প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ১৯৯৮ সালে ট্রান্সকম গ্রুপের সাথে পত্রিকা প্রকাশনায় যুক্ত হন, তখন তাঁর কর্মীবাহিনীর সাথে যে নীতি এবং আদর্শের কথা বলতেন পরবর্তীতে তা সব ভণ্ডামী হিসেবে বিবেচিত হয়েছে তার কর্মীদের কাছে।
প্রথমে তিনি মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু ভাইকে বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেন। (তিনি সমকালের উপসম্পাদক এবং ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দায়িত্ব পালনের পর বর্তমানে নতুন একটি দৈনিক পত্রিকা বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।) এই মঞ্জু ভাইয়ের বড় গুণ হচ্ছে, পারফেকশান। একটি নিউজ (বিশেষ করে লিড নিউজের বেলায়) সব রকম ত্রুটিমুক্ত করে পাঠকদের কাছে পরিবেশন করতে চাইতেন। মতিউর রহমানের নীতি ছিল, অনেক কাজ কিন্তু খুব দ্রুত করতে হবে। সেজন্য কিছু ত্রুটিও সমস্যা নয়। কারণ, প্রেসের সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে পত্রিকার নিউজ গোছাতে হয়। এ সময় দরকার ছিল মঞ্জু ভাইকে অনেক কপি দেখার দায়িত্ব না চাপিয়ে সহযোগিতা করা। উপরন্তু, একজন সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে মঞ্জু ভাই তার সম্পাদকের সাথে অনেক সময় দ্বিমত প্রকাশ করতেন। মতিউর রহমানের তা ভালো লাগতো না। তাঁর মানসিকতা হচ্ছে, একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা। এমনকি মালিক লতিফুর রহমানকেও তিনি ছলে-বলে-কৌশলে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত রাখতেন। (লতিফুর রহমান তাঁর মূল্য দিচ্ছেন কালের কণ্ঠের পাল্টা-আঘাতের মাধ্যমে নিজের ইমেজের বারোটা বাজিয়ে, অথচ প্রথম আলোর এই সাফল্যের পেছনে মতিউর রহমানের চেয়েও বড় অবদান লতিফুর রহমানের।)
প্রথম আলো'র আমরা সবাই তখন একই ফ্লোরে কাজ করতাম। তাই মতিউর রহমানের কর্মতৎপরতার অনেক কিছুই হতো প্রকাশ্যভাবে। একদিন দেখা গেল, কাঁচঘেরা সম্পাদকের কক্ষে মঞ্জু ভাইকে অনেক বকাঝকা করছেন। মঞ্জু ভাইও উচ্চস্বরে উত্তর দিচ্ছেন। ফলাফল দেখা গেল, মতিউর রহমানের হুঙ্কার, 'বের হও অফিস থেকে। এক্ষুণি বের হও।' মঞ্জু ভাই বলছেন, 'আচ্ছা বের হচ্ছি।' এরপর মঞ্জু ভাই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই মতিউর রহমান নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে মঞ্জু ভাইয়ের ঘাড় ধরে ঠেলে নিয়ে চল্লেন মেইন দরজার দিকে। এভাবে ঘাড় ধাক্কিয়ে দোতলা থেকে সিএ ভবনের নিচ পর্যন্ত নিয়ে গেলেন। আমরা সব কর্মীরা হা হয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম মঞ্জু ভাইকে অপমান করার দৃশ্য। রাগে উন্মত্ত মতিউর রহমানের এমন চেহারা দেখে সব সিনিয়র জুনিয়র সব কর্মীর মনে ভয় ঢুকে গেল।
অথচ ইনি জাতিকে জ্ঞান পরিবেশন করে বেড়ান। দুই নেত্রীকে উচিত অনুচিত শেখান। ভণ্ডামি আর কাকে বলে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




