীর যেসব অধিকার স্ত্রীকে দিতে হয়, এই অধিকারের অন্যতম একটি হলো স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী রসিকতা করবে। এব্যাপারে আমাদের সমাজ বড়ো উদাসীন। আমাদের সমাজে মনে করা হয় স্ত্রীকে তিনবেলা খাওয়া আর ভরণপোষণ দিলেই স্বামীর দায়িত্ব পালন হয়ে যায়। স্ত্রীর সঙ্গে একটু মিষ্টি সময় পাড় করাও যে তার প্রাপ্য অধিকার এই বিষয়ই আমাদের সমাজের স্বামী ও দায়িত্বশীলদের মাথায় নেই। দেখবেন প্রচুর নামাজ পড়ে, দান করে, রোজা রাখে কিন্তু স্ত্রীর অধিকার আদায়ের ব্যাপারে বড় উদাসীন। প্রতিদিন একটি নির্জন সময় কাটানো স্ত্রীর সঙ্গে এটা স্ত্রীর প্রাপ্য অধিকার।
আমরা যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের দাম্পত্যাংশটুকু অধ্যয়ন কী, তাহলে দেখব রাসূল (সঃ) স্ত্রীদের সঙ্গে বেশ মজা করতো। কখনো তাদের সঙ্গে খোশগল্পে মেতে উঠতো, কখনো তাদের সঙ্গে ঘরোয়া কাজে সাহায্য করতো, কখনো কৌতুক করতো, আবার খেলাও করতো। আম্মাজান হজরত আয়েশার রাযিআল্লাহু আনহার সঙ্গে খেলার ঘটনাতো প্রসিদ্ধ। হজরত আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহা বর্ণিত, "আমরা কোনো সফরে ছিলাম। ওই সময় আমার শরীর ছিল হালকা ক্ষীণকায়। আমার দুজন (আমি আর রাসূল) দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম। আমি জয়ী হলাম। আবার আমার শরীর যখন গোসতে পূর্ণ হয়ে ভারি হলো। তখন তিনি জয়ী হলেন আমি হেরে গেলাম"। স্ত্রীর মনোরঞ্জনের এর থেকে আরো বড় কি উদাহরণ হতে পারে!। আপনার স্ত্রীর সাথে কয়দিন খেলেছেন? এ প্রসংগে ইমাম গাযালী (রহ.) বলেন- স্ত্রীর হকসমূহে একটি হক হলো তার সঙ্গে হাসি-রসিকতা করা। এসব আচরণে স্ত্রী আনন্দিত হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের সঙ্গে হাসিরসিকতা করতেন ।

১২। কখনো স্ত্রীকে প্রহার করা বা কটুকথা না বলা -

স্ত্রীকে মারধর করা নির্যাতন করা একটি চরম অসভ্যতা ও নিরেট মূর্খতার পরিচায়ক। মারধর করাই শাসন না - এই বিষয়টা আমাদের অনেকের মেধাতেই থাকে না। সবখানে সকল ক্ষেত্রে বেত্রাঘাত করাই শাসন নয়। রাগের বশে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা এখন একটি স্বাভাবিক বিষয়। এই মারামারির কাতারে মূর্খ রিক্সাচালক যেমন আছে, ইউনিভার্সিটির প্রফেসরও আছেন বেশ। শিক্ষিত মানুষের অবস্থা দেখলে মনে হয় সব শিক্ষা আর ভদ্রতা ঘরের বাহিরে, ঘরের ভেতরে কোনো শিক্ষা বা সভ্যতার প্রয়োজন নেই।

স্ত্রীকে প্রহার কেউ কেউ আবার বাহাদুরী ভাবে। বন্ধুদের কাছে গর্বের সঙ্গে বলে- বউকে মারার কথা। এ প্রসংগে হজরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহ.) বলেন- "যদি বাহাদুরি ও ক্ষমতা প্রয়োগের শখ হয়, তাহলে যাও শক্তিসামর্থ্যবান ব্যক্তির সাঙ্গে করো, দুর্বল স্ত্রীর উপর নয়। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক প্রেম ভালোবাসার প্রণয় প্রীতি আর বিরহের এখানে মারামারি একদম অপছন্দ"। হজরত মুআবিয়া কুশাইরি রাযিআল্লাহু আনহু বলেন- হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো স্ত্রী সম্পর্কে আপনার আদেশ কী? তিনি বলেন,"স্ত্রী তোমাদের শস্যভূমি, তোমরা যেভাবে ইচ্ছে ব্যবহার করতে পারো, তবে তার চেহারায় আঘাত করো না, তাকে গালমন্দ করো না, তুমি যা খাও তাকে তাই খাওয়াও, তুমি যা পর তাকে তাই পরাও"। (মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হাদিস নং ২০০৫৭) ।
কটু কথা না বলা মানে স্ত্রীকে আঘাত করে কোনো কথা বলা। কটুকথার মধ্যে তার রূপ সৌন্দর্য নিয়ে উপহাসও হতে পারে। তার বংশ গরিমা, তার বাপের বাড়ী, তার ভাই-বোন সম্পর্কেও হতে পারে। অর্থাৎ এমন কোনো কথা না বলা যা, তার মান সম্মানে লাগে।

১৩।যে কোন সমস্যায় অভিভাবকদের দ্বারস্থ হোন -

সংসারে খুনসুটি, মান-অভিমান হওয়া খুব স্বাভাবিক। মাঝেমধ্যে হয়তো ভুল-বোঝাবুঝি থেকে নিজেদের মধ্যে ঝগড়াও হতে পারে। এগুলো মনের মধ্যে চেপে রাখবেন না। যে কোন সমস্যা আপনার অভিভাবকদের জানান। মা-বাবা সব সময়ই সন্তানদের জন্য ছাতার মতো। তাঁদের কাছে সমস্যার কথা খুলে বলুন, পরামর্শ চান। তাঁরা নিশ্চয়ই আপনাদের ভুল-বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে তত্পর হবেন।তবে যাই কিছু করুন উভয়ে উভয়ের মাঝে কখনো তৃতীয় ব্যক্তির যাতে প্রবেশ না ঘটে এ ব্যাপারে উভয়ে সচেষ্ট হোন।কারন,যখনি কোন সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশাধিকার ঘটে তা সে বন্ধু বেশে কিংবা পরামর্শদাতা বেশে তখনি নিজেদের মাঝে ভুল-বোঝাবুঝির পরিমাণ বাড়তে পারে বা মানষিক দূরত্ব তৈরীতে সহায়তা করতে পারে। কাজেই যে কোন সমস্যা নিজেরা সমাধান না করতে পারলে তা শুধু বৈধ অভিভাবকদের সাথে শেয়ার করুন আর কারো সাথে নয়।


ছবি - pinterest.com

স্ত্রী হলেন সহধর্মিণী, অর্ধাঙ্গিনী, সন্তানের জননী,তাই স্ত্রী সম্মানের পাত্রী। স্ত্রীর রয়েছে বহুমাত্রিক অধিকার,সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য। স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে এবং উভয়ের পরিবার প্রত্যেকে নিজ নিজ অধিকারের সীমানা ও কর্তব্যের পরিধি জেনে তা চর্চা করে তাহলে তা সংসারের জন্য মঙ্গলজনক হবে।স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই উচিৎ উভয়কে পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা, সচ্চরিত্রতা, বীরত্ব, সংযমশীলতা,বিষয়-বিতৃষ্ণা, দ্বীন-প্রেম, ন্যায়-নিষ্ঠা, আল্লাহ-ভীরুতা, প্রভৃতি মহৎগুণের উপর নিজেদেরকে প্রতিপালিত ও প্রতিষ্ঠিত করা । যদি কোনো স্বামী- স্ত্রী কোরআন-হাদিসে দেখানো পথে চলে পথে সংসার সাজায় সেই সংসারে অঢেল ধনসম্পদ না থাকতে পারে কিন্তু সুখ-শান্তি অবশ্যই স্থায়ী হবে। আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে এই বিষয়গুলো সামনে রেখে সংসার করার তৌফিক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমিন।

চলবে -
===========================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -

মানব জীবন - ৮ " মানব জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য " - Click This Link
মানব জীবন - ৭ " তালাক " - Click This Link
মানব জীবন - ৬ "দেনমোহর - স্ত্রীর হক" - Click This Link
মানব জীবন - ৫ "বিবাহ" - Click This Link
মানব জীবন - ৪ " মাতৃত্ব " - Click This Link
মানব জীবন - ৩ Click This Link
"নারী স্বাধীনতা বনাম নারী(জরায়ু)'র পবিত্রতা "
মানব জীবন - ২ " মাতৃগর্ভ (জরায়ু)"- Click This Link
মানব জীবন - ১ "মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার ইতিকথা"- Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:১৪
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এই জঞ্জাল স্বাধীনতার পর থেকেই, শুধু এক যুগের নয়....

লিখেছেন আমি সাজিদ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

এক, মানুষের মেন্টালিটি পরিবর্তন না হলে কোনও সরকার কিছু করে দিতে পারবে না।
দুই, কোন কারনে উপরের এক নাম্বার মন্তব্যটি করলাম?
স্বৈরাচার পতনের পর কি কি পরিবর্তন হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জামায়াতকর্মীরা সমাজকর্মী হয়ে থাকবে : আমির

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২৯




বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে নিজেদের জনগণের শাসক নয়, সেবক ও খাদেম পরিচয় দেবে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াত কর্মীরা আজীবন সমাজকর্মী হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু হিন্দু অখন্ড ভারত চায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮




মুসলিম অখন্ড ভারত শাসন করেছে তখন তারা ছিলো সংখ্যা লঘু। খ্রিস্টান অখন্ড ভারত শাসন করেছে, তারা তখন সংখ্যা লঘু মুসলিম থেকেও সংখ্যা লঘু ছিলো। তারপর মুসলিমদেরকে সাথে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। টাইম ম্যাগাজিনের আগামীর ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় বাংলাদেশের নাহিদ ইসলাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১২




নাহিদের ভাষ্য, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম– অবশ্যই তার অবসান হতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গল্প প্রকাশিত হবার পর নিষিদ্ধ হয়

লিখেছেন জাহিদ শাওন, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৫০


এক কাপ চা, শীতের সন্ধ্যায় বেশি ঝালের ভর্তায় মাখানো চিতই পিঠার অজুহাতে বুকপকেটে কতবার প্রেম নিয়ে তোমার কাছে গিয়েছিলাম সে গল্প কেউ জানে না।
আজকাল অবশ্য আক্ষেপ নেই।
যে গল্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

×